ময়মনসিংহ সদর উপজেলা

ময়মনসিংহ সদর বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা যা ১৩ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এটি ময়মনসিংহ বিভাগের অধীন ময়মনসিংহ জেলার ১৩ টি উপজেলার একটি উপজেলা এবং জেলার মধ্যভাগে অবস্থিত। ব্রম্মপুত্র নদের উত্তর পাশে চরাঞ্চলে ৫টি ইউনিয়ন, দক্ষিণে পাশে ৮টি ইউনিয়ন ও একটি সিটি কর্পোরেশন নিয়ে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা গঠিত । ময়মনসিংহ সদর উপজেলার উত্তরে ফুলপুর উপজেলা, দক্ষিণে ত্রিশাল উপজেলা, পূর্বে গৌরীপুর ও ঈশ্বরগঞ্জ, পশ্চিমে মুক্তাগাছা ও ফুলবাড়ীয়া উপজেলা অবস্থিত। ময়মনসিংহ সদর উপজেলার উপর দিয়ে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদীসুতিয়া নদী প্রবাহিত হয়েছে।

ময়মনসিংহ সদর
উপজেলা
ময়মনসিংহ সদর
বাংলাদেশে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৪°৪৪′৫৭″ উত্তর ৯০°২৫′১৫″ পূর্ব
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগময়মনসিংহ বিভাগ
জেলাময়মনসিংহ জেলা
আয়তন
  মোট২৮১ কিমি (১০৮ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[1]
  মোট৬,৭৪,৪৫২
  জনঘনত্ব২৪০০/কিমি (৬২০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
  মোট৪৯.৯%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৩০ ৬১ ৫২
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

পটভূমি

১৭৮৭ সালে ১লা মে থানা হিসাবে স্বীকৃতি পায় ময়মনসিংহ সদর। এর আগে খাগডহর ইউনিয়নের বেগুনবাড়ীর কোম্পানির কুঠিসহ বিভিন্ন জায়গায় কাচারী বসত। কুঠি ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বিলীন হলে শহরের উত্তর অংশে খাগডহরে কাচারী স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গনের কারণে সেই উদ্যোগও ভেস্তে যায়। পরবর্তীতে কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুরের দক্ষিণে কাওনা নদীর তীরে ‘দগদগা’ নামন প্রাচীন বাণিজ্যকেন্দ্রে জেলা শহর স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ঐ অঞ্চলের জমিদাররা এই সিন্ধানের বিরোধিতা করে। কর্তৃপক্ষ তাই ১৭৯১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেহড়া মৌজায় নাসিরাবাদ নাম দিয়ে জেলা শহরের পত্তন হয় । শহর স্থাপিত হওয়ার পর ৮ই এপ্রিল ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে পৌরসভা গঠিত হয় নাসিরবাদ মিউনিসিপ্যালিটি।বঙ্গদেশে এটি প্রথম এবং উপমহাদেশে এটি ছিল দ্বিতীয় পৌরসভা। মি. আরপর্চা ছিলেন পৌরসভার প্রথম অফিসিয়াল চেয়ারম্যান। প্রথম নন অফিশিয়াল চেয়ারউয়ান ছিলেন চন্দ্রকান্ত ঘোষ।[2] কালেক্টরেট ভবন ছিল ময়মনসিংহ শহরের কেন্দ্রবিন্দু। ১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে সরকারী ডাক ব্যবস্থার প্রচলন করা হয়। প্রথম সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র চালু করা হয় ১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে। ময়মনসিংহ শহর থেকে প্রথম মুদ্রিত পুস্তক প্রকাশিত হয় ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে। ১৮৪৬ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় প্রথম ইংরেজী স্কুল। ময়মনসিংহ জিলা স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে। জেলার প্রথম আদম শুমারী পরিচালিত হয় ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে। টেলিগ্রাফ অফিস স্থাপন ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে। । ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ চালু ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে, এবং ময়মনসিংহ-জগন্নাথগঞ্জ রেলপথ চালু হয় ১৮৬৫ সনে।

ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, মমিন শাহ নামে একজন ধর্মীয় শাসন কর্তা শাসন করতেন বলে তার নামানুসারে প্রথমে মোমেনশাহী এবং পরবর্তীতে ময়মনসিংহ নামকরণ হয়। বাংলাদেশে ১৯৮৩ সালে এটি উপজেলা হিসাবে ঘোষণা করা হয়।

অবস্থান

মধুপুর উপজেলার ভৌগোলিক অবস্থান ২৪°৩৮´ থেকে ২৪°৫৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°১১´ থেকে ৯০°৩০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। এই উপজেলার উত্তরে তারাকান্দা উপজেলানকলা উপজেলা, দক্ষিণে ত্রিশাল উপজেলাফুলবাড়িয়া উপজেলা, পূর্বে গৌরীপুর উপজেলাঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে মুক্তাগাছা উপজেলাজামালপুর সদর উপজেলা অবস্থিত। সদর উপজেলার আয়তন হচ্ছে ৩৮৮.৪৫ বর্গ কিলোমিটার।

প্রশাসন

ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় ১৩টি ইউনিয়ন রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে অষ্টধার, কুষ্টিয়া, বোররচর, পরানগঞ্জ, সিরতা, চরঈশ্বরদিয়া, চরনিলক্ষীয়া, আকুয়া, খাগডহর, দাপুনিয়া, ঘাগড়া, ভাবখালী এবং বয়রা ইউনিয়ন।[3]

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসন ময়মনসিংহ-৪। এ আসনটি জাতীয় সংসদে ১৪৯ নং আসন হিসেবে চিহ্নিত। প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর আব্দুল মালেক, ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এর জয়নুল আবেদীন, ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর মতিউর রহমান, ১৯৮৮ সালে মমতা ওয়াহাব, ১৯৯১ ওফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এর এ কে এম ফজলুল হক, জুন ১৯৯৬ তারিখে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) এর রওশন এরশাদ,২০০১ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এর দেলোয়ার হোসেন খান দুলু, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর মতিউর রহমান,২০১৪২০১৮ সালে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) এর রওশন এরশাদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হোন।

নদীসমূহ

ময়মনসিংহ সদর উপজেলার দাপুনিয়া বাজার থেকে তোলা সুতিয়া নদীর দৃশ্য

ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় অনেকগুলো নদী আছে। সেগুলো হচ্ছে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী, পাগারিয়া নদী, সুতিয়া নদী, নাগেশ্বরী নদী, সিরখালি নদী, চোরখাই নদী, বাড়েরা নদীহিংরাজানি নদী[4][5]

যোগাযোগ

ময়মনসিংহের যোগাযোগ সড়ক ও রেল এই দুইভাবেই আছে, বর্ষাকালে সীমিতভাবে নৌপথে চলাচল করে।

সড়ক

সদর থেকে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটা জেলায় যাতায়াতের জন্য সুব্যবস্থা আছে। ময়মনসিংহ থেকে ঢাকার সাথে যোগাযোগের জন্য চারলেনের ঢাকা-ময়মনসিংহ জাতীয় মহাসড়ক এন৩ (বাংলাদেশ) রয়েছে। মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে মাসকান্দা বাস টার্মিনালে রাজধানীর সাথে সড়কপথের যোগাযোগ করা হয়। কমলাপুর, বিআরটিসি টার্মিনাল থেকে ঢাকা-নেত্রকোনা, ঢাকা টু জামালপুর, ঢাকা টু শেরপুর রুটের বাস দিয়ে যাতায়াত করা যায়। ঢাকা চট্টগ্রাম সিলেট রাজশাহী, খুলনা, বগুড়া, রংপুর, পঞ্চগড়, যশোর, কক্সবাজার, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোণা, কিশোরঞ্জে নিয়মিত প্রতিদিনই বাস চলাচল করে।

সরকারী তথ্যানুযায়ী পাকা রাস্তা ১৪৭.০০ কিঃমিঃ। অর্ধ পাকা রাস্তা ৮.০০ কিঃমিঃ, কাঁচা রাস্তা ৩৩৪ কিঃমি, ব্রীজ/কালভার্টের সংখ্যা ৪৬৬ টি।

