তাড়াশ উপজেলা

তাড়াশ উপজেলা বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। তাড়াশে একটি পৌরসভা আছে যা তাড়াশ পৌরসভা নামে পরিচিত। [2] তাড়াশ উপজেলার উত্তরে বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলা, পূর্বে সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলাউল্লাপাড়া উপজেলা, দক্ষিণে পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলাচাটমোহর উপজেলা এবং পশ্চিমে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলাসিংড়া উপজেলা

তাড়াশ
উপজেলা
তাড়াশ
বাংলাদেশে তাড়াশ উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৪°২৫′৪৯″ উত্তর ৮৯°২২′২৪″ পূর্ব
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগরাজশাহী বিভাগ
জেলাসিরাজগঞ্জ জেলা
আয়তন
  মোট২৯৭.২০ কিমি (১১৪.৭৫ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[1]
  মোট১,৯৫,৯৬৪
  জনঘনত্ব৬৬০/কিমি (১৭০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৫০ ৮৮ ৮৯
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

এই উপজেলাটি প্রায় ২৪°২০' হতে ২৪°৩৪' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°১৫' হতে ৮৯°২৭' পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। [3] এটি জেলা সদর হতে ৫১ কিঃমিঃ দূরুত্বে অবস্থিত ও এর আয়তন ২৯৭.২ কিঃমিঃ। এখানে মোট হাট-বাজারের সংখ্যা ২৬ টি ও বিশেষ হাট ০৫ টি রয়েছে। মসজিদের সংখ্যা ৪৫০ টি, মন্দির ৩৪ টি,গির্জা ০২ টি এবং পাবলিক লাইব্রেরী ০১টি রয়েছে।[4] এছাড়া তাড়াশ উপজেলা চলনবিল অধ্যয্যুতি একটি এলাকা হলেও এই উপজেলার মধ্য দিয়ে ০৩ টি নদী বয়ে গেছে। এদের নাম হলো - গোমতী, আত্রাই,ভদ্রাবতী। [5]

পটভূমি

তাড়াশ উপজেলা সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা হতে প্রায় ৪০ কিমি পশ্চিমে চলনবিলের মধ্যে অবস্থিত। তাড়াশ উপজেলার নমাকরণের বিষয়ে এমন কোন ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায় নাই যা সর্বজনগ্রাহ্য। তবে এই উপজেলাটি একসময় গহিন জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল বলে প্রচলিত উপাখ্যান ও চিরায়ত বই-পুস্তুক থেকে পাওয়া যায়। প্রচলিত লোক উপাখ্যান তথা প্রচলিত লোক কাহিনী থেকে জানা যায়, বোনাইনগর ফরিদপুরের জমিদার বনমালী রায় বাহাদুর নৌভ্রমণে আসার পথে তাড়াশ ও কহিতের মাঝামাঝি স্থানে একটি গাভি সাঁতার কেটে আসতে দেখেন। তার মনে কৌতুহল জাগে এবং সেই সাথে তার মনে প্রশ্ন জগে প্রায় দুই কিলোমিটার পথ পার হয়ে গাভিটি কী কারণে জঙ্গলে প্রবেশ করছে? । গাভীটিকে অনুসরণ করা হয়। অনুসরণ করার পর দেখা যায়, গাভিটি বনের মাঝামাঝি একটি উঁচু জায়গায় তার বাঁট থেকে দুধ ঝেড়ে দিচ্ছে। তার কৌতুহল আরো বেড়ে যায়। পরে তিনি দেখতে পান দুধ ঝেড়ে দেওয়ার জায়গায় কয়েকটি ফাটল আছে। ফাটল থেকে কিছু মাটি সরানোর পর একটি শিবলিঙ্গ দেখা যায়। এমন বিস্ময়কর ঘটনা দেখে রায়বাহাদুর স্থানটিকে পূণ্যস্থান মনে করে সেখানে শিবলিঙ্গ স্থাপন করেন এবং জঙ্গল পরিষ্কার করে অত্র এলাকায় একটি রাজবাড়ি স্থাপন করেন, যার নির্দশন এখনও আছে। তাড়াশ উপজেলার নামকরণের বিষয়টি হলো রায় বাহাদুরের মেয়ের নাম ছিল তারা দেবী। অনেকে মনে করেন, জমিদারের মেয়ের নাম তারা থেকে তারাশ, পরে তাড়াশ নামের উৎপত্তি।

নামকরণের আরেকটি বিষয় হলো: জঙ্গলে পরিপূর্ণ তাড়াশে এক সময় বাঘ, ভালুক এবং ডাকাতদের ত্রাসের রাজত্ব ছিল। সে কারণে ত্রাস থেকে তারাশ বা তাড়াশ নামের উৎপত্তি। [6]

মুক্তিযুদ্ধে পটভূমি

১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর মাসে নওগাঁয় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াই হয় এবং ১৩০ জন পাকসেনা ও রাজাকার নিহত হয়। [3]

প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের কালোদশক পূর্তীর প্রাক্কালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ বঞ্চিত ও নির্যাতনে ফুসে উঠার জন্য প্রস্তুত তখন ৬ দফা এবং সর্ব দলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফার আন্দোলন গণঅভ্যত্থান যা ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান হিসাবে ইতিহাসে স্থান করে নেয়। এরপর আইয়ুব খানের পতন হলে ইয়াহিয়ার ক্ষমতাগ্রহণ আগড়তলা যড়যন্ত্র মামলা থেকে অব্যহিত পান শেখ মুজিবুর রহমান। সবর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পরিচালনায় সে আন্দোলন এই উপজেলায় খুব ব্যাপকতা লাভ করে ছিল। তখন হাজার হাজার ছাত্র জনতার আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিয়ে ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ম.ম. আমজাদ হোসেন মিলন, ডঃ হোসেন মুনসুর, অধ্যাপক ফজলার রহমান, এ্যাডভোকেট আতাউর রহমান, আমজাদ হোসেন সরকার, অধ্যাপক ফজলু মিঞা, অধ্যাপক মোসলেম উদ্দিন, এম. মোবারক হোসেন, মোঃ হাবিবুর রহমান তাড়াশী, মোঃ আফজাল হোসেন, এ্যাডভোকেট মহাসিন আলী , মীর সালাম সহ অনেকে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমগ্র পাকিস্তানের মধ্যে একক সংখ্যা গরিষ্ঠ লাভ, ইয়াহিয়ার ক্ষমতা হস্তান্তরের টালবাহানা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে কালক্ষেপণ জনগণের মধ্যে অবিশ্বাস। এর মধ্যে ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক দিক নির্দ্দশনা মূলক ভাষণ, মুক্তিযুদ্ধের প্রস্ত্ততি। তাড়াশ উপজেলার তৎকালীন ছাত্র নেতারা তাদের নেতৃত্বে থানার ১০৭টি সিভিল গান বা বাংলায় বলা যায় সিভিল বন্ধুক একত্রিত করে স্থানীয় ভাবে প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রাথমিক ভাবে যারা ঐ সময়ে মুক্তি যোদ্ধাদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেন তারা গাজী আব্দুর রহমান মিঞা, গাজী এম. মোবারক হোসেন, গাজী আব্দুল বাছেদ , শহীদ ওসমান গণি এবং থানার ৩০৩ রাইফেল সহ কয়েকজন পুলিশ।

