ভারতের পরিবহন ব্যবস্থা
ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের পরিবহন ব্যবস্থা দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ৩২,২৭,২৪০ বর্গকিলোমিটার আয়তন[2] এবং প্রায় ১,০২৮,৭৩৭,৪৩৬ জনসংখ্যাবিশিষ্ট[3] ভারত রাষ্ট্রে পরিবহন ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা ও উপযোগিতা দুইই অপরিসীম। ১৯৯০-এর দশকের অর্থনৈতিক উদারীকরণের সময় থেকেই দেশের পরিকাঠামো উন্নয়নের গতি বৃদ্ধি পায়। আজকের ভারতে জল, স্থল এবং আকাশপথে নানা প্রকার পরিবহন ব্যবস্থার উপস্থিতি চোখে পড়ে। যদিও দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) হার কম হওয়ায় সর্বস্তরে এই সকল পরিবহন ব্যবস্থাগুলি সহজলভ্য হয়ে উঠতে পারেনি। দেশের মাত্র দশ শতাংশ পরিবারের (প্রায় ১০২,৮৭৩,৭৪৪ জন) নিজস্ব মোটরসাইকেল রয়েছে।[4] ধনী পরিবারগুলির নিজস্ব মোটরগাড়ি রয়েছে – এঁদের হার ২০০৭ সালের হিসেব অনুযায়ী ০.৭ শতাংশ (প্রায় ৭,২০১,১৬৩ জন)।[5] গণপরিবহন ব্যবস্থা আজও দেশের অধিকাংশ জনসাধারণের কাছে পরিবহনের একমাত্র উপায়; এবং ভারতের গণপরিবহন ব্যবস্থাটিও বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহৃত পরিবহন ব্যবস্থার অন্যতম।[6]




উন্নয়ন সত্ত্বেও অচল পরিকাঠামো ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা একাধিক পরিবহন ব্যবস্থাকে সমস্যাকীর্ণ করে রেখেছে। অন্যদিকে পরিবহন পরিকাঠামো ও পরিষেবার দাবিও প্রতি বছর দশ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে।[6] রাজ্যসীমান্তে শুল্ক ও উৎকোচ প্রদান অতি সাধারণ ঘটনা। ট্র্যান্সপেয়ারেন্সি ইন্টারন্যাশানালের অনুমান, ট্রাকচালকরা প্রতি বছর পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ অর্থ উৎকোচ দিয়ে থাকেন।[7][8] ভারত বিশ্বের মোট যানবাহনের মাত্র ১ শতাংশের মালিক হলেও এই দেশে যানবাহন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সারা বিশ্বের ৮ শতাংশ।[9][10] ভারতের মহানগরগুলি অত্যন্ত ঘনজনবহুল – অনেক বড়ো শহরেই বাসের গড় বেগ ৬-১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। ভারতীয় রাস্তায় যানজটের কারণে যানবাহনের জ্বালানি সাশ্রয়ের হারও খুব কম। এই রকম কম বেগে জ্বালানি অপচয় করে ইঞ্জিন চালানোর জন্য একদিকে যেমন দেশে জ্বালানি ভোগের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি বেড়ে চলেছে পরিবেশ দূষণও।[11] ভারতের রেল পরিবহন ব্যবস্থাটি বিশ্বে দীর্ঘতম তথা চতুর্থ অতিব্যবহৃত পরিবহন ব্যবস্থা।[6] দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রসারের ফলে চাপ বাড়ছে বন্দরগুলির উপরও।[12] দেশের বিমানবন্দরগুলির উপর যাত্রী পরিবহনের চাপ অত্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় এগুলির সামগ্রিক আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে বৈমানিক ক্ষেত্রে বিনিয়োগের হারও।[13] সাধারণভাবে গণপরিবহন ব্যবস্থার মূল সমস্যাগুলি হল অচল প্রযুক্তির ব্যবহার, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, অতিরিক্ত কর্মচারী, শ্রম উৎপাদনশীলতার নিম্নহার।[11] গোল্ডম্যান স্যাকসের একটি সাম্প্রতিক অনুমান অনুসারে আগামী এক দশকের মধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে ভারতকে ১.৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হবে – এর মধ্যে ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে একাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায়।[14]
ঐতিহ্যশালী পরিবহণ ব্যবস্থা
পদব্রজ




