তেতুলিয়া উপজেলা
তেতুলিয়া বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার অন্তর্গত বাংলাদেশের সর্বউত্তরের একটি উপজেলা। এখানে রয়েছে ভারতের মহানন্দা নদী। এখানে রয়েছে ডাকবাংলো। আরো রয়েছে চা পাতা। সরদার পারা গ্রামে আছে বাংলা টি কোম্পানি
তেতুলিয়া | |
---|---|
উপজেলা | |
![]() ![]() তেতুলিয়া | |
স্থানাঙ্ক: ২৬°২৯′ উত্তর ৮৮°২১′ পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | রংপুর বিভাগ |
জেলা | পঞ্চগড় জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ১৮৯.১২ কিমি২ (৭৩.০২ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• মোট | ১,২৪,০৪১ |
• জনঘনত্ব | ৬৬০/কিমি২ (১৭০০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৫০৩০ ![]() |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৫৫ ৭৭ ৯০ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
অবস্থান ও আয়তন
তেতুলিয়া উপজেলা ২৬°২৪' ও ২৬°৩৮' উত্তর অক্ষাংশে এবং ৮৮°২০' ও ৮৮°৩২' পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, পূর্বে পঞ্চগড় সদর উপজেলা। তেতুলিয়ার আয়তন ১৮৯.১২ বর্গকিলোমিটার।
প্রশাসনিক এলাকা
তেতুলিয়া উপজেলায় সাতটি ইউনিয়ন আছে। ইউনিয়ন গুলো হচ্ছেঃ- ১নং বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন, ২নং তিরনইহাট ইউনিয়ন, ৩নং তেতুলিয়া ইউনিয়ন ৪নং শালবাহান ইউনিয়ন, ৫নং বুড়াবুড়ি ইউনিয়ন, ৬নং ভজনপুর ইউনিয়ন, এবং ৭নং দেবনগর ইউনিয়ন।[2]
ইতিহাস
এ উপজেলা বাংলাদেশের প্রাচীনতম থানারগুলোর মধ্যে একটি থানা। ইংরেজ আমলে এ থানা ভারতের জলপাইগুড়ির অধীনে ছিল। [3] প্রশাসন তেতুলিয়া থানা সৃষ্টি ১৮৫৭ সালে এবং থানাকে উপজেলা রুপান্তর করা হয় ১৯৯৩ সালে। ৭টি ইউনিয়ন ২৪২টি গ্রাম নিয়ে তেতুলিয়া গঠিত।প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৪২ সালের ভূমিকম্প ও ১৯৬৮ সালের বন্যায় এ উপজেলার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
জনসংখ্যা
মোট ১,২৪,০৪৩ জন , নারী ৬১,২২৪ জন , পুরুষ ৬২,৮১৯ জন । এ উপজেলায় সাঁওতাল, রাজবংশী প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
অর্থনীতি
প্রধান কৃষি ফসলাদি ধান, পাট, গম, আখ, আলু, রসুন, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি কাউন, যব, সরিষা, মিষ্টি আলু, অড়হর, তিসি।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজ, পেঁপে, আনারস, কমলা।
.jpg)
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য তরমুজ, আনারস, কাঁঠাল, পেঁপে, রসুন, পাথর, চা।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬১.৭২%, অকৃষি শ্রমিক ১৬.০১%, ব্যবসা ৮.৮৪%, পরিবহন ও যোগাযোগ ২.৩৩%, চাকরি ৪.৩৮%, নির্মাণ ০.৪৬%, ধর্মীয় সেবা ০.০৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৯% এবং অন্যান্য ৬.০৮%।
প্রাকৃতিক সম্পদ কাঁচবালি, বোল্ডার পাথর, চিপপাথর, নুড়িপাথর।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮১.২৪%, পুকুর ০.৮১%, ট্যাপ ০.৪৯% এবং অন্যান্য ১৭.৪৬%।
আরও তথ্য