২৫শে মার্চের রাত্রিতে নির্বিচারে গণ হত্যা, দলে দলে শরনার্থীদের শহর ত্যাগ। তৎকালীন প্রশিক্ষণরত উপজেলাটির মুক্তি যোদ্ধারা জনগণের সহায়তায় হাজার হাজার শরানার্থী যারা তাড়াশ দিয়ে ভারত সহ অন্যান্য স্থানে গিয়েছেন তাদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এর পাশাপাশি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোর কদমে এগিয়ে চলে। তাড়াশের পাক সেনাদের দখল করার পূর্ব পর্যন্ত বগুড়ার এঁড়ের বাজার আক্রমণ ও বাঘাবাড়ী ও উল্লাপাড়া সুরক্ষার জন্য তাড়াশের প্রায় ৭০ জন মুক্তিযোদ্ধা অংশ নিয়েছে। মার্চ থেকে ২৬শে এপ্রিল পর্যন্ত তাড়াশ পাক হানাদের মুক্ত ছিল। কিন্তু ২৭শে এপ্রিল ১৯৭১ সালে তাড়াশের পতন ঘাট এবং পাকি সেনারা দখল করে নেয় এবং গণহত্যা চালায়। যাদের মধ্যে শিক্ষক মহাদয় বাবু, সচিন ঘোষ, হীরা লাল গোস্বামী, চুনা লাল গোস্বামী, দিনেশ চন্দ্র সিংহ, সহ অনেকেই শহীদ হন হীরা লাল গোস্বামী শহীদ হওয়ার পূর্বে দেশী অস্ত্র দ্বারা দুইজন পাক হানাদারকে খতম করেন।

তাড়াশ পতনের সঙ্গে সঙ্গে ম.ম. আমজাদ হোসেন মিলন, মোঃ আফজাল হোসেন, আব্দুস সোবাহান, আমিরুজ্জামান খোকন, আরশেদুল ইসলামের নেতৃত্বে তাড়াশ থানার শরনার্থীদের সঙ্গে নিয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে গমন করেন।

মোঃ আতাউর রহমান, আব্দুর রহমান মিঞা, এম. মোবারক হোসেন, অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে স্থানীয়ভাবে নওগাঁ এলাকায় গোপন প্রশিক্ষণ শুরু করেন।

ইতিমধ্যে সিরাজগঞ্জের তুখোর ছাত্রনেতা আব্দুল লতিফ মির্জার নেতৃতে সোহরাপ হোসেন সরকার, ছাত্রনেতা বিমল বাবু, আব্দুল আজিজ সরকার, আব্দুল আজিজ মির্জা, লুৎফর রহমান (অরুন) সহ মোট সাত সদস্য মিলে সিরাজগঞ্জ জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ অস্ত্র সংগ্রহ এবং মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য ’’পলাশডাঙ্গা যুব শিবির’’ নামে ক্যাম্প স্থাপন করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়।

তাড়াশ উপজেলার যে সকল মুক্তিযোদ্ধারা ভারত গমন করেন নাই তারা আব্দুল লতিফ মির্জা পরিচালিত পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরে যোগদান করে তৎকালীন রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করে করে অস্ত্র সংগ্রহ এবং তাড়াশ থানা দখল করে অস্ত্র গোলাবারুদ দখল, বস্ত্তল অপারেশন, গুরুদাসপুর কাছিকাটা, ও ভাঙ্গুড়া অপারেশন সমাপ্ত করেন।

ভারত গমনকারী তাড়াশের মুক্তিযোদ্ধাগণ উচ্চতর প্রশিক্ষণ শেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করে অস্ত্র ও গোলা বারুদ মাইন, এক্সপ্লোসিব সহ আব্দুল লতিফ মির্জা পরিচালিত ’’পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরে’’ ম.ম. আমজাদ হোসেন মিলন ও মোঃ আফজাল হোসেন মোঃ আরশেদুল ইসলামরে নেতৃত্বে যোগদান করেন। চাট মোহরের একটি ভারত প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত স্কট খাইরুজ্জামান গেদু মিঞা, ও মোঃ গোলজার হোসেন নেতৃত্বে মোঃ আব্দুল লতিফ মির্জার ক্যাম্পে যোগদান করেন। স্থানীয়ভাবে প্রশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধা, ও ভারতের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং বেঙ্গলরেজিমেন্ট, ইপি আর, বিমান ও নৌবাহিনীর মোট ৪০জন সৈনিকসহ ’’পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরের’’ মুক্তিযোদ্ধা সংখ্যা তখন ৪৫০ জনের উপরে চলে যায়। অস্ত্র, গোলা বারুদ, ও বিশফরক প্রাপ্তির পরে সঙ্গে প্রায় প্রতিরাত্রই কোন না কোন রাজাকার ক্যাম্প দখল অস্ত্র সংগ্রহ চলতে থাকে। ’’পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরের’’ তাড়াশ থানার মুক্তি যোদ্ধার প্রকৃত সংখ্যা ৭১ জন ছিল। অনেকে প্রশিক্ষণ নিতে ভারত গিয়েছিল তাদের ফিরে আসার আগেই দেশ হানাদার মুক্ত হয়ে যায়।

পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরের তাড়াশ থানার মুক্তি যোদ্ধাদের মধ্যে যারা বিভিন্ন স্থরের কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন তাদের মধ্যে গাজী ম.ম. আমজাদ হোসেন মিলন, সহ অধিনায়ক, আব্দুর রহমান মিঞা, প্লাটুন কমান্ডার ও প্রশিক্ষক প্লাটুন কমান্ডার আরও যারা ছিলেন জনাব আব্দুল বাছেদ, মোঃ জিন্নাহ।

