বিয়ানীবাজার উপজেলা
বিয়ানীবাজার বাংলাদেশের সিলেট জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।[1]
বিয়ানীবাজার | |
---|---|
উপজেলা | |
![]() বাংলাদেশে বিয়ানীবাজার উপজেলার অবস্থান | |
![]() ![]() বিয়ানীবাজার ![]() ![]() বিয়ানীবাজার | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৪৯′৩০″ উত্তর ৯২°৯′৪৫″ পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | সিলেট বিভাগ |
জেলা | সিলেট জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ২৫১.২২ কিমি২ (৯৭.০০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ২,৫৩,৩৭০ |
• জনঘনত্ব | ১০০০/কিমি২ (২৬০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৫৪.৪০% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৬০ ৯১ ১৭ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
অবস্থান
এ উপজেলার পূর্বে জকিগঞ্জ উপজেলা ও ভারত, দক্ষিণে মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলা, পশ্চিমে গোলাপগঞ্জ উপজেলা, উত্তরে কানাইঘাট উপজেলা।[1]
নামকরণ
বিয়ানীবাজারের পূর্ব নাম ছিল পঞ্চখন্ড। তৎকালীন সময়ে পঞ্চখন্ড গহীন জঙ্গল ও টিলা বেষ্টিত ভূমি ছিল। সিলেটের প্রথম রায় বাহাদুর হরেকৃষ্ণ রায় চৌধুরীর পুত্র কৃষ্ণ কিশোর পাল চৌধুরী এখানে একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কিন্তু হিংস্র জীবজন্তুদের ভয়ে লোকজন সকালবেলা (স্থানীয়ভাষায়ঃ বিহানে) বাজার শেষ করে নিজ নিজ আশ্রয়ে ফিরতেন। বিহানবেলা এই হাট বসতো তাই এর নাম হলো বিহানীবাজার যা কালের আবর্তণে বিয়ানীবাজার নাম ধারণ করে।[1][2]
ইতিহাস
১৭৬৫ সালে মোঘল অধিকৃত সিলেট ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৭৮২ সালের ৩ জানুয়ারী সিলেট ঢাকা প্রশাসন স্বতন্ত্র হয়ে পড়ায় সিলেটকে ১০টি রাজস্ব জেলায় বিভক্তির সুপারিশ করা হয়। বিয়ানীবাজার লাতু রাজস্ব জেলার অন্তভূক্ত হয়। ১৮৭৪ সালে ১২ সেপ্টেম্বর সিলেটকে আসামের সাথে সংযুক্ত করা হয়। আসাম ভূক্তির পর ১৮৭৮ সালে করিমগজ্ঞ মহকুমা সৃষ্টি করা হলে বিয়ানীবাজার করিমগজ্ঞ মহকুমার অন্তভূক্ত হয়। ১৭৯৩সালের ২২শে মে লর্ড কর্ণওয়ালিসের সময় থানা ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হলে জলঢুপ(বর্তমানে থানা বাজার নামে পরিচিত) থানা প্রতিষ্টিত হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্ত হলে বিভক্ত ভারতের কোন অংশে সিলেট যোগদান করবে তা নির্ধারণের জন্য গণভোট হয়। ৬ ও ৭ জুলাই দু’দিনের গণভোটে সিলেটবাসী পাকিস্তানের পক্ষে রায় দেয়। কিন্ত গণরায়কে উপেক্ষা করে রেড ক্লিফের রোয়েদাদ করিমগজ্ঞ মহকুমার মুসলিম প্রধান তিনটি থানা (পাথার কান্দি,রাতাবাড়ি,বদরপুর ও করিমগঞ্জের অধিকাংশ অঞ্চল) পাকিস্থানের হাত ছাড়া হয়ে ভারতে থেকে যায়। এদিকে পাকিস্তান সৃষ্টির পূর্বে সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার ও মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা থানাকে নিয়ে ’জলঢুপ’ নামে একটি থানা গঠিত হয়। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পূর্বে ১৯৪০ সালের ২৮ মে সরকারী নোটিফিকেশনএর মাধ্যমে জলঢুপ’ থানাকে ভেঙ্গে বিয়ানীবাজার ও বড়লেখা নামে দু’টি থানা প্রতিষ্টা লাভ করে। সেখান থেকেই এই ’ বিয়ানীবাজার’ স্বতন্ত থানা হিসাবে পরিচিত হয়।পরে ১৯৮৩ সালের ১ আগষ্ট তৎকালীন স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রী জেনারেল শামসুল হক আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ানীবাজারকে উপজেলায় উন্নীত করেন।[1]
