ঈশ্বরদী উপজেলা
ঈশ্বরদী উপজেলা বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের পাবনা জেলার অন্তর্গত একটি ঐতিহাসিক এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক উপজেলা।ঈশ্বরদীকে রেলের শহর বলে।
ঈশ্বরদী | |
---|---|
উপজেলা | |
![]() ![]() ঈশ্বরদী | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৮′৫৭″ উত্তর ৮৯°৩′৫৭″ পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | রাজশাহী বিভাগ |
জেলা | পাবনা জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ২৪৬.৯০ কিমি২ (৯৫.৩৩ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• মোট | ৩,২২,৪৯৬ |
• জনঘনত্ব | ১৩০০/কিমি২ (৩৪০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৯২% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৫০ ৭৬ ৩৯ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
অবস্থান
ঈশ্বরদী ২৪.১৫˚ উত্তর ও ৮৯.০৬৬৭˚ পূর্ব অক্ষাংশে অবস্থিত। ঈশ্বরদী উপজেলার আয়তন ২৫৬.৯০ বর্গ কিলোমিটার। এর উত্তরে লালপুর উপজেলা ও বড়াইগ্রাম উপজেলা; দক্ষিণে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা, মিরপুর উপজেলা এবং পদ্মা নদী। পূর্বে পাবনা সদর উপজেলা ও আটঘরিয়া উপজেলা। পশ্চিমে লালপুর উপজেলা ও ভেড়ামারা উপজেলা। ঈশ্বরদীতে ৭টি ইউনিয়ন ও ১২৩টি গ্রাম আছে। এখানে বাংলাদেশের বৃহত্তম রেলওয়ে জংশন আছে।
প্রশাসনিক এলাকা
- সাহাপুর
- লক্ষ্মীকুণ্ডা
- পাকশী
- মুলাডুলি
- দাশুড়িয়া
- সলিমপুর
- সাঁড়া
ইতিহাস
ব্রিটিশ শাসনামলে ঈশ্বরদী একটি প্রতিষ্ঠিত ও গুরুত্বপূর্ণ জনপদ হিসাবে পরিচিত ছিল। ততকালীন ব্রিটিশ সরকার এখানে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো নির্মাণ করেন। বাংলাদেশের বৃহত্তম রেলওয়ে জংশন, বৃহত্তম রেলওয়ে ব্রীজ ও বিমানবন্দর নির্মাণ করেন। পরবর্তীকালে পাকিস্তান শাসনামলেও এ উন্নয়নের ধারাবাহিতা অব্যহত থাকে। পাকিস্তান সরকার এখানে ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্র, ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ, নর্থ বেঙ্গল পেপার মিলসহ নানা উন্নয়নমুলক কাজ করেন। ১৯৭১ সালে দেশ ভাগের পর থেকে এ উন্নয়নের ধারাবাহিতা ধীরে ধীরে লোপ পেতে থাকে। প্রাপ্ত তথ্য মতে ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৪৯ খ্রি. তারিখে প্রথমে ‘‘ঈশ্বরদী থানা’’ হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড এবং দায়িত্বাবলি বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৯৬০ সালে ‘‘ উন্নয়ন সার্কেল ’’ (আবগ্রেডেড থানা) হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। সর্বশেষ ১৯৮৩ সালে ‘‘ ঈশ্বরদী উপজেলা ’’ হিসেবে এর নামকরণ করা হয়। ঈশ্বরদী উপজেলাটি পাবনা জেলার পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত। এর উত্তরে নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম ও লালপুর উপজেলা, পশ্চিমে কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলা, দক্ষিণে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা এবং পূর্বে পাবনা জেলার পাবনা সদর ও আটঘরিয়া উপজেলা। এ উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিম পার্শ্ব দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদী। ২৪°০৩' হতে ২৪°১৫' উত্তর অক্ষাংশে এবং ৮৯°০' হতে ৮৯°১১' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত ।
নামকরণ
