ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ উত্তরাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঠাকুরগাঁও শহর সংলগ্ন টাঙ্গন নদীর দক্ষিণ-পূর্বে নদীর পাশেই সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে ৩৩ একর জমির উপর কলেজটি অবস্থিত। কলেজের পশ্চিমে ঠাকুরগাঁও রেলওয়ে স্টেশন এবং পূর্বে টাঙ্গন নদীর ব্রীজ পেরিয়ে ঠাকুরগাঁয়ের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড। কলেজ কর্তৃপক্ষ কলেজটিকে সম্পূর্ণ রাজনীতি, ধূমপান ও মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস হিসেবে ঘোষণা করে। এই কলেজ বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। ১ মার্চ ১৯৮০ সালে ঠাকুরগাঁও কলেজকে জাতীয়করণ করে নামকরণ করা হয় ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ।
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের নামফলক। | |
ধরন | সরকারি কলেজ |
---|---|
স্থাপিত | ১৯৫৯ |
অধ্যক্ষ | প্রফেসর ড. মোঃ গোলাম কিবরিয়া মন্ডল |
শিক্ষার্থী | ১১,১০১ জন (সেপ্টেম্বর-২০১৩)[1] |
অবস্থান | , , |
শিক্ষাঙ্গন | শহর |
অধিভুক্তি | জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় |
ক্রীড়া | ক্রিকেট, ফুটবল, টেবিল টেনিস |
ওয়েবসাইট | tgc |
প্রতিষ্ঠার ইতিহাস
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ ১৯৫৯ সনে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৯ সালের ৮ জুন তারিখে "সাব-ডিভিশন সোশাল ডেভলেপমেন্ট ফান্ড কমিটি"র মিটিংয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি উত্থাপন করা হলে উক্ত মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে ঠাকুরগাঁওয়ে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হবে। কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে তৎকালীন ঠাকুরগাঁও মহকুমা অফিসার জনাব এম. অাই. কে. খলিলকে অ্যাডহক কমিটির চেয়ারম্যান বানানো হয় । তৎকালীন ঠাকুরাগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের কলেজ ভর্তিচ্ছু মানবিক ও ব্যবসা শাখার প্রায় ৫০ জন ছাত্রছাত্রীদেরকে নিয়ে বেসরকারিভাবে ঠাকুরগাঁও কলেজের পদযাত্রা শুরু হয়। ঠাকুরগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের মহৎ শিক্ষানুরাগী প্রধান শিক্ষক জনাব রুস্তম অালী খাঁনকে অস্থায়ীভাবে নতুন কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ করা হয়। ক্রমান্বয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, অাইনবিদ, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী ও সমাজকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ তাদের অর্থ, সময়, শ্রম দিয়ে কলেজ পরিচালনায় সাহায্য করতে শুরু করে।[2]
একাডেমিক কোর্স চালুর ইতিহাস
১৯৬২ সালে উচ্চমাধ্যমিক বিজ্ঞান শাখা খোলা হয় এবং একই বছরে মানবিক ও ব্যবসা শাখার সাথে ডিগ্রী (পাস) কোর্স চালু করা হয়। বিজ্ঞান শাখাকে ডিগ্রী ক্লাসে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ১৯৬৯ সালে। ২৭ বছর পর ১৯৯৭-৯৮ সেশনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ঠাকুরগাঁও কলেজে অর্থনীতি, হিসাববিজ্ঞান, গণিত এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে সম্মান কোর্স চালুর অনুমোদনের মাধ্যমে ঠাকুরগাঁও ডিগ্রী কলেজকে ঠাকুরগাঁও সম্মান কলেজ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। পরবর্তী বছরে, ১৯৯৮-৯৯ সেশনে, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজে অন্যান্য ৬টি বিষয়সমূহ যথা উদ্ভিদবিদ্যা, ইংরেজি, ব্যবস্থাপনা, বাংলা, প্রাণিবিদ্যা এবং ইসলামের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি অনার্স কোর্সে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে কলেজটি দর্শন ও ইতিহাস অনার্স কোর্সভূক্ত করে। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে পদার্থ এবং রসায়নকে অনার্স কোর্সে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বর্তমানে কলেজটিতে সম্মান কোর্সে ১৪টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০১১ সালে ২৩ এপ্রিল ৪টি বিষয় যথা ইংরেজি, বাংলা, অর্থনীতি, উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতকোত্তর কোর্স চালু হয়।
ক্যাম্পাস
