এজাজুল ইসলাম

এজাজুল ইসলাম একজন বাংলাদেশী নাট্য ও চলচ্চিত্র অভিনেতা। তিনি মূলত একজন ডাক্তার।[2] জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মাধ্যমে তার নাটকে আগমন। পরবর্তীতে তিনি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র শ্রাবণ মেঘের দিন। এর পর তিনি দুই দুয়ারী (২০০১), চন্দ্রকথা (২০০৩), শ্যামল ছায়া (২০০৪) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি তারকাঁটা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ৩৯তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতার পুরস্কারে ভূষিত হন।[3]

এজাজুল ইসলাম
এজাজুল ইসলাম
জন্ম
জাতীয়তাবাংলাদেশী
অন্যান্য নামডাঃ এজাজ
শিক্ষাএমবিবিএস
নিউক্লিয়ার মেডিসিন
যেখানের শিক্ষার্থীরংপুর মেডিকেল কলেজ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাডাক্তার, নাট্য ও চলচ্চিত্র অভিনেতা
কার্যকাল১৯৯৯বর্তমান
উল্লেখযোগ্য কর্ম
দুই দুয়ারী
তারকাঁটা
সন্তানআবুবকর সিদ্দিক (ছেলে)[1]
পুরস্কারজাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১ বার)

প্রাথমিক জীবন

এজাজুল ইসলাম ১৯৮৪ সালে রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিউক্লিয়ার মেডিসিনে স্নাতকোত্তর পাশ করেন।[4]

কর্মজীবন

চিকিৎসা জীবন

এজাজ একজন ডাক্তার হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি গাজীপুর চৌরাস্তায় একটি চেম্বারে নিয়মিত রোগী দেখেন।[5] তিনি সরকার নির্ধারিত ৩০০ টাকা ফিতে রোগী দেখেন। তার ভিজিট ফি কম হওয়ায় তাকে গরীবের ডাক্তার নামে ডাকা হয়।[6] ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে এজাজুল ইসলাম ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিউক্লিয়ার মেডিসিনের প্রধান হিসেবে যোগদান করেন।[7][8]

অভিনয় জীবন

এজাজুল ইসলাম হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত ধারাবাহিক নাটক সবুজ সাথী দিয়ে অভিনয়ের যাত্রা শুরু করেন।[9] ১৯৯৯ সালে হুমায়ূন আহমেদের শ্রাবণ মেঘের দিন চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি বড় পর্দায় অভিনয় শুরু করেন। চলচ্চিত্রটির সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে তিনি হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত দুই দুয়ারী (২০০১), চন্দ্রকথা (২০০৩), শ্যামল ছায়া (২০০৪), নয় নাম্বার বিপদ সংকেত (২০০৬) ও আমার আছে জল (২০০৮) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ২০০৫ সালে দেবাশীষ বিশ্বাস পরিচালিত কমেডি ধাঁচের টক ঝাল মিষ্টি ছায়াছবিতে পুলিশের চরিত্রে অভিনয় করেন। ২০০৬ সালে বাদল খন্দকার পরিচালিত বিদ্রোহী পদ্মায় নায়েব, তৌকির আহমেদ পরিচালিত রূপকথার গল্প-এ রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার, এসএ হক অলিক পরিচালিত হৃদয়ের কথায় দারোয়ান চরিত্রে অভিনয় করেন। পরের বছর জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত স্বামীর সংসার ছায়াছবিতে অভিনয় করেন। একই বছর মতিন রহমান পরিচালিত রোমান্টিক-কমেডি তোমাকেই খুঁজছি ছায়াছবিতে অভিনয় করেন। পরবর্তীতে অনন্য মামুন পরিচালিত খোঁজ-দ্য সার্চ (২০১০) এবং আশরাফুর রহমান পরিচালিত তুমি আসবে বলে (২০১২) মুক্তি পায়। ২০১৪ সালে তিনি মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালিত তারকাঁটা, নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল পরিচালিত এক কাপ চা, নজরুল ইসলাম খান পরিচালিত কঠিন প্রতিশোধ ও ওয়াজেদ আলী সুমন পরিচালিত কি দারুণ দেখতে ছায়াছবিতে অভিনয় করেন। তারকাঁটা চলচ্চিত্রে মুসা ভাই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ৩৯তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতার পুরস্কার অর্জন করেন।[10]

