শিবগঞ্জ উপজেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
শিবগঞ্জ রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার একটি উপজেলা।
শিবগঞ্জ উপজেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ | |
---|---|
![]() ![]() | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৪১′১২″ উত্তর ৮৮°১০′৪″ পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | রাজশাহী বিভাগ |
জেলা | চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ৫৯৫.৪৩ কিমি২ (২২৯.৯০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• মোট | ৫,৯১,১৭৮ |
• জনঘনত্ব | ৯৯০/কিমি২ (২৬০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৩২.৪৯% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৬৩৪২ ![]() |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৫০ ৭০ ৮৮ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
অবস্থান
এ উপজেলার উত্তরে ভোলাহাট উপজেলা এবং ভারতের পশ্চিম বঙ্গ, দক্ষিণে নবাবগঞ্জ সদর উপজেলা ও পশ্চিম বঙ্গ, পূর্বে ভোলাহাট উপজেলা, গোমস্তাপুর উপজেলা, নাচোল উপজেলা ও নবাবগঞ্জ সদর উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিম বঙ্গ।
প্রশাসনিক এলাকা
শিবগঞ্জ বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ উপজেলাগুলোর অন্যতম। এ উপজেলার ইউনিয়নসমূহ-
- বিনোদপুর ইউনিয়ন
- চককির্তী ইউনিয়ন
- দাইপুকুরিয়া ইউনিয়ন
- ধাইনগর ইউনিয়ন
- দূর্লভপুর ইউনিয়ন
- ঘোড়াপাখিয়া ইউনিয়ন
- মোবারকপুর ইউনিয়ন
- মনাকষা ইউনিয়ন
- নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়ন
- পাঁকা ইউনিয়ন
- ছত্রাজিতপুর ইউনিয়ন
- শাহবাজপুর ইউনিয়ন
- শ্যামপুর ইউনিয়ন, শিবগঞ্জ
- কানসাট ইউনিয়ন
- উজিরপুর ইউনিয়ন, শিবগঞ্জ [2]
ইতিহাস
শিবগঞ্জ উপজেলার নামকরণ নিয়ে নিশ্চিতভাবে কোন তথ্য পাওয়া যায়না। তবে এই এলাকার পূর্ব নাম ছিল শেরগঞ্জ। সম্রাট শের শাহের নামানুসারে এই নামকরণ হয়। মতান্তরে, হিন্দু সম্প্রদায় তাদের অন্যতম দেবতা ‘শিব’ এর পূজার জন্য শিবগঞ্জ বাজার সংলগ্ন একটি শিব মন্দির প্রতিষ্ঠা করে এবং শিবপুজা ব্যাপক প্রচারনা লাভ করে। শিব পুজার ব্যাপকতা বা শিব মন্দিরের প্রচারেই এই এলাকার নাম শেরগঞ্জ থেকে শিবগঞ্জ হয়। শিবগঞ্জ উপজেলার নামকরণ নিয়ে আর একটি জনশ্রুতি রয়েছে, এ অঞ্চলে শিবরঞ্জন মুখোপাধ্যায় নামে একজন প্রভাবশালী ও ধনাঢ্য ব্যক্তি বাস করতেন। উক্ত ব্যক্তির প্রভাব প্রতিপত্তি চতূর্দিকে ছড়িয়ে পড়লে এ অঞ্চল শিবগঞ্জ নামে পরিচিতি লাভ করে।
জনসংখ্যা
মোট জনসংখ্যা ৫৯১১৭৮ জন (প্রায়) এর ভিতরে পুরুষ ২৯৫৩৩৮ জন (প্রায়) এবং মহিলা ২৯৫৮৪০ জন (প্রায়)
শিক্ষা
- সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৩৬টি
- বে-সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৪টি
- জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয় ৫ টি
- উচ্চ বিদ্যালয়(সহশিক্ষা ৪৭টি
- উচ্চ বিদ্যালয়(বালিকা) ১৯ টি
- দাখিল মাদ্রাসা ৪০ টি
- আলিম মাদ্রাসা ৫ টি
- ফাজিল মাদ্রাসা ৫ টি
- কামিল মাদ্রাসা ১টি
- কলেজ(সহপাঠ) ১৬টি
- কলেজ(বালিকা) ২টি
- শিক্ষার হার ৬২.০৭ %
এখানকার উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ
কৃষি
- মোট জমির পরিমাণ ১২৯৫৫২ হেক্টর
- নীট ফসলী জমি ৬১০১২ হেক্টর
- মোট ফসলী জমি ১৩০১২৬ হেক্টর
- এক ফসলী জমি ৭৭২০ হেক্টর
- দুই ফসলী জমি ৩৭৭৬০ হেক্টর
- তিন ফসলী জমি ১৫৫৩২ হেক্টর
- গভীর নলকূপ ৮৮৫৬টি
- অ-গভীর নলকূপ ৩৪০৪৯ টি
কানসাটের বিখ্যাত আমের বাজার
শিবগঞ্জ উপজেলার অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের একটা বড় অংশ আবর্তিত হয় আম ও আম বাগানকে কেন্দ্র করে। মে মাস হতে জুলাই মাস পর্যন্ত আমকে কেন্দ্র করে সমগ্র শিবগঞ্জ যেন বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় জেগে ওঠে। কেউ নিজে চাষ করেন আবার কেউ বাগান মালিক হতে লিজ নিয়ে বাগান পরিচর্যা করে আম উৎপাদন করেন। কানসাটের বিখ্যাত আমের বাজারে আম মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন জায়গা হতে নানা জাতের আম বেচা কেনা হয় । এক মৌসুমে দেশের এই বৃহৎ আমের বাজারে প্রায় শত কোটি টাকার আমের বাণিজ্য হয়।