গাছপালার ছায়া বেষ্টিত মনোরম পরিবেশে ছাত্র-ছাত্রীদের কোলাহলে ৩৩ একর বিশিষ্ট ক্যাম্পাসটিকে করে তুলেছে অারও সজীব, অারও প্রাণবন্ত। কলেজে রয়েছে বিজ্ঞান ভবন, ব্যবসায় শিক্ষা ভবন, কলা ভবন, প্রশাসনিক ভবন ও গ্রন্থাগার। কলেজের চারদিকে গড়ে উঠেছে ছাত্র-ছাত্রীদের অনেক মেস। শিক্ষকদের ডরমেটরী, মসজিদ, পুকুর, কম্পিউটার ল্যাব, সুন্দর শহীদ মিনার ও খেলার মাঠ রয়েছে এখানে।[2]
জমির পরিমাণ
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের মোট জমির পরিমাণ ৩৩ একর।
মোট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা
সেপ্টেম্বর ২০১৩ তে উচ্চ মাধ্যমিক, অনার্স, ডিগ্রী (পাস), মাষ্টার্সসহ মোট শিক্ষার্থী প্রায় ১১,১০১ জন।[1]
মোট শিক্ষক সংখ্যা
মোট শিক্ষক সংখ্যা ৭৫ জন।
একাডেমিক কোর্স
উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট, ডিগ্রী (পাস), অনার্স ও মাষ্টার্স।
উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট
- বিজ্ঞান
- ব্যবসা
- মানবিক
ডিগ্রী (পাস)
- বি,এ
- বি,এস,এস
- বি,এস,সি
- বি,বি,এস
অনার্স (১৪ টি বিষয়)
- বাংলা
- ইংরেজি
- অর্থনীতি
- ব্যবস্থাপনা
- উদ্ভিদবিদ্যা
- প্রাণিবিদ্যা
- রাষ্ট্রবিজ্ঞান
- ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি
- দর্শন
- হিসাববিজ্ঞান
- গণিত
- রসায়ন
- পদার্থ
- ইতিহাস
মাষ্টার্স (৪ টি বিষয়)
- ইংরেজি
- বাংলা
- অর্থনীতি
- উদ্ভিদবিদ্যা
কেন্দ্রীয় ও সেমিনার গ্রন্থাগার
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজে 'সেন্ট্রাল লাইব্রেরি' নামে সমৃদ্ধশীল কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও সম্মান ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য প্রতিটি বিভাগে নিজস্ব সেমিনার লাইব্রেরি রয়েছে। সেমিনারে বইয়ের সংখ্যা প্রায় ১০,৮৫৯ টি এবং কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে বইয়ের সংখ্যা ১২,৮৪৪ টি।[2] ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের প্রয়োজননুসারে, উপরোক্ত দুই ধরনের গ্রন্থাগার থেকে বই নিয়ে চাহিদা মেটাতে সক্ষম।
পাশের হার
উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষা(২০১৩) ৮৩.০৩%, ডিগ্রী(২০১১) ৬৮.৫২%, অনার্স (২০১০) ৯৩.৩৫%।[1]
বিগত ৫(পাঁচ) বছরের পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল[1]
উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষার ফলাফলঃ
পরীক্ষার বছর | মোট পরীক্ষার্থী | জিপিএ ৫ প্রাপ্তর সংখ্যা | উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা | পাশের হার |
---|---|---|---|---|
২০১৩ | ৭৭৮ | ৮৫ | ৬৪৬ | ৮৩.০৩% |
২০১২ | ৮৭৬ | ১৬৭ | ৭৫০ | ৮৫.৬১% |
২০১১ | ৯৬০ | ৭১ | ৭৫৬ | ৭৮.৭৫% |
২০১০ | ৮৯০ | ৩২ | ৬৮৪ | ৭৬.৮৫% |
২০০৯ | ৬৮৫ | ৪৩ | ৫৪৬ | ৭৯.৭০% |
ডিগ্রী(পাস) ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফলঃ
পরীক্ষার বছর | মোট পরীক্ষার্থী | উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা | গড় পাশের হার |
---|---|---|---|
২০১১ | ৮৮৯ | ৫৯৬ | ৬৮.৫২% |
২০১০ | ৬০৮ | ২৯০ | ৬৬.২৯% |
২০০৯ | ৪৭৭ | ২৫৮ | ৬৪.৫০% |
২০০৮ | ৩৯৬ | ১৯৩ | ৪৮.৫৬% |
২০০৭ | ৩২৯ | ১১৬ | ৩৩.৯৯% |
অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফলঃ
পরীক্ষার বছর | মোট পরীক্ষার্থী | উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা | গড় পাশের হার |
---|---|---|---|
২০১০ | ৫৬৬ | ৫৩৪ | ৯৩.৩৫% |
২০০৯ | ৪৯১ | ৪৬৯ | ৯৬.৪৭% |
২০০৮ | ২৭৮ | ২৫৭ | ৯৩.৩৩% |
২০০৭ | ১২০ | ১০৫ | ৯২.২৫% |
২০০৬ | ৯৬ | ৮৭ | ৮৬.১৩% |
অাবাসিক ব্যবস্থা
কলেজে ছাত্রদের জন্য ১০০ শয্যাবিশিষ্ট একটি ছাত্রাবাস রয়েছে এবং ছাত্রীদের জন্য ২টি (একটি ১৪৫ শয্যাবিশিষ্ট এবং অন্যটি ১০০ শয্যাবিশিষ্ট ৪ তলা) ছাত্রীনিবাস রয়েছে। তাছাড়া কলেজের অাশেপাশে অনেক মেস রয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনসমূহ
বিএনসিসি, রোভার, রেডক্রিসেন্ট, বাঁধন ইত্যাদি।
বহিঃসংযোগ
তথ্যসূত্র
- "ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ"। http://www.thakurgaon.gov.bd। ২১ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৫।
|প্রকাশক=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য) - "THAKURGAON GOVT. COLLEGE - 3502"। http://www.nubd.info। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৫।
|প্রকাশক=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)