তমিজ উদ্দিন

শহীদ তমিজ উদ্দিন বীরবিক্রম ১৯৩১ সালের মাঝামাঝি লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের সুন্দ্রাহবী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সয়েফুউল্ল্যাহ প্রামানিক কবিরাজ ও মাতা তমিজন নেছা।

না: সু: শহীদ ক্যাপ্টেন তমিজ উদ্দিন আহম্মেদ (বীর বিক্রম)
জন্ম১৯৩১
সুন্দ্রাহবী, তুষভান্ডার, কালীগঞ্জ, লালমনিরহাট।
পরিচিতির কারণমুক্তিযোদ্ধা, বীর বিক্রম
দাম্পত্য সঙ্গীমোছাঃ রেজিয়া খাতুন
সন্তান[১] মোঃ এফায়েতুল্ল্যাহ [২] মোঃ সিরাজুল ইসলাম [৩] মোছাঃ রোকসানা বেগম এবং কনিষ্ঠ পুত্র [৪] মোঃ আতিকুল ইসলাম

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি তার ছিল গভীর অনুরাগ। মাঝে মধ্যে স্কুল পালিয়ে উধাও হয়ে ভারতের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়িয়েছেন। ক্রীড়াঙ্গন, নাট্যমঞ্চ আর সমাজপ্রীতির কারণেই স্কুলের গন্ডী পেরুতে পারেননি মহান এই মানুষটি। মাত্র নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েই পড়াশুনার পাঠ শেষ করেন তিনি; জড়িয়ে পড়েন ক্রীড়া সংস্কৃতি আর সমাজসেবার কর্মকান্ডে। এসব কর্মকান্ড তাকে এতটাই প্রভাবিত করেছিল যে, ঢাকায় হোটেলে ক্যাটারীং এর চাকুরী বাদ দিয়ে ফিরে আসেন নিজ মাতৃভূমি তুষভান্ডারে। ছোটখাট ব্যবসার পাশাপাশি বন্ধুবান্ধবদেক নিয়ে মাতিয়ে তুলেন তুষভান্ডারের ক্রীড়াঙ্গন। খেলোয়ারী জীবনের পাশাপাশি ক্রীড়া সংগঠকের ভূমিকাও পালন করেন তিনি। তার নেতৃত্ব ও সংগঠনে তুষভান্ডার দল পর পর কয়েকবার ‘জি এল রায় শীল্ড’ সহ বেশ কটি প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে।

মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ

যৌবনে আনসার ট্রেনিং প্রাপ্ত তমিজ উদ্দিন ১৯৬৫ সালের পাক ভারত যুদ্ধে মুজাহিদ বাহিনীতে যোগ দেন এবং কোম্পানী কমান্ডার হিসেবে বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেন।

মুসলিম লীগ সমর্থক হয়েও ১৯৭০ পরবর্তী সময়ে তিনি জনদাবীর প্রতি সম্মান জানিয়ে অবস্থান নেন স্বাধীনতার স্বপক্ষে। পঁচিশে মার্চের রাত্রিতে পাক বাহিনীর হামলায় তাড়া খেয়ে ইপিআর সুবেদার বোরহান কাকিনা ডাক বাংলোয় আশ্রয় নেন। মুক্তিকামী তমিজ উদ্দিন তার সাথে যোগাযোগ করে দুজনে মিলে স্থানীয় আনসার মুজাহিদদের নিয়ে মুক্তিবাহিনী গড়ে তুলেন এবং এদেরকে নিয়মিত ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করেন।

এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে পাক বাহিনী এই অঞ্চলে হামলা চালালে তিনি তার সহযোদ্ধাদের সহ বৃহত্তর যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য দেশ ত্যাগ করেন। মে মাসের ২য় সপ্তাহে তিনি তার বাহিনীসহ কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে প্রবেশ করেন। এর অব্যবহিত পরেই নাগেশ্বরী এলাকার পাটেশ্বরীতে পাক বাহিনীর আচমকা হামলা থেকে সহযোদ্ধাদের বাঁচাতে নিজের জীবন উৎসর্গ করেন। ১৫ডিসেম্বর ১৯৭৩ সালে ‘বীর বিক্রম’ উপাধিতে ভুষিত নিজে ইতিহাস হয়ে যাওয়া এই মৃত্যুঞ্জয় মানুষটি।

তথ্যসূত্র

    বহি:সংযোগ

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.