সেকশন কমান্ডার যারা ছিলেন গাজী আফজাল হোসেন, গাজী আমিরুজ্জামান (খোকন), গাজী মোবারক হোসেন, গাজী আতাউর রহমান, গাজী ওয়াজেদ আলী আজাদ, ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে গাজী আব্দুস সোবহান একটি দল নিয়ে পাবনা জেলার চাটমোহর এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে যান।

তাড়াশ থানার একজন চিকিৎসক মুক্তিযোদ্ধা গাজী সিরাজ উদ্দিন খান তার নিজের ঔষুধ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা দিতেন এবং যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতেন।

অতপর তাড়াশ থানার মুক্তিযোদ্ধারা পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরেরমুক্তিযোদ্ধা হিসাবে যে সকল গেড়িলা যুদ্ধ এবং সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন সেগুলির মধ্যে অন্যতম।

  • ১৯৭১ইং এর ১১ই নভেম্বর তাড়াশ থানার নওগাঁ যুদ্ধ।
  • ঘাটিনা ব্রীজ অপারেশন।
  • জামতৈল ব্রীজ অপারেশন।
  • ময়মন সিং পাক বিমানের আক্রমণ প্রতিহত করেন।
  • সলঙ্গা রাজাকার ক্যাম্পে অপারেশন।
  • ভদ্রঘাট যুদ্ধ।
  • বিভিন্ন রাজাকার ক্যাম্প দখল।

উত্তর বঙ্গের নওগাঁতে পাক সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বৃহৎ সম্মুখ যুদ্ধ ৭১ এর ১১ই নভেম্বর ভোর ৫টা থেকে বিকেল ২.০০ ঘটিকা পর্যন্ত যুদ্ধ চলে। প্রথমে পাক বাহিনীর পাঞ্জাব রেজিমেন্ট, বেলুচ রেজিমেন্ট, মিলেসিয়া বাহিনী ও বহু রাজাকার কোম্পানী প্রথমে নওগাঁর দিনদিক থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ করে। ওটা ছিল এক অসম যুদ্ধ। তবে দুপুর বারোটার পর থেকেই পরিস্থিতি পাল্টে যায়। একের পর এক পাকিরা মরতে থাকে এবং পালাতে শুরু করে। ২টার দিকে তারাই কাউন্টার এ্যাটাকে পড়ে যায় এবং ৩০/৪০ গজের মধ্যে মুখোমুখি হয়ে যায়। পাকি বহু জোয়ান মৃত্যু বরণ করে ১জন ক্যান্টনসহ ৯জন মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে বন্দি হয়। তৎকালিন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র হতে ১৩০জন পাকি সেনা মৃত্যু বরণ করে ছিল বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। মিলেসিয়া ও রাজাকারদের মরার হিসাব করা হয় নাই। এই যুদ্ধে বহু অস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে। যেমন আর সিএল গান, এইচএমজি, এম,এম,জি, মর্টার, চাইনিজ রাইফেল সহ বহু অস্ত্র ও গোলাবারুদ। নওগাঁর যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের গোলা প্রায় নিশ্বেশিত হয়ে যায়। গোলা বারুদ সংগ্রহের জন্য পুরো ক্যাম্প ভারতের পথে রওনা হয়। এই যুদ্ধে মুক্তি যোদ্ধাদের ৪জন আহত হয়। অবিশ্বাস হলেও সত্য যে ঐ যুদ্ধে কোন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন নাই। ভারত গমনের পথে একটা অংশ পাবনার চাটমোহরের দিকে চলে যায় যারা চাটমোহর থানা অপারেশনে অংশ নেয়। ভারত যাত্রার পথে ময়মন সিং এ আন্ডার চরে  এই ক্যাম্প পাক বিমান বাহিনী কর্তৃক আক্রান্ত হয় পুরা পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবির। এখানে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। সমস্ত দিন চরে কলাবাগানে অবস্থান করে। ঝড়জ্বলের রাত্রে ফুলছরি- বাহাদুরা বাদ ঘাট এর মাঝ দিয়ে জীবনে ঝুঁকি নিয়ে যমুনা নদী ধরে রৌমারী থানা চত্বরে পৌঁছে ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। ঝুঁকি এই জন্য যে দুই পাশে পাকি সেনাদের ক্যাম্প ছিল এবং ছাস লাইট দ্বার পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে ছিল। ক্যাম্প স্থাপনের পর একদল গোলা বারুদ অনায়নের জন্য মানকার চর হয়ে ট্রানজিট ক্যাম্পে গমন করেন। গোলাবারুদ আসতে আসতে ভারত, কানাডা, ভূটান, নেপাল স্বীকৃতি দেয়। পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরের তাড়াশ পর্যন্ত আসতেই অন্য দলটি ১৩ই ডিসেম্বর ১৯৭১ তাড়াশ হানাদার মুক্ত করেন।

নওগাঁ যুদ্ধের পরে ১৩ই নভেম্বর পাক হানাদার বাহিনী নওগাঁর সান্নকাট আমবাড়িয়া গ্রামে প্রবেশ করে গণ হত্যা চালায় সেখানে ইয়ার মাহমুদ (প্রঃশিঃ) সহ ১৩জনকে গুলি করে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। যাদের গণ কবর আমবাড়িয়ায় অবস্থিত।

এছাড়াও নওগাঁর আশপাশের বহুগ্রাম রাজাকারদের সহযোগীতায় জ্বালিয়ে দেয় পাক বাহিনী। মাগুড়া বিনোদের মাহতাব উদ্দিনকে থানায় ধরে এনে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। কাস্তার রাজাকার বা গুলি করে হত্যা করে।

বহু লোক নির্যাতিত হয়। তাড়াশ মুক্ত হওয়ার পরে তাড়াশের মুক্তিযোদ্ধারা অত্র থানার জনগণের জানমাল নিরাপত্তা শরনার্থী পূর্ণবাসনে সহায়তা লুট হয়ে যাওয়া মালামাল ফেরত আনতে সহায়তা করা আইন শৃংখলা রক্ষা করতে থাকে।

১০ই জানুয়ারী ১৯৭২ইং বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যার্বনপর তাঁর আহবানে সারা দিয়ে সকল মুক্তিযোদ্ধা তৎকালিন যোগাযোগ মুন্ত্রি এম. মুনসুর আলীর নিকট অস্ত্র গোলাবারুদ জমা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা কেউ রাজনিতে, ছাত্র জীবনে কেউ সংসার জীবনে ফিরে যায়। প্রকাশ থাকে যে, তাড়াশ পতনের দুই দিন আগে ১০৭টা সিভিল গান মালিকদেরকে ফিরে দেয়া হয়েছিল।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময়ে পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরঅধিকাংশ সময় তাড়াশ থানার নওগাঁ উল্লাপাড়া থানার প্রতাপ চাটমোহর থানার হান্ডিয়াল, সমাজ এলাকায় মুক্ত অঞ্চল গড়ে অবস্থান করেছে। তাদের খাবার এলাকার জনগণ সংগ্রহ করে খাইয়েছে, আশ্রয় দিয়েছে।

