লাখাই উপজেলা

লাখাই উপজেলা বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা।[1][2]

লাখাই
উপজেলা
লাখাই
লাখাই
বাংলাদেশে লাখাই উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৪°১৭′৩″ উত্তর ৯১°১২′৪৭″ পূর্ব
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগসিলেট বিভাগ
জেলাহবিগঞ্জ জেলা
প্রতিষ্ঠা১৯৮৪
আয়তন
  মোট১৯৬.৫৬ কিমি (৭৫.৮৯ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০০১)
  মোট১,২০,৬৭৭
  জনঘনত্ব৬১০/কিমি (১৬০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
  মোট২৮.৭৫%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৬০ ৩৬ ৬৮
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

অবস্থান ও আয়তন

তিনটি বিভাগের সীমান্তে অবস্থিত এ উপজেলার উত্তরে আছে সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলা, দক্ষিণে চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাক্ষ্মনবাড়ীয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা এবং হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলা, পূর্বে হবিগঞ্জ সদর উপজেলা, পশ্চিমে ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলা[1][2]

ইতিহাস

ভারত বর্ষের আসাম বেঙ্গল প্রদেশের শেষ সীমানায় ছিল এই অঞ্চল । বর্তমানে লাখাই ইউনিয়নের স্বজনগ্রাম নামক স্থানে ছিল লাখাই আউটপোষ্ট । ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দের ১০ জানুয়ারি তৎকালীন আসাম প্রাদেশিক সরকারের গেজেট নোটিফিকেশন নম্বর ১৭৬ জিকে-র মাধ্যমে লাখাই থানা প্রতিষ্ঠিত হয় মর্মে জানা যায় । তার আগে এ অঞ্চলের সাব রেজিষ্টি অফিস ছিল মাধবপুর উপজেলার চর ভাঙ্গা নামক স্থানে । ১৯৪৭ এর পরে এ অঞ্চলের সাব রেজিষ্ট্রি অফিস হয় হবিগঞ্জ মহকুমায় । ৪৭ এর পরে হবিগঞ্জ মহকুমার অধীনে এ অঞ্চলকে সার্কেল অফিসার রাজস্বের আওতায় আনা হয় । ১৯৬৪ সালে এ অঞ্চলকে সার্কেল অফিসার উন্নয়নের আওতায় আনা হয় এবং স্বজনগ্রাম নামক স্থানে সিও ডেভেলপমেন্ট লাখাই এর কার্যালয় স্থাপন করা হয় । সিও ডেভেলপমেন্ট এর কার্যালয়ের অধীনে অন্যান্য অফিস স্থাপন করা হয় । ১৯৮৩ সালে বিভিন্ন লোকের দরখাস্ত এবং বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের আবেদনের প্রেক্ষিতে লাখাইকে মনোনীত থানায় উন্নীত করা হয় এবং বামৈ ইউনিয়নের ভাদিকারা মৌজার কালাউক নামক স্থানে ১৯৮৩ সালের ১৫ ই এপ্রিল মানোন্নীত থানার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয় । প্রথম উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জনাব বিবেকানন্দ পাল এবং প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বীর মুক্তিযুদ্ধা মরহম মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন । পরবর্তীতে ধীরে ধীরে কালাউক নামক স্থানেই উপজেলা পরিষদের সকল অফিস, বাসভবন প্রতিষ্ঠিত হয় ।[1][2]

নামকরণ

মুক্তিযুদ্ধ

ভূপ্রকৃতি

মৃত্তিকা

নদ-নদী

সাংষ্কৃতিক বৈশিষ্ঠ্য

ভাষা

লাখাই উপজেলা সিলেট বিভাগের অন্তর্ভুক্ত হলেও সিলেটের আঞ্চলিক ভাষার সাথে এই এলাকার ভাষার কোনো মিল নেই । অত্র এলাকার ভাষা অনেক শুদ্ধ, সুন্দর ও মার্জিত (অনেকটা শুদ্ধ)।

উত্সব

খেলাধুলা

জনসংখ্যার উপাত্ত

ক. মোট জনসংখ্যাঃ ১,২০,৬৭৭ জন।

পুরুষ: ৫৯,০২১ জন। মহিলা: ৬১,৬৫৬ জন।

খ. ধর্ম ভিত্তিক জনসংখ্যাঃ

মুসলিম: ১,০১,৫৭৫ জন। হিন্দু :১৯,০৩৩ জন। বৌদ্ধ : ০৬ জন। খ্রিষ্টান : ০৬ জন। অন্যান্য : ৫৭ জন।

