শেখ নিয়ামত আলী

শেখ নিয়ামত আলী (৩০শে এপ্রিল ১৯৩৯ - ২৪শে নভেম্বর ২০০৩)[2] একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক[3] তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য তিন বার শ্রেষ্ঠ পরিচালক বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।[2]

শেখ নিয়ামত আলী
জন্ম(১৯৩৯-০৪-৩০)৩০ এপ্রিল ১৯৩৯[1]
মৃত্যু২৪ নভেম্বর ২০০৩(2003-11-24) (বয়স ৬৪)
মৃত্যুর কারণকিডনির সমস্যা
জাতীয়তাবাংলাদেশী
যেখানের শিক্ষার্থীকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাচলচ্চিত্র পরিচালক
কার্যকাল১৯৭৯১৯৯৬
পুরস্কারজাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
বাচসাস পুরস্কার

প্রাথমিক জীবন

তিনি কোলকাতার ২৪ পরগনার সোনারপুর জেলার বেনিয়াবউ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পূর্ব পুরুষদের আদি ভিটা ছিল খুলনার বাগেরহাট জেলায়। ১৯৫৬ সালে তিনি দক্ষিণ গড়িয়া যদুনাথ বিদ্যা মন্দির থেকে স্কুল ফাইনাল পরীক্ষা পাশ করেন। ১৯৬১ সালে নন কলেজিয়েট এক্সটার্নাল স্টুডেন্ট হিসেবে কলা বিভাগ থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন এবং ১৯৬৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি. এ পাশ করেন। ১৯৬৪ সালের অক্টোবর মাসে তিনি কলকাতা ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন এবং তখন থেকেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন।

কর্মজীবন

১৯৭৭ সালে শেখ নিয়ামত আলী ও মসিহউদ্দিন শাকের সূর্য দীঘল বাড়ী চলচ্চিত্রের শ্যুটিং শুরু করেন।[2] চলচ্চিত্রটি ঔপন্যাসিক আবু ইসহাক রচিত সূর্য দীঘল বাড়ী উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয়।[4] এটিই বাংলাদেশেও প্রথম সরকারি অনুদানে নির্মিত চলচ্চিত্র।[5] চলচ্চিত্রটি জার্মানির মানহাইম-হাইডেলবার্গ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব এবং পর্তুগালের ফিগুএরা দা ফোজ চলচ্চিত্র উত্সবসহ পাঁচটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করে।[6] এছাড়াও শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আটটি বিভাগে ও বাচসাস পুরস্কারের ছয়টি বিভাগে পুরস্কার অর্জন করে। ১৯৮৫ সালে তার নিজের প্রযোজনা সংস্থা এস নিয়ামত আলী প্রডাকশন্স থেকে নির্মাণ করেন তার নিজের কাহিনী ও চিত্রনাট্যে দহন। এই চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ পরিচালকসহ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের তিনটি বিভাগে ও বাচসাস পুরস্কারের দশটি বিভাগে পুরস্কার অর্জন করে। ১৯৯৫ সালে আবার তার প্রযোজনা সংস্থা থেকে নির্মাণ করেন অন্য জীবন। এই চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ পরিচালকসহ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের এগারটি বিভাগে পুরস্কার অর্জন করে। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি তিনি জন পরিবহন নামক একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এছাড়া তিনি নাটকও পরিচালনা করেছেন। ১৯৯৬ সালে বিটিভির জন্য নির্মাণ করেছিলেন দিলারা ডলি রচিত শেষ দেখা শেষ নয় নাটকটি।[7]

মৃত্যু

শেখ নিয়ামত আলী ২০০৩ সালের ২৪ নভেম্বর রাজধানী ঢাকার বারডেম হাসপাতালে মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন।[8]

চলচ্চিত্রের তালিকা

  • সূর্য দীঘল বাড়ী (১৯৭৯) (মসিহউদ্দিন শাকের-এর সাথে যৌথভাবে)
  • দহন (১৯৮৫)
  • অন্য জীবন (১৯৯৫)
  • "রানী খালের সাঁকো" (শিশুতোষ চলচ্চিত্র)
  • "আমি নারী" (প্রামাণ্যচিত্র, ১৯৯৬)

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. মউ, জুয়েইরিযাহ (৩০ এপ্রিল ২০১৮)। "'আমরা এখানে তোমাকে ভীষণভাবে মিস করছি আব্বা'"চ্যানেল আই অনলাইন। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৮
  2. সাব্বির চৌধুরী (১১ ডিসেম্বর ২০০৩)। "Homage to Salahuddin and Sheikh Niamat Ali, filmmakers : Bangladesh loses two great exponents of film art"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৪ এপ্রিল ২০১৬
  3. "Sheikh Niamat Ali [শেখ নিয়ামত আলী]"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২৪ নভেম্বর ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ৪ এপ্রিল ২০১৬
  4. আশরাফ উদ্দীন আহমেদ (১৪ জুন ২০০৮)। "'সূর্য-দীঘল বাড়ী' সময়ের জীবন্ত ইতিহাস"দৈনিক যায় যায়। ঢাকা, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর ২০১১
  5. "'সূর্য দীঘল বাড়ী'র ইংরেজি সাবটাইটেল"দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা, বাংলাদেশ। ৮ এপ্রিল ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ১১ মার্চ ২০১৬
  6. "Did you know?"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ জুন ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ৪ এপ্রিল ২০১৬
  7. "একই অনুষ্ঠান নিয়ে তাজিনের দশ বছর"দৈনিক আমার দেশ। ২ জানুয়ারি ২০১৪। ১৪ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ এপ্রিল ২০১৬
  8. "Film-maker Sheikh Niamat passes away" [চলচ্চিত্রকার শেখ নিয়ামত আলী মারা গেছেন]দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২৫ নভেম্বর ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ৪ এপ্রিল ২০১৬
  9. জামিল মাহমুদ (২৪ নভেম্বর ২০০৭)। "Tanvir Mokammel receives 'Chalachchitram Padak' [ভানভীর মোকাম্মেল পেলেন চলচ্চিত্রম পদক]"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৪ এপ্রিল ২০১৬

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.