মুক্তি যুদ্ধের সময় তাড়াশ থানায় মোট ৩৫০জন রাজাকার আলবদর বাহিনীর সদস্য ছিল। থানা ও আঞ্চলিক শান্তি কমিটি গঠন করে ছিল। যারা পাকি সেনাদের পথ চেনাতে গ্রামে ও মানুষ চেনাত এদের মধ্যে মওলানা মফিজ উদ্দিন আল মাদানী নামে এক ব্যক্তি শান্তি কমিটি প্রধান হিসাবে হিন্দুর মাল গণিমতির মাল ফতয়া দিয়ে লুটতারাজে মদত দিতো এবং রাজাকারদের সহযোগিতায় বিভিন্ন গ্রামে লুটতরাজ অগ্নিদাহো হাটবাজারে অত্যাচার মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি চেনাত ও স্বাধীনতা কামিদের ধরে এনে নির্যাতন চালানো ও পাকিদের হাতে ধরিয়ে দিতো। অবশ্যই এই মওলানা এবং অনেক রাজাকার মুক্তিযোদ্ধা চলাকালিন সময় মুক্তিযোদ্ধার হাতে নিহত হয়।

মুক্তিযুদ্ধ কালিন এই থানার ৩জন রাজাকার পাক বাহিনী ত্যাগ করে পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরের অস্ত্র গোলা বারুদ সহ সারেন্ডার করে এবং মুক্তি যুদ্ধের পক্ষে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নেয়। [7]

প্রশাসন

তাড়াশ উপজেলার পৌরসভার সংখ্যা ০১ টি, ইউনিয়নের সংখ্যা, ০৮টি, মৌজার সংখ্যা ১৭৮ টি৷উপজেলাটিতে ভোটার এলাকার সংখ্যা ২৯১ টি, ভোট কেন্দ্র ৫৭ টি, মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১১৯ জন (ভাতা ভোগী- ১০৩ জন) উপজেলা ই-সেন্টার, ১ টি এবং ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র ০৮ টি আছে। উপজেলা ই-সেন্টার ০১ টি। বেসরকারী সংস্থা (এনজিও) ১৭ টি। [4] এর ইউনিয়নগুলো হলো, সগুনা ইউনিয়ন, তালম ইউনিয়ন, বারুহাস ইউনিয়ন, মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়ন, নওগাঁ ইউনিয়ন, তাড়াশ সদর ইউনিয়ন, মাধাইনগর ইউনিয়ন, দেশীগ্রাম ইউনিয়ন

ব্রিটিশ আমলে তাড়াশ থানা প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত পাবনা জেলার সিরাজগঞ্জ মহকুমার একটি অংশ ছিল। এরপর পাকিস্তান আমলে তাড়াশ থানার কার্যক্রম আগের মতোই চলতে থাকে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ১৯৮৪ সালে সারা দেশকে ৬৪টি প্রশাসনিক জেলা এবং ৪২০টি উপজেলায় ভাগ করা হয়। আগের বেশিরভাগ থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৪ সালে তাড়াশ উপজেলা পরিষদ গঠিত হয়। [8]

ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) যার উদ্দেশ্য হলো তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় তথ্যসেবা নিশ্চিত করা।[9][10] এটি ২০০৭ সালে ‘কমিউনিটি ইনফরমেশন সেন্টার’ (সিইসি) নামে শুরু হয়। এবং একসেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রাম (এটুআই) এর আওতায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদে পাইলট আকারে সিইসি এর কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করা হয়।

এখানে আশ্রয়ন প্রকল্প ০৪ টি (আদর্শ গ্রাম- ০৩ টি, আবাসন- ০৩ টি, মোট সুবিধাভোগী- ৭৩০ পরিবার) সাব-রেজিষ্টার অফিস ০১ টি। [4]

প্রধানত এই উপজেলার নির্বাচনী আসন সিরাজগঞ্জ-৩[11] এই নির্বাচনী এলাকাতে ১৯৮৬ সালে ইসহাক হোসেন তালুকদার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করেন। এবং তিনি ১৯৮৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে তিন দফা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[12][13][14][15] এরপর তাড়াশ উপজেলাতে সংসদ সদস্য হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করেন ১৯৮৮ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল থেকে গাজী আতাউর রহমান[16]

১৯৯১ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল থেকে সিরাজগঞ্জ-৩ অর্থাৎ তাড়াশ উপজেলাতে সংসদ সদস্য হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯১, ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬, জুন ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে (পরপর চার বার) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[17][18][19][20][21] এরপর ২০১৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন গাজী ম.ম. আমজাদ হোসেন মিলন[22] ২০১৮ আব্দুল আজিজ তাড়াশ তথা সিরাজগঞ্জ-৩ থেকে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[23][24]

পৌরসভা

এই পৌরসভার নাম তাড়াশ পৌরসভা, সিরাজগঞ্জ। প্রতিষ্ঠার সন ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সালে। এর আয়তন ২৭.৫৩ বর্গ কিলোমিটার। এটি শ্রেণী ‘গ’ এর পৌরসভা। এর ওয়ার্ড সংখ্যা ৯টি(ভিত্তিক কাজ চলমান  রয়েছে)। এর মহল্লার সংখ্যা ১৬টি। এর মোট জনসংখ্যা ২৫,০৬৭জন। এখানকার ভোটার সংখ্যা ১৬,৭১৬জন। এই পৌরসভাতে মহিলা ৮,৫৬০জন, পুরুষ ৮,১৫৬জন। মোট খানার সংখ্যা ৬,০৪৮টি। এর আবাসিক হোল্ডিং ৬,২৯৮টি। এর বাণিজ্যিক হোল্ডিং ১,২০৩টি। এর সরকারি হোল্ডিং ৪৭টি এবং মোট হোল্ডিং ৭,৫৪৮টি। ট্রেডলাইসেন্সের সংখ্যা ৯৮৫টি।।বার্ষিকসরকারি পৌর কর ৩৪,৪২,১৩২টাকা।ব্যক্তি পর্যায়ে পৌর কর ২১,২১,৯২০টাকা। হাট ০২টি। দৈনিক বাজার ০৫টি। সড়ক বাতির সংখ্যা ২৬৪টি। তাড়াপাম্পের সংখ্যা ১৭টি। কর্মজীবি ল্যাকটেটিং মাদার কার্ডেও সংখ্যা ৪০০টি। বিধাব কার্ডের সংখ্যা ২৫টি।বয়স্ক কার্ডের সংখ্যা ৭৪টি। প্রতিবন্ধি কার্ডের সংখ্যা ঃ ২৪টি।উন্নয়ন খাতে সরকারী বরাদ্দ ১,২১,২০,০০০টাকা। টেন্ডারকৃত প্রকল্প ১৪ টি। অর্থের পরিমান ৪৬,০০০০টাকা, রাজস্ব খাতে সরকারী বরাদ্দ ২,৭০,০০০টাকা। [25]

