রওশন জামিল

রওশন জামিল (জন্ম: ৮ মে, ১৯৩১ - মৃত্যু: ১৪ মে, ২০০২) একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র ও টিভি অভিনেত্রী। ষাটের দশকের মাঝামাঝিতে তিনি টিভি অভিনয় দিয়ে অভিনয় জীবন শুরু করলেও চলচ্চিত্রেই তাকে বেশি দেখা গেছে। তার দীর্ঘ ৩৫ বছরের অভিনয় জীবনে প্রায় ২৫০ এর অধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য পেয়েছেন বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এছাড়া তিনি দেশের একজন নামকরা নৃত্যশিল্পী। নৃত্যকলায় তার অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদকে ভূষিত করেন।

রওশন জামিল
জন্ম
রওশন জামিল

(১৯৩১-০৫-০৮)৮ মে ১৯৩১
মৃত্যু১৪ মে ২০০২(2002-05-14) (বয়স ৭১)
জাতীয়তাবাংলাদেশী
যেখানের শিক্ষার্থীইডেন কলেজ
পেশাচলচ্চিত্র অভিনেত্রী
কার্যকাল১৯৬৫২০০২
উল্লেখযোগ্য কর্ম
দাম্পত্য সঙ্গীগওহর জামিল (বি. ১৯৫২১৯৮০)
সন্তান২ ছেলে, ৩ মেয়ে
আত্মীয়আল্পনা মুমতাজ (বোন)
সোমা মুমতাজ (ভাগ্নি)[1]
পুরস্কারএকুশে পদক
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার

প্রাথমিক জীবন

রওশন জামিল ১৯৩১ সালের ৮ মে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের ঢাকার রোকনপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকার লক্ষীবাজারের সেন্ট ফ্রান্সিস মিশনারী স্কুলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর পড়াশুনা করেন ইডেন কলেজে। শৈশব থেকেই তার নাচের প্রতি ঝোঁক ছিল। ম্যাট্রিক পাশ করার পর ভর্তি হন ঢাকার ওয়ারী শিল্পকলা ভবনে ও নাচের তালিম নেন প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী গওহর জামিল এর কাছ থেকে।

কর্মজীবন

রওশন জামিল বাংলাদেশ টেলিভিশনে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। তার প্রথম অভিনীত নাটক রক্ত দিয়ে লেখা ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। বাংলাদেশ টেলিভিশনের ঢাকায় থাকিসকাল সন্ধ্যা ধারাবাহিক নাটক তাকে আরও জনপ্রিয় করে তুলে। তিনি ১৯৬৭ সালে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন আরব্য রূপকথা আলিবাবা চল্লিশ চোর ছায়াছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে। ১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান পরিচালিত জীবন থেকে নেয়া চলচ্চিত্রে আপা চরিত্র তাকে সাফল্যের শীর্ষে নিয়ে আসে। তাছাড়া আমজাদ হোসেনের রচনা ও পরিচালনায় নয়নমনি, আবু ইসহাকের উপন্যাস অবলম্বনে শেখ নিয়ামত আলী ও মসিহউদ্দিন শাকের পরিচালিত সূর্য দীঘল বাড়ী চলচ্চিত্রে তার অভিনয় দর্শক ও সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে।[2]

১৯৫৯ সালে নৃত্যশিল্পী গওহর জামিল ও তিনি দুজনে মিলে প্রতিষ্ঠা করেন নৃত্য প্রশিক্ষন কেন্দ্র জাগো আর্ট সেন্টার। ১৯৮০ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর তিনিই এই সংগঠনের দেখাশুনা করতেন।

পারিবারিক জীবন

ঢাকার ওয়ারী শিল্পকলা ভবনে নাচ শেখার সময় পরিচয় হয় প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী গওহর জামিলের সাথে এবং ১৯৫২ সালে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের ২ ছেলে ও ৩ মেয়ে।

চলচ্চিত্রের তালিকা

চলচ্চিত্র

স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র

  • আগামী

নাটক

  • রক্ত দিয়ে লেখা
  • ঢাকায় থাকি
  • সকাল সন্ধ্যা

পুরস্কার ও সম্মাননা

মৃত্যু

রওশন জামিল ২০০২ সালের ১৪ মে বাংলাদেশের ঢাকায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার (এফডিসি) প্রবেশদ্বারে 'নয়ন সম্মুখে তুমি নাই' শিরোনামের ফলকে প্রয়াত চলচ্চিত্রকারদের সাথে তার নাম খোদাই করা আছে।[7]

আরও দেখুন

তথ্যসুত্র

  1. পীযূষ সিকদার (৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫)। "নৃত্যই আমাকে নিত্য পথ দেখায়"দৈনিক ইত্তেফাক। ঢাকা, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১৬
  2. "সূর্য দীঘল বাড়ি: নারীর প্রথা ভাঙার গল্প"বিডিনিউজ মিক্স। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১৬
  3. ফজলে এলাহী পাপ্পু (১ মার্চ ২০১৫)। "টাকা আনা পাই, ভাত দেটপ রংবাজ তিন দশকের তিন"মিডিয়া খবর। ১৭ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১৬
  4. সেঁজুতি শোণিমা নদী (২৬ মার্চ ২০১৫)। "'ওরা ১১ জন': স্বাধীনতার প্রথম পূর্ণাঙ্গ আলেখ্য"বিডিনিউজ। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১৬
  5. শৈবাল চৌধূরী (৭ জানুয়ারি ২০১৪)। "চিরায়ত চলচ্চিত্র তিতাস একটি নদীর নাম"দৈনিক আজাদী। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১৬
  6. "অস্ট্রেলিয়ায় 'লালসালু'"দৈনিক যায় যায় দিন। ৬ জানুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১৬
  7. আলাউদ্দীন মাজিদ (১৯ জানুয়ারি ২০১৬)। "এফডিসিতে কেন এই স্মৃতিফলক"বাংলাদেশ প্রতিদিন। ঢাকা, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১৬

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.