ব্রিটিশ রাজের ইতিহাস

ব্রিটিশ রাজের ইতিহাস বলতে ভারতীয় উপমহাদেশে ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী ব্রিটিশ শাসনের সময়কালকে বোঝায়। এই শাসনব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে যখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন ব্রিটিশ রাজ বা রাণী ভিক্টোরিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হয়। যাঁকে ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দে 'এমপ্রেস অফ ইন্ডিয়া' বা 'ভারতের সম্রাজ্ঞী' বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। এই শাসন ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল যখন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ প্রদেশগুলিকে ভাগ করে দুটি অধিরাজ্য বা ডমিনিয়ন সৃষ্টি করা হয়। এই দুটি ছিল যথাক্রমে ভারত অধিরাজ্যপাকিস্তান অধিরাজ্য। দেশীয় রাজ্যগুলিকে এই দুটি দেশের মধ্যে একটিকে বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এই অধিরাজ্য দুটি পরবর্তীকালে ভারতীয় প্রজাতন্ত্র এবং ইসলামি প্রজাতন্ত্রী পাকিস্তান-এ পরিণত হয়। পাকিস্তানের পূর্ব অংশ বা পূর্ব পাকিস্তান ১৯৭১ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ-এ পরিণত হয়। ভারত সাম্রাজ্যের পূর্বদিকের বার্মা প্রদেশটিকে ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে একটি আলাদা উপনিবেশে পরিণত করা হয়। বার্মা ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে স্বাধীনতা লাভ করে।

ঔপনিবেশিক ভারত
ঔপনিবেশিক ভারত
ডাচ ভারত১৬০৫–১৮২৫
ডেনিশ ভারত১৬২০–১৮৬৯
ফরাসী ভারত১৭৬৯-১৯৫৪
পর্তুগীজ ভারত
(১৫০৫–১৯৬১)
কাসা দা ইন্ডিয়া১৪৩৪–১৮৩৩
পর্তুগীজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি১৬২৮–১৬৩৩
ব্রিটিশ ভারত
(১৬১২–১৯৪৭)
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি১৬১২–১৭৫৭
ভারতে কোম্পানি শাসন১৭৫৭–১৮৫৮
ব্রিটিশ ভারত১৮৫৮–১৯৪৭
বার্মায় কোম্পানি শাসন১৮২৪–১৯৪৮
দেশীয় রাজ্য১৭২১–১৯৪৯
ভারত বিভাগ
১৯৪৭

ভূমিকা

ভারতে ব্রিটিশ রাজের আগেকার ইতিহাস জানতে দেখুন ভারতে কোম্পানি শাসন এবং সিপাহী বিদ্রোহ ১৮৫৭

অর্থনীতির উপর প্রভাব

ঊনবিংশ শতকের শেষার্ধে ব্রিটিশ রাজ দ্বারা সরাসরি ভারত প্রশাসন এবং শিল্পবিপ্লব জনিত প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের ফলে ভারত এবং গ্রেট ব্রিটেনের অর্থনীতি একে অপরের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত হয়ে পড়ে।[1] বাস্তবিকভাবে ভারতে পরিবহন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার মুখ্য পরিবর্তনগুলি সিপাহি বিদ্রোহের আগেই শুরু হয়েছিল যা ব্রিটিশ রাজের শাসনব্যবস্থার সঙ্গে সাধারনভাবে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়। লর্ড ডালহৌসি প্রযুক্তিগত পরিবর্তন গ্রহণ করেছিলেন যা তখন গ্রেট ব্রিটেনে খুবই দ্রুতগতিতে সম্পন্ন হচ্ছিল। এর ফলে ভারতেও খুব তাড়াতাড়ি বিভিন্ন প্রযুক্তির উন্নয়ন শুরু হয়। রেলপথ, সড়ক, খাল এবং সেতুগুলি খুব দ্রুতগতিতে নির্মিত হতে থাকে এবং টেলিগ্রাফ যোগাযোগও খুব তাড়াতাড়ি গড়ে ওঠে। এগুলির মাধ্যমে কাঁচামাল, যেমন তূলা ভারতের ভিতরের বিভিন্ন দূরবর্তী জায়গা থেকে আরো দক্ষতার সাথে বিভিন্ন বন্দর যেমন বোম্বেতে পরিবহন করে নিয়ে আসা সম্ভব হয় ইংল্যান্ডে রপ্তানির জন্য।[2] একই দক্ষতার সাথে ইংল্যান্ডে উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী পরিবহন করে ভারতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় সেখানকার বর্ধনশীল বাজারে বিক্রির জন্য।[3] যদিও ইংল্যান্ডে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য বাজারের ঝুঁকি ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীরাই বহন করতেন কিন্তু ভারতে তা বহন করতেন করদাতারাই, যাঁরা ছিলেন মূলত কৃষক এবং কৃষি শ্রমিকেরা। যা শেষে দাঁড়ায় ৫০ মিলিয়ন পাউন্ড।[4] এই সমস্ত খরচের পরেও খুব কম দক্ষ শ্রমিক ভারতে তৈরি হয়। ১৯২০ সাল নাগাদ ভারতীয় রেল নির্মাণের পরের ৬০ বছরের ইতিহাসে রেলওয়ের কেবল দশ শতাংশ উচ্চপদ ভারতীয়দের দখলে ছিল।[5]

প্রযুক্তিগত দ্রুততা ভারতে কৃষি অর্থনীতিকেও পরিবর্তন করে। ঊনবিংশ শতকের শেষ দশক নাগাদ কিছু কাঁচামালের বড় অংশ যার মধ্যে তুলা ছাড়াও কিছু খাদ্যশস্য ছিল, দূরবর্তী বাজারগুলিতে রপ্তানি হতে থাকে।[6] ফলস্বরূপ, অনেক ক্ষুদ্র কৃষক যারা এর উপর নির্ভরশীল ছিল তারা বাজারগুলির অস্থিরতার কারনে জমি, গবাদি পশু, কৃষি উপকরন ইত্যাদি ঋণদাতাদের কাছে হারাতে থাকে।[6] ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয় অর্ধে ভারতে বড় আকারের দুর্ভিক্ষের বৃ্দ্ধি দেখা যেতে থাকে। যদিও ভারতীয় উপমহাদেশে দুর্ভিক্ষ নতুন কিছু ছিল না কিন্তু এই দুর্ভিক্ষগুলির প্রভাব খুবই গুরুতর ছিল যার ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যেতে থাকে।[7] ব্রিটিশ এবং ভারতীয় অনেক সমালোচকরা এই দুর্ভিক্ষের দায়ভার চাপান উপনিবেশ শাসকদের উপর।[6]

স্বায়ত্তশাসনের আরম্ভ

ঊনবিংশ শতকের শেষের দিকে স্বায়ত্তশাসনের দিকে প্রথম পদক্ষেপগুলি নেওয়া শুরু হতে থাকে ব্রিটিশ ভাইসরয়কে পরামর্শ দেওয়ার জন্য ভারতীয় পরামর্শদাতাদের নিয়োগের মাধ্যমে এবং ভারতীয় সদস্যযুক্ত প্রাদেশিক পরিষদের স্থাপনার মধ্য দিয়ে। ব্রিটিশরা আইনসভা পরিষদে ভারতীয় সদস্যদের অংশগ্রহণ বৈধ করে ইন্ডিয়ান কাউন্সিলস অ্যাক্ট ১৮৯২ -এর মাধ্যমে। পৌরসভা এবং জেলা বোর্ড গঠিত হয় স্থানীয় প্রশাসনের জন্য। এগুলিতে নির্বাচিত ভারতীয় সদস্যরা ছিল।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিলস অ্যাক্ট ১৯০৯ যা মর্লি-মিন্টো সংস্কার নামেও পরিচিত ছিল (জন মর্লি ছিলেন ভারতের রাষ্ট্র সচিব এবং গিলবার্ট এলিয়ট, চতুর্থ আর্ল অফ মিন্টো, ছিলেন ভাইসরয়) - ভারতীয়দের কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক আইনসভা বা আইনী পরিষদে সীমিত ভূমিকা দেয়। আগে ভারতীয়দের আইনী পরিষদে নিযুক্ত করা হত কিন্তু আইন সংশোধনের পরে কেউ কেউ আইনী পরিষদে নির্বাচিত হতে থাকেন। কেন্দ্রে গরিষ্ঠ সংখ্যক পরিষদীয় সদস্যদের সরকার দ্বারা নিযুক্ত হওয়া চালু থাকে এবং ভাইসরয় কোনোভাবেই আইনসভার কাছে দায়বদ্ধ ছিলেন না। প্রাদেশিক স্তরে নির্বাচিত সদস্যরা অনুমোদনহীন নিয়োগপ্রাপ্তদের সাথে সরকার নিযুক্ত সদস্যদের থেকে সংখ্যায় বেশি ছিলেন। কিন্তু গভর্নরের আইনসভার প্রতি দায়বদ্ধতা ছিল না। জন মর্লি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কাছে এই আইন উপস্থাপনা করে পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন যে ভারতে সংসদীয় স্বায়ত্তশাসন ব্রিটিশ সরকারের লক্ষ্য নয়।