রেল

ময়মনসিংহ জংশন থেকে ঢাকা, জামালপুর, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, চট্টগ্রাম, টাঙ্গাইলে যাওয়ার জন্য মেইল ও আন্তঃনগর ট্রেন রয়েছে। রেলের রুটগুলো হলঃ

  1. ঢাকা থেকে গফরগাঁও, ময়মনসিংহ হয়ে জামারপুর, দেওয়ানগঞ্জ পর্যন্ত চলাচলকারী দুইটি আন্তঃনগর ট্রেন হল তিস্তাব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস।
  2. ঢাকা থেকে গফরগাঁও ও ময়মনসিংহ হয়ে জামালপুরের তারাকান্দি পর্যন্ত চলাচলকারী দুইটি আন্তঃনগর ট্রেন হল যমুনাঅগ্নিবীণা এক্সপ্রেস।
  3. ঢাকা থেকে গফরগাঁও, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা হয়ে মোহনগঞ্জ পর্যন্ত চলাচলকারী দুইটি আন্তঃনগর ট্রেন হল হাওরমোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস।
  4. ময়মনসিংহ থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত চলাচলকারী আন্তঃনগর ট্রেন হল বিজয় এক্সপ্রেস।
  5. ময়মনসিংহ থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পর্যন্ত চলাচলকারী মেইল ট্রেন হল ময়মনসিংহ ও ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস, লোকাল।
  6. ময়মনসিংহ থেকে দেওয়ানগঞ্জ পর্যন্ত চলাচলকারী কমিউটার ট্রেন হল দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার, জামালপুর কমিউটার, ভাওয়াল এক্সপেস ও লোকাল।
  7. ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া ঝাঞ্জাইল পর্যন্ত চলাচলকারী কমিউটার ট্রেন হল বলাকা কমিউটার।
  8. ময়মনসিংহ থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত চলাচলকারী কমিউটার ট্রেন হল ময়মনসিংহ।
  9. ময়মনসিংহ থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত চলাচলকারী মেইল ট্রেন হল ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস।
  10. ময়মনসিংহ থেকে মোহনগঞ্জ পর্যন্ত চলাচলকারী কমিউটার ট্রেন হল মহুয়া কমিউটার ও লোকাল।
  11. ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ পর্যন্ত চলাচলকারী মেইল ট্রেন হল ঈশা খা এক্সপ্রেস ও ভৈরব লোকাল।

নৌ

নাব্যতা না থাকায় নৌপথে চলাচল সীমিত। কাচারী খেয়া ঘাট, থানার ঘাট থেকে নৌপথে বাইগনবাড়ি, বিদ্যাগঞ্জ, বালির বাজার, বালিপাড়া ইত্যাদি ঘাটে নৌযান ব্যবহার করে যাতায়াত করা হয়।

শিক্ষা

এখানে ১টি বিশ্ববিদ্যালয় (বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়), ২টি মেডিক্যাল কলেজ (ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজকমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ, বাংলাদেশ, ১টি প্রকৌশল কলেজ (ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ), ১টি ক্যাডেট কলেজ (ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ) ২টি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ ও আনন্দ মোহন কলেজ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ , নাসিরাবাদ কলেজ,শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, তিনটি সরকারী স্কুল - ময়মনসিংহ জিলা স্কুল, বিদ্যাময়ী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরী হাই স্কুল, ময়মনসিংহমুকুল নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়, ময়মনসিংহ ছাড়াও আরো অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

উপজেলায় ১৩২টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৭ টি বে-সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭ টি কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬ টি জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়, ৪১ টি উচ্চ বিদ্যালয়, ৩ টি উচ্চ বিদ্যালয়(বালিকা), ১৬ টি দাখিল মাদ্রাসা, ৭ টি আলিম মাদ্রাসা, ৪ টি ফাজিল মাদ্রাসা, ২ টি কামিল মাদ্রাসা রয়েছে।

