সৈয়দপুর উপজেলা
সৈয়দপুর বাংলাদেশের নিলফামারী জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
সৈয়দপুর | |
---|---|
উপজেলা | |
![]() ![]() সৈয়দপুর | |
স্থানাঙ্ক: ২৫°৪৬′৪০″ উত্তর ৮৮°৫৩′৪২″ পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | রংপুর বিভাগ |
জেলা | নীলফামারী জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ১২১.৬৮ কিমি২ (৪৬.৯৮ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• মোট | ২,৬৪,৪৬১ |
• জনঘনত্ব | ২২০০/কিমি২ (৫৬০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৪৮.৫১% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৫৫ ৭৩ ৮৫ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
অবস্থান
নীলফামারী জেলাস্থ সৈয়দপুর উপজেলার পূর্বে কিশোরগঞ্জ উপজেলা ও রংপুর জেলার তারাগঞ্জ উপজেলা, উত্তরে নীলফামারী সদর উপজেলা, পশ্চিমে দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলা ও চিরিরবন্দর উপজেলা এবং দক্ষিণে পার্বতীপুর উপজেলা অবস্থিত।
আয়তন ১২১.৬৮ বর্গ কিলোমিটার। ভৌগোলিক অবস্থান অক্ষাংশ ২৫°৪৪ উত্তর এবং ২৬°১৯ উত্তর; দ্রাঘিমাংশ ৮৮°৪৪ পূর্ব এবং ৮৯°১২ পূর্ব।
প্রশাসনিক এলাকা
সৈয়দপুর উপজেলা ১টি পৌরসভা ও ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।
পৌরসভা:
ইউনিয়ন সমূহ:
- কামারপুকুর ইউনিয়ন
- কাশিরাম বেল পুকুর ইউনিয়ন
- বাঙ্গালীপুর ইউনিয়ন
- বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন
- খাতামধুপুর ইউনিয়ন
ইতিহাস
সৈয়দপুর থানা একটি অনেক পুরাতন থানা। ১৯১৫ সালে সৈয়দপুর থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। অধিকাংশদের মতে ভারত বর্ষের কুচ বিহার থেকে আগত মুসলিম সাইয়্যেদ পরিবার প্রথমে এ অঞ্চলে বসবাস শুরু করেন। উক্ত সাইয়্যেদ পরিবারের নামানুসারে প্রথমতঃ সাইয়্যেদপুর পরে সৈয়দপুর নামকরণ করা হয়। বিগত ০৭/১১/৮২ তারিখে মান উন্নীত থানা হিসেবে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়। এ উপজেলার আয়তন ১২১.৬৮ বর্গ কিঃ মিঃ। ২০০১ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী মোট লোক সংখ্যা - ২,৩২,২০৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ-১,২১,৬২৮ জন এবং মহিলা- ১,১০,৫৮১ জন। শিক্ষার হার ৪৮.৫১%। তদানিমতন পূর্ব পাকিস্তান আমলে সৈয়দপুর সিটি টাউন ছিল। কালের চক্রে তাহা বিলুপ্ত হইয়াছে। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে সিটি টাউনের চেয়েও কাজে কর্মে জেলা শহরের রুপ নিয়াছে। সৈয়দপুরে বিভাগ পূর্ব ভারত বর্ষের বিহার, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, আসাম, পশ্চিম বাংলা, রাজস্থান, কাশ্মিরের লোকজন স্থায়ীভাবে এখানে এসে বসবাস করছে। এখানে রয়েছে বিভিন্ন ভাষাভাষি মানুষের একত্রে বসবাস।
অন্যান্য উপজেলা থেকে সৈয়দপুর একটি ব্যতিক্রমধর্মী উপজেলা । এ উপজেলার অধিকাংশ লোকজন শহর এলাকায় বসবাস করে।
এ শহরে একটি সেনানিবাস এবং বাংলাদেশের একমাত্র ই.এম.ই সেন্টার ও স্কুল আছে। এখানে একটি বিমান বন্দরও আছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি বিভাগ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি উপ-বিভাগ রয়েছে। একটি ছোট আকারে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রও রয়েছে। এখানে একটি বিসিক শিল্প এস্টেট রয়েছে। যেখানে পুরো এলাকা জুড়েই শিল্প কারখানা স্থাপিত হয়েছে এবং বর্তমানে চালু রয়েছে। এ এস্টেট সম্প্রসারণের জন্য ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জোর দাবী রয়েছে।