মর্লি-মিন্টো সংস্কার একটি মাইলফলক ছিল। ধাপে ধাপে নির্বাচনী নীতি চালু করা হয় ভারতীয় আইনী পরিষদের সদস্যতার জন্য। নির্বাচকমণ্ডলী সীমিত ছিল কেবল উচ্চশ্রেনীর ভারতীয়দের একটি ছোটো দলের মধ্যে। এই নির্বাচিত সদস্যরা ক্রমে সরকারী শাসনব্যবস্থার বিরোধী হয়ে পড়ে। সাম্প্রদায়িক নির্বাচকমণ্ডলীগুলি পরে অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রসারিত হয় এবং ধর্মের মাধ্যমে গোষ্ঠী শনাক্তকরণের দিকে ভারতীয় প্রবণতার একটি রাজনৈতিক কারন তৈরি করে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং এর কারনসমূহ

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ভারত ও ব্রিটেনের সাম্রাজ্যবাদী সম্পর্কের মধ্যে একটি সন্ধিক্ষণ বলে প্রমাণিত হয়েছিল। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর চৌদ্দ লক্ষ ভারতীয় এবং ব্রিটিশ সৈন্য প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল এবং তাদের এই অংশগ্রহণ একটি বিস্তৃত সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের কারণ বলে গণ্য হয়। ভারতীয় সৈন্যদের ব্রিটিশ এবং অন্যান্য অধিরাজ্য যেমন কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার সৈন্যদের সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং মৃত্যুর খবর পৃথিবীর দূরতম কোনে ছড়িয়ে পড়েছিল খবরের কাগজ এবং নতুন মাধ্যম রেডিওর মাধ্যমে।[8] এর ফলে ভারতের আন্তর্জাতিক অবস্থান উন্নত হয়েছিল এবং ১৯২০-এর দশক ধরে তা উন্নত হতে থাকে।[8] এর ফলে আরো কিছু বিষয়ের সাথে ভারত নিজের নামেই ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে 'লিগ অফ দ্য নেশনস' এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হয় এবং ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের অ্যান্টওয়ার্পের গ্রীষ্ম অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় 'লেস ইনডেস অ্যাংলাইসেস' (দি ব্রিটিশ ইন্ডিস) নামে অংশগ্রহণ করে।[9] এর ফলে ভারতে মূলত ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের নেতাদের আরো বেশি ভারতীয় আত্মশাসনের অধিকার সম্পর্কে দাবি জানাতে দেখা যায়।[8]

১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে লখনৌ চুক্তি স্বাক্ষর এবং হোম রুল লিগস স্থাপনার মধ্য দিয়ে জাতীয়তাবাদীদের শক্তি প্রদর্শিত হয়। একই সাথে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মেসোপটেমিয়া অভিযানের বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে এই বিষয়টিও উপলব্ধিত হয় যে যুদ্ধ আরো বেশি সময়ের জন্য চলতে পারে। নতুন ভাইসরয় লর্ড চেমসফোর্ড সতর্ক করেন যে ভারত সরকারের উচিত ভারতীয়দের দাবিগুলির প্রতি আরো সংবেদনশীল হওয়া।[10] এই বছরের শেষের দিকে লন্ডনে সরকারের সাথে আলোচনা করার পরে লর্ড চেমসফোর্ড প্রস্তাব দেন যে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয়দের যুদ্ধে ভূমিকার কথা খেয়াল রেখে তাদের উপর নিজেদের বিশ্বাস প্রদর্শনের বিবিধ কর্মসূচি নেবে। তার মধ্যে ছিলে ভারতীয় রাজাদের পুরস্কার, উপাধি এবং সম্মান দান, ভারতীয়দের সেনাবাহিনীতে বিভিন্ন পদ প্রদান এবং অপ্রয়োজনীয় তূলা আবগারি শুল্কের অপসারন। তবে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ছিল ব্রিটেন কর্তৃক ভারতের জন্য ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ঘোষণা এবং কিছু দৃঢ় পদক্ষেপের ঈঙ্গিত।[10] আগস্ট ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে আলোচনার পরে ভারতের নতুন উদারপন্থী রাষ্ট্র সচিব এডউইন মন্টেগু ঘোষণা করেন ব্রিটিশ লক্ষ্য হল "প্রশাসনের প্রতিটি শাখায় ভারতীয়দের আরো বেশি অংশগ্রহন এবং স্বশাসিত সংস্থাগুলির ক্রমোন্নতির মাধ্যমে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে ভারতে উন্নতিশীল দায়িত্ববান সরকারের গঠন"।[10] এটি পরিকল্পনা করা হয়েছিল শিক্ষিত ভারতীয়দের আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে, যাদের অবজ্ঞা করা হত প্রতিনিধিহীন সংখ্যালঘু হিসাবে। যাদের মন্টেগু বর্ণনা করেছিলেন "বুদ্ধিমত্তার দিক থেকে আমাদের সন্তান" হিসাবে।[11] সংস্কারের গতি কোথায় এবং কখন বাড়ানো হবে তা ব্রিটেন স্থির করত যখন ভারতীয়দের তা অর্জন করতে দেখা যেত।[11] যদিও এই পরিকল্পনাটি প্রথমে ভাবা হয়েছিল কেবল রাজ্যগুলিতে সীমিত স্বশাসনের কথা ভেবেই - ভারতে অথচ দৃঢ়ভাবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিতরে। এটি একটি অশ্বেতাঙ্গ উপনিবেশে যে কোন রকম প্রতিনিধিত্বমূলক সরকারের প্রথম ব্রিটিশ প্রস্তাবের প্রতিনিধিত্ব করেছিল।

এর আগে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শুরুতে ইউরোপ এবং মেসোপটেমিয়ায় ভারতের বেশিরভাগ ব্রিটিশ সেনার পুর্ননিয়োগের ফলে পূর্ববর্তী জয় এসেছিল। লর্ড হার্ডিং এর ফলে "ভারত থেকে সৈন্য সরিয়ে নেওয়ার ঝুঁকি" সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।[8] বিপ্লবী সহিংসতা ইতিমধ্যেই ব্রিটিশ ভারতে একটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছিল। ফলস্বরূপ ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে বর্দ্ধিত দুর্বলতার সময় নিজের ক্ষমতা আরো জোরদার করার জন্য ভারত সরকার ডিফেন্স অফ ইন্ডিয়া আইন জারি করে। যা সরকারকে যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই রাজনৈতিকভাবে বিপজ্জনক বিরোধীদের বন্দী করার ক্ষমতা দেয় এবং ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দের প্রেস আইন অনুযায়ী যা ক্ষমতা ছিল তাকে আরো জোরালো করা হয়। যার মধ্যে ছিল সাংবাদিকদের কারারুদ্ধ করা এবং সংবাদমাধ্যমকে সেন্সর করা।[12] এখন সাংবিধানিক সংস্কারের বিষয়টি আন্তরিকভাবে আলোচনা করা শুরু হয়। ব্রিটিশ সরকার বিবেচনা করতে শুরু করে কিভাবে নরমপন্থী ভারতীয়দের সাংবিধানিক রাজনীতির মধ্যে আনা যায় এবং একই সাথে কিভাবে প্রতিষ্ঠিত সাংবিধানিকদের হাত শক্তিশালী করা যায়।[12] যদিও সংস্কার পরিকল্পনাটি এমন একটি সময়ে নেওয়া হয়েছিল যখন চরমপন্থী সহিংসতা যুদ্ধকালীন সরকারের অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রনের ফলে হ্রাস পেয়েছিল। এখন বিপ্লবী সহিংসতা পুনরুজ্জীবনের আশঙ্কায়[11] সরকার বিবেচনা করতে লাগল কিভাবে যুদ্ধকালীন ক্ষমতাগুলি শান্তির সময়েও টিঁকিয়ে রাখা যেতে পারে।[12][12]

ভারতের রাষ্ট্র সচিব এডউইন মন্টাগু, বামদিকে, যাঁর দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে ১৯১৯ সালের ভারত সরকার আইন চালু হয়। এটিকে মন্টফোর্ড সংস্কার বা মন্টাগু-চেমসফোর্ড সংস্কার বলেও অভিহিত করা হয়।