অর্থনীতি

এই উপজেলার জনগোষ্ঠীর প্রধান আয়ের উৎস, ৮৪.৭৫% কৃষি, ১.৬২% অকৃষি শ্রমিক, শিল্প ০.৬২%, ব্যবসা ৪.৯০%, ০.৯৯% যোগাযোগ ও পরিবহন , চাকরি ২.৭৪%, নির্মাণ ০.৪১% ধর্মীয় সেবায় ০.১৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৭% এবং অন্যান্য ৪.১২%। এখানে প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, চাল, তরমুজ। [3] এছাড়া তাড়াশ একটি কৃষিপ্রধান এলাকা যার এক-তৃতীয়াংশ চলনবিলের মধ্যে অবস্থিত। তাই এখানে ধান এবং মাছের প্রাচুর্য রয়েছে। এখানে অনেক পুকুর রয়েছে। খাদ্যশস্য এবং মাছ এখানকার মানুষের আয়ের প্রধান উৎস। মহিষলুটি নামক বাজারে বিশাল মাছের আড়ত রয়েছে। [26]যেহেতু তাড়াশ ও অন্যান্য উপজেলা চলন বিল মাছের জন্য বিখ্যাত। তাই প্রতি বছর তাড়াশ ও অন্যান্য উপজেলায় এই বিল থেকে টনকে টন মাছ ধরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। তাড়াশ ও অন্যান্য উপজেলায় এই বিল থেকে প্রতি মৌসুমে প্রায় ১০০ কোটি টাকার শুঁটকি মাছ দেশ বিদেশে রফতানি হয়েছে। তাড়াশ ও অন্যান্য উপজেলায় প্রতি বছর সব মিলে দেড় থেকে দুইশো কোটি টাকার মাছ আহরণ করা হয়েছে। তবে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে তাড়াশ ও অন্যান্য উপজেলায় অন্যান্য বছরের তুলনায় চলনবিলে প্রায় ১০০ কোটি টাকার মাছের উৎপাদন কম হয় এবং এই পেশার সঙ্গে জড়িত প্রায় ৫০,০০০ লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[27]

এই উপজেলাতে সেচ আওতাধীন জমির পরিমাণ ২৫৪৯০ হেক্টর। প্রধান ফসল ধান, গম, সরিষা, ভূট্টা, শাক সবজী পুকুরের সংখ্যা ২০৫৫টি, খালের সংখ্যা ১২টি, মৎস্য চাষী ৪২০০ জন, মৎস্যজীবি ৩২৫০ জন। [4] এখানে পাট ও তিল বিলুপ্ত প্রায়। প্রধান ফল হলো - আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, তরমুজ , পেঁপে, কলা[3]

এই উপজেলাতে আছে ১টি খাদ্য গুদাম (১০০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন)। এখানে আছে ব্যাংক ০৮ টি। [4]

অর্থনৈতিক ভাবে তাড়াশ উপজেলায় সরকারী ব্যাংক- সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও বেসরকারী ব্যাংক- পূবালী ব্যাংক লিঃ, ব্র্যাক ব্যাংকের এসএমই ইউনিট।

বিশেষায়িত ব্যাংক- রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ব্যাংকের শাখা রয়েছে। [28]

ভাষা সংস্কৃতি ও খেলাধুলা

তাড়াশ উপজেলার মানুষ বাংলা ভাষী৷ এই উপজেলাতে জারী, সারি, ভাটিয়ালী, কীর্তন, ধোয়া গান সহ নানা গ্রামীণ সংস্কৃতি পালন করে থাকে। ঈদ , পূজা, বাংলা নববর্ষসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও জাতীয় ‍উৎসবে মেতে উঠে। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র সব ভেদাভেদ ভুলে বিভিন্ন অনুষ্ঠান বা উৎসবে যোগদান করে। [29] এই উপজেলাতে মাত্র ১টি খেলার মাঠ রয়েছে। এই উপজেলাতে সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব আছে ২০ টি, সিনেমা হল ১ টি, নাট্যমঞ্চ ১টি।[4] পাতা খেলাধুলা ও বিনোদন তাড়াশ উপজেলা চলনবিল বিধৌত এবং পুকুরময়। এই উপজেলায় কোন খেলার মাঠ নেই। কোন ষ্টেডিয়াম নেই। তাই ফুটবল কৃকেটের প্রচলন নেই বললেই চলে। গ্রামীণ কিছু খেলাধূলা প্রচলিত রয়েছে। বিনোদন বলতে গ্রামীন যাত্রাপালা, মেলা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এখানে কোন সিনেমা হল নেই। শিল্পকলা একাডেমী নেই। শিল্প-সংস্কৃতি বদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। কোন পার্ক কিংবা শিশু পার্ক নেই। শিশুদের মানসিক বিকাশ রুদ্ধ হচ্ছে। [30]

শিল্প

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, নকশিকাঁথা শিল্প, চাটাই, বাঁশ ও বেতের কাজ হলো এখনকার শিল্প। এগুলো ফুটে উঠে হাটবাজার ও মেলাতে এখানে হাটবাজার ২২টি ও মেলা ৩টি। তাড়াশ হাট, উলিপুর হাট, বোয়ালিয়া হাট, বারুহাস হাট, বীনশারা হাট, গুলটা বাজার এবং বেহুলার মেলা উল্লেখযোগ্য। [3]

এছাড়া তাড়াশ উপজেলাতে তাঁতিদের পরিবারের সংখ্যা তিনটি, চালু তাঁতের সংখ্যা আটটি, বন্ধ তাঁতের সংখ্যা একটি, মোট তাঁতের সংখ্যা নয়টি। [31]