রেলওয়েকে কেন্দ্র করে এ শহর গড়ে উঠলেও সময়ের বিবর্তনে এ শহর উত্তরাঞ্চলের অন্যতম প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। পরিবহনের ক্ষেত্রে সৈয়দপুর বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুরসহ ৮টি জেলার করিডোর বা নার্ভ সেন্টার হিসেবে পরিচিত।[2]
জনসংখ্যার উপাত্ত
উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২,৬৪,৪৬১ জন, তন্মধ্যে পুরুষ ১,৩৩,৭৩৭ জন, নারী ১,৩০,৭২৪ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২,১৭৪ জন।[3]
শিক্ষা
শিক্ষা ক্ষেত্রে এই উপজেলা অতি উন্নত। পার্শ্ববর্তী সকল উপজেলা এমনকি জেলা সদর থেকেও এটি উন্নত।এখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো বরাবরই দিনাজপুর বোর্ডে শীর্ষ স্থান দখল করে।এখানের উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো হলো,বাংলাদেশ আর্মি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,সৈয়দপুর,সৈয়দপুর সরকারি কলেজ,সৈয়দপুর,সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি মহাবিদ্যালয় , ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, সৈয়দপুর , লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ, সৈয়দপুর ,সানফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজ,সৈয়দপুর, ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হাই স্কুল, সৈয়দপুর, লক্ষনপুর স্কুল এন্ড কলেজ,সৈয়দপুর।
অর্থনীতি
অধিবাসীদের অধিকাংশই ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন ব্যবসা ও শিল্প কারখানায় শ্রমিক ও কারিগর। গ্রামাঞ্চলের জনসাধারণের প্রধান পেশা কৃষি। উৎপন্ন ফসলের মধ্যে আমন ও বোরো ধান ছাড়াও গম, আলু ও অন্যান্য সবজিই প্রধান।

রেলওয়ে কারখানা
মূলত রেলওয়ে কারখানাকে কেন্দ্র করে সৈয়দপুর শহরের গোড়া পত্তন হয়েছিল। এ রেলওয়ে কারখানাটি ১৮৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। অধিবাসীদের অধিকাংশই ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন ব্যবসা ও শিল্প কারখানায় দক্ষ শ্রমিক ও কারিগর। এদের উৎপাদিত সামগ্রী দেশ ও বিদেশে সমাদৃত হয়েছে। রেলওয়ে সূত্রমতে ১৮৭০ সালে তৎকালীন আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের বৃহত্তম এ কারখানাটি গড়ে ওঠে। এর পাশেই একই সময় প্রায় ১৮ একর জমির উপর গড়ে তোলা হয় গুরুত্বপূর্ণ সেতু কারখানাটি (ব্রিজ ওয়ার্কশপ)। এর উদ্দেশ্য হলো সারাদেশের রেলপথে যেসব ব্রিজ, কালভার্ট রয়েছে তার উপকরণ, নির্মাণ ও স্থাপন এবং সরবরাহকরণ। এই সেতু কারখানাটির মাধ্যমে পশ্চিমাঞ্চল প্রায় দুই হাজার সেতু কালভার্ট মেরামত হচ্ছে। এর অন্যতম হলো পাবনার পাকশীতে অবস্থিত রেলওয়ে স্থাপনা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালমনিরহাটের তিস্তা রেল সেতু। বর্তমানে ওই কারখানাটিতে কাজ হয় রেল সেতুর গার্ডার নির্মাণ, রেলওয়ে স্থাপনার জন্য পানির ট্যাংক নির্মাণ, রেললাইনের জন্য পয়েন্ট অ্যান্ড ক্রেসিং ও ট্যাঙ্ক রেল সেটআপ এবং হার্ডিঞ্জ সেতুর জন্য এক্সপাঞ্জ সুইচ নির্মাণ। এছাড়াও সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ওই সেতু কারখানায় রেলের সেতু ও কালভার্ট মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ অব্যাহত রয়েছে।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। "এক নজরে সৈয়দপুর"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - http://syedpur.nilphamari.gov.bd/node/124412%5B%5D সৈয়দপুর উপজেলা তথ্য বাতায়ন
- "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (PDF)। ১৩ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১২।