বিশ্বনাথ উপজেলা
বিশ্বনাথ বাংলাদেশের সিলেট জেলার একটি উপজেলা।[1][2]
বিশ্বনাথ | |
---|---|
উপজেলা | |
![]() বাংলাদেশে বিশ্বনাথ উপজেলার অবস্থান | |
![]() ![]() বিশ্বনাথ ![]() ![]() বিশ্বনাথ | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৪৮′৩০″ উত্তর ৯১°৪৫′৫০″ পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | সিলেট বিভাগ |
জেলা | সিলেট জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ২১৪.৫০ কিমি২ (৮২.৮২ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০০১) | |
• মোট | ১,৮৯,৭২০ |
• জনঘনত্ব | ৮৮০/কিমি২ (২৩০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৮৫.৪৭% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৬০ ৯১ ২০ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
অবস্থান
সিলেট বিভাগীয় শহর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে বিশ্বনাথ উপজেলার অবস্থান। এ উপজেলার পূর্বে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা, পশ্চিমে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক ও জগন্নাথপুর উপজেলা, উত্তরে সিলেট সদর উপজেলা এবং দক্ষিণে ওসমানীনগর উপজেলা অবস্থিত। বিশ্বনাথের আয়তন ২১৪.৫০ বর্গকিলোমিটার বা ৮২.৮২ বর্গমাইল।[1]
নামকরণ
জমিদার বিশ্বনাথ চৌধুরীর ভূমির উপরে প্রথমে বাজার হয় । তার নামানুসারে বাজারের নামকরণ করা বিশ্বনাথ বাজার, পরে বিশ্বনাথ বাজারে একটি পুলিশ ফাঁড়ি হয় আর পুলিশ ফাঁড়িকে সিলেটের অন্যান্য পুলিশ ফাঁড়ির মতন বিশ্বনাথ পুলিশ ফাঁড়ি থানায় রূপান্তরিত হয় ।আর বিশ্বনাথ চৌধুরীর নামানুসারে থানার ও নামকরণ হয় বিশ্বনাথ থানা ।[1]
ইতিহাস
বিশ্বনাথ থানা প্রতিষ্ঠার পূর্বে তৎকালীন বৃটিশ সরকার কর্তৃক ১৮৮৫ সালে লোকাল সেলফ গর্ভমেন্ট আইনে ইউনিয়ন বোর্ড এবং ১৯১৯ সালে ইউনিয়ন বোর্ড বাতিল হলে পুনরায় ‘‘ বেঙ্গল ভিলেজ সেলফ গর্ভমেন্ট ’’ আইনে ইউনিয়ন বোর্ড হিসেবে এখানকার প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হতে থাকে। এক্ষেত্রে এক পর্যায়ে ১৯২২ সালের ১লা জানুয়ারী তৎকালীন সরকারের ১৭৫ নং জি. জে. গেজেট নোটিফিকেশনে বিশ্বনাথে ‘‘থানা’’ প্রতিষ্ঠা হয়। থানা শুধু আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী অর্থাৎ পুলিশ সম্পর্কিত কার্যক্রমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এর আগে প্রতিষ্ঠান হিসেবে এখানে ১৯০৮ সালে বৃটিশ সরকারের রেজিষ্ট্রেশন আইনের আওতায় শুধুমাত্র রেজিষ্ট্রি অফিস স্থাপিত হয়। ১৯২৮ সালের মে মাসে বিশ্বনাথে প্রধান কার্যালয় স্থাপিত হওয়ার পর থেকে পুলিশি কার্যক্রম ছাড়াও সামগ্রিক প্রশাসনিক কাজ আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়; প্রায় ৪০ বছর এ ব্যবস্থা কার্যকরী ছিল। পাকিস্তান সৃষ্টির ১২ বছর পর; ১৯৫৯ সালে তৎকালীন সরকারের একটি আদেশের বলে স্থানীয় সরকারগুলো এসময় পুনরায় পুর্নগঠিত হয় এবং স্থানীয় সংস্থার নাম ইউনিয়ন বোর্ডের স্থলে ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয়। এ ব্যবস্থার প্রায় ১২ বছর দেশ চলার পর ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হয় এবং ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির এক আদেশের বলে স্থানীয় এ সংস্থাটির নামকরণ হয় ইউনিয়ন পঞ্চায়েত । এরপর ১৯৭৩ সালে রাষ্ট্রপতির অপর এক আদেশের বলে এটাকে ইউনিয়ন পরিষদ নামকরণ করা হয়, যা ১৯৭৬ সালে লোকাল গর্ভমেন্ট(ইউনিয়ন পরিষদ) অর্ডিন্যান্স হিসেবে কার্যকর হয়। এ সময় একবার ইউনিয়ন পরিষদের নীচে ‘ গ্রাম সরকার ’ নামে একটি প্রশাসনিক