সুতরাং ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে যদিও এডউইন মন্টাগু নতুন সাংবিধানিক সংস্কারের ঘোষণা করেছিলেন, একটি রাষ্ট্রদ্রোহ বিষয়ক পরিষদকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ভারতে যুদ্ধকালীন সময়ে বিপ্লবী ষড়যন্ত্র এবং হিংসাত্মক কার্যকলাপের সাথে জার্মান এবং বলশেভিক যোগাযোগ তদন্ত করে দেখতে।[13][14][15] এই পরিষদের সভাপতি ছিলেন একজন ব্রিটিশ বিচারপতি মিস্টার এস. এ. টি. রাওলাট। এই পরিষদের অলিখিত লক্ষ্য ছিল সরকারের যুদ্ধকালীন ক্ষমতাগুলিকে পরবর্তী সময়ে বাড়িয়ে নেওয়া।[10] রাওলাট পরিষদ তার বিবৃতি পেশ করে ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে এবং ষড়যন্ত্রমূলক বিদ্রোহের তিনটি অঞ্চল চিহ্নিত করে: বাংলা, বম্বে প্রেসিডেন্সি এবং পাঞ্জাব।[10] এই অঞ্চলগুলিতে বিধ্বংসী কার্যকলাপের মোকাবিলা করার জন্য রাওলাট পরিষদ সুপারিশ করে যে সরকার তার জরুরি ক্ষমতাগুলিকে যুদ্ধকালীন সময়ের মত ব্যবহার করবে। এর মধ্যে ছিল রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাগুলির জুরি ছাড়া তিনজন বিচারপতির প্যানেলের মাধ্যমে বিচারের ক্ষমতা, সন্দেহভাজনদের থেকে বলপূর্বক জমানত আদায়, সরকার কর্তৃক সন্দেহভাজনদের বাসস্থানের উপর নজরদারী[10] এবং প্রাদেশিক সরকারগুলির জন্য সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার ও বিনা বিচারে স্বল্পমেয়াদী কারাগারে আটক রাখার ক্ষমতা।[16]

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষ হওয়ার সাথে অর্থনৈতিক পরিবেশেও পরিবর্তন আসে। ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ১৫ লক্ষ ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীতে ছিল সামরিক এবং অসামরিক ভূমিকায়। ভারত যুদ্ধের জন্য রাজস্ব হিসাবে ১৪ কোটি ৬০ লক্ষ পাউন্ড দিয়েছিল।[17] বর্ধিত কর এবং অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বিঘ্নের ফলে ভারতে ১৯১৪ থেকে ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে সামগ্রিক মূল্য সূচক দ্বিগুন হয়ে যায়।[17] যুদ্ধ থেকে ফিরে আসা সৈনিকরা মূলত পাঞ্জাবে বর্ধনশীল বেকারত্ব সংকট তৈরি করে।[18] যুদ্ধ পরবর্তী মূল্যবৃদ্ধি বম্বে, মাদ্রাজ এবং বাংলার প্রদেশগুলিতে খাদ্য দাঙ্গার কারন হয়।[18] ১৯১৮-১৯ খ্রিষ্টাব্দের খারাপ বর্ষা, অবৈধ মুনাফা এবং ফাটকা এই পরিস্থিতি আরো খারাপ করেছিল।[17] পৃথিবীব্যাপি ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারী এবং ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের বলশেভিক বিপ্লব ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রথম কারনটি জনসাধারনের মধ্যে অর্থনৈতিক দুর্দশা সৃষ্টি করেছিল[18] এবং দ্বিতীয়টি সরকারী কর্মকর্তাদের ভীত করে তুলেছিল এই ভয়ে যে ভারতেও এইরকম বিপ্লব ঘটতে পারে।[19]

আসন্ন সঙ্কটের সাথে মোকাবিলা করার জন্য,সরকার রাওলাট পরিষদের সুপারিশগুলিকে দুটি রাওলাটের বিলের মাধ্যমে সাজায়।[16] যদিও বিলগুলি এডউইন মন্টাগু কর্তৃক আইনী বিবেচনার জন্য অনুমোদিত ছিল, কিন্তু এগুলি করা হয়েছিল অনিচ্ছার সাথে। এর সাথে ঘোষণা করা হয়েছিল, "আমি প্রথম দৃষ্টিতেই ডিফেন্স অফ ইন্ডিয়া আইনকে শান্তির সময়ে চালু রাখার এই পরামর্শকে ঘৃণা করি সেই অবধি, যতটা রাওলাট এবং তাঁর বন্ধুরা এটিকে প্রয়োজনীয় বলে মনে করেন।"[10] ইম্পেরিয়াল আইনী পরিষদে আসন্ন আলোচনা এবং নির্বাচনে সব ভারতীয় সদস্যরাই এই বিলগুলির বিপক্ষে সরব হন। তবুও ১৯১৯ সালের গোড়ার দিকে বিলটি পাস করার জন্য ভারত সরকার তার "সরকারী সংখ্যাগরিষ্ঠতা" ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছিল।[10] যাইহোক যখন বিলটি পাস হয় তখন ভারতীয় বিরোধীদের সম্মান দিয়ে বিলটির একটি ক্ষুদ্রতর সংস্করন করা হয়েছিল। এটি এখন অতিরিক্ত বিচারবিভাগীয় ক্ষমতাকে অনুমোদন করে কিন্তু ঠিক তিন বছরের জন্য এবং কেবল "নৈরাজ্যবাদী এবং বিপ্লবী আন্দোলনের" বিচার করার জন্য। ভারতীয় দণ্ডবিধির পরিবর্তনের সাথে জড়িত দ্বিতীয় বিলটি সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করা হয়।[10] তবুও, যখন নতুন রাওলাট বিল পাস হয় তখন সমগ্র ভারত জুড়ে ব্যাপক রোষ সৃষ্টি হয়েছিল এবং মোহনদাস গান্ধীকে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সম্মুখে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।[16]

মন্টাগু চেমসফোর্ড রিপোর্ট ১৯১৯

এরমধ্যে, মন্টাগু এবং চেমসফোর্ড নিজেরাই অবশেষে ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে তাদের প্রতিবেদনটি পেশ করেন। তারা এর আগের শীতে একটি দীর্ঘ ভারত সফর করেছিলেন প্রকৃত বিষয়টি অনুধাবন করার জন্য।[20] ভবিষ্যতের নির্বাচনে ভারতীয় জনগণের মধ্যে কে ভোট দিতে পারবে তা চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যে ব্রিটেনের সরকার ও সংসদ দ্বারা আরো আলোচনার পর এবং ভোটাধিকার ও কার্যাবলী পরিষদের আরো একটি সফরের পর, দি গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া আইন ১৯১৯ (যেটি মন্টাগু-চেমসফোর্ড সংস্কার নামেও পরিচিত) পাস করা হয় ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে।[20] নতুন আইনটি প্রাদেশিক পরিষদগুলিকে আকারে বড় করে এবং ইম্পেরিয়াল আইনি পরিষদ কে আরো বড় কেন্দ্রীয় আইনিসভাতে পরিণত করে। এটি ভারত সরকারের প্রতিকূল ভোটেও "সরকারী সংখ্যাগরিষ্ঠতার" সুবিধাটি বাতিল করে দেয়।[20] যদিও প্রতিরক্ষা, বৈদেশিক বিষয়, ফৌজদারি আইন, যোগাযোগ এবং আয়কর প্রভৃতি বিভাগগুলি নতুন দিল্লিতে ভাইসরয় এবং কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে ছিল, অন্যান্য বিভাগ যেমন জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, ভূমি-রাজস্ব এবং স্থানীয় স্বশাসিত সরকারগুলি প্রদেশগুলিতে স্থানান্তরিত হয়।[20] এখন থেকে প্রদেশগুলিকে নিজেদের একটি নতুন দ্বৈত শাসনব্যবস্থার (dyarchical system) অধীনে পরিচালনা করা হবে, যার ফলে শিক্ষা, কৃষি, পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং স্থানীয় স্বশাসনের মত কিছু বিভাগ ভারতীয় মন্ত্রীদের এবং আইনসভার অধীনে আনা হয় যা পরিশেষে ভারতীয় নির্বাচকমণ্ডলীর অধীনে যায়। অন্যান্য বিভাগ যেমন সেচ, জমি-রাজস্ব, পুলিশ, কারাগার এবং গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ ব্রিটিশ গভর্নর এবং তার নির্বাহী পরিষদের কর্মক্ষেত্রের আওতায় রয়ে যায়।[20] এছাড়াও নতুন আইনটি ভারতীয়দের সিভিল সার্ভিসে এবং সেনা কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগের পথ সুগম করে।

