মাদারগঞ্জ উপজেলা
মাদারগঞ্জ বাংলাদেশের জামালপুর জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
মাদারগঞ্জ | |
---|---|
উপজেলা | |
![]() ![]() মাদারগঞ্জ | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৫৩′৪৭″ উত্তর ৮৯°৪৫′৭″ পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | ময়মনসিংহ বিভাগ |
জেলা | জামালপুর জেলা |
সরকার | |
• চেয়ারম্যান | জনাব ওবায়দুল রহমান বেলাল (বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ) |
আয়তন | |
• মোট | ২২৫.৩৯ কিমি২ (৮৭.০২ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• মোট | ২,৬৩,৬০৮ |
• জনঘনত্ব | ১২০০/কিমি২ (৩০০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | 60 % |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ২০৪১ ![]() |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৩৯ ৫৮ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
অবস্থান ও আয়তন
মাদারগঞ্জ উপজেলা ২৪°৪৭´ থেকে ২৪°৫৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪০´ থেকে ৮৯°৫০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত।
উত্তরে ইসলামপুর উপজেলা ও মেলান্দহ উপজেলা, দক্ষিণে সরিষাবাড়ি উপজেলা ,পূর্বে মেলান্দহ উপজেলা ও জামালপুর সদর উপজেলা এবং পশ্চিমে বগুড়া জেলা অবস্থিত।
প্রশাসনিক এলাকা
- ইউনিয়ন
- চরপাকেরদহ ইউনিয়ন
- কড়ইচূঁড়া ইউনিয়ন
- গুণারীতলা ইউনিয়ন
- বালিজুড়ী ইউনিয়ন
- জোড়খালী ইউনিয়ন
- আদারভিটা ইউনিয়ন
- সিধুলী ইউনিয়ন
- পৌরসভা
ইতিহাস
১৭৬০ খ্রিষ্টাব্দে সারা বাংলা যখন ইংরেজ অত্যাচারে শশ্বানে পরিণিত,ব্যাপক বিশৃঙ্খলা অরাজগতায় ভরে গেছে,বাংলা মসনদে বসে পুতুল নবাব সমস্ত ক্ষমতা ইংরেজ সাহেবদের হাতে ঠিক সেই সময় শুরু হয় ছিয়াত্তরের মন্বন্তর। আর এমন একটা সময়ে বাংলার মানুষকে ইংরেজদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ফকির সন্নাসীরা আধ্যাত্মিক সাধনা ছেড়ে এদেশে চলে আসে। তাদের প্রধান আখাড়াছিল নেপালের গোরখপুর জেলার মাখনপুরে। তারা এদেশে এসে বগুড়ার মহাস্থনগড় এবং ময়মনসিংহ জেলার দাওকোবা নদীর দুর্গম চরে আখড়া স্থাপন করে। দাওকোব নদী ছিল ব্রক্ষপুত্রের একটি শাখা। যা বর্তমানে যমুনা নদী হিসেবে পরিচিত। তখন আজকের প্রবাহমান যমুনা নদীর কোন অস্তিত্ব ছিল না।১৭৭৮ সালে ইংরেজ জরিপকারী মি. রেনেল যে মানচিত্র তৈরী করে তাদের যমুনার কোন নাম ছিল না,যে মানচিত্রে ব্রক্ষপুত্রের ও দাওকোবা নদীর নাম পাওয়া যায়। ফকির সন্ন্যাসীগণ এই দর্গম চরে তাদের গোপন কার্যক্রম শুরু করেন। সেই সময় তাদের দলে এসে যোগদেন শাহ্ মাদার নামে একজন ধর্ম প্রচারক। তিনি সিরিয়া থেকে ধর্ম প্রচার করার জন্য এদেশে আগমন করেন। তার পুরু নাম চিল সেয়দ বদিউদ্দিন কুতুব-উর মাদার। শাহ। মাদার ফকির বিদ্রোহের নেতা মজনু শাহ্ এর সাথে সরাসরি ফকির আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।১৭৬৩ সালের দিকে শাহ্ মাদার দুর্গম এই চরে আগমন করার পর ফকিরগণ ত৭ার শিষ্যত্ব গ্রহণ করে এবং তারা মাদারিয়া সম্প্রদায় ভূক্ত হয়ে যান। ১৭৭২ সালে বর্ষায় ফকির-সন্ন্যাসী বগুড়া ও ময়মনসিংহ জেলার বিবিন্ন গ্রামে ব্যাপক লুটতরাজ ও দাঙ্গা সৃষ্টি করে। তারা কৃষকদের সর্বস্ব লুটে নেয়। এতে দেশে শুরু হয় ভয়াবহ অবস্থা। সন্ন্যাসী বিদ্রোহ কিছুটা দমন হলে ১৮১৫ সালে তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার ম্যাজিষ্ট্রেট মি. ইয়ার মাদারগঞ্জ এলাকায় আইন শৃঙ্খলা ও সরকারী ফরমান জারী করার জন্য ১৩ জন চৌকিদার নিয়োগ করেন।১৮৪৫ সালে জামালপুর মহকুমা প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর ১৮৮২ সালে মাদারগঞ্জ একটি পুলিশ ফাডিঁ স্থাপন করা হয়। ফাঁডি স্থাপনের ২৪ বছর পর ১৯০৬ সালের ১৫ জুন পূর্ববঙ্গ আসাম গেজেটে মাদারগঞ্জ পুলিশ ফাঁডিকে পূর্নাঙ্গ থানায় রুপান্তর করা হয়। মাদারগঞ্জ সেই থেকে একটি থানার নাম। বর্তমানে ইহা একটি উপজেলা নাম।
জনসংখ্যা
২,৬৩,৬০৮জন।
শিক্ষা
