মাধবপুর উপজেলা
মাধবপুর উপজেলা বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। সোনাই নদীর তীরে অবস্থিত মাধবপুর উপজেলাটি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম পীঠস্থান; এখানেই স্বাধীনতা যুদ্ধের সাংগঠনিক কাঠামো সম্পর্কিত প্রথম বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় এবং এর ফলশ্রুতিতে সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টর ও ৩টি ব্রিগেড ফোর্সে বিভক্ত করে সূচিত হয় আনুষ্ঠানিক প্রতিরোধ যুদ্ধের।[2][3]
মাধবপুর | |
---|---|
উপজেলা | |
মাধবপুর মাধবপুর | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৬′৪″ উত্তর ৯১°১৭′৪৭″ পূর্ব | |
দেশ | |
বিভাগ | সিলেট বিভাগ |
জেলা | হবিগঞ্জ জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ২৯৫ কিমি২ (১১৪ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৩,১৯,০১৬[1] |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৪০% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৩৩৩০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৬০ ৩৬ ৭১ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও আয়তন
সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলা সদর হতে ৪৯ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত মাধবপুর উপজেলাটির আয়তন ২৯৫ বর্গ কিলোমিটার;[1] যার উত্তরে হবিগঞ্জ সদর ও লাখাই উপজেলা, দক্ষিণে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর উপজেলা ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, পূর্বে চুনারুঘাট উপজেলা ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য এবং পশ্চিমে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর ও নাসিরনগর উপজেলা অবস্থিত।[4] মাধবপুর উপজেলার ভৌগোলিক অবস্থান ২৪°১০২৮’ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°২৯১৭’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে।[5] সোনাই ও বোয়ালিয়া - এই উপজেলার প্রধান দুটি নদী।[6]
ইতিহাস
১৮০৪ সালে প্রথম মাধবপুর থানা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং মাধবপুর থানা থেকে ১৯৮৩ সালের ১ আগষ্ট তারিখে উপজেলায় উন্নীত হয়।
নামকরণ
মুক্তিযুদ্ধে মাধবপুর
তেলিয়াপাড়ার যুদ্ধ - ৪ এপ্রিল, ১৯৭১ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের উধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা তেলিয়াপাড়ায় ২য় ইষ্ট বেঙ্গলের সদরদপ্তরে সমবেত হন। চা বাগান পরিবেষ্টিত পাহাড়ী এ অঞ্চলে জেনারেল এম এ জি ওসমানী, লে: কর্ণেল আব্দুর রব, লে: কর্ণেল সালাউদ্দিন মোহাম্মদ রেজা, মেজর কাজী নুরুজ্জামান , মেজর খালেদ মোশাররফ, মেজর নুরুল ইসলাম, মেজর শাফায়াত জামিল , মেজর মইনুল হোসাইন চৌধুরীসহ অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন সেদিন। সেদিনের সভায় চারজন সিনিয়র অফিসারকে যুদ্ধকালীন কর্মক্ষেত্র ভাগ করে দেয়া হয়; সিলেট-বাহ্মণবাড়ীয়া এলাকায় মেজর শফিউল্লা, কুমিল্লা-নোয়াখালী এলাকায় মেজর খালেদ মোশাররফ, চট্টগ্রাম-পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় মেজর জিয়াউর রহমান এবং কুষ্টিয়া-যশোর এলাকায় মেজর আবু ওসমান চৌধুরীকে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য দায়িত্ব প্রদান করা হয়। এই সভাতেই মুক্তিবাহিনী সাংগঠনিক ভাবে পরিপুষ্ট হয়ে উঠে এবং জেনারেল এম এ জি ওসমানীর নেতৃত্ব গ্রহণ করা হয়।
ভৌগোলিক উপাত্ত
ভূপ্রকৃতি
মৃত্তিকা
নদ-নদী
মাধবপুর উপজেলাটি সোনাই নদীর তীরে অবস্থিত। এছাড়াও রয়েছে বোয়ালিয়া নদী।
সাংষ্কৃতিক বৈশিষ্ঠ্য
উরিস্সাা,দেসুয়ালি, বিহারি,ভুজপুরি
উৎসব
খেলাধুলা
প্রশাসনিক এলাকা
১৮১টি মৌজা ও ২৮৮টি গ্রাম নিয়ে গঠিত মাধবপুর উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়ন রয়েছে;[7] এগুলো হলোঃ
- পৌরসভা - মাধবপুর।
- ইউনিয়ন
- আদাঐর
- আন্দিউরা
- চৌমুহনী
- ছাতিয়াইন
- জগদীশপুর
- ধর্মঘর
- নোয়াপাড়া
- বাঘাসুরা
- বহরা
- শাহজাহানপুর
- বুল্লা
- নির্বাচনী এলাকা ও জনপ্রতিনিধি
