বিপিনচন্দ্র পাল
বিপিনচন্দ্র পাল (৭ নভেম্বর ১৮৫৮ - ২০ মে ১৯৩২) প্রখ্যাত বাঙালি বাগ্মী, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও লেখক। বৃটিশ সরকারের বিরুদ্ধে তিনি অনলবর্ষী বক্তৃতা দিতেন, তার আহ্বানে হাজার হাজার যুবক স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে।[1]
![]() | |
জন্ম | ৭ নভেম্বর ১৮৫৮ |
মৃত্যু | ২০ মে ১৯৩২ |
প্রতিষ্ঠান | ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, ব্রাহ্মসমাজ |
আন্দোলন | ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন |
স্বাক্ষর | |
![]() |
বিপিন চন্দ্র পাল ১৮৫৮ সালের ৭ই নভেম্বর সিলেটের এক ধনী কায়স্থ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা রামচন্দ্র পাল ছিলেন একজন গ্রাম্য জমিদার এবং সিলেট বারের প্রভাবশালী সদস্য। বিপিন চন্দ্র পাল এন্ট্রেন্স পরীক্ষা পাশ করে সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। এরপর তিনি প্রসিডেন্সী কলেজে ভর্তি হন কিন্তু সেখান থেকে পাশ করার আগেই পড়াশোনা ছেড়ে দেন।
বিপিন তার ১৮৭৯ সালে চাকুরি জীবন শুরু করেন একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে, ১৮৯০ - ১৮৯১ পর্যন্ত তিনি কলকাতা পাবলিক লাইব্রেরীর সম্পাদক এবং লাইব্রেরিয়ান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কলকাতায় ছাত্রজীবনে তিনি কেশব চন্দ্র সেন, শিবনাথ শাস্ত্রী, বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামীর মত বেশকয়েকজন প্রখ্যাত ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্যে আসেন। এদের আদর্শে প্রভাবিত হয়ে বিপিন ব্রাহ্ম আন্দোলনের সাথে জড়িয়ে পড়েন[2] এবং ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেন[1] ।
সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জীর প্রভাবে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। বাল গঙ্গাধর তিলক, লালা লাজপত রায় এবং অরবিন্দ ঘোষের বুদ্ধিতে ক্রমে তিনি চরমপন্থি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। যদিও তিনি বাল গঙ্গাধর তিলকের হিন্দু জাতীয়তাবাদ এর পক্ষপাতি ছিলেন না।[2]
১৯০৬ সালে তিনি বন্দেমাতরম পত্রিকা প্রকাশ করেন। ১৯০৮ এ ইংল্যান্ডে গিয়েও তিনি স্বরাজ নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। ১৯২১ সালে অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচীতে মহাত্মা গান্ধীর সাথে মতে মিল না হওয়ায় তিনি রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান।[1]
ব্রাহ্ম
তিনি ব্রাহ্মত্ব কোনোদিন ত্যাগ করেননি কিন্তু ক্রমে ক্রমে ধর্মমত পরিবর্তিত হয়ে ১৮৯৫ সালে বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর কাছে দীক্ষা নিয়ে বৈষ্ণব সাধনায় অনুরাগী হন। শেষজীবনে আর্থিক অনটনে কষ্ট পেয়েছেন। তিনি ১৯৩২ সালের ২০ মে (বাংলাঃ ৬ই জৈষ্ঠ্য, ১৩৩৯) মৃত্যুবরণ করেন।[3]
তথ্যসূত্র
- ফজলুর রহমান, "শতাব্দীর দর্পণ", ২০০০, পৃষ্ঠা ১২৮।
- "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৪ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ মার্চ ২০১২।
- সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৪৭৭-৪৭৮, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