সত্ত্বার সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে তা স্থগিত করা হয়। এভাবে স্থানীয় সংস্থাগুলোকে পরিচালিত করার পর ১৯৮২ সালের ৭ই নভেম্বর হতে স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশের আওতায় স্থানীয় সংস্থার মাধ্যমে থানা পরিষদগুলো মান উন্নীত থানা করার প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং এ বছর ৭৫৯ নং গেজেট নোটিফিকেশনে বিশ্বনাথকে মানোন্নীত থানায় উন্নীত করা হয়। ১৯৮৩ সালের ২৪শে মার্চ তৎকালীন নৌবাহিনীর প্রধান রিয়াল এডমিরাল মাহবুব আলী খান এ সময় বিশ্বনাথ থানাকে মানোন্নীত থানা হিসেবে উদ্বোধন করেন । একই বছর স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশ সংশোধন করে মানোন্নীত থানা গুলোকে উপজেলা পরিষদ নামকরণ করা হয়। উপজেলা পরিষদ অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে জনগণের সরাসরি ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচনের প্রক্রিয়া চালু হয় ।[1]
শিক্ষা
এখানে কলেজ ৩টি এবং একটি মহিলা কলেজ রয়েছেে । উচ্চ বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২৮টি বালিকা বিদ্যালয় ২টি মোট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৫১টি, সরকারি ১০০টি এ ছাড়াও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্টান রয়েছে।[1]
প্রশাসনিক এলাকা
বিশ্বনাথ উপজেলা উপজেলায় ১টি পৌরসভা।[1]
- বিশ্বনাথ পৌরসভা
বিশ্বনাথ উপজেলা ৮টি ইউনিয়ন। এগুলো হল:[1]
কৃতি ব্যক্তিত্ব
- বিশ্বনাথ চৌধুরী — তার নামানুসারে বিশ্বনাথ থানার নামকরণ হয়।
- এম ইলিয়াস আলী — রাজনীতিবিদ।
- রাগীব আলী — সমাজ সেবক ও শিল্পপতি।
- রুশনারা আলী — বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ।
- ড. শাহদিন মালিক — আইনজীবি ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ।
- ডক্টর তুহিন মালিক —একজন বিশিষ্ট আইনজীবি – সংবিধান বিশেষজ্ঞ।
- দেওয়ান হাছন রাজা চৌধুরী — মরমী কবি ও সংগীতকার।
- দেওয়ান একলিমুর রাজা চৌধুরী — রাজনীতিবিদ ও সাহিত্যিক, ১৯৩৭–১৯৪৬ সালে আসাম প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য।
- দেওয়ান তৈমুর রাজা চৌধুরী — রাজনীতিবিদ ও মরমী গীতিকার, ১৯৪৬–১৯৪৭ সালে আসাম প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য, ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য, ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সদস্য এবং রেল, সড়ক ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
- মুহাম্মদ নূরুল হক — লাইব্রেরিয়ান ও সম্পাদক।
দর্শনীয় স্থান
- ৩৬০ আওলিয়ার সফর সঙ্গী হযরত শাহ কালু ও হযরত শাহ চান্দ-র মাজার;
- রামপাশার জমিদার বাড়ি (হাছন রাজার বাড়ী);
- গৌরগবিন্দ দিঘী;
- উপজেলা পরিষদ শহীদ মিনার।
বিবিধ
- গ্রাম ৪৩৬টি
- আদর্শ গ্রাম একটি
- মৌজার সংখ্যা ১১৫ টি।
- তহশীল অফিস ৪টি
- ভূমি অফিস ১টি
- ডাকঘর ১৪টি
- সাব পোঃ অফিস ৪টি
- মসজিদের সংখ্যা ৪৬৬টি
- ৬ হাট বাজার ৪০টি
- ব্যাংক মোট ২৭টি
- পুকুরের সংখ্যা ২৩৮৯টি
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- "বিশ্বনাথ উপজেলা"। bishwanath.sylhet.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১৩।
- "বিশ্বনাথ উপজেলা - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১৩।
৩ বিশ্বনাথের ইতিহাস ও ঐতিহ্য-মোহাম্মদ ইলিয়াস আলী প্রকাশক কাল ২০০৪
৪ দেওয়ান একলিমুর রাজার জীবন ও কাব্য-মোহাম্মদ ইলিয়াস আলী প্রকাশকাল ২০০৪
বহিঃসংযোগ
![]() |
উইকিভ্রমণে বিশ্বনাথ উপজেলা সম্পর্কিত ভ্রমণ নির্দেশিকা রয়েছে। |