খাসিয়া জনগোষ্ঠী
বাংলাদেশের সিলেট জেলা ও ভারতের আসামে এই জনগোষ্ঠী বাস করে। সিলেটের খাসিয়ারা সিনতেং (Synteng) গোত্রভুক্ত জাতি। তারা কৃষিজীবী। ভাত ও মাছ তাদের প্রধান খাদ্য। তারা মাতৃপ্রধান পরিবারে বসবাস করে। তাদের মধ্যে কাচা সুপারি ও পান খাওয়ার প্রচলন খুব বেশি। খাসিয়াদের উৎপাদিত পান বাংলাদেশে খুব জনপ্রিয়।
একটি খাসিয়া শিশু | |
মোট জনসংখ্যা | |
---|---|
আনুমানিক ১,৩৬১,১০০ | |
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চলসমূহ | |
মেঘালয় (ভারত): ১,২৫০,০০০ Assam (India): ২৯,০০০ পশ্চিমবঙ্গ, মিজোরাম, মহারাষ্ট্র, ত্রিপুরা, তামিলনাড়ু, অরুণাচল প্রদেশ, নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ (ভারত): ৩১০০ বাংলাদেশ: ২৯,০০০[1] | |
ভাষা | |
খাসিয়া ভাষা | |
ধর্ম | |
প্রেসবিটারিয়ান, ইউনিটারিয়ান, রোমান ক্যাথলিক, শাইভিশম অথবা সর্বপ্রানবাদী আদিবাসী | |
সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী | |
খেমার, পালাউং, ওয়াস, কিনহ, নিকোবারেজ এবং অন্যান্য |
চরম দারিদ্র্যের মধ্যে থেকেও এ সম্প্রদায়ের লোকজন শান্তিপ্রিয়। তাদের রয়েছে নিজস্ব নিয়ম-কানুন। তবে তাদের মধ্যে খাসিয়ারাই মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় পরিচালিত। তাদের সমাজ ব্যবস্থায় কোনো পুরুষ সম্পত্তির মালিক হয় না। পুরুষদের বিয়ে হলে তারা শ্বশুরবাড়ি গিয়ে ওঠে। তারাও এ অঞ্চলের অন্যান্য আদিবাসীর মতো একটি প্রাচীন সম্প্রদায় হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে সম্প্রীতি বজায় রেখে বসবাস করে আসছে। পাহাড়ের পাদদেশে বিভিন্ন টিলা এলাকায় তাদের বসবাস। দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করলেও তারা অত্যন্ত নিরীহ প্রকৃতির। তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার ও সদর উপজেলার সীমান্ত এলাকায় তারা বসবাস করছে। সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২৫০টি খাসিয়া পরিবার বসবাস করছে। জানা যায়, খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে আর্যরা এ দেশে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করলে তারা আদিবাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীকালে এ আদিবাসীরাই অনার্য বলে পরিচিতি লাভ করে। আর্য-অনার্য যুদ্ধে অনার্যরা পরাজিত হয়ে বনে জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। পরে এ গহিন বনেই তারা বসবাস শুরু করে। ফলে তারা শিক্ষা দীক্ষা ও আধুনিক জীবন ব্যবস্থা থেকে দূরে থাকে। খাসিয়াদের সাংস্কৃতিক জীবন বেশ সমৃদ্ধ। তাদের ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো খুব আকর্ষণীয়। তাদের ভাষায় রচিত গানগুলোও হৃদয়ছোয়া।