আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ
আনন্দ মোহন কলেজ বাংলাদেশের ময়মনসিংহ শহরের অবস্থিত একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কলেজটি ১৯০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে এ কলেজে স্নাতকোত্তর শিক্ষা কার্যক্রম প্রবর্তিত হয়।
নীতিবাক্য | জ্ঞানের জন্য এসো, সেবার জন্য বেরিয়ে যাও |
---|---|
ধরন | সরকারি কলেজ |
স্থাপিত | ১৯০৮ |
অধ্যক্ষ | প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র ভৌমিক |
প্রশাসনিক কর্মকর্তা | ২০৭ জন |
শিক্ষার্থী | প্রায় ৩৮০০০ |
অবস্থান | কলেজ রোড, ময়মনসিংহ , ২৪.৭৬১৭৬৩° উত্তর ৯০.৩৯৫১২৩° পূর্ব |
শিক্ষাঙ্গন | নগর, ১৬ একর |
অধিভুক্তি | বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় |
ওয়েবসাইট | http://anandamohangovtcollege.edu.bd |
ইতিহাস
বাঙালি শিক্ষাবিদ ও সমাজসংস্কারক আনন্দমোহন বসু ১৮৮৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ময়মনসিংহ ইনস্টিটিউশন। ১৮৮০ সালে এই ইনস্টিটিউশন কার্যক্রম শুরু করে ময়মনসিংহ সিটি কলেজিয়েট স্কুল নামে। ১৮৯৯ সালে ময়মনসিংহের দুটি নাগরিক কমিটি ময়মনসিংহ সভা ও আঞ্জুমানে ইসলামিয়া একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবী জানায়। এ দাবীর পরিপ্রেক্ষীতে আনন্দমোহন বসুর সহায়তায় ১৯০১ সনের ১৮ জুলাই সিটি কলেজিয়েট স্কুল ময়মনসিংহ সিটি কলেজ নামে শিক্ষা কার্যক্রম আরম্ভ করে। তখন এই কলেজটি কলকাতা সিটি কলেজ কাউন্সিলের আর্থিক সহযোগিতায় পরিচালিত হতো। কিন্তু ১৯০৮ সালে সেই আর্থিক সহায়তা দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। তারপর ১৯০৮ সালে ময়মনসিংহ সিটি কলেজ আনন্দ মোহন কলেজ নামে যাত্রা শুরু করে যার পুরো জায়গা দান করেন মৌলভী হামিদ উদ্দিন তবে কলেজের শিক্ষাপ্রদান কার্যক্রম শুরু হয় ১৯০৯ সালে। প্রতিষ্ঠাকালে আনন্দ মোহন কলেজের ছাত্র ছিল মাত্র ১৭৮ জন ও শিক্ষক ছিলেন ৯ জন। কলেজটি ১৯৬৪ সালে সরকারিকরণ করা হয়।[1][2]
বর্তমান চিত্র
বর্তমানে আনন্দ মোহন কলেজে ২২টি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা, মানবিক তিনটি বিষয়ে ছাত্র ছাত্রী ভর্তি করা হয়। সব মিলিয়ে এসব বিষয়ে প্রায় ৩৭ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। শিক্ষক রয়েছেন ২০৭ জন। কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক হল রয়েছে; ছাত্রদের জন্য ৬টি ও ছাত্রীদের জন্য ২টি হল। প্রায় ৫০,০০০ বই নিয়ে আছে সমৃদ্ধ কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি। এছাড়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য মেডিকেল সেন্টার চালু করা হয়েছে | চালু করা হয়েছে ইন্টারনেট ক্যাফে।[3]
এছাড়াও বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যকম এর জন্য নতুন পাচঁ তলা ভবন স্থাপন করা হয়েছে যা মূল কলেজের বাম পাশে পদার্থবিদ্যা বিভাগের পেছনে অবস্থিত।
সুযোগ-সুবিধা
বিভাগসমূহ
- হিসাববিজ্ঞান
- বাংলা
- ইংরেজি
- সমাজবিজ্ঞান
- ইতিহাস
- ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি
- ইসলামী শিক্ষা
- অর্থনীতি
- রাষ্ট্রবিজ্ঞান
- সমাজকল্যাণ
- উদ্ভিদবিদ্যা
- প্রাণীবিদ্যা
- গণিত
- পদার্থবিদ্যা
- রসায়ন
- ভূগোল
- ব্যবস্থাপনা
- মার্কেটিং
- ব্যাংকিং ও ফিন্যান্স
- দর্শন
- উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি (বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক)
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং আর্ন্তজাতিক সামরিক আদালতের অন্যতম বিচারক রাধা বিনোদ পাল ১৯১১-১৯২০ সালে এই কলেজের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, ইতিহাসবিদ প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম এবং লেখক ড. সফিউদ্দিন আনন্দমোহন কলেজে শিক্ষকতা করেন।
বিগত একশতাধিক বৎসলে এ কলেজে অসংখ্য বিখ্যাত ব্যক্তি অধ্যয়ন করেছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন হলেন:
- নীহাররঞ্জন রায় — ইতিহাসবিদ
- পি.সি. সরকার —যাদুকর
- প্রবোধ চন্দ্র গোস্বামী — শিক্ষাবিদ
- প্রিন্সিপ্যাল ইবরাহীম খাঁ — শিক্ষাবিদও ও সাহিত্যিক
- নুরুল আমিন — পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
- সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ — ঔপন্যাসিক
- আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ — কবি
- যতীন সরকার — সাহিত্যিক ও গবেষক
- হেলেনা খান — শিশুসাহিত্যিক
- নির্মলেন্দু গুণ — কবি
- ইফ্ফাত আরা — সাহিত্যিক, সম্পাদক দ্বিতীয় চিন্তা
- রাশেদ খান মেনন — রাজনীতিবিদ
- মুশাররাফ করিম — কবি ও শিশু সাহিত্যিক
- সোহেল রানা — অভিনেতা
- আবু হাসান শাহরিয়ার — কবি
- হুমায়ুন কাদির — কথাসাহিত্যিক
- প্রফেসর মো. আনোয়ারুল ইসলাম — সাবেক উপাচার্য, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
- ড. অরবিন্দু পোদ্দার — বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক
- এম.এ রশিদ — বিচারপতি