বিদ্যুৎ শিল্প

বিদ্যুৎ ব্যবহার এই উপজেলার সব কয়টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসুচির আওতাধীন। তবে ২০.৯৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।[3]

শিক্ষা

এই উপজেলাতে মোট জনসংখ্যার মধ্যে শিক্ষার গড় হার মাত্র ৩৯%,যেখানে পুরুষের শিক্ষার হার ৪৩ এবং নারী শিক্ষার হার ৩৫%৷ [32] তাড়াশ উপজেলাতে সরকারী ও রেজিঃ মিলে মোট ১২৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। যার মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫০ টি এবং রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৭৯ টি। এছাড়া কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ০৪ টি। কারিগরি বিদ্যালয় ০৪ টি, কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজ ০৩ টি, টেকনিক্যাল কলেজ ০১ টি, মাদ্রাসা ২৩ টি (দাখিল-১৭টি, আলীম-০২টি, ফাজিল-০২টি) এবতেদায়ী মাদ্রাসা ১০ টি, ফোরকানিয়া মাদ্রাসা ১৮ টি [4]
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর কয়েকটি নাম হলো -ধামাইচ হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যা ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং কুন্দইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৩৭ সালে। বিন্নাবাড়ী রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত ১৯৭৯ সালে, ধাপতেতুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত, সান্দুরিয়া রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত, বিন্নাবাড়ী রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, কাটাবাড়ী রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত, ভেটুয়া রেজি : প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিতপতিরামপুর রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত, পতিরামপুর রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত,দেওড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত, বলদিপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত, দেশীগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত,চরকুশাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত, ৫৩ নং বড় পৌওতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত,নওগাঁ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত৷ শরিফাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত ১৯৬৮ সালে , সাকুয়া দিঘী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত,ভাটরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৪ সালে। [33]। এছাড়া তাড়াশ উপজেলাতে মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে ৩০টি ও ৫টি। [4] উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিলচলন বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় (কুন্দইল ০১-০১-১৯৭১),ধামাইচ বিলচলন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৮), লালুয়ামাঝিড়া উচ্চ বিদ্যালয় (০১/০১/১৯৯৪), তাড়াশ গার্লস হাই স্কুল (১৯৮৩) নাদোসৈয়দপুর জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৪), বস্তুল ইসাহাক উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৭), মাঝদক্ষিনা কে, আর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৮) , কুন্দাশন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭১), বসতুল ইছাহক উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৭)। [34]

তাড়াশ উপজেলাতে রয়েছে অনার্স কলেজ ০২টি,মোট কলেজ ০৭টি, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ০৪ টি,বালিকা বিদ্যালয় ০১টি,সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ০১টি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২টি,কিন্ডারগার্টেন ০৮টি ও এখানে কোচিং সেন্টার ২০টি রয়েছে। এখানে শিক্ষারহার ৮৫শতাংশ।[34]

স্বাস্থ্য

উপজেলার নলকূপের অবস্থা

এই উপজেলাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১টি, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৭টি আছে। পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.৪৮%, ট্যাপ ০.২১%, পুকুর ০.১৮% এবং অন্যান্য ৪.১৩%। স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলায় ১৮.৯৬% (গ্রামে ১৭.৩৭% ও শহরে ৬৪.০৯%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৭১.৮৫% (গ্রামে ৭৩.২৯% ও শহরে ৩১.০৯%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৯.১৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই। [3]

তাড়াশের টয়লেটের ব্যবস্থা

এখানে হাসপাতাল ০১ টি (৩১ শয্যা বিশিষ্ট) এবং উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র ০৮ টি আছে। এখানে পশু হাসপাতাল ০১ টি রয়েছে। উপজেলাটিতে সরকারি ৫০ শষ্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল হয়েছে ০১টি।এখানে যক্ষা রোগপ্রতিরোধক কেন্দ্র রয়েছে ০১টি। এখানে বে-সরকারি ডায়াগনষ্টিক সেন্টার রয়েছে ০৪টি আছে। তাড়াশে বে-সরকারি চক্ষু সেন্টার রয়েছে ০১টি। পুরুষের গড় আয়ু ৫৭ বছর। মহিলাদের গড় আয়ু ৫৪ বছর। [4]

যোগাযোগ ব্যবস্থা

যোগাযোগ বলতে বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৬ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৫০ কিমি। বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি। [3] এই এলাকায় পাকা রাস্তা ১২৮.৮০ কি.মি. ও কাঁচা রাস্তা ৪৩১.৬৯ কি.মি.। টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ০১ টি৷ [4]

সিরাজগঞ্জ বাসষ্ট্যান্ড থেকে সরাসরি বাসে করে তাড়াশ উপজেলা পরিষদের আসা যায় বা সিরাজগঞ্জ সদর থেকে সিএনজি করে সিরাজগঞ্জ রোড এবং সিরাজগঞ্জ রোড থেকে সরাসরি সিএনজি করে তাড়াশ উপজেলায় আসা যায়। এছাড়াও আন্তঃজেলা বাসে এলে মহিষলুটি নামক বাসষ্টপে নেমে তাড়াশ উপজেলায় আসা যায়। এছাড়া বাংলাদেশের যেকোন প্রান্ত থেকে সিরাজগঞ্জ রোড নামক স্থানে আসতে হবে। সিরাজগঞ্জ রোড হতে সিএনজিতে ৪০ টাকা ভাড়ায় তাড়াশ উপজেলা পরিষদের সামনে আসা যাবে। এছাড়াও মহিষলুটি এবং ভুইয়াগাতি নামক স্থান থেকে বাস,সিএনজি, মোটরসাইকেল বা অটোরিক্সা ইত্যাদির মাধ্যমে তাড়াশ উপজেলা পরিষদে আসা যায়। উল্লেখ্য যে, তাড়াশ বাসস্ট্যান্ড এবং উপজেলা পরিষদ পাশাপাশি হওয়ায় বাসস্ট্যান্ডে আসলেই উপজেলা পরিষদের মূল ফটক দেখা যাবে। [35]

তাড়াশ উপজেলাতে যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমের বিবরণ:[36]

পাকা সড়ক (কি.মি.) আধাপাকা সড়ক (কি.মি) কাচা সড়ক (কি.মি.) বাধের উপর সড়ক (কি.মি) মোট সড়কপথ

(কি.মি.)