মাদারগঞ্জ উপজেলায় উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো-
- উচ্চ বিদ্যালয়
- গুনারিতলা উচ্চ বিদ্যালয়
- ৫ নং ইউনিয়ন জাহানারা উচ্চ বিদ্যালয়
- জোরখালী উচ্চ বিদ্যালয় ***
- তাহ্িমনা হাছান আলী আমিনুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়
- মির্জা রওশন আলী উচ্চ বিদ্যালয়
- পলিশা উচ্চ বিদ্যালয়
- বালিজুড়ী এফ.এম উচ্চ বিদ্যালয
- বালিজুড়ী রওশন আরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- জোনাইল উচ্চ বিদ্যালয়
- জোনাইল নয়াপাড়া ফাতেমা খানমামুদ উচ্চ বিদ্যালয়
- মাদারগঞ্জ এ.এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়
- তেঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়
- ঝাড়কাটা উচ্চ বিদ্যালয়
- ঝাড়কাটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- শ্যামগঞ্জ কালিবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়
- কয়ড়া পাটাদহ উচ্চ বিদ্যালয়
- মহিষবাথান অার.এম উচ্চ বিদ্যালয়
- ঘুঘুমারী উচ্চ বিদ্যালয়
- মাদ্রাসা
- জোরখালী দাখিল মাদরাসা ****
- মিলন বাজার ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসা
- মাদারগঞ্জ অাব্দুল অালী মির্জা কাসেম ফাজিল(ডিগ্রী) মাদরাসা
- বালিজুড়ী এস.এম ফাজিল সিনিয়র(ডিগ্রি) মাদ্রাসা
- জোনাইল নয়াপাড়া কে.কে. মাহমুদ দাখিল মাদরাসা
- জোনাইল রাইসিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসা
- কলেজ
- মাদারগঞ্জ এ.এইচ.জেড সরকারি কলেজ
- মির্জা কাশেম নুরুন্নাহার মহিলা ডিগ্রি কলেজ
- মির্জা আজম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
- মাহমুদা বেলাল বি.এম. কারিগরি কলেজ
- খাজা ইউনুছ আলী ডিগ্রী কলেজ
- ঘুঘুমারী সাংবাদিক মাহবুব কারিগরি কলেজ
- মোজাম্মেল মমতাজ কারিগরী কলেজ
- স্কুল
- বাকুরচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়
- ২৭নং নিশিচনতপুর প্রাথমিক বিদালয়*
অর্থনীতি
কৃষিপ্রধান অর্থনীতি।প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, ভুট্টা, সরিষা, আখ, মিষ্টি আলু, মসুর, ছোলা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, রসুন, সূর্যমুখী, মাষকলাই, যব, ঢেড়শ, হলুদ, আদা, পান, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, চীনাবাদাম, কাউন।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, নারিকেল, কাঁঠাল, কলা, ফুটি, তরমুজ।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, পাট, সরিষা, ছোলা, মাষকলাই, আদা, শাকসবজি, মিষ্টি আলু।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭১.৬৪%, অকৃষি শ্রমিক ২.১৩%, শিল্প ০.৪%, ব্যবসা ১১.৪%, পরিবহন ও যোগাযোগ ১.৪৮%, চাকরি ৩.৯৮%, নির্মাণ ১.০২%, ধর্মীয় সেবা ০.১৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩৯% এবং অন্যান্য ৭.৩৭%।
শিল্প ও কলকারখানা চালকল, তেলকল, চিড়াকল, চানাচুর ফ্যাক্টরি, বেকারি, আইসক্রিম ফ্যাক্টরি, ছাপাখানা।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, বাঁশশিল্প।
দর্শনীয় স্থান
- জোরখালী বায়তুর রব জামে মসজিদ(১৯০০ ঈসায়ি)
- তালুকদার বাড়ি মসজিদ।
- ঠাকুরবাড়ি মন্দির।
- তারতাপাড়া নীলকুঠি।
- খরকা বিল
- হাওয়াই রোড
- তমালতলা শিব মন্দির
- মালিপাড়া ভিটা(১৮০০-১৯৭০ খ্রী.)
কৃতী ব্যক্তি
- অাশেক মাহমুদ তালুকদার
- মির্জা আজম,এমপি (গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী)
- নজরুল ইসলাম বাবু (বিশিষ্ট গীতিকার)
- মাহবুর রহমান রিপন(DIG Of Chittagong)
- যোদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা (মৃত) মোঃ সুরুজ্জামান
তথ্যসূত্র
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। "এক নজরে মাদারগঞ্জ উপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৩ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই, ২০১৫। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=, |সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)