হবিগঞ্জ-৪ নির্বাচনী এলাকার অন্তর্ভুক্ত মাধবপুর উপজেলা।
জনসংখ্যার উপাত্ত
২০১১ সালের আদমশুমারী অনুসারে এই উপজেলায় বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৫৬% এবং মোট জনসংখ্যা ৩,১৯,০১৬ জন (প্রায়); যার মধ্যে ১,৫৫,৮৮২ জন পুরুষ এবং ১,৬৩,১৩৪ জন নারী।[1] এখানে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১,০৮৪ জন লোকের বাস; যারা মোট ৬২,৩০০ টি খানাতে বসবাস করেন।[8] মাধবপুরে মোট ভোটার সংখ্যা ১,৮৭,২৫৫ জন; যার মধ্যে ৯২,৬৫৯ জন পুরুষ এবং ৯৪,৫৯৬ জন মহিলা ভোটার।
- ধর্ম
এখানে ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের মানুষ বসবাস করে। এছাড়াও এখানে রয়েছে চা-জনগোষ্ঠী ও বাউল সম্প্রদায়।
স্বাস্থ্য
- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স - ১টি (৫০ শয্যা বিশিষ্ট);
- উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র - ১৬টি।
শিক্ষা
এখানে শিক্ষার গড় হার ৪০%; পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৪২% এবং মহিলাদের মধ্যে ৩৮%। এখানে রয়েছেঃ
- সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় - ১৪৬টি,
- জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয় - ২টি,
- উচ্চ বিদ্যালয় - ২২টি (সহশিক্ষা - ১৮, বালিকা - ৩, বালক - ১),
- মাদ্রাসা - ৫টি (দাখিল - ৪, আলিম - ১)
- কলেজ - ৭টি (স্কুল এন্ড কলেজ -৪, সহপাঠ - ৩)।
কৃষি
অর্থনীতি
- শিল্প-প্রতিষ্ঠান
যোগাযোগ ব্যবস্থা
- সড়কপথ
- রেলপথ
- মোট রেলপথ -
- রেল স্টেশন - ৩টি।
- নৌপথ
- নদী বন্দর - ২টি।
কৃতী ব্যক্তিত্ব
- মৌলানা. আসাদ আলী - রাজনীতিবিদ, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক;[2]
- ড: মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন (জন্মঃ ১৮ এপ্রিল ১৯৪২) - বাংলাদেশ ব্যাংকের সপ্তম গভর্ণর।
দর্শনীয় স্থান ও স্থাপনা
- সুরমা চা বাগান - তেলিয়াপাড়া;[2]
- মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সৌধ - তেলিয়াপাড়া;[2]
- বাঘাসুরা রাজবাড়ী - বাঘাসুরা;
- শাহ সোলেমান ফতেহগাজী-এর মাজার - শাহজীবাজার;
- ফ্রুটস ভ্যালী - শাহজীবাজার;
- শাহজীবাজার তাপ বিদ্যুৎ উত্পাদন কেন্দ্র - শাহজীবাজার।
- আদাঐর জমিদার বাড়ি
বিবিধ
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার (জুন ২০১৪)। "এক নজরে মাধবপুর"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি ও বেসিস। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৫।
- "যেখানে রণাঙ্গনকে ভাগ করা হয় ১১ সেক্টরে"। দৈনিক মানবজমিন। ৪ এপ্রিল ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৫।
- "তেলিয়াপাড়া দিবস আজ"। দৈনিক যায়যায়দিন। ৪ এপ্রিল ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৫।
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "মানচিত্রে মাধবপুর"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৮ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৫।
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "ভৌগলিক পরিচিতি"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৮ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৫।
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "নদ-নদী"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৮ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৫।
- http://madhabpur.habiganj.gov.bd/site/page/3b55be72-0757-11e7-a6c5-286ed488c766/%E0%A6%87%E0%A6%89%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%A8%20%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%82%E0%A6%B9
- "Area, Households, Population, Density by Residence and Community" (PDF)। Bangladesh Bureau of Statistics (BBS), Government of the People's Republic of Bangladesh। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১১-২২।
বহিঃসংযোগ
উইকিভ্রমণে মাধবপুর উপজেলা সম্পর্কিত ভ্রমণ নির্দেশিকা রয়েছে। |
- বাংলাপিডিয়ায় মাধবপুর উপজেলা
- মাধবপুর উপজেলা - জাতীয় তথ্য বাতায়ন।