বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সদা পরিবর্তনশীল এবং বিভিন্নরূপ শিক্ষা ব্যবস্থার সমন্বয়ে গঠিত। এই শিক্ষা ব্যবস্থা প্রধানতঃ প্রাথমিক স্তর, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তর এবং উচ্চশিক্ষা বা বিশ্ববিদ্যালয় স্তর - এই তিন স্তরবিশিষ্ট। সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো পরিচালিত হয় ৬ (শিশু শ্রেণিসহ) বছর মেয়াদি প্রাথমিক (৮ বছর মেয়াদী করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে), ৫ বছর মেয়াদি মাধ্যমিক ও ২ বছর মেয়াদি উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে। উচ্চশিক্ষা বা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা ৩-৫ বছর মেয়াদি; যা সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত ৩৭টি পাবলিক ও ৯০টিরও বেশি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তত্ত্বাবধানে অধিভুক্ত কলেজের (ঢাকার ৭টি সরকারী কলেজ বাদে) মাধ্যমে দেয়া হয়। শিক্ষার্থীরা শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলা বা ইংরেজির মধ্যে যেকোনটিকে বেছে নিতে পারে।
![]() | |
শিক্ষা মন্ত্রণালয় | |
---|---|
মন্ত্রী / শিক্ষা উপদেষ্টা | ডাঃ দীপু মনি |
জাতীয় শিক্ষা বাজেট (২০০০৬) | |
বাজেট | US$7.7 বিলিয়ন (২.৪% জিডিপি) |
সাধারণ বিবরণ | |
মাতৃভাষা | বাংলা, ইংরেজি |
প্রতিষ্ঠিত আবশ্যিক শিক্ষা | ১৯৭২ ১২ বছর |
সাক্ষরতা (১৫+) | |
মোট | ৭৫.৪ |
পুরুষ | ৭৭.১ |
মহিলা | ৭১.৫ |
তালিকাভুক্তি | |
মোট | ২৩,৯০৭,১৫১ |
প্রাথমিক | ১৬,২৩০,০০০ |
মাধ্যমিক | ৭,৪০০,০০০ |
মাধ্যমিক পরবর্তী | ২৭৭,১৫১ |
লব্ধি | |
মাধ্যমিক ডিপ্লোমা | ৩৩৫,৪৫৪ |
মাধ্যমিক-পরবর্তী ডিপ্লোমা | ৮৬,৯৪৮ |
"Bangladesh Education Stats"। Central Database। NationMaster। ২০০৭-০৩-২১। ২০০৭-০৩-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৩-২১। "Statistical Pocket Book-2006" (PDF)। Bangladesh Bureau of Statistics। ২০০৬। ২০০৭-০৯-২৮ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-১৬। |
উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কলেজ হিসেবে পরিচিত। এছাড়া রয়েছে মাদ্রাসা ও ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল। এগুলো যথাক্রমে মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড এবং বিদেশী শিক্ষা বোর্ডের তালিকাভুক্ত। মাধ্যমিক পরবর্তী পর্যায়ে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ স্কুল পরিচালনার জন্য কারিগরি শিক্ষা বোর্ড গঠন করা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যবই উন্নয়ন, অনুমোদন এবং ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্ত্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশ ব্যুরো অব এডুকেশনাল ইনফরমেশন অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিক্স (BANBEIS) গঠন করেছে, যা সকল পর্যায়ের শিক্ষাসংশ্লিষ্ট তথ্য সংরক্ষণ করে থাকে।[1]

ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা
বাংলাদেশ এ ইসলামী শিক্ষা সাধারনত মসজিদ ও মাদ্রাসা ভিত্তিক হয়ে থাকে। মাদ্রাসার প্রাথমিক স্তর মক্তব, নূরানি বা ফোরকানিয়া মাদ্রাসা নামে অভিহিত। ফোরকানিয়া শব্দের মূল ফুরকান যার অর্থ বিশিষ্ট। মিথ্যা থেকে সত্যকে সুস্পষ্টভাবে পৃথক করে বলে পবিত্র কুরআন-এর আরেক নাম আল ফুরকান। প্রাথমিক স্তরের যেসব মাদ্রাসায় কুরআন পাঠ ও আবৃত্তি শেখানো হয় সেগুলিকে বলা হয় দর্সে কুরআন। সাধারণত স্থানীয় কোন মসজিদেই আশেপাশের পরিবারের ছোটদের প্রাথমিক পর্যায়ের ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হয়। মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জিনরাই সাধারণত এর শিক্ষক বা উস্তাদ হন।
মাদ্রাসার ধরণ
--> ইবতেদায়ী মাদ্রাসা
--> দাখিল মাদ্রাসা
--> আলিম মাদ্রাসা
--> ফাজিল মাদ্রাসা
--> কামিল মাদ্রাসা
--> হাফিজিয়া মাদ্রাসা
--> কওমি মাদ্রাসা
ইংরেজী শিক্ষা ব্যবস্থা
প্রাথমিক শিক্ষা
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা
প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা
বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশে সাধারণত তিন ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় দেখা যায়। সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়।
- সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়
- বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
- আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়
গণ শিক্ষা
প্রাপ্ত বয়স্ক শিক্ষা
গণস্বাক্ষরতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য নিয়ে দেশে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে প্রাপ্ত বয়স্ক শিক্ষা প্রচলিত আছে।
শিক্ষার মাধ্যম
সরকারী প্রণোদনা
বেসরকারী সংস্থাসমূহের অবদান
বর্তমানে সারাদেশে অসংখ্য সুবিধাবঞ্চিতদের স্কুল সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের স্বাক্ষরতা অর্জনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন যা দেশের শিক্ষার হার বর্ধনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে। এর মধ্যে বিজয় ফাউন্ডেশন, জাগো ফাউন্ডেশন, মজার ইশকুল, মাস্তুল ফাউন্ডেশন, রোজেনবার্গ ফাউন্ডশন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ঢাকার গাবতলীতে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে সুবিধাবঞ্চিতদের শিক্ষা ও স্বপ্নপূরণের অঙ্গিকার নিয়ে ফাউনণ্ডেশন ক্লাউড ফিফটিন'র দীর্ঘ মেয়াদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান 'মেঘস্কুল' যেখানে বিনামূল্যে এসকল শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে পরবর্তী দুই স্তরের শিক্ষা লাভের সুযোগ করে দেয়া হবে। মূলতঃ সাধারণ শিক্ষাকে সাথে রেখে নৈতিক শিক্ষা এবং তাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য সচেতনতায় এই স্কুলটি কাজ করে যাচ্ছে।
বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সাতটি শিক্ষা বোর্ডের অধিভুক্ত বোর্ডগুলো তিনটি পাবলিক পরীক্ষা পরিচালনা করে-
- নিম্ন-মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা;
- মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা;
- উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষা।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয় একটি স্বায়ত্ত শাসিত সংস্থার মাধ্যমে যার নাম বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন।
পাঠ্য পুস্তক প্রকাশনা
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল পাঠ্য পুস্তক বাংলাদেশ স্কুল টেক্সটবুক বোর্ড নামীয় একটি সরকারী সংস্থার মাধ্যমে প্রণীত, সম্পাদিত, মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয়। সরকার ২০০৩ সাল থেকে সীমিত পর্যায়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম প্রবর্তন করে। বছর বছর এই কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়। ২০১৩ সালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীকে এই কর্মসূচীর আওতায় আনা সম্ভব হয়। ২০১৩ সালের নতুন শিক্ষা বৎসর শুরুর আগেই ৩ কোটি পাঠ্য পুস্তক শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে পৌঁছে দেয়া হয়।