বড় সংখ্যায় ভারতীয়রা এখন ভোটাধিকার লাভ করে। যদিও জাতীয় পর্যায়ে ভোট দেওয়ার জন্য তারা মোট প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ জনসংখ্যার মাত্র ১০ শতাংশ ছিল এবং যাদের অনেকে তখনও অবধি অশিক্ষিত ছিল।[20] প্রাদেশিক আইনসভায়, ব্রিটিশরা কিছু পরিমাণ নিয়ন্ত্রন রাখতে থাকে কয়েকটি বিশেষ আগ্রহের আসনকে আলাদা করে রাখার মাধ্যমে যেগুলিকে তারা মনে করত সহযোগী এবং দরকারী। বিশেষ করে গ্রামীণ প্রার্থীরা যারা সাধারণত ব্রিটিশ শাসনের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং কম বিরোধী ছিল, তাদের শহুরে প্রতিপক্ষের তুলনায় আরো বেশি আসন প্রদান করা হয়।[20] অব্রাহ্মণ, জমির মালিক, ব্যবসায়ী ও কলেজ স্নাতকদের জন্য আসন সংরক্ষিত করা হয়। "সাম্প্রদায়িক সংরক্ষণের" নীতি ছিল মিন্টো-মোরলি সংস্কারের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আরো পরে কংগ্রেস-মুসলিম লীগ লখনউ চুক্তিটি পুনরায় চালু করা হয়, মুসলমান, শিখ, ভারতীয় খ্রিস্টান, অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানস এবং স্থায়ীভাবে বসবাসকারী ইউরোপীয়ানদের জন্য প্রাদেশিক এবং ইম্পেরিয়াল আইনী পরিষদের আসন সংরক্ষণের মধ্য দিয়ে।[20] মন্টাগু-চেমসফোর্ড সংস্কারগুলি বিশেষভাবে প্রাদেশিক স্তরে আইনী ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য ভারতীয়দের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ এনে দেয়। তবে, এই সুযোগটি তখনও সীমাবদ্ধ ছিল কারন যোগ্য নির্বাচকদের সংখ্যা ছিল সীমিত, প্রাদেশিক পরিষদের জন্য কম বাজেট বরাদ্দ ছিল এবং গ্রামীণ এবং বিশেষ আগ্রহের আসনগুলি যেগুলি ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র হিসেবে দেখা হয়েছিল সেগুলির দ্বারা।[20]

লন্ডনে অক্টোবর ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ম্যাকডোনাল্ডকে গান্ধীর ডানদিকে দেখা যাচ্ছে

গোল টেবিল বৈঠক ১৯৩০-৩১-৩২

১৯৩০ থেকে ১৯৩২ সালের মধ্যে তিন পর্যায়ে গোল টেবিল বৈঠকগুলি ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ভারতের সংবিধান সংস্কার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকগুলি পরিচালিত হয়েছিল মুসলমান নেতা মহম্মদ আলি জিন্না কর্তৃক ভাইসরয় লর্ড আরউইন এবং প্রধানমন্ত্রী রামসে ম্যাকডোনাল্ডের কাছে সুপারিশ অনুযায়ী[21][22] এবং ১৯৩০ সালের মে মাসে সাইমন কমিশনের প্রতিবেদন পেশ করার মাধ্যমে। ভারতে স্বরাজ বা আত্মশাসনের দাবি ক্রমবর্ধমান শক্তিশালী হয়ে বেড়ে উঠছিল। ১৯৩০-এর দশকে অনেক ব্রিটিশ রাজনীতিক বিশ্বাস করতেন যে ভারতকে অধিরাজ্য বা ডমিনিয়ন অবস্থানের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। যাই হোক, ভারতীয় ও ব্রিটিশ নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মতবিরোধ ছিল যেগুলি গোল টেবিল বৈঠকগুলি সমাধান করতে পারেনি।[23]

১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের একটি কার্টুন যেখানে ভিসকাউন্ট উইলিংডন কে গান্ধীর বিপক্ষে অনশন ধর্মঘট করতে দেখা যাচ্ছে।

ভাইসরয় লর্ড উইলিংডন দ্বারা কংগ্রেস নেতাদের কারাবন্দী

১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে লন্ডনে তিনটি গোলটেবিল বৈঠকের ব্যর্থতার পরে ভাইসরয় লর্ড উইলিংডন মোহনদাস গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের কার্যক্রমের মুখোমুখি হলেন। ভারত অফিস উইলিংডনকে জানায় যে তার কেবল ভারতীয় মতামতের সেই বিষয়গুলিকেই সন্তুষ্টি করা উচিত যেগুলি ব্রিটিশ রাজের সাথে সহযোগিতা করার জন্য ইচ্ছুক। এগুলির মধ্যে গান্ধী এবং ভারতের জাতীয় কংগ্রেস অন্তর্গত ছিল না। কংগ্রেস ৪ জানুয়ারি ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে আইন অমান্য আন্দোলন শুরু করে। অতএব উইলিংডন সিদ্ধান্ত নেন[24] এবং মোহনদাস গান্ধীকে কারাবন্দী করেন। তিনি কংগ্রেসকে নিষিদ্ধ করেন। তিনি কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটি এবং প্রাদেশিক কমিটির সকল সদস্যকে গ্রেফতার করে কারাবন্দী করেন এবং তিনি কংগ্রেসের যুব সংগঠন নিষিদ্ধ করেন। সব মিলিয়ে তিনি ৮০,০০০ ভারতীয় আইন অমান্য অংশগ্রহণকারীকে কারাবন্দী করেন। কংগ্রেসের অধিকাংশ নেতাদের ছাড়া, প্রতিবাদ অসম এবং বিশৃঙ্খল ছিল, বয়কটগুলি ব্যর্থ ছিল। বেআইনী যুব সংগঠনগুলি বৃদ্ধি পেলেও অকার্যকর ছিল। মহিলারা আরো বেশি আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। সন্ত্রাসমূলক কাজকর্ম বৃদ্ধি পায় বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিম ফ্রন্টিয়ার প্রদেশে। মোহনদাস গান্ধী ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত জেলেই থাকেন।[25][26] উইলিংডন তার ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য তার সামরিক সচিব হেস্টিংস ইসমের উপর নির্ভর করেন।[27]

সাম্প্রদায়িক পুরষ্কার: ১৯৩২

ম্যাকডোনাল্ড চেষ্টা করেন ভারতীয়দের কিভাবে প্রতিনিধিত্ব করা হবে এই গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাটির সমাধান করতে। ৪ আগস্ট ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে মুসলমান, শিখ এবং ভারতীয় ইউরোপিয়ানদের আলাদা নির্বাচন ব্যবস্থা দেওয়া হয় এবং অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানস এবং ভারতীয় খ্রিস্টানদের জন্য আলাদা নির্বাচন ব্যবস্থা বেশি সংখ্যক প্রদেশে মঞ্জুর করা হয়। অস্পৃশ্যরা (যাদের এখন দলিত বলা হয়) একটি আলাদা নির্বাচন ব্যবস্থা লাভ করে। এটি গান্ধীকে ক্ষুব্ধ করে কেননা তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন যে তাদের হিন্দু বলে গণ্য করা দরকার। গান্ধী এবং কংগ্রেস এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। কিন্তু যেভাবেই হোক এটি কার্যকর হয়।[27]

ভারত সরকার আইন (১৯৩৫)

১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে গোলটেবিল বৈঠকের ব্যর্থতার পরে ব্রিটিশ সংসদ ভারত সরকার আইন ১৯৩৫ অনুমোদন করে, যা ব্রিটিশ ভারতে সমস্ত প্রদেশে স্বাধীন আইন পরিষদ স্থাপন অনুমোদন করে, একটি কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করে যার মধ্যে ব্রিটিশ প্রদেশ এবং দেশীয় রাজ্যগুলি থাকবে এবং মুসলমান সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে।[3] স্বাধীন ভারতের ভবিষ্যত সংবিধান এই আইন থেকে অনেকটাই ধার নিয়েছিল।[28] এই আইনটির মাধ্যমে একটি দুই কক্ষ বিশিষ্ট জাতীয় সংসদ এবং একটি কার্যনির্বাহী শাখা গঠন করা হয় যা ব্রিটিশ সরকারের আওতায় থাকবে। যদিও জাতীয় সঙ্ঘ কখনই তৈরি হয়নি, প্রাদেশিক পরিষদগুলির জন্য দেশব্যাপী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৩৭ সালে। প্রাথমিকভাব দ্বিধায় থাকা সত্ত্বেও, কংগ্রেস নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং ব্রিটিশ ভারতের এগারোটি প্রদেশের সাতটি প্রদেশে জয়লাভ করে।[29] এবং এই প্রদেশগুলিতে যথেষ্ট শক্তির সাথে কংগ্রেস সরকার গঠন করে। গ্রেট ব্রিটেনে, এই জয়গুলি পরবর্তীকালে ভারতের স্বাধীনতার ধারণাটির পক্ষে জোয়ার আনে।[29]