স্বাস্থ্য

হাসপাতালগুলো হলঃ

  1. ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (১০০০ শয্যা)
  2. কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ, বাংলাদেশ
  3. এস,কে হাসপাতাল
  4. ডাঃ কে. জামান বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল, ময়মনসিংহ

১ টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ১৬ টি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, ১ টি পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক, ১ টি এম.সি.এইচ. ইউনিট ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টার রয়েছে।

জনসংখ্যার উপাত্ত

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মোট জনসংখ্যা ৬,৭৪,৪৫২জন। এর মধ্যে পুরুষ ৩,৫০,৩৭২ জন এবং মহিলা ৩,২৪,০৮০ জন। লোক সংখ্যার ঘনত্ব ১,৭৩৬ জন/ বর্গ কিলোমিটার। মুসলিম ৬৩১০১৮, হিন্দু ৪১৯৪৮, বৌদ্ধ ১২৪৫, খ্রিস্টান ৯৩ এবং অন্যান্য ১৪৮

অর্থনীতি

শিল্পের মধ্যে রয়েছে বিসিক শিল্প নগরী মাসকান্দা, শম্ভুগঞ্জ জুট মিল, আজাদ ফুট ওয়ার,ইত্যাদি। বৃহৎ শিল্প ৩টি। মাঝারী ও ক্ষুদ্র শিল্প ও কল-কারখানা ৯০টি বিসিক শিল্প নগরী ময়মনসিংহে অবস্থিত।

কৃষি

ময়মনসিংহ সদর ধান উৎপাদনে বিখ্যাত। এখানে ধানের পাশাপাশি পাট সহ মৌসুমী সব সবজি ও ফল উৎপাদন হয়। প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, শাকসবজি। বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি হল সরিষা, তিসি, অড়হর। প্রধান রপ্তানিদ্রব্য হল ধান, কলা, শাকসবজি, চামড়া। প্রধান ফল-ফলাদি হল আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, লিচু, তরমুজ। ফসলী জমি ৫১,২৮৯ হেক্টর, কৃষি জমি ১৬৭.৩৯ একর, বাৎসরিক মৎস্য উৎপাদন ৫,৫১৩ মেঃ টন।

সাহিত্য

ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে আছে জয়নুল আবেদীন এর স্মৃতি বিজরিত অনেক স্থান। কবি নির্মলেন্দু গুণ, আবদুল হাই মাশরেকী, আবু ফাতেমা মোহাম্মদ আবু ইসহাক ময়মনসিংহ এর সন্তান।

আন্তর্জাতিক বাংলা ভাষা ও সাহিত্য পরিষদের সদর দপ্তর এখানেই অবস্থিত।

সংস্কৃতি

ময়মনসিংহে রয়েছে শিল্পী জয়নুল আবেদীন এর স্মৃতি বিজড়িত মৃত্যুঞ্জয় স্কুল। তিনি ময়মনসিংহের কৃতি সন্তান। তাঁর কর্মের নিদর্শনগুলো রাখা আছে ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়ে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা। ময়মনসিংহ লোক গীতির জন্য বিখ্যাত।

উপসনালয়

সমগ্র শহর জুড়েই আছে মসজিদ, মন্দির, গির্জা। ময়মনসিংহ বড় মসজিদ, গাঙ্গিনার পাড় মসজিদ, রেলস্টেশন জামে মসজিদ, কাচারি নূর জামে মসজিদ, শানকিপাড়া পুরাতন জামে মসজিদ, কলেজরোড জামে মসজিদ, পাটগুদাম দিলরওশন জামে মসজিদ, ভাটিকাশর গোরস্তান জামে মসজিদ, ছোট কালীবাড়ি মন্দির, বড় কালীবাড়ি মন্দির, দশভুজা বাড়ি মন্দির, বিশ্বনাথ মন্দির, শিব বাড়ি মন্দির, দুর্গা বাড়ি মন্দির, অনন্তময়ী মন্দির, অনুকূল ঠাকুরের মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন, লোকনাথের আশ্রম, পন্ডিতবাড়ি মন্দির, কোতয়ালী শিব মন্দির, মহারাজা রোডের কানাই-বলাই মন্দির, জুবিলি ঘাট তীর্থ মাসকান্দা পাদ্রি মিশন, গির্জা, দুর্গাবাড়ি মন্দির, , ভাটিকাশর সাধু প্যাট্রিক গির্জা, ব্যাপ্টিস্ট গির্জা, সার্কিট হাউস অ্যাংলিংকন গির্জা, গুরুদুয়ারা শিখ , ব্রাহ্ম মন্দির প্রভৃতি রয়েছে এখানে।