১১৫.৩১


১২.৪৩


৪৪১.৪৯


১২


৫৬৯.২৩


উল্লেখযোগ্য স্থান

তাড়াশ উপজেলার দর্শনীয় স্থানগুলো হলো [37] - প্রাচীন নির্দেশনাদি ও প্রত্নসম্পদ ভাগনের মসজিদ (নবগ্রাম , ১৪৫৪) শাহী মসজিদ (নবগ্রাম, ১৫২৬), বারুহাসের গদাই সরকার মসজিদ , তাড়াশের সান্দুরিয়া জামে মসজিদ, বারুহাস মসজিদ (১৩২০), তাড়াশের ইসলামপুর জামে মসজিদ (১৮০২) এবং তাড়াশ শিব মন্দির। [3]

নওগাঁ শাহ শরীফ জিন্দানী (রাঃ) মাজার

৯৩২ হিজরীতে (১৫২৬ খ্রিঃ) সুলতান নসরত শাহ এর রাজত্ব কালে এই শাহী মসজিদ নির্মিত হয়। মসজিদের অভ্যন্তরে মাজারের দৈর্ঘ্য ৯ ফুট ৪ ইঞ্চি, প্রস্থ ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি। প্রতিবছর চৈত্র মাসের ১ম বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবারে ৩ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত বাৎসরিক ওরশ শরীফে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ এই ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় স্থানে হাজির হন। এই স্থাটিতে যেতে হলে ঢাকা থেকে রাজশাহী যাওয়ার সময় মহিষলুটি নামক স্থানে নেমে মোটর সাইকেল বা ভ্যান বা ভটভটি করে নওগাঁ শাহ শরীফ জিন্দানী (রাঃ) এর মাজার শরীফে যাওয়া যায়। তাড়াশের নওগাঁ গ্রামে হযরত শাহ শরীফ জিন্দানী (রাঃ) মাজার শরীফ অবস্থিত।[38]

বেহুলার কূপ

তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের বিনসাড়া গ্রামে ঐতিহ্যবাহী লোকগাঁথা কাহিনীর নায়িকা বেহুলার বাড়ী ও বেহুলার একটি কূপ সহ বেহুলার জীবনাবসানের নৌকা দেখতে পারা যায়। তাড়াশ বাজার থেকে গাড়ি করে গিয়ে বিনসাড়া নামক স্থানে বেহুলার কূপ দেখতে পারা যাবে।

ঐতিহাসিক চলনবিল

বর্ষাকালে বিশ্বরোড়ের মান্নান নগর হতে ৮ ও ৯ নং ব্রীজ এলাকা এবং সগুনা ইউনিয়নের কুন্দইল ও চরকুশাবাড়ী নামক স্থান হতে ঐতিহাসিক চলনবিলের এক অভাবনীয় ও মনোহর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য অবলোকন করা যায়। তাড়াশ উপজেলা হলো চলনবিলের মূল সৈন্দর্য্য। সিরাজগঞ্জ রোড থেকে রাজশাহী রোডে যাওয়ার সময় রাস্তার দুই ধারে চলনবিলের সৈন্দর্য্য দেখতে পারা যায়।[39]

নবগ্রাম মসজিদ

এই উপজেলায় ষড়োশ শতাব্দীতে একটি মসজিদ নির্মিত হয়েছে, মসজিদটির নাম হলো নবগ্রাম মসজিদ[40] তাড়াশের ইতিহাসে গৌড় অধিপতি নাসির উদ্দিন নসরত শাহের শাসনামলে "শাহানশাহ্ হযরত শাহ শরীফ জিন্দানী-এর মাজার" সংলগ্ন এলাকায় এটি নির্মাণ করা হয়।[41] এই মসজিদ তাড়াশ উপজেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।[42]

১৯৩৭ সালের দিকে প্রাপ্ত শিলালিপি থেকে জানা যায় যে, সুলতান আলাউদ্দীন হোসেন শাহের পুত্র সুলতান নাসিরুদ্দীন আবুল মুজাফফর নুসরত শাহের রাজত্বকালে ৯৩২ হিজরির ৪ রজব (১৫২৬ সালের ২১ এপ্রিল) "মীর বহর মনোয়ার আনার পুত্র আজিয়াল মিয়া জংদার" (যোদ্ধা) মসজিদটি নির্মাণ করেন।[40]

জনসংখ্যার উপাত্ত

মোট জনসংখ্যা ১৪১৪৩৮ জন (পুরুষ-৬৯৯৪১ জন, মহিলা-৭১৪৯৭জন)। ভোটার ১,২৭,১২৭ জন (পুরুষ- ৬২,৩১২জন, মহিলা-৬৪,৮১৫ জন)। জনসংখ্যার ঘনত্ব ৬৫৭ (প্রতি বর্গ কিঃমিঃ) জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার জাতীয়- ১.৪৭% এবং তাড়াশ- ১.৩০% এবং মোট খানার সংখ্যা ৪৮৯৪১টি। [4]

তাড়াশ উপজেলার জনসংখ্যা ১৬৭৬৪৭ জন৷ পুরুষ ৮৪৮৯৬ জন , মহিলা ৮২৭৫১ জন । মুসলিম ১৫১৯০৩ জন,হিন্দু ১৫৫০৯ জন, বৌদ্ধ ২০৪ জন, এবং অন্যান্য ৩১ জন। [3]

জীব বৈচিত্র

তাড়াশ চলনবিলে অবস্থান করায় তাড়াশে মিলেছে মিলল বিরল প্রজাতির কচ্ছপ যা একটি কড়ি ক্যাইট্রা প্রজাতির কচ্ছপ (দ্বিপদ নামকরণ: Pangshura Tecta) কচ্ছপটি উদ্ধার করা হয় হামকুড়িয়া এলাকায় চলনবিলে। কচ্ছপটি উদ্ধার করে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘দি বার্ড সেফটি হাউজ’-এর উদ্ধারকারী দল।

এই কচ্ছপ আব্দুল হাকিম নামের একজন জেলের জালে আটক হয়েছিল। উদ্ধার করা কচ্ছপটি দুপুরে সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বী, পাবনা-সিরাজগঞ্জ জেলার বন্যপ্রাণী ও জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিলের উপস্থিতিতে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পদ্ম পুকুরে অবমুক্ত করা হয়। [43]

দূর্যোগের ঘটনা

উপজেলায় প্রাণহানির ঘটনা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৮৯৭, ১৯৪৩ ও ১৯৭৪ ঘটে। এছাড়া ১৮৮৫ ও ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে এ উপজেলার ঘরবাড়ি ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। [3]