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ

মূল প্রবন্ধ: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ

জাপান ও জার্মানির বিরূদ্ধে মিত্রশক্তির সম্মিলিত যুদ্ধ প্রচেষ্টাতে ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। ভারত থেকে কুড়ি লক্ষ সৈন্য মধ্যপ্রাচ্যের বহু যুদ্ধে, ভারত ও বার্মা সীমান্তে লড়াই করে। এছাড়াও ভারত বহু কোটি পাউন্ড ব্রিটিশ যুদ্ধ প্রচেষ্টার জন্য দিয়েছিল। ভারতের মুসলমান এবং শিখ জনগন ব্রিটিশদের যুদ্ধ প্রচেষ্টার শক্তিশালী সমর্থক ছিল। কিন্তু হিন্দু জনসংখ্যার মতামত এ বিষয়ে বিভক্ত ছিল। কংগ্রেস যুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল এবং হাজার হাজার কংগ্রেস নেতাদের ১৯৪২ থেকে ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে কারারুদ্ধ করা হয়।[30][31][32] পূর্ব ভারতে একটি প্রধান দুর্ভিক্ষের ফলে অনাহারে লক্ষ লক্ষ লোক মারা গিয়েছিল। চার্চিলের জরুরী খাদ্য ত্রাণ প্রদান অনিচ্ছার কারনে দুর্ভিক্ষটি খুবই বিতর্কিত বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।[33] ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু সাথে সাথে, ভাইসরয় লর্ড লিনলিথগো ভারতের পক্ষ থেকে যুদ্ধ ঘোষণা করেন ভারতীয় নেতাদের সাথে কোন আলোচনা না করেই। এর প্রতিবাদে কংগ্রেসের প্রাদেশিক মন্ত্রকগুলি পদত্যাগ করে। এর বিপরীতে, মুসলিম লীগ, যুদ্ধের প্রচেষ্টায় ব্রিটেনকে সমর্থন করেছিল। মুসলীম লিগ, এই দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছিল যে কংগ্রেস দ্বারা প্রভাবিত স্বাধীন ভারতে মুসলিমদের সাথে অন্যায় আচরণ করা হবে। হিন্দুদের মধ্যে যারা কংগ্রেসের সাথে জড়িত ছিল না তারা যুদ্ধপ্রচেষ্টাকে সমর্থন করে। দুই প্রধান শিখ গোষ্ঠী, ইউনিয়নপন্থী ও অকলি দল, ব্রিটেনকে সমর্থন করে এবং বৃহত্তর সংখ্যায় শিখদের যুদ্ধে সেনাবাহিনীতে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে আহ্বান জানায়।[34]

ভারত ছাড়ো আন্দোলন

ব্রিটিশরা যুদ্ধপরবর্তী স্বাধীনতা এবং ডমিনিয়ন মর্যাদার বিনিময়ে যুদ্ধের প্রচেষ্টায় ভারতীয় জাতীয়তাবাদীদের সহযোগিতা নিশ্চিত করার জন্য ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে একটি উচ্চ স্তরের ক্রিপস মিশন পাঠায়। কংগ্রেস অবিলম্বে স্বাধীনতা দাবি করে এবং এই মিশনটি ব্যর্থ হয়। ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাসে গান্ধীজি "ভারত ছাড়" আন্দোলনের সূচনা করেন এবং ভারত থেকে ব্রিটিশদের তাৎক্ষনিক প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং দেশব্যাপি আইন অমান্য শুরু হয়। হাজার হাজার কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে গান্ধীকে অবিলম্বে কারারুদ্ধ করা হয়। দেশ উত্তোলিত হয়ে ওঠে প্রথমে ছাত্রদের নেতৃত্বে এবং পরে কৃষক রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলির স্থানীয় হিংসাত্মক ঘটনার মধ্য দিয়ে। এগুলি ঘটেছিল মূলত পূর্ব ইউনাইটেড প্রদেশগুলিতে, বিহার এবং বাংলায়। জন. এফ. রিডিকের মতে ৯ আগস্ট ১৯৪২ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর ১৯৪২ অবধি ভারত ছাড়ো আন্দোলনে:

৫৫০টি ডাকঘর, ২৫০টি রেলওয়ে স্টেশন আক্রান্ত হয়, অনেক রেল লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ৭০টি থানা ধ্বংস হয় এবং ৮৫ টি সরকারি ভবন পুড়িয়ে ফেলা বা ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়। ২৫০০টি টেলিগ্রাফের তার কাটার ঘটনা ঘটে। ভারত সরকার শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য ৫৭টি ব্যাটালিয়নের সেনা মোতায়েন করে।[34]

পুলিশ এবং সেনাবাহিনী ছয় সপ্তাহের কিছু বেশি সময়ের মধ্যে এই প্রতিরোধকে দমন করে। এই সময়ে জাতীয়তাবাদী নেতারা কারাবন্দী ছিলেন।[35]

সুভাষ চন্দ্র বসু এবং ইন্ডিয়ান ন্যাশন্যাল আর্মি (আইএনএ)

কংগ্রেস নেতারা জেলে থাকাকালীন সুভাষচন্দ্র বসুর দিকে নজর পড়ে। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে কংগ্রেসের রক্ষণশীল শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে মতপার্থক্যের কারনে তিনি কংগ্রেস থেকে বিচ্ছিন্ন হন।[36] বসু এবার জার্মানি এবং জাপানের সাহায্যে বলপূর্বক ভারত স্বাধীন করতে উদ্যোগী হন।[37] জাপানের সহায়তায় তিনি ইন্ডিয়ান ন্যাশন্যাল আর্মি সংগঠিত করেন। এটির বেশিরভাগ ছিল ব্রিটিশ ভারতীয় সৈন্যবাহিনীর ভারতীয় সৈন্যদের নিয়ে গঠিত যারা সিঙ্গাপুরে জাপানীদের দ্বারা বন্দী হয়েছিল। এদের মধ্যে বহু শিখ এবং হিন্দু ও মুসলমানরাও ছিল। জাপান সিক্রেট সার্ভিস দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতে অশান্তি তৈরি করে ব্রিটিশ যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করার জন্য।[38] তারা অধিকৃত এলাকায় কিছু পুতুল এবং অস্থায়ী সরকারকে সমর্থন করে। এদের মধ্যে ছিল বার্মা, ফিলিপিনস এবং ভিয়েতনাম এবং বসুর রাষ্ট্রপতিত্বে থাকা আজাদ হিন্দের অস্থায়ী সরকার।[39] বসুর প্রচেষ্টা বেশিদিন স্থায়ী হয় নি। ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দের পরাজয়গুলির পর নতুনভাবে শক্তিশালী ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম জাপানী ইউ গো আক্রমন থামিয়ে দেয় এবং তারপর এটিকে পশ্চাতে ফিরিয়ে দেয়। এইভাবে বার্মা অভিযানের সফল অংশ শুরু হয়। সিঙ্গাপুরের আবার পুর্নদখলের সঙ্গে বসুর ইন্ডিয়ান ন্যাশন্যাল আর্মি আত্মসমর্পন করে। বসু এর কিছু পরেই বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান। ব্রিটিশরা আইএনএ অফিসারদের বিচার দাবি করে, কিন্তু জনমত, কংগ্রেস, এমনকি ভারতীয় সেনা মনে করত যে আইএনএ ভারতীয় স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছে এবং বিচারটির অন্ত হওয়া উচিত। ইয়াসমিন খান বলেন, "আইএনএ ভারতে যুদ্ধের আসল হিরোতে পরিণত হয়।" কিছু অশান্তি এবং জাতীয়তাবাদী সন্ত্রাসের পরে এই বিচার বন্ধ করা হয়।[40][41][42][43]

আর্থিক সংস্থান

ব্রিটেন যেখান থেকে সম্ভব সেখান থেকেই ঋণ নিয়েছিল এবং যুদ্ধের সময় ভারতে যুদ্ধোপকরণ ও সরবরাহের বিপুল ক্রয় করেছিল।[44] আগে ভারতের ব্রিটেনের কাছে বড় অঙ্কের বকেয়া ঋন ছিল; এখন এর বিপরীত হয়ে গেল।[45] ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে সারা পৃথিবী জুড়ে ব্রিটেনের স্টার্লিং ব্যালান্স হয়েছিল ৩৪০ কোটি পাউন্ড; এর মধ্যে ভারতের অংশ ছিল ১৩০ কোটি পাউন্ড (যা ২০১৬ সালের মার্কিন ডলারের মাপকাঠিতে ৭৪০০ কোটি মার্কিন ডলারের সমতূল্য)।[46][47] এইভাবে ব্রিটিশ রাজ কোষাগার খুব বেশি পরিমাণ ব্রিটিশ পাউন্ডের স্টার্লিং মজুদ করে যা ব্রিটিশ কোষাগার কর্তৃক ব্রিটিশ রাজ কোষাগারের কাছে বকেয়া ছিল। যদিও ব্রিটেন এটিকে একটি দীর্ঘমেয়াদী সুদবিহীন ঋণ হিসাবে গণ্য করে যার কোন নির্দিষ্ট ফেরত তারিখ ছিল না। লন্ডন থেকে কখন এই টাকা পাওয়া যাবে সেটা ছিল একটা সমস্যা, কারন ব্রিটিশ কোষাগার ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রায় খালি হয়ে গিয়েছিল। ভারতের অংশ মার্চ ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে দাঁড়ায় ভারতীয় মুদ্রায় ১৭২৪ কোটি টাকা এর মধ্যে ১৫১২ কোটি টাকা ( ১১৩.৪ কোটি পাউন্ড) ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ভাগ করা হয় তাদের স্বাধীনতার সময়ে ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাসে। তারা শেষ অবধি তাদের টাকা পায় এবং ভারত তার সমস্ত অংশ ১৯৫৭ সালের মধ্যে খরচ করে ফেলে।[48]

