ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ

ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ ১৮'দশ শতাব্দীর শেষ তিন দশক ধরে চলা ভারতের একটি পালাক্রমিক যুদ্ধ, যা মহীশূর রাজ্য এবং প্রধাণত: মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রতিনিধিদের মধ্যে সংগঠিত হয়েছিলো। চতুর্থ যুদ্ধে, হায়দার আলীটিপু সুলতানের পতন ঘটে এবং ব্রিটিশ এবং তাদের জোট নিজেদের মধ্যে রাজ্যটি বণ্টন করে নেয়।

হায়দার আলী ১৭৬২ সালের চিত্রে, যাতে ভুলভাবে বর্ণিত আছে: 'মারাঠা সেনাপতি। যার নেতৃত্বে তার বাহিনী ভারতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে'। (ফরাসী চিত্রকলা)

প্রথম ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ

(1767-69)

  1. যুদ্ধ- 1767 খূস্টাব্দে হায়দার আলি ইংরেজ আশ্রিত কর্ণাটক আক্রমণ করলে প্রথম ইঙ্গ মহিশুর যুদ্ধ শুরু হয়।
  2. মাদ্রাজের সন্ধি- হায়দারের সেনাদল অতর্কিতে ইংরেজ ঘাঁটি মাদ্রাজের উপকন্ঠে হাজির হলে (1769 খ্রি ) ইংরেজরা হায়দার আলির সঙ্গে -মাদ্রাজের সন্ধি-(1769) করতে বাধ্য হয়। এর দ্বারা স্থির হয় যে, [i] একে অন্যের অধিকৃত স্থানগুলি পরস্পরকে ফিরিয়ে দেবে। [ii] কোনো তৃতিয় পক্ষের দ্বারা আক্রান্ত হলে পরস্পরকে সাহায্য করবে।

দ্বিতীয় ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ

স্থায়ীত্বকালঃ ১৭৮০-১৭৮৪ দ্বিতীয় অ্যাংলো-মযহীসুর যুদ্ধ 1780 থেকে 1784 সাল পর্যন্ত মহীশূর রাজত্ব এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। সেই সময়, মেসোর ভারতের একজন প্রধান ফরাসি সহযোগী ছিলেন এবং ব্রিটেনের মধ্যে ফরাসি ও ডাচের বিরুদ্ধে দ্বন্দ্ব ছিল। আমেরিকান বিপ্লবী যুদ্ধ ভারতে অ্যাংলো-মহীশূরিয়ান প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছড়িয়ে দিয়েছে। কোম্পানির পক্ষে সৈন্যদের বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের দ্বারা উত্থাপিত, প্রশিক্ষিত, প্রদত্ত ও পরিচালিত হয়। যাইহোক, ব্রিটেন থেকে পাঠানো ক্রাউন সৈন্যরা এবং হ্যানোভার থেকে পাঠানো সেনাদের দ্বারা কোম্পানির অপারেশনগুলি [1] ব্রিটেনের রাজা জর্জ তৃতীয় দ্বারা শাসিত হয়েছিল। 1779 সালে মাহের ফ্রেঞ্চ বন্দরের ব্রিটিশ বন্দোবস্তের পর, মহীশূরিয়ান শাসক হায়দার আলী 1780 সালে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেন, যা প্রচারাভিযান শুরুতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ করে। যুদ্ধ চলাকালে, ব্রিটিশরা কিছু আঞ্চলিক ক্ষতি উদ্ধার করে। ফ্রান্স ও ব্রিটেন উভয় যুদ্ধের প্রচেষ্টায় সহায়তা করার জন্য ইউরোপ থেকে সেনা ও নৌবাহিনীর স্কোয়াড্রন পাঠিয়েছিল, যা 1780 সালে ব্রিটেনের ডাচ প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার পরে বিস্তৃত হয়েছিল। 1783 সালে ফ্রান্স ও ব্রিটেনের মধ্যে একটি প্রাথমিক শান্তি সংবাদ পৌঁছেছিল, যার ফলে মহীশূরিয়ান যুদ্ধের প্রচেষ্টায় ফরাসি সমর্থন প্রত্যাহার করা হয়। ফলে ব্রিটিশরা মহীশূরের সাথে সংঘর্ষের অবসান ঘটায় এবং ব্রিটিশ সরকার মহীশূররের সাথে শান্তি রক্ষা করার জন্য কোম্পানির আদেশ দেয়। এর ফলে 1784সালে মংলোর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং পদত্যাগের ফলে রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তারা ওয়ারেন হেস্টিংসকে অত্যন্ত প্রতিকূল বলে মনে করেন।

তৃতীয় ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ

স্থায়ীত্বকালঃ ১৭৯০-১৭৯২

    দ্বিতীয় ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ (১৭৮০-১৭৮৪) চলাকালে মহীশূররাজ হায়দার আলী এবং পরবর্তীতে তার পুত্র টিপু সুলতান ইংরেজদের শােচনীয়ভাবে পর্যুদস্ত করেন।১৭৮৪ খ্রিষ্টাব্দে এক সাঁড়াশি আক্রমণ দ্বারা টিপু সুলতান বিদনুর’ এ ম্যাঙ্গালোর দখল করে নিলে ইংরেজরা ম্যাঙ্গালােরের সন্ধি (১৭৮৪) দ্বারা ইঙ্গ-মহীশূর বৈরিতার অবসান ঘটাতে বাধ্য হন। কিন্তু এ সন্ধির দ্বারা সমস্যার স্থায়ী কোনাে সমাধান হয়নি। উভয়পক্ষই বুঝতে পেরেছিল যে, খুব শীঘ্রই ,যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবে। ভারতে গভর্নর জেনারেল হয়ে আসার পর কর্নওয়ালিস প্রথম দিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইলিয়াম পিটের ভারত শাসন আইন-(১৭৮৪) অনুযায়ী নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু শীঘ্রই তিনি লক্ষ করলেন ভারতে ইংরেজদের ভারসাম্য নীতির সুফল ভােগ করেই মহীশূর অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। এজন্য তিনি টিপুবিরােধী মৈত্রী জোট গঠনের কূটনীতিতে নেমে পড়েন। হায়দরাবাদের নিজামের সাথে সম্পর্ককে কেন্দ্র করে ইঙ্গ-মহীশুর দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়। ইংরেজ শক্তির বিরুদ্ধে। চিরস্থায়ী মৈত্রীর আশায় টিপু সুলতান তার পুত্রের সাথে নিজামের কন্যার বিবাহের প্রস্তাব দেন। নিজাম ছিলেন বংশ কৌলীন্যের অধিকারী ও খুবই অহংকারী। বংশ কৌলীন্যবিহীন মহীশূররাজ টিপুর নিকট থেকে এরূপ প্রস্তাবে নিজাম ভয়ানক অপমান বােধ করেন।

    চতুর্থ ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ

    সময়ঃ ১৭৯৯। এটাই শেষ মহী শূরের যুদ্ধ যেখানে টিপু সুলতানকে হত্যা করা হয়। আর কোম্পনি শাষনের কাছে হেরে যায় মহী শুরের বাঘ।

    আরও দেখুন

    • কেরালার মহীশুর অবরোধ

    তথ্যসূত্র

      • Regan S. Gidwani, The Sword of Tipu Sultan
      This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.