গ. ইউনিয়ন ভিত্তিক জনসংখ্যাঃ

লাখাই: ২২,৫৫৮ জন। মুড়াকরি: ২০,১৩৪ জন। মুড়িয়াউক: ১৯,৪০৫ জন। বামৈ: ২১,৮৪৪ জন। করাব: ১৭,৯৮০ জন। বুল্লা: ১৮,৭৫৬ জন।

ঘ. লোকসংখ্যার ঘনত্বঃ

মোট ভোটার সংখ্যাঃ ৮৩,৮৬২ জন পুরুষ ভোটার সংখ্যাঃ ৪১,০৩১ জন মহিলা ভোটার সংখ্যাঃ ৪২,৮৩১ জন বাৎসরিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারঃ পরিবারের(খানার সংখ্যা): ২২,৫২৯ টি।

শিক্ষা

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঃ বেসরকারী কলেজ : ০১টি। বেসরকারী উচ্চ বিদ্যালয় (বালক-বালিকা) : ০৯ টি। বেসরকারী উচ্চ বিদ্যালয় (বালিকা) : ০১ টি। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় : ৫১ টি। রেজিষ্টার্ড বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় : ১৮ টি। কমিউনিটি বিদ্যালয় : ০১ টি। কিন্ডার গার্টেন : ০৫ টি। এর উলল্ল্যাখ যোগ্য- শেখ বানু শাহ, শাহ বায়েজিদ (রহ.) ইসলাম একাডেমী, এনজিও বিদ্যালয় সংখ্যা : ৪২ টি। এবতেদায়ী মাদ্রাসা : ০২ টি। আলিম মাদ্রাসা : ০১ টি। দাখিল মাদ্রাসা : ০১ টি। আনন্দ স্কুল : ৮০ টি। মসজিদ ভিত্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : ২৮ টি।

অর্থনীতি

উপজেলার অধিকাংশ মানুষের পেশা কৃষি । বর্ষা মৌসুমে এদের অনেকেই মৎস্য শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কৃষির পরেই এ অঞ্চলের মানুষের প্রধান পেশা মাছ ধরা । লাখাই উপজেলার বিপুল সংখ্যক মানুষ ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হোটেল ব্যবসা ও শ্রমিকের কাজ করেন। ঢাকা শহরের অধিকাংশ হোটেলে লাখাই উপজেলার শ্রমিকেরা কাজ করে । ঢাকায় অনেক হোটেলও আছে । কেউ কেউ বেল্ট বানিয়ে ঢাকায় বিক্রি করে । ঢাকায় কেউ কেউ পুরাতন জিনিস পত্র, লোহা লক্কর ফেরী করে বেড়ান । এ পেশাকে এ অঞ্চলে বলা হয় ভাংগাড়ির ব্যবসা । বিদেশে বিশেষত গ্রিস, ইতালি, ফ্রান্স, মধ্যপ্রাচ্য, ইংল্যান্ড এসব দেশেও অনেকে কাজ করেন । গ্রিসে বেশী সংখ্যক মানুষ থাকার কারণে এ উপজেলার একটি গ্রামকে গ্রিস গ্রামও বলা হয় । সরকারী চাকুরীজীবির সংখ্যা খুব কম যার অধিকাংশই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত । লাখাই উপজেলার ছোট বড় কোন ধরনের শিল্প কারখানা নেই। ক্ষুদ্র পর্যায়ের বেকারী সমূহে বানানো হয় বাকরখানি (পুরাতন ঢাকার একটি জনপ্রিয় খাবার)।

কৃতী ব্যক্তিত্ব

  • এম মোখলেসুর রহমান চৌধুরী - সাবেক মন্ত্রী;
  • শেখ ভানু শাহ - মরমী সাধক।
  • গভর্নর মস্তুফা আলী

প্রশাসনিক এলাকা

লাখাই উপজেলায় ৬টি ইউনিয়ন। এগুলো হল:

  1. লাখাই ইউনিয়ন
  2. মোড়াকরি ইউনিয়ন
  3. মুড়িয়াউক ইউনিয়ন
  4. বামৈ ইউনিয়ন
  5. করাব ইউনিয়ন
  6. বুল্লা ইউনিয়ন

দর্শনীয় স্থান

  • শেখ ভানু শাহের মাজার - ভাদিকারা;
  • বায়েজিদ শাহের মাজার - বুল্লা;
  • অমৃত মন্দির - বামৈ;
  • হাওড় এলাকা,লাখাই ১নং ইউনিয়ন

বিবিধ

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "লাখাই উপজেলা - বাংলাপিডিয়া"bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১৩
  2. "লাখাই উপজেলা"lakhai.habiganj.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১৩

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.