ক্ষমতা হস্তান্তর

১৯০৯ সালের ভারতের নিয়ন্ত্রক ধর্ম, ১৯০৯ সালের ব্রিটিশ ভারত সাম্রাজ্যের মানচিত্র যেখানে দেখানো হয়েছে বিভিন্ন এলাকাতে সংখ্যাগুরু নিয়ন্ত্রক ধর্মমত অনুসরণকারী জনসংখ্যা।

জানুয়ারি ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে সশস্ত্র বাহিনীতে কয়েকটি বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে। এটা রয়্যাল এয়ারফোর্সের কর্মীদের থেকে শুরু হয় যারা তাদের ধীরে ব্রিটেনে ফেরৎ পাঠানোতে হতাশ হয়ে পড়েছিল।[49] ফেব্রুয়ারী ১৯৪৬ এ বম্বেতে রয়্যাল ইন্ডিয়ান নেভিতে বিদ্রোহ শুরু হয়। এর পর তা শুরু হয় কলকাতা, মাদ্রাজ এবং করাচিতে। যদিও এই বিদ্রোহগুলি তাড়াতাড়ি দমন করা হয়েছিল, এগুলি ভারতে প্রচুর জনসমর্থন পায় এবং ব্রিটেন নতুন লেবার সরকারকে তাড়াতাড়ি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করে এবং ভারতে একটি ক্যাবিনেট মিশন পাঠানো হয় যার নেতৃত্বে ছিলেন রাষ্ট্র সচিব লর্ড পেথিক লরেন্স এবং এই মিশনে ছিলেন স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস, যিনি চার বছর আগেও ভারতে এসেছিলেন।[49] ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দের শুরুর দিকে ভারতে নতুন নির্বাচনের আয়োজন করা হয় যাতে কংগ্রেস এগারোটি প্রদেশের মধ্যে আটটি প্রদেশে জয়লাভ করে।[50] কংগ্রেস এবং মুসলিম লিগের মধ্যে আলোচনা ভারত ভাগের বিষয়কে কেন্দ্র করে হোঁচট খায়। জিন্না ১৬ই আগস্ট ১৯৪৬ দিনটিকে ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে বলে ঘোষণা করেন, যার লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ ভারতের মধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে মুসলমান স্বভূমির গঠনের দাবিকে তুলে আনা। এর পর দিন হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা কলকাতাতে শুরু হয় এবং তারপর তা সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। ভারত সরকার এবং কংগ্রেস দুই পক্ষের কাছেই এই ঘটনা একটা ধাক্কা ছিল। সেপ্টেম্বর মাসে কংগ্রেসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। জওহরলাল নেহরু ছিলেন এই সংযুক্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

এই বছরের পরের দিকে ব্রিটেনে লেবার সরকার, যার কোষাগার সম্প্রতি শেষ হওয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারনে ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল, ভারতে ব্রিটিশ শাসন সমাপ্ত করবার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের শুরুর দিকে ব্রিটেন জুন ১৯৪৮ এর আগে ক্ষমতা হস্তান্তরের ইচ্ছার কথা ঘোষণা করে।

স্বাধীনতা নিকটবর্তী হতে, পাঞ্জাব এবং বাংলা প্রদেশগুলিতে হিন্দু এবং মুসলমানদের মধ্যে দাঙ্গা অবিশ্রান্তভাবে চলতে থাকে। ব্রিটিশ সেনা বর্ধিত হিংসার জন্য তৈরি ছিল না। নতুন ভাইসরয় লুইস মাউন্টব্যাটেন ক্ষমতা হস্তান্তরের তারিখ এগিয়ে আনেন। এর ফলে স্বাধীনতার জন্য পারস্পরিক সম্মতিতে পরিকল্পনার জন্য ছয় মাসেরও কম সময় পাওয়া যায়। জুন ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে জাতীয়তা বাদী নেতারা ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ করার বিষয়ে রাজি হন। এঁদের মধ্যে ছিলেন কংগ্রেসের প্রতিনিধি হিসাবে নেহরু এবং আবুল কালাম আজাদ, মুসলিম লিগের প্রতিনিধি হিসাবে জিন্না, দলিত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসাবে বি. আর. আম্বেদকর, শিখদের প্রতিনিধি হিসাবে মাস্টার তারা সিং। প্রধানত হিন্দু এবং শিখ এলাকাগুলি ভারতে দেওয়া হয় এবং মুসলমান এলাকাগুলি যায় পাকিস্তানে। এই পরিকল্পনাটিতে মুসলমান-সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশগুলি পাঞ্জাব এবং বাংলার বিভাজন অন্তর্ভুক্ত ছিল।

বহু লক্ষ মুসলমান, শিখ এবং হিন্দু উদ্বাস্তুরা নতুন সীমানা ধরে হাঁটতে থাকে। পাঞ্জাবে নতুন সীমারেখা টানা হয়েছিল যা শিখ অঞ্চলকে আধাআধি বিভক্ত করে দিয়েছিল। সেখানে ব্যাপক রক্তপাত শুরু হয়। বাংলা এবং বিহারে গান্ধীর উপস্থিতি সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতিকে প্রশমিত করেছিল। এখানে হিংসা ছিল সীমিত। সব মিলিয়ে নতুন সীমানার দুই পারের ২,৫০,০০০ থেকে ৫,০০,০০০ এর মধ্যবর্তী মানুষ হিংসায় মারা যায়।[51] ১৪ আগস্ট ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে নতুন পাকিস্তান অধিরাজ্য সৃষ্টি হয়। মহম্মদ আলি জিন্না এর প্রথম গভর্নর জেনারেল হিসাবে করাচিতে শপথ গ্রহণ করেন। এর পরদিন ১৫ই আগস্ট ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারত, যা এখন ছিল একটি ছোট ভারতীয় ইউনিয়ন, একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়। যার সরকারী সমারোহ অনুষ্ঠান পালিত হয় দিল্লিতে। জওহরলাল নেহরু ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ভাইসরয় লুইস মাউন্টব্যাটেন এর প্রথম গভর্নর জেনারেল হন।

পাদটীকা

  1. (Stein 2001, পৃ. 259), (Oldenburg 2007)
  2. (Oldenburg 2007), (Stein 2001, পৃ. 258)
  3. (Oldenburg 2007)
  4. (Stein 2001, পৃ. 258)
  5. (Stein 2001, পৃ. 159)
  6. (Stein 2001, পৃ. 260)
  7. (Bose ও Jalal 2003, পৃ. 117)
  8. Brown 1994, পৃ. 197–198
  9. Olympic Games Antwerp 1920: Official Report ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ মে ২০১১ তারিখে, Nombre de bations representees, p. 168. Quote: "31 Nations avaient accepté l'invitation du Comité Olympique Belge: ... la Grèce – la Hollande Les Indes Anglaises – l'Italie – le Japon ..."
  10. Brown 1994, পৃ. 203–204
  11. Metcalf ও Metcalf 2006, পৃ. 166
  12. Brown 1994, পৃ. 201–203
  13. Lovett 1920, পৃ. 94, 187–191
  14. Sarkar 1921, পৃ. 137
  15. Tinker 1968, পৃ. 92
  16. Spear 1990, পৃ. 190
  17. Brown 1994, পৃ. 195–196
  18. Stein 2001, পৃ. 304
  19. Ludden 2002, পৃ. 208
  20. Brown 1994, পৃ. 205–207
  21. Wolpert, Stanley (২০১৩)। Jinnah of Pakistan (15 সংস্করণ)। Karachi, Pakistan: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 107। আইএসবিএন 978-0-19-577389-7।
  22. Wolpert, Stanley (২০১২)। Shameful Flight (1st সংস্করণ)। Karachi, Pakistan: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 5। আইএসবিএন 978-0-19-906606-3।
  23. Students' Britannica India। ২০০০। পৃষ্ঠা 309।
  24. John F. Riddick (২০০৬)। The History of British India: A Chronology। Greenwood। পৃষ্ঠা 110।
  25. Brian Roger Tomlinson, The Indian National Congress and the Raj, 1929–1942: the penultimate phase (Springer, 1976).
  26. Rosemary Rees. India 1900–47 (Heineman, 2006) p 122
  27. Ismay, Hastings (১৯৬০)। The Memoirs of General Lord Ismay। New York: Viking Press। পৃষ্ঠা 66। আইএসবিএন 978-0-8371-6280-5।
  28. (Low 1993, পৃ. 40, 156)
  29. (Low 1993, পৃ. 154)
  30. Srinath Raghavan, India's War: World War II and the Making of Modern South Asia (2016).
  31. Yasmin Khan, India At War: The Subcontinent and the Second World War (2015).
  32. Lawrence James, Raj: the making and remaking of British India (1997) pp 545–85
  33. Madhusree Mukerjee, Churchill's Secret War: The British Empire and the Ravaging of India during World War II (2010).
  34. Robin Jeffrey (২০১৬)। What's Happening to India?: Punjab, Ethnic Conflict, and the Test for Federalism। Springer। পৃষ্ঠা 68–69।
  35. Srinath Raghavan, India's War: World War II and the Making of Modern South Asia (2016) pp 233–75.
  36. Nehru 1942, পৃ. 424
  37. (Low 1993, পৃ. 31–31)
  38. Lebra 1977, পৃ. 23
  39. Lebra 1977, পৃ. 31, (Low 1993, পৃ. 31–31)
  40. Khan, Raj at War pp 304–5.
  41. Chaudhuri 1953, পৃ. 349
  42. Sarkar 1983, পৃ. 411
  43. Hyam 2007, পৃ. 115
  44. Dharma Kumar, ed., The Cambridge Economic History of India: Volume 2, c.1751–c.1970 Edited by Dharma Kumar, The Cambridge Economic History of India The Cambridge Economic History of India Volume 2, c. 1751–c. 1970 (1983) pp 640–42, 942–44.
  45. Srinath Raghavan, India's War: World War II and the Making of Modern South Asia (2016) pp 339–47 .
  46. See "Pounds Sterling to Dollars: Historical Conversion of Currency"
  47. Marcelo de Paiva Abreu, "India as a creditor: sterling balances, 1940–1953." (Department of Economics, Pontifical Catholic University of Rio de Janeiro, 2015) online
  48. Uma Kapila (২০০৫)। Indian Economy। Academic Foundation। পৃষ্ঠা 23।
  49. (Judd 2004, পৃ. 172–173)
  50. (Judd 2004, পৃ. 172)
  51. (Khosla 2001, পৃ. 299)