প্রশাসনিক এলাকা
বিয়ানীবাজার উপজেলায় ১টি পৌরসভা।
ইউনিয়ন পরিষদ ১১টি। নির্বাচনী এলাকা - ২৩৪- (সিলেট-০৬)। মৌজা - ১৪৪ টি।[2]
জনসংখ্যার উপাত্ত
জনসংখ্যা -২,৫৩,৩৭০জন (২০১১ এর আদম শুমারী অনুযায়ী) জনসংখ্যার ঘনত্ব - ৮৩৯। [1]
শিক্ষা
- কলেজ - সরকারী - ০১ টি, বেসরকারী- ০৪ টি।
- মাধ্যমিক বিদ্যালয় - ৩৫টি।
- প্রাথমিক বিদ্যালয় - সরকারীঃ ১১৩ টি, বেসরকারীঃ রেজি: ১৮টি ও নন রেজি: ১০টি, স্বল্প ব্যায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ঃ ৬টি।
- মাদ্রাসা - সিনিয়রঃ - ১টি, কওমিঃ - ১০টি, দাখিলঃ - ৫টি, ইবতেদায়ীঃ - ৩৮টি, ফোরকানিয়াঃ - ৩২৫টি, হাফিজিয়াঃ - ১৩টি।
হাসপাতাল ও ক্লিনিক
- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
- বিয়ানীবাজার ক্যান্সার ও জেনারেল হাসপাতালে
দর্শনীয় স্থান
- সুতারকান্দি স্থল বন্দর
- মালিক মহল
- বি.ডি.আর ক্যাম্প
- মুড়িয়ার হাওর
- জামিয়া মাদানিয়া আঙ্গুরা মুহাম্মদপুর।
- হযরত গোলাবশাহ হাফিজিয়া মাদ্রাসা (ইমামবাড়ী)
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
- প্রমথ নাথ দাস -বিয়ানীবাজারের প্রজাপালক জমিদার।
- খান বাহাদুর ডা. মৌলভী মুরাকীব আলী খান (১৯০৪-১৯৭১) মাথিউরার প্রথম ব্রিটিশ ভারতীয় সিভিল সার্ভিসেস ভেটেরিনারি সার্জন৷
- গোবিন্দ চন্দ্র দেব - (১৯০৭-১৯৭১), স্বাধীনতা পদক (মরণোত্তর) প্রাপ্ত, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মানবতাবাদি, দার্শনিক, শহীদ বুদ্ধিজীবি।
- শহীদ মনু মিয়া- স্বাধিকার আন্দোলনের শহীদ।
- তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী- (বীর বিক্রম), মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা।
- কমরেড অজয় ভট্রাচার - ১৯৪৯ সালের ১৮ আগষ্ট তার নেতৃত্বে সংঘটিত নানকার কৃষক বিদ্রোহের ফলে জমিদারী বৃটিশ আমলের ঘৃণ্য নানকার প্রথা রদ ও জমিদারী প্রথার অবসান হয়েছিল।
- সাহাব উদ্দিন - বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার (১৯৭২-২০০৭) - বিয়ানীবাজার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ
- জেনারেল শামসুল হক, সাবেক মন্ত্রী, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ (১৯৮৩)।
- নুরুল ইসলাম নাহিদ - সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী।
- সেলিম উদ্দিন - জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় হুইপ, সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনের সংসদ সদস্য।
- শায়খ যিয়া উদ্দীন, মহাপরিচালক - জামিয়া মাদানিয়া আঙ্গুরা মুহাম্মদপুর
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- "এক নজরে বিয়ানীবাজার উপজেলা"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২ জুলাই ২০১৯। ২ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০১৯।
- "বিয়ানীবাজার উপজেলা"। বাংলাপিডিয়া। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। ২ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০১৯।
বহিঃসংযোগ
- বাংলাপিডিয়া
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বিয়ানীবাজার উপজেলা