আবু সাইয়ীদ

আবু সাইয়ীদ (জন্মঃ ১ আগস্ট ১৯৬২) হলেন একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক। তিনি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পরিচালনার মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তার পরিচালিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র কিত্তনখোলা। তিনি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও পূর্ণদৈর্ঘ্য দুই ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণ করে সফলতা অর্জন করেন। চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য তিনি তিনবার বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়াও চারটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পেয়েছে তার কয়েকটি চলচ্চিত্র।[1]

আবু সাইয়ীদ
জন্ম (1962-08-01) ১ আগস্ট ১৯৬২
ভান্ডারবাড়ি, ধুনট, বগুড়া, বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশী
পেশাচলচ্চিত্র পরিচালক
কার্যকাল১৯৮৮বর্তমান
উল্লেখযোগ্য কর্ম
কিত্তনখোলা
আবর্তন
ধূসর যাত্রা
পুরস্কারজাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (৩ বার)

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন

আবু সাইয়ীদ ১৯৬২ সালের ১ আগস্ট বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস বগুড়া জেলার ধুনট থানার ভাণ্ডারবাড়ী গ্রামে।[2]

কর্মজীবন

আবু সাইয়ীদ ১৯৮৮ সালে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র আবর্তন নির্মাণের মাধ্যমে চলচ্চিত্র পরিচালনা শুরু করেন। চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পুরস্কার অর্জন করে। ১৯৯২ সালে তিনি নির্মাণ করেন আরেকটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ধূসর যাত্রা। এই চলচ্চিত্র পরিচালনার মাধ্যমে তিনি দ্বিতীয়বারের মত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন।[3] ২০০০ সালে তিনি প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। সাহিত্যিক সেলিম আল দীনের কাহিনী ও চিত্রনাট্য অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রটির নাম কিত্তনখোলা। এই চলচ্চিত্র পরিচালনার মাধ্যমে তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালক বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া ফরিদুর রেজা সাগরের সাথে যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং সেলিম আল দীনের সাথে যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার ও শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।[4] ২০০৪ সালে নির্মাণ করেন শঙ্খনাদ। চলচ্চিত্রটি ২০০৫ সালে ফ্রিবার্গ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-এ প্রদর্শিত হয় এবং গ্রান্ড প্রিক্স পুরস্কার অর্জন করে। ২০০৬ সালে জনপ্রিয় সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ রচিত জনম জনম উপন্যাস অবলম্বনে নির্মাণ করেন নিরন্তর। চলচ্চিত্রটি ভারত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-এ প্রদর্শিত হয় এবং পরিচালক আবু সাইয়ীদ বিশেষ জুরি পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া একই বছর চলচ্চিত্রটি কেরালা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-এ প্রদর্শিত হয় এবং তিনি গোল্ডেন ক্রো পীজেন্ট ও ফিপ্রেসি পুরস্কার রজন করেন। ২০০৭ সালে একটি ক্ষুদ্র কমিউনিটিকে ঘিরে গড়ে ওঠা গল্প নিয়ে নির্মাণ করেন বাঁশি। পরের বছর ২০০৮ সালে মহাভারতের একটি ঘটনার ভিত্তিতে নির্মাণ করেন রূপান্তর[5] ২০১০ সালে বাংলাদেশের ধর্ম, জঙ্গীবাদ, রাজনীতি নিয়ে নির্মাণ করেন অপেক্ষা[6] ২০১৬ সালে নিজের রচিত কাহিনী নিয়ে নির্মাণ করেন ড্রেসিং টেবিল। ইমপ্রেস টেলিফিল্ম এবং তার নিজের প্রযোজিত এই ছায়াছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন রুহুল ও শিলা।[7]