তথ্যসূত্র ও অতিরিক্ত পাঠ

নিরীক্ষা এবং রেফারেন্স বই

  • Bandyopadhyay, Sekhar (২০০৪), From Plassey to Partition: A History of Modern India, New Delhi and London: Orient Longmans. Pp. xx, 548., আইএসবিএন 81-250-2596-0.
  • Bose, Sugata; Jalal, Ayesha (২০০৩), Modern South Asia: History, Culture, Political Economy, London and New York: Routledge, 2nd edition. Pp. xiii, 304, আইএসবিএন 0-415-30787-2.
  • Brown, Judith M. (১৯৯৪), Modern India: The Origins of an Asian Democracy, Oxford and New York: Oxford University Press. Pp. xiii, 474, আইএসবিএন 0-19-873113-2.
  • Buckland, C.E. Dictionary of Indian Biography (1906) 495pp full text
  • Copland, Ian (২০০১), India 1885–1947: The Unmaking of an Empire (Seminar Studies in History Series), Harlow and London: Pearson Longmans. Pp. 160, আইএসবিএন 0-582-38173-8.
  • Judd, Dennis (২০০৪), The Lion and the Tiger: The Rise and Fall of the British Raj, 1600–1947, Oxford and New York: Oxford University Press. Pp. xiii, 280, আইএসবিএন 0-19-280358-1.
  • Kulke, Hermann; Rothermund, Dietmar (২০০৪), A History of India, 4th edition. Routledge, Pp. xii, 448, আইএসবিএন 0-415-32920-5.
  • Ludden, David (২০০২), India And South Asia: A Short History, Oxford: Oneworld Publications. Pp. xii, 306, আইএসবিএন 1-85168-237-6
  • Markovits, Claude (ed) (২০০৫), A History of Modern India 1480–1950 (Anthem South Asian Studies), Anthem Press. Pp. 607, আইএসবিএন 1-84331-152-6.
  • Metcalf, Barbara; Metcalf, Thomas R. (২০০৬), A Concise History of Modern India (Cambridge Concise Histories), Cambridge and New York: Cambridge University Press. Pp. xxxiii, 372, আইএসবিএন 0-521-68225-8.
  • Peers, Douglas M. (২০০৬), India under Colonial Rule 1700–1885, Harlow and London: Pearson Longmans. Pp. xvi, 163, আইএসবিএন 0-582-31738-X.
  • Rees, Rosemary. India 1900–47 (Heineman, 2006), textbook.
  • Riddick, John F. The History of British India: A Chronology (2006) excerpt
  • Riddick, John F. Who Was Who in British India (1998); 5000 entries excerpt
  • Robb, Peter (২০০৪), A History of India (Palgrave Essential Histories), Houndmills, Hampshire: Palgrave Macmillan. Pp. xiv, 344, আইএসবিএন 0-333-69129-6.
  • Sarkar, Sumit (১৯৮৩), Modern India: 1885–1947, Delhi: Macmillan India Ltd. Pp. xiv, 486, আইএসবিএন 0-333-90425-7.
  • Spear, Percival (১৯৯০), A History of India, Volume 2, New Delhi and London: Penguin Books. Pp. 298, আইএসবিএন 0-14-013836-6.
  • Stein, Burton (২০০১), A History of India, New Delhi and Oxford: Oxford University Press. Pp. xiv, 432, আইএসবিএন 0-19-565446-3.
  • Wolpert, Stanley (২০০৩), A New History of India, Oxford and New York: Oxford University Press. Pp. 544, আইএসবিএন 0-19-516678-7.

প্রকরণগ্রন্থ ও সংগ্রহ

  • Bayly, C. A. (১৯৯০), Indian Society and the Making of the British Empire (The New Cambridge History of India), Cambridge and London: Cambridge University Press. Pp. 248, আইএসবিএন 0-521-38650-0.
  • Bayly, C. A. (২০০০), Empire and Information: Intelligence Gathering and Social Communication in India, 1780–1870 (Cambridge Studies in Indian History and Society), Cambridge and London: Cambridge University Press. Pp. 426, আইএসবিএন 0-521-66360-1
  • Brown, Judith M.; Louis, Wm. Roger, সম্পাদকগণ (২০০১), Oxford History of the British Empire: The Twentieth Century, Oxford and New York: Oxford University Press. Pp. 800, আইএসবিএন 0-19-924679-3
  • Chandavarkar, Rajnarayan (১৯৯৮), Imperial Power and Popular Politics: Class, Resistance and the State in India, 1850–1950, (Cambridge Studies in Indian History & Society). Cambridge and London: Cambridge University Press. Pp. 400, আইএসবিএন 0-521-59692-0.
  • Copland, Ian (২০০২), Princes of India in the Endgame of Empire, 1917–1947, (Cambridge Studies in Indian History & Society). Cambridge and London: Cambridge University Press. Pp. 316, আইএসবিএন 0-521-89436-0.
  • Gilmartin, David. 1988. Empire and Islam: Punjab and the Making of Pakistan. Berkeley: University of California Press. 258 pages. আইএসবিএন ০-৫২০-০৬২৪৯-৩.
  • Gould, William (২০০৪), Hindu Nationalism and the Language of Politics in Late Colonial India, (Cambridge Studies in Indian History and Society). Cambridge and London: Cambridge University Press. Pp. 320, আইএসবিএন 0-521-83061-3.
  • Hyam, Ronald (২০০৭), Britain's Declining Empire: The Road to Decolonisation 1918–1968., Cambridge University Press., আইএসবিএন 0-521-86649-9.
  • Jalal, Ayesha (১৯৯৩), The Sole Spokesman: Jinnah, the Muslim League and the Demand for Pakistan, Cambridge, UK: Cambridge University Press, 334 pages, আইএসবিএন 0-521-45850-1.
  • Khan, Yasmin (২০০৭), The Great Partition: The Making of India and Pakistan, New Haven and London: Yale University Press, 250 pages, আইএসবিএন 0-300-12078-8
  • Khosla, G. D. (২০০১), "Stern Reckoning", Page, David; Inder Singh, Anita; Moon, Penderal; Khosla, G. D.; Hasan, Mushirul, The Partition Omnibus: Prelude to Partition/the Origins of the Partition of India 1936-1947/Divide and Quit/Stern Reckoning, Delhi and Oxford: Oxford University Press, আইএসবিএন 0-19-565850-7
  • Low, D. A. (১৯৯৩), Eclipse of Empire, Cambridge and London: Cambridge University Press. Pp. xvi, 366, আইএসবিএন 0-521-45754-8.
  • Low, D. A. (২০০২), Britain and Indian Nationalism: The Imprint of Amibiguity 1929–1942, Cambridge and London: Cambridge University Press. Pp. 374, আইএসবিএন 0-521-89261-9.
  • Low, D. A., সম্পাদক (২০০৪) [1977], Congress & the Raj: Facets of the Indian Struggle 1917–47, New Delhi and Oxford: Oxford University Press. Pp. xviii, 513, আইএসবিএন 0-19-568367-6.
  • Metcalf, Thomas R. (১৯৯১), The Aftermath of Revolt: India, 1857–1870, Riverdale Co. Pub. Pp. 352, আইএসবিএন 81-85054-99-1
  • Metcalf, Thomas R. (১৯৯৭), Ideologies of the Raj, Cambridge and London: Cambridge University Press, Pp. 256, আইএসবিএন 0-521-58937-1
  • Porter, Andrew, সম্পাদক (২০০১), Oxford History of the British Empire: Nineteenth Century, Oxford and New York: Oxford University Press. Pp. 800, আইএসবিএন 0-19-924678-5
  • Ramusack, Barbara (২০০৪), The Indian Princes and their States (The New Cambridge History of India), Cambridge and London: Cambridge University Press. Pp. 324, আইএসবিএন 0-521-03989-4
  • Shaikh, Farzana. 1989. Community and Consensus in Islam: Muslim Representation in Colonial India, 1860—1947. Cambridge, UK: Cambridge University Press. 272 pages. আইএসবিএন ০-৫২১-৩৬৩২৮-৪.
  • Wainwright, A. Martin (১৯৯৩), Inheritance of Empire: Britain, India, and the Balance of Power in Asia, 1938–55, Praeger Publishers. Pp. xvi, 256, আইএসবিএন 0-275-94733-5.
  • Wolpert, Stanley (২০০৬), Shameful Flight: The Last Years of the British Empire in India, Oxford and New York: Oxford University Press. Pp. 272, আইএসবিএন 0-19-515198-4.

