কুলাউড়া উপজেলা
কুলাউড়া উপজেলা বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। ১৯৮২ সালে কুলাউড়া উপজেলায় উন্নীত হয়।[2][3] বর্তমানে এটি একটি পৌরসভা।
কুলাউড়া | |
---|---|
উপজেলা | |
কুলাউড়া কুলাউড়া | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৫২′৬″ উত্তর ৯২°৩′৩৩″ পূর্ব | |
দেশ | |
বিভাগ | সিলেট বিভাগ |
জেলা | মৌলভীবাজার জেলা |
সরকার | |
আয়তন | |
• মোট | ৫৪৫.৭৩ কিমি২ (২১০.৭১ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• মোট | ৩,৬০,১৯৫ |
• জনঘনত্ব | ৬৬০/কিমি২ (১৭০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৫৮% (প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর), ৪৬.২% (আদমশুমারি ২০১১) |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৩২৩০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৬০ ৫৮ ৬৫ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও আয়তন
কুলাউড়া উপজেলার অবস্থান ২৪.৫১৬৭ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ থেকে ৯২.০৩৩৩ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত। আয়তন ৬৭৯.২৫ বর্গ কিলোমিটার (২৬২ বর্গ মাইল)। কুলাউড়ার উত্তরে বড়লেখা, জুড়ি ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে রাজনগর ও কমলগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা ও আসাম রয়েছে।[3]
প্রশাসনিক এলাকা
২০০১ খ্রিষ্টাব্দের আদমশুমারি অনুযায়ী উপজেলা শহর ৪টি মৌজা, ৯টি ওয়ার্ড এবং ২৬টি মহল্লার সমন্বয়ে গঠিত।[3] ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে কুলাউড়াকে ১৭টি ইউনিয়নে আলাদা করা হয়[2]:
নামকরনের ইতিহাস
শাহা হেলিম উদ্দিন কোরেশী নামক গ্রন্থ থেকে জানা যায় মোঘল সুবাদার এর কাছ থেকে দেওয়ানী পাওয়ার পর মনসুর গ্রামের প্রখ্যাত দেওয়ান মামন্দ মনসুরের পিতামহ মামন্দ মনোহরের ভ্রাতা মামন্তদ কুলাঅর কুমার থাকাবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন। তার মৃত্যুর পর মামন্দ মনোহর ভ্রাতার স্মৃতি রক্ষার্থে নিজ জমিদারির পূর্বাংশে একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করে নাম রাখেন কুলঅরার বাজার’’। কালক্রমে “কুলঅরার বাজার থেকে কুলাউড়া” নামকরণ করা হয়েছে।
ভূপ্রকৃতি
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হাওর হাকালুকির বেশিরভাগ অংশ কুলাউড়ার অধীনে। এছাড়াও লংলিয়া, গোয়ালজোর ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য হাওর। মনু সবচেয়ে বড় ও প্রধান নদী। হাওর আর নদী ছাড়া এই অঞ্চলের বেশিরভাগ স্থানই সমতল। তাছাড়া উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা জুড়ে পাহাড়ি বন বিস্তৃত যা কুলাউড়া পাহাড় নামে পরিচিত। পাহাড়ী জনপদ রয়েছে যার বৈচিত্রতা পরিলক্ষিত হয়।[2]
অধিবাসী
১১ মার্চ ১৯৯১ | ২২ জানুয়ারি ২০০১ | ১৫ মার্চ ২০১১ |
---|---|---|
৩,৩৯,৬৭৩ জন[3][4] | ৩,৯৫,৮৭৮ জন[4] | ৩,৬০,১৮৫ জন[4] |
২০০১ খ্রিষ্টাব্দের আদমশুমারী অনুযায়ী উপজেলার জনসংখ্যা ৩,৩৯,৬৭৩ জন (২০১১-তে তা হয় ৩,৬০,১৮৫ জন)। তন্মধ্যে ২০০১-এ পুরুষ ৫১.০৯ শতাংশ, এবং নারী ৪৯.৯১ শতাংশ। ২০১১ সালে পুরুষ ৪৮.৮১ এবং নারী ৫১.১৮ শতাংশ। এলাকার জনসংখ্যার সিংহভাগ মুসলমান (৭৪.২১ শতাংশ); এছাড়াও রয়েছেন হিন্দু (২৪.৫৮ শতাংশ), খ্রিস্টান (১.১২ শতাংশ) ধর্মাবলম্বী। অন্যান্য ধর্মাবলম্বী রয়েছেন ০.০৯ শতাংশ। আদিবাসীদের মধ্যে অন্যতম খাসিয়া, মণিপুরী এবং অন্যান্য আদিবাসী সম্প্রদায়, এদের সংখ্যা ৬,১৯৪ জন।[3]
