কানাইঘাট উপজেলা

কানাইঘাট উপজেলা বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের অধীনে সিলেট জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।।[1][2]

কানাইঘাট
উপজেলা
কানাইঘাট উপজেলা
বাংলাদেশে কানাইঘাট উপজেলার অবস্থান
কানাইঘাট
কানাইঘাট
বাংলাদেশে কানাইঘাট উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৫°১′১৫″ উত্তর ৯২°১৫′৬″ পূর্ব
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগসিলেট বিভাগ
জেলাসিলেট জেলা
প্রতিষ্ঠা১৯৮৩ সাল।
আয়তন
  মোট৪১২.২৫ কিমি (১৫৯.১৭ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
  মোট২,১৫,২৬০
  জনঘনত্ব৫২০/কিমি (১৪০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
  মোট৩২.৬২% [1]
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৩১৮০
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৬০ ৯১ ৫৯
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

অবস্থান

কানাইঘাট উপজেলা বাংলাদেশের উত্তর-পূ্র্ব সীমান্তে অবস্থিত। কানাইঘাট উপজেলার উত্তরে ভারতের আসামমেঘালয় রাজ্য, পশ্চিমে জৈন্তাপুর উপজেলা, দক্ষিণে গোলাপগঞ্জ উপজেলাবিয়ানীবাজার উপজেলা এবং পূর্বে জকিগঞ্জ উপজেলা অবস্থিত। এই উপজেলা ২৪º৫৩' ও ২৫º০৬' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২º০১' ও ৯২º২৬' পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত।[1][2]

প্রশাসনিক এলাকা

কানাইঘাট পৌরসভা

এই উপজেলার ইউনিয়নের নামঃ-[1][2]

  1. পূর্ব লক্ষীপ্রসাদ ইউনিয়ন
  2. পশ্চিম লক্ষীপ্রসাদ ইউনিয়ন
  3. পূর্ব দিঘীরপার ইউনিয়ন
  4. সাতবাঁক ইউনিয়ন
  5. বড়চতুল ইউনিয়ন
  6. কানাইঘাট ইউনিয়ন
  7. দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়ন
  8. ঝিঙ্গাবাড়ী ইউনিয়ন
  9. রাজাগঞ্জ ইউনিয়ন

নামকরণ

বর্তমান কানাইঘাট বাজারের তীরবর্তী সুরমা নদীর ঘাটে কানাই নামক একজন মাঝির নামানুসারে ‘কানাইরঘাট’ নামকরণ করা হয়। কানাইঘাট উপজেলার পুর্বতন নাম ‘কানাইঘাট’ থাকায় এ মতটিকে শক্তিশালী মনে হয়। মতান্তরে কানাইঘাট উপজেলার মুলাগুল এলাকার কানাই চৌঃ নামক জৈন্তা রাজ দরবারের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির নামানুসারে কানাইঘাট উপজেলার নামকরণ করা হয়েছে।

ইতিহাস

প্রাচীণকালে কানাইঘাট স্বাধীন সার্বভৌম জৈন্তা রাজ্যের অংশ থাকায় স্বাভাবিক কারণে শিক্ষা, সংস্কৃতি, পার্শ্ববর্তী অন্যান্য উপজেলা থেকে কিছুটা ভিন্ন। বৃটিশরা ভারত উপমহাদেশ দখলের প্রায় ৯০ বছর পর এই জৈন্তা রাজ্য তাদের আয়ত্তে নেয়। ১৮৩৫ সালে ১৬ মার্চ জৈন্তা বৃটিশ অধিকারে আসে। ফলে মুসলমানেরা এখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পায়। জৈন্তা রাজ্যের পতনের পর ১৮৩৬ সাল হতে কানাইঘাটসহ জৈন্তা সিলেট জেলা কালেক্টরেটের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। বৃটিশ সরকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ১৮৪১ সালে মুলাগুল পরগণার লক্ষিপুর মৌজার ঝর্ণা টিলায় থানা স্থাপন করেন। তখন থানাকে পুলিশ স্টেশন বলা হতো। ১৮৮০ সালে মুলাগুল  হতে  কানাইঘাট  স্থানান্তরিত  হওয়ার  পর  থানা ও  অন্যান্য  প্রশাসনিক  অফিস  ক্রমান্বয়ে বর্তমান কানাইঘাট সদরে গড়ে ওঠে। ১৯০৫ সাল হতে মাধ্যমিক স্কুল, মাদরাসা এবং মসজিদ নির্মাণ কানাইঘাটে বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং তখন থেকে অদ্যাবধি শক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে শিক্ষার হার অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২৪ মার্চ ১৯৮৩ তারিখ হতে কানাইঘাট থানা উপজেলায় উন্নীত হওয়ার পর অত্র উপজেলায় শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষি, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা  ও অন্যান্য আর্থ সামাজিক অবস্থার উত্তেরোত্তর উন্নতি ঘটেছে।[1][2] ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর সূর্য উঠার আগেই পাক হানাদার বাহিনী এবং মুক্তিযুদ্ধাদের মধ্যে তীব্র যুদ্ধ হয় এবং শেষে পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পন করে। ঐদিন কানাইঘাট স্বাধীন হয়।[2]

