অপেক্ষা (চলচ্চিত্র)
অপেক্ষা আবু সাইয়ীদ পরিচালিত ২০১০ সালের বাংলাদেশী নাট্য চলচ্চিত্র। ছবিটির কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন আবু সাইয়ীদ নিজেই। এতে অভিনয় করেছেন মিরানা জামান, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, তিনু করিম, উজ্জল মাহমুদ, মিঠু বর্মণ, নার্গিস প্রমুখ।[1]
অপেক্ষা | |
---|---|
পরিচালক | আবু সাইয়ীদ |
রচয়িতা | আবু সাইয়ীদ |
শ্রেষ্ঠাংশে |
|
সুরকার | ফুয়াদ নাসের |
চিত্রগ্রাহক | আবু সাইয়ীদ |
সম্পাদক | সুজন মাহমুদ |
প্রযোজনা কোম্পানি | আঙ্গিক কমিউনিকেশনস |
মুক্তি |
|
দৈর্ঘ্য | ৮৫ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
ছবিটির মূল বিষয়বস্তু হল জঙ্গিবাদ। ছবিটি ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ঢাকা ও রাজশাহীতে মুক্তি পায়।[2] চলচ্চিত্রটি ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাশিয়ার কাজান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-এ প্রতিযোগিতা বিভাগে প্রদর্শিত হয়।[3]
কাহিনী সংক্ষেপ
কোন এক দূর গ্রামে এক বৃদ্ধা তার একমাত্র নাতীর ফিরার অপেক্ষায় দিন গুনছে। তার নাতী রবিউল শহরে থাকে। তার ইচ্ছা সে একদিন বড় গায়ক হবে। শহর থেকে কেউ গ্রামে ফিরলে সে তাকে জিজ্ঞাসা করে তার নাতীর খোঁজ জানে কিনা। তার শত অনুরোধের পর তার এক প্রতিবেশী তার নাতীর কাছে একটি চিঠি লিখে। চিঠিতে তাকে নিয়ে তার দাদীর উদ্বেগের কথা জানায়।
অপরদিকে রঞ্জু একই শহরে একটি কলেজে পড়ে। সে একটি ইসলামী জঙ্গী দলের সদস্য। তারই এক বোমা হামলায় নিহত হয় রবিউলসহ আরও অনেকে। রঞ্জুর পিতামাতা তার এই কুকীর্তির কথা জানতে পারে। অন্যদিকে দাদী একমাত্র নাতীর মৃত্যুর শোকে স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে যায়। সে তার নাতীর মৃত্যুর কথা ভুলে যায় এবং একের পর এক চিঠি লিখে তার নাতীর কাছে। শুরু হয় তার নাতী ফিরে আসার অন্তহীন অপেক্ষা। রঞ্জুর পিতামাতাও রঞ্জুর খোঁজ করে।
কুশীলব
- মিরানা জামান - রবিউলের দাদী
- জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় - রঞ্জুর বাবা
- তিনু করিম
- উজ্জ্বল মাহমুদ
- মিঠু বর্মণ
- নার্গিস - রঞ্জুর মা
- আহসানুল হক মিনু
- কামাল আহমেদ
- শরীফ খান
- জ্যামি জুয়েল
- মোহাম্মদ বারী
- খোরশেদ আহমেদ
- শাহরিয়ার খান
নির্মাণ
২০০৬ সালে পরিচালক আবু সাইয়ীদ চলচ্চিত্রটি নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। ২০০৯ সালে চিত্রনাট্য লেখা সম্পন্ন করে। ২০১০ সালের মার্চ থেকে বগুড়ার ধুনট অঞ্চলে ছবিটির শ্যুটিং শুরু হয় এবং শ্যুটিং চলে টানা ২৮ দিন।[2] এর আগেও তিনি তার ৩টি চলচ্চিত্র কিত্তনখোলা, শঙ্খনাদ ও বাঁশির শ্যুটিং ধুনটে করেন। এ প্রসঙ্গে আবু সাইয়ীদ বলনে, এটা আমার নিজের এলাকা। তাই কাজ করতে খুব স্বচ্ছন্দ অনুভব করি।[1] তার আগের নির্মিত ৫টি চলচ্চিত্র ৩৫মিমি সেলুলয়েডে নির্মাণ করেন। ফলে এটি তার নির্মিত প্রথম ডিজিটাল ফরম্যাটের চলচ্চিত্র।[2]
মুক্তি
অপেক্ষা চলচ্চিত্রটি ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ঢাকার বলাকা ও রাজশাহীর উপহার সিনেমা হলে সীমিত পরিসরে মুক্তি পায়।[2]
চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ
- কাজান আন্তর্জাতিক চলচ্চত্র উৎসব, রাশিয়া, সেপ্টেমর, ২০১১[4]
- বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক চলচ্চত্র উৎসব, ভারত
- থার্ড আই এশীয় চলচ্চিত্র উৎসব, মুম্বাই, ভারত
- শিকাগো দক্ষিণ এশীয় চলচ্চিত্র উৎসব, যুক্তরাষ্ট্র
- চেন্নাই আন্তর্জাতিক চলচ্চত্র উৎসব, ভারত
হোম ভিডিও
২০১৫ সালের ৪ অক্টোবর জি সিরিজের ব্যানারের অপেক্ষা ছবিটির ডিভিডি প্রকাশ করা হয়।[5]
মূল্যায়ন
সমালোচকদের প্রতিক্রিয়া
দ্য ডেইলি স্টারের জামিল মাহমুদ বলেন আবু সাইয়ীদ ছবিতে ধর্মের নামে জঙ্গিবাদের বিষয়বস্তু তুলে ধরেছেন। তবে ছবির দুই প্রধান চরিত্রে রবিউল ও রঞ্জুর মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করতে পারেন নি। দর্শক অনেকটা সময় পর বুঝতে পারে আসলে রবিউলের মৃত্যুর জন্য রঞ্জু দায়ী।[6]
সম্মাননা
- মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, ২০১১
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক (সমালোচক পুরস্কার) - আবু সাইয়ীদ
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী - পুরুষ (সমালোচক পুরস্কার) - জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় (যৌথভাবে চঞ্চল চৌধুরীর সাথে)
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী - নারী (সমালোচক পুরস্কার) - মিরানা জামান (যৌথভাবে রাবেয়া আক্তার মনির সাথে)
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- "আবু সাইয়ীদের নতুন ছবি 'অপেক্ষা'"। দৈনিক প্রথম আলো। ৩০ মার্চ ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০১৭।
- "আবু সাইয়ীদের অপেক্ষা মুক্তি পাচ্ছে ৩১ ডিসেম্বর"। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ৩১ ডিসেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০১৭।
- "কাজান চলচ্চিত্র উত্সবে 'অপেক্ষা'"। দৈনিক প্রথম আলো। ৫ সেপ্টেম্বর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০১৭।
- "কাজান চলচ্চিত্র উৎসবে 'অপেক্ষা'"। দৈনিক কালের কণ্ঠ। ৭ সেপ্টেম্বর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০১৭।
- "ডিভিডিতে আবু সাইয়ীদের ৬ ছবি"। দৈনিক যুগান্তর। ৪ অক্টোবর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০১৭।
- মাহমুদ, জামিল (৭ জানুয়ারি ২০১১)। "REVIEW - Opekkha: A Long Wait in Uncertainty"। দ্য ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০১৭।