ঈশ্বরদী উপজেলার নামকরণ নিয়ে নানা মতভেদ রয়েছে। নামকরণ সম্পর্কে তেমন কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায় নি। তবে অধিকাংশের মতে ঈশা খাঁর আমলে এ উপজেলার টেংরী গ্রামে ডেহী/কাঁচারী (Dehi/Kachari) ছিল। এখানে ঈশা খাঁর রাজস্ব কর্মচারীরা বসবাস করতেন এবং রাজস্ব আদায় করতেন। ঈশা খাঁ এখানে অনেকবার গমন করেছেন। সময়ের ব্যবধানে ঈশা খাঁ (Isha Khan) এর Isha এবং Dehi এই শব্দ দু’টির সমন্বয়ে পরিবর্তনের মাধ্যমে Ishwardi (ঈশ্বরদী) এর নামকরণ হয়। এই নামকরণটি বর্তমানে বেশি পরিচিত।
দর্শনীয় স্থান
- পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে অফিস
- পাকশী রিসোর্ট
- ইক্ষু গবেষণা উচ্চ বিদ্যালয়
- ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন
- নর্থ বেঙ্গল পেপার মিলস লিঃ
- বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষনা ইন্সটিটিউট
- আঞ্চলিক কৃষি ও ডাল গবেষনা কেন্দ্র
- মিরকামারী লিচু উৎসব (মৌসুমি)
- ঈশ্বরদী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল
- হার্ডিঞ্জ ব্রীজ
- লালন শাহ সেতু
- ঈশ্বরদী বিমানবন্দর
- পাকশী ফুরফুরা শরীফ
- রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র
- সাড়াঘাট
- বড়ইচারা চালকল এলাকা।
- মেসার্স শিশির রাইচ মিল
- মেসার্স আল-আমিন হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট।
- পাবনা চিনি কল লিমিটেড[2]
- মানিকনগর আনসার মাঠ
জনসংখ্যা
জনসংখ্যা(১৯৯১ | জনসংখ্যা(২০০১ | জনসংখ্যা(২০১১ |
---|---|---|
২৩৬,৮২৫ জন | ২৯২,৯৩৮ জন | ৩১৩,৯৩২ জন |
শিক্ষা
- মাধ্যমিক বিদ্যালয় - ৪৩ টি
- মাদ্রাসা - ১৮ টি
- প্রাথমিক বিদ্যালয় - ৯৬ টি
- ভোকেশনাল - ১ টি
- নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় - ১ টি
- কারিগরী - ২ টি
- কলেজ - ১১ টি
- অন্যান্য - ৪ টি[3]
কৃতী ব্যক্তিত্ব
- ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু
(এমপি)
- প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক তৌকির হাসান খান (লায়ন টেক্স ও এগ্রোনোমিক ল্যাব)
- শিশির আহম্মদ।
- হাফেজ আব্দুল মুকিত বিশ্বাস ।[কবি - সাহিত্যিক -সমাজসেবক-নবীন লেখক]{জন্মঃ২৩/৬/২০০০}
- বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন রুমি
অর্থনীতি
অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ঈশ্বরদীকে পাবনার প্রাণকেন্দ্র বলা হয়। এছাড়া বর্তমানে ঈশ্বরদী বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। এখানে ৬০০ এর অধিক চাউল কল রয়েছে যা প্রায় দেশের ৪২ ভাগ চাউলের চাহিদা পূরণ করছে। বর্তমানে এখানে একাধিক অটো রাইচ মিলও তৈরী হয়েছে। এখানে দেশের একমাত্র রাইসব্রাণ ওয়েল ফ্যাক্টরি রয়েছে। এছাড়া চিনিকল, কাগজ কল (বর্তমানে বন্ধ), স'মিল, বিস্কুট ফ্যাক্টরি, আইসক্রিম কল ইত্যাদি তৈরী হয়েছে। এখানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি প্রক্রিয়াককরণ এলাকা ( ইপিজেট) রয়েছে, যা এ অঞ্চলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছে। এ ছাড়া সরকার এ থেকে ব্যাপক বৈদেশিক মুদ্রা অজর্ন করছে। বর্তমানে এখানে লিচু অর্থনীতিক ফসল হিসাবে গুরুত্ব পাচ্ছে।
তথ্যসূত্র
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। "এক নজরে ঈশ্বরদী উপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২১ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - "upazilla_tourist_spot"। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ অক্টোবর ২০১৬।
- "শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের-তালিকা"। ১৮ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৮।
বহিঃসংযোগ
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে ঈশ্বরদী উপজেলা সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
![]() |
উইকিভ্রমণে ঈশ্বরদী উপজেলা সম্পর্কিত ভ্রমণ নির্দেশিকা রয়েছে। |