জনসংখ্যার উপাত্ত

কানাইঘাটের জনসংখ্যা ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ২ লক্ষ ৫০ হাজার। জনসংখ্যার ৯৫ শতাংশ মুসলিম এবং ৪.১০ শতাংশ হিন্দু এবং ০.২ শতাংশ খ্রিস্টান এবং উপজাতীয় ০.৩ শতাংশ।[2]

শিক্ষা

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ২৯.৬২%; পুরুষ ৩৪.৪৩%, মহিলা ২৪.৮৯%। কলেজ ৩, কারিগরি কলেজ ১, প্রাইমারি ট্রেনিং ইন্সটিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৩, কমিউনিটি বিদ্যালয় ৮, কিন্ডার গার্টেন ১৪, মাদ্রাসা ১৫। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানঃ মসজিদ ৪৯১, মন্দির ৩০, গির্জা ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: কানাইঘাট জামে মসজিদ, মঙ্গলপুর প্রেসবিটারিয়ান চার্চ।[1]

উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: [1]

  • দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫),
  • ঝিঙাবাড়ি সিনিয়র মাদ্রাসা (১৮৮২),
  • কানাইঘাট মনসুরিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৮৮৯),
  • উমরগঞ্জ ইমদাদুল উলুম মাদ্রাসা (১৮৯৮),
  • গাছবাড়ি জামিউল উলুম আলিয়া মাদ্রাসা (১৯০১),
  • সড়কের বাজার আহমদিয়া আলিম মাদ্রাসা (১৯১৪)।
  • কানাইঘাট সরকারি কলেজ।
  • কানাইঘাট সরকারী উচ্চবিদ্যালয়।

অর্থনীতি

পাথরই কানাইঘাট উপজেলার একমাত্র প্রাকৃতিক সম্পদ। লোভাছড়া পাথর কোয়ারী হতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সরকারি রাজস্ব আহরিত হয়। জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪৮.০৩% , শ্রমিক ১১.৪৯%, শিল্প ০.৪২%, ব্যবসা ৮.৯০%, পরিবহন ও যোগাযোগ ০.৯৫%, চাকরি ৪.৩০%, নির্মান ১.২৬%, ধর্মীয় সেবা ১.২০%, রেমিটেন্স ১২.৬১% এবং অন্যান্য ১০.৮৪%। প্রধান রপ্তানিঃ চা, পান পাতা, পাথর, বালু। কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্পঃ লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বেতশিল্প। উল্লেখযোগ্য বাজারঃ কানাইঘাট বাজার,গাছবাড়ী বাজার। প্রধান ফলঃ কাঁঠাল, আনারস, কমলা, লেবু, বাতাবিলেবু, লটকন, তামাক, পাট, গম। প্রধান কৃষি ফসলঃ ধান, চা, আলু, তেজপাতা, পান, সুপারি, শাকসবজি, মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার।

কৃতী ব্যক্তিত্ব

উল্লেখযোগ্য- [2]

দর্শনীয় স্থান

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন

পাল্কি [1]

গরু গাড়ি [1]

ঘোড়ার গাড়ি [1]

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী

মাসিক সীমান্তের ডাক, কানাইঘাট বার্তা।[1]

নদ-নদী

সুরমা, লোভা, ধোনা, দেওছই। [2]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "কানাইঘাট উপজেলা - বাংলাপিডিয়া"bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-১০
  2. "কানাইঘাট উপজেলা"kanaighat.sylhet.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-১০
  3. "মৌনমুখর 'লোভাছড়া'"NTV Online। ২০১৯-০৬-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-১০
  4. "সিলেটে তামাবিল স্থলবন্দর উদ্বোধন"The Daily Star Bangla। ২০১৭-১০-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-১০

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.