চলন্ত রাস্তাঃ উদ্ভাবন এবং ধারনা উপস্থাপন

|| চলন্ত রাস্তা || নিয়ে প্রথম কনসেপ্ট পেপার উপস্থাপিত হয় ২২ আগষ্ট ২০১৭ তারিখে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, বাংলামোটর, ঢাকা, বাংলাদেশে। এরপর অডিওভিস্যুয়াল প্রেজেন্টেশনসহ দ্বিতীয়বার || আবু সাইয়ীদ || ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন একই স্থানে ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭।

২৪-২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ভাস্কর্য গ্যালারীতে আবু সাইয়ীদ চলন্ত রাস্তার মডেল প্রদর্শনীর আয়োজন করেন।

চলচ্চিত্রের তালিকা

পূর্ণদৈর্ঘ্য

বছর চলচ্চিত্র ভূমিকা টীকা
পরিচালক প্রযোজক চিত্রনাট্যকার সংলাপ রচয়িতা
২০০০কিত্তনখোলাহ্যাঁহ্যাঁহ্যাঁহ্যাঁবিজয়ী: জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ পরিচালক, শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার, ও শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা
২০০৪শঙ্খনাদহ্যাঁহ্যাঁহ্যাঁহ্যাঁবিজয়ী: ফ্রিবার্গ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব গ্রা প্রিঁ
২০০৬নিরন্তরহ্যাঁহ্যাঁহ্যাঁবিজয়ী: ভারত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব বিশেষ জুরি পুরস্কার
বিজয়ী: কেরালা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব গোল্ডেন ক্রো পীজেন্ট ও ফিপ্রেসি পুরস্কার
২০০৭বাঁশিহ্যাঁহ্যাঁহ্যাঁহ্যাঁ
২০০৮রূপান্তরহ্যাঁহ্যাঁহ্যাঁ
২০১০অপেক্ষাহ্যাঁহ্যাঁহ্যাঁহ্যাঁ
২০১৬ড্রেসিং টেবিলহ্যাঁহ্যাঁহ্যাঁ

স্বল্পদৈর্ঘ্য

  • আবর্তন (১৯৮৮)
  • ধূসর যাত্রা (১৯৯২)

পুরস্কার

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার

বছর বিভাগ চলচ্চিত্র ফলাফল
১৯৮৮শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র (পরিচালক)আবর্তনবিজয়ী
১৯৯২ধূসর যাত্রাবিজয়ী
২০০০শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র (প্রযোজক)কিত্তনখোলাবিজয়ী (ফরিদুর রেজা সাগরের সাথে যৌথভাবে)
শ্রেষ্ঠ পরিচালকবিজয়ী
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকারবিজয়ী (সেলিম আল দীনের সাথে যৌথভাবে)
শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতাবিজয়ী (সেলিম আল দীনের সাথে যৌথভাবে)

তথ্যসূত্র

  1. "আবু সাইয়ীদ"বিডিনিউজ। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৬
  2. "জন্মদিনে 'ড্রেসিং টেবিল' নিয়ে আবু সাইয়ীদ"দ্য রিপোর্ট। ১ আগস্ট ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৬
  3. রাশেদ শাওন (অক্টোবর ২৪, ২০১২)। "চার দশকে আমাদের সেরা চলচ্চিত্রগুলো"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২৮ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৬
  4. ফাহমিদুল হক (২৮ ডিসেম্বর ২০১২)। "আবু সাইয়ীদের চলচ্চিত্র কিত্তনখোলা - বাঙালির আত্মপরিচয়ের সন্ধানে"দৈনিক ইত্তেফাক। ঢাকা, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৬
  5. "আমি দর্শকের কাছে পৌঁছাতে পারিনি : আবু সাইয়ীদ"বাংলানিউজ। ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৬
  6. "দোটানায় পড়েছেন আবু সাইয়ীদ!"দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা, বাংলাদেশ। ৪ জানুয়ারি ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৬
  7. "শেষ হলো আবু সাইয়ীদের ড্রেসিং টেবিল"মিডিয়া খবর। ৪ আগস্ট ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৬

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.