পত্রিকা বা সংগ্রহের প্রবন্ধ

  • Banthia, Jayant; Dyson, Tim (ডিসেম্বর ১৯৯৯), "Smallpox in Nineteenth-Century India", Population and Development Review, Population Council, 25 (4): 649–689, doi:10.2307/172481, জেস্টোর 172481
  • Brown, Judith M. (২০০১), "India", Brown, Judith M.; Louis, Wm. Roger, Oxford History of the British Empire: The Twentieth Century, Oxford and New York: Oxford University Press, পৃষ্ঠা 421–446, আইএসবিএন 0-19-924679-3
  • Derbyshire, I. D. (১৯৮৭), "Economic Change and the Railways in North India, 1860–1914", Population Studies, Cambridge University Press, 21 (3): 521–545, doi:10.2307/312641, জেস্টোর 312641
  • Dyson, Tim (মার্চ ১৯৯১), "On the Demography of South Asian Famines: Part I", Population Studies, Taylor & Francis, 45 (1): 5–25, doi:10.1080/0032472031000145056, জেস্টোর 2174991
  • Dyson, Tim (জুলাই ১৯৯১), "On the Demography of South Asian Famines: Part II", Population Studies, Taylor & Francis, 45 (2): 279–297, doi:10.1080/0032472031000145446, জেস্টোর 2174784
  • Gilmartin, David (নভেম্বর ১৯৯৪), "Scientific Empire and Imperial Science: Colonialism and Irrigation Technology in the Indus Basin", The Journal of Asian Studies, Association for Asian Studies, 53 (4): 1127–1149, doi:10.2307/2059236, জেস্টোর 2059236
  • Goswami, Manu (অক্টোবর ১৯৯৮), "From Swadeshi to Swaraj: Nation, Economy, Territory in Colonial South Asia, 1870 to 1907", Comparative Studies in Society and History, Cambridge University Press, 40 (4): 609–636, doi:10.1017/s0010417598001674, জেস্টোর 179304
  • Harnetty, Peter (জুলাই ১৯৯১), "'Deindustrialization' Revisited: The Handloom Weavers of the Central Provinces of India, c. 1800–1947", Modern Asian Studies, Cambridge University Press, 25 (3): 455–510, doi:10.1017/S0026749X00013901, জেস্টোর 312614
  • Klein, Ira (১৯৮৮), "Plague, Policy and Popular Unrest in British India", Modern Asian Studies, Cambridge University Press, 22 (4): 723–755, doi:10.2307/312523, জেস্টোর 312523
  • Klein, Ira (জুলাই ২০০০), "Materialism, Mutiny and Modernization in British India", Modern Asian Studies, Cambridge University Press, 34 (3): 545–580, জেস্টোর 313141
  • Moore, Robin J. (২০০১a), "Imperial India, 1858–1914", Porter, Andrew, Oxford History of the British Empire: The Nineteenth Century, Oxford and New York: Oxford University Press, পৃষ্ঠা 422–446, আইএসবিএন 0-19-924678-5
  • Moore, Robin J. (২০০১b), "India in the 1940s", Winks, Robin, Oxford History of the British Empire: Historiography, Oxford and New York: Oxford University Press, পৃষ্ঠা 231–242, আইএসবিএন 0-19-924680-7
  • Ray, Rajat Kanta (জুলাই ১৯৯৫), "Asian Capital in the Age of European Domination: The Rise of the Bazaar, 1800–1914", Modern Asian Studies, Cambridge University Press, 29 (3): 449–554, doi:10.1017/S0026749X00013986, জেস্টোর 312868
  • Raychaudhuri, Tapan (২০০১), "India, 1858 to the 1930s", Winks, Robin, Oxford History of the British Empire: Historiography, Oxford and New York: Oxford University Press, পৃষ্ঠা 214–230, আইএসবিএন 0-19-924680-7
  • Robb, Peter (মে ১৯৯৭), "The Colonial State and Constructions of Indian Identity: An Example on the Northeast Frontier in the 1880s", Modern Asian Studies, Cambridge University Press, 31 (2): 245–283, doi:10.1017/s0026749x0001430x, জেস্টোর 313030
  • Roy, Tirthankar (Summer ২০০২), "Economic History and Modern India: Redefining the Link", The Journal of Economic Perspectives, American Economic Association, 16 (3): 109–130, doi:10.1257/089533002760278749, জেস্টোর 3216953
  • Simmons, Colin (১৯৮৫), "'De-Industrialization', Industrialization and the Indian Economy, c. 1850–1947", Modern Asian Studies, Cambridge University Press, 19 (3): 593–622, doi:10.1017/s0026749x00007745, জেস্টোর 312453
  • Talbot, Ian (২০০১), "Pakistan's Emergence", Winks, Robin, Oxford History of the British Empire: Historiography, Oxford and New York: Oxford University Press, পৃষ্ঠা 253–263, আইএসবিএন 0-19-924680-7
  • Tinker, Hugh (১৯৬৮), "India in the First World War and after.", Journal of Contemporary History, Sage Publications, 3 (4): 89–107, আইএসএসএন 0022-0094.
  • Tomlinson, B. R. (২০০১), "Economics and Empire: The Periphery and the Imperial Economy", Porter, Andrew, Oxford History of the British Empire: The Nineteenth Century, Oxford and New York: Oxford University Press, পৃষ্ঠা 53–74, আইএসবিএন 0-19-924678-5
  • Washbrook, D. A. (২০০১), "India, 1818–1860: The Two Faces of Colonialism", Porter, Andrew, Oxford History of the British Empire: The Nineteenth Century, Oxford and New York: Oxford University Press, পৃষ্ঠা 395–421, আইএসবিএন 0-19-924678-5
  • Watts, Sheldon (নভেম্বর ১৯৯৯), "British Development Policies and Malaria in India 1897-c. 1929", Past & Present, Oxford University Press, 165 (165): 141–181, doi:10.1093/past/165.1.141, জেস্টোর 651287
  • Wylie, Diana (২০০১), "Disease, Diet, and Gender: Late Twentieth Century Perspectives on Empire", Winks, Robin, Oxford History of the British Empire: Historiography, Oxford and New York: Oxford University Press, পৃষ্ঠা 277–289, আইএসবিএন 0-19-924680-7

ধ্রুপদী ইতিহাস এবং গেজেটিয়ারস

  • Imperial Gazetteer of India vol. IV (১৯০৭), The Indian Empire, Administrative, Published under the authority of His Majesty's Secretary of State for India in Council, Oxford at the Clarendon Press. Pp. xxx, 1 map, 552.
  • Lovett, Sir Verney (১৯২০), A History of the Indian Nationalist Movement, New York, Frederick A. Stokes Company, আইএসবিএন 81-7536-249-9
  • Majumdar, R. C.; Raychaudhuri, H. C.; Datta, Kalikinkar (১৯৫০), An Advanced History of India, London: Macmillan and Company Limited. 2nd edition. Pp. xiii, 1122, 7 maps, 5 coloured maps..
  • Smith, Vincent A. (১৯২১), India in the British Period: Being Part III of the Oxford History of India, Oxford: At the Clarendon Press. 2nd edition. Pp. xxiv, 316 (469–784).

পরোক্ষ উৎস

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.