বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থা

বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থা দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে দেশের মধ্যকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন দ্রুত গতিতে এগিয়েছে, এবং বর্তমানে ভূমি, জল ও আকাশ পথে বহুবিধ যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে, এখনও সমস্ত প্রকৃতির পরিবহন ব্যবস্থার প্রচলন নিশ্চিত করতে দেশটিতে কোনও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়নি।

মানচিত্রে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা

বিবরণ

বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থা পরিবর্তনশীল। বর্তমানে যে অবস্থা দেখতে পারছি তা দীর্ঘ সময়ে পরিবর্তিত রূপ। বাংলাদেশের ব্যবস্থা অতীত ও বর্তমানের মধ্যে অনেক পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় এবং ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাপক উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে।

অতীত

বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থার অতীতকালে খুব দুর্বল ছিল। অতীতে প্রধান পরিবহনের মাধ্যম ছিল নদী পথ ও সড়ক পথ। অতীত কালের প্রধান যানবাহন ছিল গরুর গাড়ী , ঘোড়া গাড়ী। পর্যাপ্ত রাস্তা না থাকায় অনেক দূর পর্যন্ত হেঁটে চলাচল করতে হত । নদী পথে চলাচল করা ছিল সহজ ও দ্রুত। অতীতে বেশিভাগ সময় নদী পথ ব্যবহার করা হত।

বর্তমান

বর্তমানে বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থা অনেকটাই উন্নতি লাভ করেছে। দেশের প্রত্যন্ত এলাকাতেও পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে যে কোন জিনিস সহজে দেশের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সহজে স্থানান্তর করা যায়। যন্ত্র চালিত যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থায় পরিবহন খরচ তুলনামূলক ভাবে হ্রাস পেয়েছে।

ভবিষ্যৎ

অতীত ও বর্তমানের পার্থক্য বিবেচনা করলে বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। যে গতিতে বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে তাতে ধারণা করা যায় যে, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ উন্নত-পরিবহন ব্যবস্থার দেশে পরিণত হবে।

স্থল পথ

সড়ক পথ

ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কে একটি বাস

অর্থনীতির উন্নয়নের সাথে সাথে ঢাকায় যানবাহনের পরিমাণ অতি-মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। অতিরিক্ত যানবাহনের কারণে সড়ক পথে কোলাহল ও গণ্ডগোল লেগেই থাকে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ সড়ক পথে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সরকার পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে নতুন বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

রেলপথ

সিলেট রেলস্টেশন এ একটি পরাবত এক্সপ্রেস

স্থল পথে পরিবহনের দ্বিতীয় প্রধান মাধ্যম হল রেল পথ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ও মাল পত্র রেলের মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়। রেল পথে ঝুঁকি কম থাকায় এটি মানুষের নিকট ব্যাপক জনপ্রিয়টা লাভ করে। আকার আয়তনে বেশি এবং ভারী জিনিস পরিবহনে রেল পথের প্রাধান্য বেশি। বাংলাদেশের রেল পরিবহন ব্যবস্থা মূলত এসেছে ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ পরিচালিত 'আসাম - বাংলা ' রেল পরিবহন থেকে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে রেল পরিবহন ক্রমশ বাড়তে থাকে। ২০০৫ সালের মধ্যে ২,৭০৬ কিলোমিটার রেল পথের বিস্তৃতি লাভ করে এবং এখনো এর বৃদ্ধির কাজ চলছে।

জল পথ

নদী-মাতৃক দেশ হওয়ার কারণে প্রাচীন বাংলায় পরিবহনের প্রধান মাধ্যম ছিল জল পথ। এ দেশে ৫,১৫০ থেকে ৮,০৪৬ কিলোমিটার জল পথ রয়েছে , এর মধ্যে ২,৫৭৫ থেকে ৩,০৫৮ কিলোমিটার সাধারণ পরিবহনে উপযোগী এবং ১,৬০০ থেকে ১৯০০ মাইল জল পথ বড় জাহাজ চলাচলে উপযোগী। বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম।

আকাশ পথ

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স Boeing 787-8 ড্রিমলাইনার

বাংলাদেশ পরিবহন ব্যবস্থায় আকাশ পথে তেমন অগ্রগতি করতে পারেনি , তবে উন্নয়নের কাজ চলছে। দেশের কিছু স্থানে বিমান বন্দর স্থাপন করা হয়েছে। আকাশ পথে খরচ অত্যন্ত বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষ এতে চলাচল করতে পারে না।

সমস্যা ও সম্ভাবনা

নৌ-পরিবহন

প্রত্যেক দেশের পরিবহন ব্যবস্থায় কিছু না কিছু সমস্যা রয়েছে , বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। কয়েকটি কারণে বাংলাদেশ পরিবহন ব্যবস্থায় পিছিয়ে আছে।

সমস্যা

  • রাস্তা ঘাটের অবনতি
  • শিক্ষার অভাব
  • নিয়ন্ত্রক প্রশাসকের ভুল ত্রুটি
  • ঘুষ দুর্নীতি
  • স্বজন প্রীতি
  • আইনের প্রতি উদাসীনতা

উপরের সমস্যা গুলো সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা গেলে বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থা উন্নত রূপ লাভ করবে।

তথ্যসূত্র

    বহিঃসংযোগ

    • Sunny, Sanwar (২০১১)। Green Buildings, Clean Transport and the Low Carbon Economy: Towards Bangladesh's Vision of a Greener Tomorrow। Germany: LAP Publishers। আইএসবিএন 978-3-8465-9333-2।

     এই নিবন্ধটিতে সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক থেকে পাবলিক ডোমেইন কাজসমূহ অন্তর্ভুক্ত যা পাওয়া যাবে এখানে

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.