লখনৌ চুক্তি

লখনৌ চুক্তি (হিন্দি: लखनऊ का मुआहिदा, উর্দু: معاہدۂ لکھنؤMuʿāhidah-yi Lakhnaʾū; উর্দু উচ্চারণ: [ləkʰnəˌu kaː mʊˈaːɦɪd̪a]) ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসনিখিল ভারত মুসলিম লীগের মধ্যে সম্পাদিত একটি চুক্তি। ১৯১৬ সালে লখনৌয়ে দুই দলের যৌথ অধিবেশনে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ কংগ্রেস ও লীগ উভয় দলের সদস্য হিসেবে দুই দলকে চুক্তিতে উপনীত করাতে সক্ষম হন যাতে ব্রিটিশ সরকার ভারত পরিচালনার জন্য উদারপন্থা গ্রহণ করে ও পাশাপাশি মুসলিমদের দাবিগুলোও রক্ষিত হয়। বঙ্গভঙ্গের পর জিন্নাহ মুসলিম লীগকে জনসাধারণের কাছে জনপ্রিয় করার জন্য এগিয়ে আসেন। মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ এই চুক্তির স্থপতি ছিলেন। কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মধ্যে দূরত্ব ঘোচানোর জন্য কাজ করায় জিন্নাহকে “হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের দূত” উপাধি দেয়া হয়।

লখনৌ চুক্তি কংগ্রেসের দুইটি প্রধান ভাগ, বাল গঙ্গাধর তিলকের নেতৃত্বাধীন চরমপন্থি অংশ ও গোপাল কৃষ্ণ গোখলের নেতৃত্বাধীন উদারপন্থি অংশের মধ্যে আন্তরিক সম্পর্ক সৃষ্টি করে।

চুক্তির কারণ

নিখিল ভারত মুসলিম লীগ গঠিত হওয়ার পর দল ব্রিটিশ সরকারের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে বিশ্বাসী ছিল। তবে ব্রিটিশ সরকার বঙ্গভঙ্গ বাতিলের পর মুসলিম নেতারা অবস্থান পাল্টান। ১৯১৩ সালে মুসলিম নেতাদের একটি নতুন দল মুসলিম লীগে যোগ দেন। তারা পূর্বসূরিদের চেয়ে ভিন্ন মনোভাব পোষণ করতেন। খলিফার প্রতি ব্রিটিশদের আচরণের কারণে উপমহাদেশের মুসলিমরা ক্ষুব্ধ ছিল। মুসলিম লীগ ও কংগ্রেস নিকটে আসায় উভয়ে ব্রিটিশদের কাছে একগুচ্ছ দাবি উত্থাপন করে যা লখনৌ চুক্তি বলে পরিচিত।

মুসলিম লীগ ও কংগ্রেস

কংগ্রেসের জিন্নাহ ও মহাজন উভয়ের কল্যাণে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ ১৯১৫ সালের ডিসেম্বরে বোম্বেতে বার্ষিক অধিবেশনে বসে। এতে প্রথমবারের মত দুই দলের প্রধান নেতারা একসাথে বসেন। উভয় দলের বক্তব্যের ভাষ্য ও ধরন একই প্রকারের ছিল। কয়েক মাস পর ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের ১৯ জন মুসলিম ও হিন্দু নির্বাচিত প্রতিনিধি ভাইসরয়ের কাছে ১৯১৬ সালের সংস্কারের ব্যাপারে মেমোরেন্ডাম তুলে ধরেন। তাদের সুপারিশগুলো ব্রিটিশদের মধ্যে আলোচিত হয়নি। তবে ১৯১৬ সালের নভেম্বরে কলকাতায় কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের নেতাদের এক বৈঠকে দাবিগুলো আলোচনা ও সংস্কার করা হয়। এই বৈঠকে আইনসভার গঠন এবং মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায় থেকে প্রতিনিধিদের পরিমাণ নিয়ে ঐকমত্য হয়। তাদের এই চুক্তি ডিসেম্বরে লখনৌয়ে অনুষ্ঠিত দল দুটির বার্ষিক অধিবেশনে নিশ্চিত করা হয়। সরোজিনী নাইডু লখনৌ চুক্তির প্রধান স্থপতি মুহাম্মদ আলি জিন্নাহকে “হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের দূত” উপাধি দেন।

মূল বক্তব্য

  1. ভারতের স্বায়ত্তশাসিত সরকার থাকবে।
  2. গভর্নরের নির্বাহী কাউন্সিলে একই প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা হবে।
  3. ভারত কাউন্সিল অবশ্যই বিলুপ্ত করতে হবে।
  4. ভারতীয় ব্যাপারে নিযুক্ত রাষ্ট্রীয় সচিবের বেতন ব্রিটিশ সরকারের তরফ থেকে দিতে হবে এবং ভারতের তহবিল থেকে দেয়া যাবে না।
  5. নির্বাহী বিভাগকে বিচার বিভাগ থেকে পৃথক করতে হবে।
  6. প্রত্যেক প্রদেশে প্রাদেশিক আইনসভায় মুসলিমদের সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে।
  7. কেন্দ্রীয় সরকারে মুসলিমদের এক তৃতীয়াংশ প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে।
  8. যৌথ নির্বাচনে যোগ না দেয়া পর্যন্ত প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা থাকবে।
  9. বয়সের পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে।
  10. আইনসভার মেয়াদ ৫ বছর হবে।
  11. ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের অর্ধেক সদস্য অবশ্যই ভারতীয় হতে হবে।

পূর্ণ বিবরণ

http://www.sdstate.edu/projectsouthasia/loader.cfm?csModule=security/getfile&PageID=862068

তথ্যসূত্র

    টেমপ্লেট:Lucknow division topics

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.