বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট
বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট বা বাংলাদেশ চিনিফসল গবেষণা ইনস্টিটিউট (পূর্বনাম বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট) একটি স্বায়ত্তশাসিত জাতীয় গবেষণা ইনস্টিটিউট যা আখ এবং অন্যান্য মিষ্টি জাতীয় উদ্ভিদের গবেষণা পরিচালনা করে। বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান কার্যালয় ঈশ্বরদী উপজেলার পাবনা-ঈশ্বরদী সহাসড়ক সংলগ্ন অরণকোলা ও বহরপুর মৌজার ২৩৫ একর জমিতে অবস্থিত। এখানে ইক্ষুর উপর এবং চিনি, গুড় ও চিবিয়ে খাওয়াসহ ইক্ষুর বহুমুখী ব্যবহারের উপর গবেষণা হয়। এটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ।
![]() প্রধান কার্যালয় ভবন | |
গঠিত | ১৯৩১ |
---|---|
সদরদপ্তর | ঈশ্বরদী উপজেলা, পাবনা, বাংলাদেশ |
যে অঞ্চলে কাজ করে | বাংলাদেশ |
দাপ্তরিক ভাষা | বাংলা |
ওয়েবসাইট | www |

ইতিহাস
১৯১২ সালে ব্রিটিশ ভারতের কোয়েম্বাটরে ‘ইক্ষু প্রজনন কেন্দ্র’ স্থাপন করা হয়। কোয়েম্বাটরের ইক্ষু প্রজনন কেন্দ্র থেকে আখের বীজ সংগ্রহ করে বঙ্গ এলাকার উপযোগী উন্নত জাত বাছাইয়ের জন্য ১৯৩৩ সালে ঢাকার মনিপুরী খামারে ইক্ষুচারা পরীক্ষাগার স্থাপন করা হয়। ভারত ভাগের পর ১৯৫১ সালে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয় পাবনা জেলার ঈশ্বরদীতে "ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্র" স্থাপন করে। সে সময় কেন্দ্রটির কার্যক্রম ছিল শুধু ইক্ষু প্রজনন এবং জাত বাছাই করা। পরে এই গবেষণা কেন্দ্রটির আরো উন্নয়নের জন্য পাকিস্তান সরকারের "খাদ্য ও কৃষি পরিষদ" কেন্দ্রটিকে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে দেয়। ১৯৬৫ সালে কেন্দ্রটিকে পুনরায় প্রাদেশিক সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ে নেয়া হয়।[1]
বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭৩ সালে কেন্দ্রটিকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ চিনিকল সংস্থার নিকট হস্তান্তর করা হয়। এ সংস্থাটি ১৯৭৪ সালে "ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট" নামক একটি প্রকল্প প্রণয়ন করে।[1]
১৯৮০-৮৫ পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনার সময় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প সংস্থা ঈশ্বরদী ও ঠাকুরগাঁওয়ে ‘স্টাফ ট্রেনিং সেন্টার’ স্থাপনের জন্য কমিশনের কাছে একটি প্রকল্প প্রস্তাব করে। প্রকল্পটি বিবেচনার সময় প্রস্তাবিত ‘স্টাফ ট্রেনিং সেন্টার’কে ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাথে সংযুক্ত করে অনুমোদন দেওয়া হয় ও ইনস্টিটিউটটির নাম পরিবর্তন করে ‘ইক্ষু গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট’ হিসেবে নামকরণ করা হয়।[1]
১৯৮৯ সালে সরকারের মন্ত্রীপরিষদের সিদ্ধান্তে ইক্ষু গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউটকে জাতীয় প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করার জন্য এটিকে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প সংস্থা থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ে হাতে দেয়া হয় ও দেশব্যাপী আখ গবেষণার পাশাপাশি খেজুর, তালসহ অন্য মিষ্টি জাতীয় ফসলের উপর গবেষণার দায়িত্ব এর উপর দেয়া হয়।[1]
১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রপতির নির্বাহী আদেশ (অধ্যাদেশ নং ২৩, ১৮ জুন ১৯৯৬) জারি করার মাধ্যমে ইক্ষু গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটকে বিলুপ্ত করা হয় ও তার বদলে ‘বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট’ স্থাপন করা হয়। এ আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটকে একটি স্বায়ত্তশাসিত জাতীয় প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করা হয়। একই বছরের ১৭ আগষ্ট জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন (১১ নং আইন, ১৭ আগস্ট, ১৯৯৬) প্রণয়ন করা হয়।[1]
২০১৫ সালের ৯ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির নির্বাহী আদেশ জারির মাধ্যমে বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট’ হিসেবে নামকরণ করা হয়।[1] ২০১৯ সালে তাল, খেজুর, গোলপাতা ও অন্যান্য মিষ্টিজাতীয় ফসল বা গাছকে ‘চিনিজাতীয় শস্য’ হিসেবে যুক্ত করে ‘বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন, ২০১৯’ অনুমোদন দেয়া হয়।[2]
গবেষণা কার্যক্রম বিভাগ
- প্রজনন বিভাগ
- জৈবপ্রযুক্তি বিভাগ
- শারীরতত্ত্ব ও চিনি রসায়ন বিভাগ
- কৃষিতত্ত্ব বিভাগ
- মৃত্তিকা ও পুস্টি বিভাগ
- কীটতত্ত্ব বিভাগ
- রোগতত্ত্ব বিভাগ
- কৃষি প্রকৌশল বিভাগ
- প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি হস্তান্তর বিভাগ
- কৃষি অর্থনীতি বিভাগ
- সরেজমিন বিভাগ
তথ্যসূত্র
- "ইতিহাস"। bsri.gov.bd। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- "সুগারক্রপে যুক্ত হলো তাল, খেজুর, গোলপাতা"। jagonews24.com। ১৮ মার্চ ২০১৯।