সংবাদপত্র

জাহান, আজকের বাংলাদেশ, স্বদেশ সংবাদ, আজকের স্মৃতি, ঈশিকা, সবুজ, শিপা, স্বজন, আজকের ময়মনসিংহ, পরিচয়, বাংলার জমিন, বাংলার চাষী, ময়মনসিংহ সংবাদ, আজকের খবর, ভূ-মন্ডল, দি নিউ টাইমস; সাময়িকী: দ্বিতীয় চিন্তা, উপল, স্বতন্ত্র, শুভ্রশিখা। অবলুপ্ত: সৌরভ, সাপ্তাহিক তকবীর, বাংলার চাষি।

গ্রন্থাগার

শহরের সার্কিট হাউজ মাঠের কাছে জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার অবস্থিত। এছাড়াও টাউনহলে মুসলিম ইন্সটিউটের গ্রন্থাগার ও জয়নুল আবেদীন পার্কে ভাষা সৈনিক এম এ মতিন গ্রন্থাগার রয়েছে।

উল্লেখযোগ্য স্থান

  1. শশী লজ
  2. জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা
  3. শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন পার্ক
  4. ময়মনসিংহ জাদুঘর - মহাভারতের প্রাচীন পান্ডুলিপি, কষ্টিপাথরের বিষ্ণুমূর্তি, জয়দেবের গীতগোবিন্দের পান্ডুলিপি, চন্ডীদাসের কাব্যের পান্ডুলিপি, বিশ্বে প্রকাশিত প্রথম ডাকটিকেটের ফটোকপি, , পৃথিবীর মানচিত্র (১৬৪৫), কেদারনাথ মজুমদার প্রণীত বৃহত্তর ময়মনসিংহের মানচিত্র (১৭৭৯)
  5. স্বাধীনতা স্তম্ভ বা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ
  6. লোহার কুঠি বা আলেকজান্ডার ক্যাসল
  7. রাজ রাজেশ্বরী ওয়াটার ওয়ার্কস
  8. ময়মনসিংহ জাদুঘর (প্রত্নতত্ত্ব)
  9. বোটানিক্যাল গার্ডেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
  10. বিপিন পার্ক
  11. সার্কিট হাউস ময়দান
  12. বড় মসজিদ
  13. দুর্গাবাড়ি মন্দির (১৮৬৭),
  14. শিবমন্দির (উনিশ শতক)
  15. বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
  16. আনন্দ মোহন কলেজ
  17. আঞ্জুমান-ই ঈদগাহ ময়দান
  18. বড় কালীবাড়ি মন্দির
  19. উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট (এইচএসটিটিআই)
  20. ময়মনসিংহ জিলা স্কুল
  21. বিদ্যাময়ী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
  22. কাঠের দ্বিতল ভবন, সোনালি ব্যাংক

বিবিধ

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে ময়মনসিংহ সদর"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই, ২০১৫ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  2. "ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এক জনপদ ময়মনসিংহ"dailysangram.com। দৈনিক সংগ্রাম। অক্টোবর ১৬, ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
  3. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (ডিসেম্বর, ২০১৫)। "ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ইউনিয়ন সমূহ"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২২ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০১৫ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  4. ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ৩৯৯, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৪-৮৯৪৫-১৭-৯।
  5. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি, কথাপ্রকাশ, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, পৃষ্ঠা ৬০৬, ISBN 984-70120-0436-4.

বহিঃসংযোগ

  • {{বাংলাপিডিয়া}} টেমপ্লেটে আইডি অনুপস্থিত ও উইকিউপাত্তেও তা উপস্থিত নেই।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.