কুলাউড়া উপজেলার জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৬৬০ জন। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২.১০ শতাংশ (পরিবার পরিল্পনা অফিস) বা ১.৩৯ শতাংশ (জাতীয়)। [5]
শিক্ষা
উপজেলায় শিক্ষার হার ৫১.০৮ শতাংশ।
কৃষি
নদী ও হাওরগুলো মৎস্যের প্রধান উৎস। এছাড়া হাওরগুলোতে বিভিন্ন মৌসুমে প্রচুর বোরো, আউশ, আমন, শাইল ধান উৎপাদিত হয়। এছাড়া কুলাউড়া, চা শিল্পের জন্য বিখ্যাত। মৌলভীবাজার জেলায় চা বাগানের সংখ্যা অনুপাতে শ্রীমঙ্গল উপজেলার পরে কুলাউড়ার অবস্থান। কুলাউড়ায় রাবার, কমলা, আনারস, আম, কাঁঠাল এবং বাঁশ উৎপাদিত হয়।
অর্থনীতি
মূলত কৃষি নির্ভর। এছাড়া বিভিন্ন পেশাজীবি সম্প্রদায় রয়েছে। এই উপজেলার অর্থকরি ফসলের মধ্যে চা অন্যতম। এছাড়া রাবারেরও উৎপাদন হয়।[2]
কৃতি ব্যক্তিত্ব
★ আবেদ চৌধুরী — জিন বিজ্ঞানী
★ আব্দুল মজিদ – সম্পাদক দ্যা ডন পত্রিকা (পাকিস্তান)
★ আবুল হাসান রাজু – ক্রিকেটার বাংলাদেশ জাতীয় দল।
★ আলী আমজাদ খান — বিখ্যাত জমিদার ( আলী আমজাদের ঘড়ি তার পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি)
- আব্দুল জব্বার সাবেক সংসদ সদস্য।
- এম এন ইউছুফ সাবেক সংসদ সদস্য।
★ আব্দুল মতিন – ভাষা সৈনিক ১৯৫২।
★ আজম জে চৌধুরী -- বিশিষ্ট শিল্পপতি, ম্যানেইজিং ডিরেক্টর অব বাংলাদেশ প্রাইম ব্যাংক।
★ সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ—সাবেক ডাকসু ভিপি, সাবেক সভাপতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বর্তমান এম.পি (মৌলভীবাজার-০২ আসন)
★শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল -- পরিচালক, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।
★ তানজিল আহমেদ চৌধুরী – পরিচালক, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।
★ নওয়াব আলী আব্বাস খাঁন—সাবেক এম.পি. (মৌলভীবাজার-০২)
★ এমএম শাহীন, প্রেসিডিয়াম সদস্য, বিকল্পধারা বাংলাদেশ ও সাবেক এমপি।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
সড়ক পথে মৌলভীবাজার এবং ওপর দিক থেকে বড়লেখা হয়ে রাজধানী শহর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের সাথে যোগাযোগ রয়েছে। এছাড়া রয়েছে রেল যোগাযোগ। কুলাউড়া রেল জংশন একটি প্রাচীনতম রেল জংশ।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- "এক নজরে"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। জুন ২০১৪। ৭ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১৫।
- Kulaura Upazila, Moulvibazar.com। পরিদর্শনের তারিখ: জানুয়ারি ২১, ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ।
- কুলাউড়া উপজেলা, ছমির উদ্দিন আহমেদ; বাংলাপিডিয়া, সিডি সংস্করণ ২.০.০, ফেব্রুয়ারি ২০০২। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত। পরিদর্শনের তারিখ: জানুয়ারি ২১, ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ।
- Bangladesh ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে (Statistics of Population), GeoHive.com। পরিদর্শনের তারিখ: ২৫ জানুয়ারি ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ।
- "সাধারণতথ্যাদি"। বাংলাদেশ তথ্য বাতায়ন।