চলচ্চিত্রের তালিকা

বছর চলচ্চিত্র চরিত্র পরিচালক টীকা
১৯৯৯শ্রাবণ মেঘের দিনপরাণ ঢুলীহুমায়ূন আহমেদপ্রথম অভিনীত চলচ্চিত্র
২০০১দুই দুয়ারীমোবারক মিয়াহুমায়ূন আহমেদ
২০০৩চন্দ্রকথাস্কুল শিক্ষকহুমায়ূন আহমেদ
২০০৪শ্যামল ছায়ামাঝিহুমায়ূন আহমেদ
২০০৫টক ঝাল মিষ্টিআসগর আলীদেবাশীষ বিশ্বাস
২০০৬বিদ্রোহী পদ্মানায়েববাদল খন্দকার
রূপকথার গল্পরেস্টুরেন্ট ম্যানেজারতৌকির আহমেদ
হৃদয়ের কথাদারোয়ানএসএ হক অলিক
২০০৭স্বামীর সংসারজাকির হোসেন রাজু
২০০৮তোমাকেই খুঁজছিমতিন রহমান
আমার আছে জলওসি কামরুলহুমায়ূন আহমেদ
২০১০খোঁজ-দ্য সার্চঅনন্য মামুন
২০১২তুমি আসবে বলেআশরাফুর রহমান
২০১৪তারকাঁটামুসা ভাইমুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজবিজয়ী: জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতা
এক কাপ চামিঃ গোমেজনঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল
কি দারুণ দেখতেওয়াজেদ আলী সুমন
কঠিন প্রতিশোধনজরুল ইসলাম খান
২০১৫প্রার্থনাশাহরিয়ার নাজিম জয়

টেলিভিশন

নাটক

বছর চলচ্চিত্র পরিচালক চ্যানেল
সবুজ সাথীহুমায়ূন আহমেদবাংলাদেশ টেলিভিশন
২০১৫শান্তি অধিদপ্তর
নগর জোনাকি
২০১৫-২০১৬লড়াইআল হাজেনবাংলাভিশন
জীবনের অলিগলিফজলুর রহমানএটিএন বাংলা
২০১৬সম্রাটসৈয়দ শাকিলএনটিভি
কক্ষ নাম্বার ৫২

একক নাটক

  • তারা তিনজন
  • টি মাস্টার
  • হাবলঙের বাজারে
  • জুতা বাবা

পুরস্কার ও সম্মাননা

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার

বছর বিভাগ চলচ্চিত্র ফলাফল
২০১৬শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতাতারকাঁটা (২০১৪)বিজয়ী
আরটিভি স্টার অ্যাওয়ার্ড
বছর বিভাগ মনোনীত কর্ম ফলাফল সূত্র
২০১৯ ধারাবাহিক নাটকে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - পার্শ্ব চরিত্র ধামাকা অফার বিজয়ী [11]

তথ্যসূত্র

  1. হাবিবুল্লাহ সিদ্দিক (মে ২০, ২০১৫)। "এজাজুল ইসলামের প্রিয় গায়ক বারী সিদ্দিকী, ছেলের মাইকেল জ্যাকসন"দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  2. শাহ আলম সাজু (মার্চ ৬, ২০১৫)। "Doctor as actor - In conversation with Dr Ejajul Islam"দ্য ডেইলি স্টার। ঢাকা, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  3. আনন্দনগর প্রতিবেদক (১১ মে ২০১৬)। "আজ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান"দৈনিক যুগান্তর। ঢাকা, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  4. মারুফ কিবরিয়া (৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। "'এখন সেনাপতিরা মরা, তাই আমরা সৈন্যরাও মরা'"দৈনিক মানবজমিন। ঢাকা, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  5. মাহতাব হোসেন (৫ এপ্রিল ২০১৬)। "আমাকে সবাই গরিবের ডাক্তার হিসেবেই চেনে : ডা. এজাজ"দৈনিক কালের কণ্ঠ। ঢাকা, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  6. মুহতাসীম আল মামুন (৫ এপ্রিল ২০১৬)। "Everybody calls me as 'Doctor to the poor': Actor Ezazul Islam"ডেইলি সান। ঢাকা, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  7. "ঢামেক নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিভাগের প্রধান হলেন 'গরীবের ডাক্তার' এজাজ"দৈনিক ইত্তেফাক। ৩ অক্টোবর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৩ অক্টোবর ২০১৭
  8. "ঢাকা মেডিক্যালে নিউক্লিয়ার মেডিসিনের প্রধান হিসেবে ডা. এজাজের যোগদান"প্রিয়.কম। সংগ্রহের তারিখ ৩ অক্টোবর ২০১৭
  9. "'ডাক্তার ভালো করছে'"বিডিনিউজ। ঢাকা, বাংলাদেশ। জুলাই ১৭, ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  10. আনন্দনগর প্রতিবেদক (১১ মে ২০১৬)। "কারা পেলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার"কালের কণ্ঠ। ঢাকা, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  11. "'আরটিভি স্টার অ্যাওয়ার্ড-২০১৯' পেলেন যারা"আরটিভি অনলাইন। ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.