বাল্যবিবাহ

উপজেলাতে বাল্যবিবাহের বর্তমান হার ১৫ বছরের নিচে ১৮% ও ১৮ বছরের নিচে ৫২%৷ লক্ষ্যমাত্রা ও সময়সীমা অনুযায়ী বাল্যবিবাহের হার হলো - ২০১৬ সালে ১৫ বছরের নিচে বাল্যবিবাহের হার ১৫%, ২০১৭ সালে ১০%, ২০১৮ সালে ০৬%, ২০১৯ সালে ০৪%, ২০২০ সালে ০২%, ২০২১ সালে ০০%। এছাড়া লক্ষ্যমাত্রা ও সময়সীমা অনুযায়ী বাল্যবিবাহের হার হলো ২০১৬ সালে ১৮ বছরের নিচে বাল্যবিবাহের হার ৪৫%, ২০১৭ সালে ৩৫%, ২০১৮ সালে ৩২%, ২০১৯ সালে ৩০%, ২০২০ সালে ২৫%, ২০২১ সালে ১৭%। [44]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। "এক নজরে জয়পুরহাট সদর উপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৪ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  2. "সিটি করপোরেশন হওয়ার পথে ময়মনসিংহ (তাড়াশসহ)"। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৯
  3. "তাড়াস উপজেলা - বাংলাপিডিয়া"bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-০১
  4. "তাড়াশ উপজেলা"http (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১৩
  5. http://tarash.sirajganj.gov.bd/site/page/4c24ce46-1ab0-11e7-8120-286ed488c766/নদ-নদী
  6. "তাড়াশ উপজেলার নামকরণ ও ইতিহাস"। ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৯
  7. ও মুক্তিযোদ্ধার তালিকা "তাড়াশ উপজেলা" |ইউআরএল= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)http (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১৩
  8. "তাড়াশ জেলার ইতিহাস"। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৯
  9. "Access to Information (A2I) Programme". Retrieved 31 March 2014. http://www.bangladesh.gov.bd/index.php?option=com_content&task=view&id=84&Itemid=158
  10. "Access to Information: Helping Citizens in Bangladesh Exercise their Rights". The World Bank Institute. Retrieved 31 March 2014. https://wbi.worldbank.org/wbi/stories/access-information-helping-citizens-bangladesh-exercise-their-rights ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে
  11. "জাতীয় সংসদীয় আসনবিন্যাস (২০১৩) গেজেট" (PDF)। নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ। ১৬ জুন ২০১৫ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৫
  12. "৩য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (PDF)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা।
  13. "৯ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা"জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার
  14. "১০ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা"জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার
  15. "৩য় জাতীয় সংসদ সদস্যদের তালিকা" (PDF)বাংলাদেশ সংসদ। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১৪
  16. "৪র্থ জাতীয় সংসদ সদস্যদের তালিকা" (PDF)বাংলাদেশ সংসদ। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১৪
  17. "৫ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (PDF)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা।
  18. "৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (PDF)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা।
  19. "৭ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (PDF)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা।
  20. "৮ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (PDF)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা।
  21. "বিএনপিতে আবদুল মান্নান তালুকদার আওয়ামী লীগে মিলন নাকি নতুন মুখ | বাংলাদেশ প্রতিদিন"Bangladesh Pratidin (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-০৪
  22. গাজী ম.ম. আমজাদ হোসেন মিলন, সিরাজগঞ্জ-৩। "Constituency 64_10th_bn"www.parliament.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৬-২৭
  23. "আবদুল আজিজ"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮
  24. "সিরাজগঞ্জ-৩: বেসরকারি ফলে নৌকার প্রার্থী আব্দুল আজিজ জয়ী"দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮
  25. তাড়াশ পৌরসভা
  26. "তাড়াশ উপজেলা"http (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১২
  27. সিরাজগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা (জানুয়ারি ৩০, ২০১০ খ্রিস্টাব্দ)। "লোকালয়:চলনবিলে মাছের আকাল"দৈনিক সমকাল। ঢাকা। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (ওয়েব) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুলাই ২০১০ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  28. http://tarash.sirajganj.gov.bd/site/page/51ea4963-1ab0-11e7-8120-286ed488c766/ব্যাংক
  29. ও সাংস্কৃতি "তাড়াশ উপজেলা" |ইউআরএল= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)http (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১৩
  30. http://tarash.sirajganj.gov.bd/site/page/6ee8b224-1ab0-11e7-8120-286ed488c766/খেলাধুলা_ও_বিনোদন
  31. বাংলা একাডেমি বাংলাদেশের লোকজন সংস্কৃতি গ্রন্থমালা:সিরাজগঞ্জ। পৃষ্ঠা ৩৯
  32. বাংলা একাডেমি বাংলাদেশ লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা:সিরাজগঞ্জ। পৃষ্ঠা ৩৬।
  33. http://tarash.sirajganj.gov.bd/site/view/primary_school/প্রাথমিক বিদ্যালয়
  34. মাধ্যমিক বিদ্যালয়
  35. "তাড়াশ উপজেলা - যোগাযোগ"
  36. http://tarash.sirajganj.gov.bd/site/page/f646c493-1aaf-11e7-8120-286ed488c766/%E0%A6%AF%E0%A7%8B%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A7%8B%E0%A6%97%20%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%BE |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  37. "তাড়াশ উপজেলার দর্শনীয় স্থান"। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৯
  38. "তাড়াশ উপজেলা - সরকারি ওয়েবসাইট"
  39. "তাড়াশের সরকারি ওয়েবসাইট"
  40. নাজিমউদ্দিন আহমেদ (জানুয়ারি ২০০৩)। "নবগ্রাম মসজিদ"। সিরাজুল ইসলাম[[বাংলাপিডিয়া]]ঢাকা: এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশআইএসবিএন 984-32-0576-6। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ ইউআরএল–উইকিসংযোগ দ্বন্দ্ব (সাহায্য)
  41. "মুসলিম স্থাপত্যের নিদর্শন তাড়াশের নওগাঁ শাহী মসজিদ"দৈনিক ইত্তেফাক অনলাইন। ২৯ জানুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৮
  42. "তাড়াশের শাহী মসজিদ মুসলিম স্থাপত্যের নিদর্শন"দৈনিক জনতা অনলাইন। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৮
  43. Sirajgonj, আলোকিত সিরাজগঞ্জ :: Alokito। "তাড়াশে মিলল বিরল প্রজাতির কচ্ছপ"Alokito Sirajgonj। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১৪
  44. http://tarash.sirajganj.gov.bd/sites/default/files/files/tarash.sirajganj.gov.bd/page/ee6ec3ea_1ab0_11e7_8120_286ed488c766/103469bc041f5f68a771ad5e3de2cb1a.pdf

বহিঃসংযোগ


This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.