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৬, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ১৬, লাইব্রেরি ১, সঙ্গীত নিকেতন ১, সিনেমা হল ১, নাট্যগোষ্ঠী ১।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
শিক্ষার হার ৩৯%; পুরুষ ৪৪.১%, মহিলা ৩৩.৫%। কলেজ ৪ টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৭টি, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৭ টি, কিন্ডার গার্টেন ৩ টি, মাদ্রাসা ১১ টি
নদীসমূহ
তেতুলিয়া উপজেলায় প্রায় ৪টি নদী রয়েছে। নদীগুলো হচ্ছে করতোয়া নদী, গোবরা নদী, ডাহুক নদী, এবং মহানন্দা নদী।[4][5]
প্রাচীন নিদর্শন ও দর্শনীয় স্থান
- তেঁতুলিয়া পিকনিক কর্ণার
- ডাহুক বনভোজন কেন্দ্র
- রৌশনপুর আনন্দধারা ও চা বাগান
_(01.03.2019).jpg)
- বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট ও স্থলবন্দর
- ভজন পুর ও তেতুলিয়া মধ্যবর্তী বুড়াবুড়ি নামক স্থানে একটি দুর্গের ভগ্নাংশের
- ভদ্রেশ্বর মন্দির, শিবমন্দির ও গ্রিক ভাস্কর্ষ রীতিতে নির্মিত দুটি সমাধিসম্ভ
- থানার সীমানা ঘেসে চলে যাওয়া মহানন্দা নদীর তীরে দাড়িয়ে কাঞ্চনজঙ্গা পর্বত দেখা যায়।[6]
বাংলাদেশের তেল বিতর্ক ও তেতুলিয়া
বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জ্বালানি তেলের খনির অবস্থান উত্তরাঞ্চলের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া উপজেলার শালবাহান গ্রাম। ১৯৮৬-৮৭ অর্থবছরে সন্ধান মেলে জ্বালানি কেরোসিন তেলের খনির। সে সময় পেট্রোলিয়াম ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের অধীনে অনুসন্ধান চালানো হয় দেশের উত্তরের নীলফামারী, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম ও পঞ্চগড় জেলায়। পঞ্চগড় জেলার তেতুলিয়া উপজেলায় ৫ হাজার পয়েন্ট গভীরে এ খনির অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। পরবর্তীতে ফরাসি কোম্পানি অনুসন্ধান চালায়। টানা দু’বছর ধরে অনুসন্ধান শেষে বিশেষজ্ঞ দল নিশ্চিত হয় তেতুলিয়া উপজেলায় ৯০০ মিটার গভীরে রয়েছে উত্তোলনযোগ্য জ্বালানি তেল। শালবাহান এলাকার কূপ খননের জন্য শেল (পেট্রোলিয়াম কোম্পানি) বিদেশী কোম্পানি ফরাসল-এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে খনির কূপ খনন কাজ শুরু করে। ১৯৮৮-৮৯ সালের জাতীয় বাজেটে ৩৫ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ দেয়া হয়। ১৯৮৮ সালের ১০ এপ্রিল তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রধান এরশাদ আনুষ্ঠানিকভাবে খনির তেল উত্তোলনের কাজ উদ্বোধন করেন। অজ্ঞাতকারণে এক সপ্তাহের মধ্যেই খনি থেকে তেল উত্তোলন বন্ধ করে দেয়া হয়। কেউ কেউ দাবী করেন ভারতের চাপের মুখে তৎকালীন সরকার এ কুপ হতে তেল উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। [7][8]
তথ্যসূত্র
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে তেতুলিয়া"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারী ২০১৫।
- তেতুলিয়া তথ্য বাতায়ন
- জাতিসংঘ পাতা
- ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ৪০৫।
- মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ৬১৭। আইএসবিএন 984-70120-0436-4।
- সাপ্তাহিক এর ওয়েব পৃষ্ঠা
- RAW in Bangladesh