মে মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত আমকে কেন্দ্র করে শিবগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে আমের বাজার চালু হয়। এ সমস্ত বাজারে ভোর রাত থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কেনা-বেচা চলে। প্রতিটি বাজারে কয়েক মাসের জন্যে গড়ে ওঠে আমের আড়ত। এসমস্ত আড়ত আম কিনে পাঠিয়ে দেয় দেশের বিভিন্ন স্থানে। হাজার হাজার মানুষ জড়িত হয়ে পড়ে আম ব্যবসার সঙ্গে। যেহেতু আমকে কেন্দ্র করে অসংখ্য মানুষের সমাবেশ ঘটে সেহেতেু ব্যবসা বাণিজ্যের অন্যান্য সেক্টর যেমন- রেস্টুরেন্ট, পরিবহন ইত্যাদিতে তেজীভাব পরিলক্ষিত হয়। তাছাড়া আমের ব্যবসাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় লোকজনের আয় উপার্জন ও বেড়ে যায় বিধায় তাদের ক্রয়ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায় যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে ব্যবসা বাণিজ্যের সকল সেক্টরে। শিবগঞ্জের কানসাট আমের বাজার বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ আমের বাজার। এ বাজার থেকে আম প্রেরণ করা হয় সমগ্র বাংলাদেশে। তাছাড়া শিবগঞ্জ, খাসেরহাট, চামাবাজার, রাণীহাটি প্রভৃতি জায়গায়ও বসে আমের বাজার। মূলত আমের মৌসুমে শিবগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি মোড়ে বসে আমের আড়ত।
স্বাস্থ্য
- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১ টি
- উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১৪ টি
- বেডের সংখ্যা ৫০ টি
- ডাক্তারের মঞ্জুরীকৃত পদ সংখ্যা ১১ টি
- সহকারী নার্স সংখ্যা ১৪ জন
দর্শনীয় স্থান
শিবগঞ্জ উপজেলার উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান হলো:[3]
- ছোট সোনামসজিদ
- বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের সমাধি
- দারসবাড়ী মসজিদ
- খঞ্জনদীঘির মসজিদ
- চামচিকা মসজিদ
- তিন গম্বুজ মসজিদ ও তাহখানা
- তাহখানা কমপ্লেক্স
- শাহ্ নেয়ামতউল্লাহ (রহঃ) ও তার মাজার
- ধনিয়াচক মসজিদ
- কোতোয়ালী দরওয়াজা
- বালিয়াদীঘি
- দাফেউল বালা
- কানসাটের জমিদার বাড়ি
কৃতী ব্যক্তিত্ব
- জহুর আহম্মদ চৌধুরী - রাজনীতিবিদ;
- মুরতুজা রেজা চৌধুরী - রাজনীতিবিদ;
- মজিবর রহমান - ইতিহাসবিদ;
- মোহাম্মদ আব্দুল করিম - সাহিত্যিক;
- ডাঃ মইন উদ্দীন আহমদ - রাজনীতিবিদ;
- অধ্যাপক মোঃ শাহজাহান মিঞা - রাজনীতিবিদ;
- ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মোহাম্মদ এনামুল হক - রাজনীতিবিদ;
- জনাব ইদ্রিশ আহম্মদ আলী মিয়া - রাজনীতিবিদ;
- জনাব রইস উদ্দীন বি-এল, সাবেক এম এল এ;
- জনাব মমতাজ উদ্দীন আহম্মেদ, বিশিষ্ট রাজনীতিবীদ ও সাবেক এম এল এ;
- জনাব মোঃ মাহবুব আলম, এমপি;
- মাইনুর রেজা চৌধুরী, সাবেক প্রধান বিচারপতি;
- জনাব খান বাহাদুর ফজলুল হক, সাবেক আইসিএস অফিসার;
- রফিকুন নবী (রনবী), বিশিষ্ট কার্টুনিষ্ট ও টোকাই এর স্রষ্টা;
- প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ মিজানউদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য
- অাব্দুর রহিম মিঞা, বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী
তথ্যসূত্র
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে শিবগঞ্জ"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৫ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৪।
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "ইউনিয়ন সমূহ"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৫ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৪।
- "উপজেলার দর্শনীয় স্থান"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ১০ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০১৫।