প্রাচীনকালে মানুষ পায়ে হেঁটেই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতেন। উদাহরণস্বরূপ, আদি শঙ্করাচার্য পদব্রজে সমগ্র ভারত পর্যটন করেছিলেন।[15] শহরাঞ্চলে হণ্টন আজও পরিবহনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।[16] মুম্বই শহরে পথচারীদের হাঁটার বিশেষ সুবিধা দানের জন্য মুম্বই মহানগরীয় অঞ্চল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ মুম্বই স্কাইওয়াক প্রকল্পের অধীনে পঞ্চাশটিরও বেশি স্কাইওয়াক নির্মাণের কাজ শুরু করেছে।[17][18]
পালকি
অতীতে পালকি ছিল ধনী ও সম্ভ্রান্তবংশীয়দের যাতায়াতের একটি বিলাসবহুল উপায়। সুদূর অতীতে পালকি মন্দিরের দেবতার মূর্তি বহনের কাজে ব্যবহৃত হত। অনেক মন্দিরের ভাস্কর্যে পালকিতে করে মূর্তি বহনের চিত্র খোদিত আছে। ভারতের রেলপথ প্রবর্তনের পূর্বে ইউরোপীয় উচ্চবিত্ত সমাজের সম্ভ্রান্তবংশীয় ও মহিলারা পালকি ব্যবহার করতেন।[19] বর্তমানে পালকির ব্যবহার সীমিত। কোনো ভারতীয় বিবাহে বধূকে সুসজ্জিত পালকিতে করে বিবাহ মণ্ডপে নিয়ে আসার প্রথা বিদ্যমান রয়েছে।[20]
গোরু ও ঘোড়ার গাড়ি
গোরুর গাড়ি মূলত গ্রামীণ ভারতের একটি ঐতিহ্যশালী যান। ব্রিটিশ রাজের প্রথম যুগে ভারতে ঘোড়ার গাড়ির ব্যাপক উন্নতি ঘটে। যদিও যান হিসেবে এই গাড়ির ব্যবহার আগে থেকেই প্রচলিত ছিল। বর্তমানে কোনো কোনো ছোটো শহরে টাঙ্গা বা বাগি নামে পরিচিত ঘোড়ার গাড়ির প্রচলন রয়েছে। মুম্বই শহরে নিছক পর্যটন আকর্ষণ হিসেবে ভিক্টোরিয়া চালানো হয়ে থাকে। তবে আজকের ভারতে ঘোড়ার গাড়ির ব্যবহার অতি নগন্য।[21] সাম্প্রতিককালে, কোনো কোনো শহরে গোরুর গাড়ি ও অন্যান্য শ্লথগতির যানবাহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।[22][23][24]
বাইসাইকেল
বাইসাইকেল সমগ্র ভারতেই একটি জনপ্রিয় যান। দেশে এখন অধিকতর সংখ্যায় মানুষ নিজস্ব সাইকেলের মালিক। ২০০৫ সালের হিসেব অনুসারে, ভারতের ৪০ শতাংশ পরিবারে নিজস্ব সাইকেল রয়েছে; রাজ্যস্তরে এই হার ৩০ থেকে ৭০ শতাংশের মধ্যবর্তী।[4] নগরাঞ্চলের সাধারণ ক্ষেত্রে হাঁটা ও সাইকেল ভ্রমণের মাধ্যমে যাত্রীপরিবহনের হার ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ।[16]
আজও ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সাইকেল উৎপাদক।[25] তবে দেশের জনগণের একাংশের মনে সাইকেল সংক্রান্ত হীন মনোবৃত্তিও লক্ষিত হয়। এই মনোবৃত্তির অন্যতম কারণ নিজস্ব মোটরযান সংক্রান্ত “স্ট্যাটাস সিম্বলের” প্রশ্ন।[25] ভারতে "বাইক" শব্দটি সাধারণত মোটরবাইক ও "সাইকেল" শব্দটি বাইসাইকেলের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
হাতে-টানা রিকশা
কলকাতা শহরে হাতে-টানা রিকশা এখনও দেখা যায়। ২০০৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই ধরনের পরিবহন ব্যবস্থাকে "অমানবিক" আখ্যা দিয়ে হাতে-টানা রিকশা নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব আনে।[26] এই সংক্রান্ত 'ক্যালকাটা হ্যাকনি ক্যারেজ বিল'টি ২০০৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় পাস হলেও অদ্যাবধি কার্যকর করা হয়নি।[27] হ্যান্ড-পুলড রিকশা ওনার অ্যাসোসিয়েশন এই বিলের বিরুদ্ধে একটি পিটিশন দাখিল করলে বিলের কতকগুলি দিকের দ্ব্যর্থতা প্রকট হয়ে পড়ে। বর্তমানে সরকার বিলটি সংশোধন করছেন।[27]
ট্রাম
ভারতে ব্রিটির রাজের সূচনাকালে কলকাতা ও মুম্বই শহরে ট্রাম প্রবর্তিত হয়। আজও ট্রাম কলকাতার একটি গুরুত্বপূর্ণ যান। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা ক্যালকাটা ট্রামওয়েজ কোম্পানি বর্তমানে ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে কলকাতা ট্রাম নেটওয়ার্কের আধুনিকীকরণ করছেন।.[28]।বর্তমানে কলকাতাতে ৭৫ কিলোমিটার ট্রাম চলাচলের পথ রয়েছে।
সাইকেল রিকশা
১৯২০-এর দশকে সুদূর পূর্বের আদলে ভারতেও সাইকেল রিকশা প্রবর্তিত হয়।[29] এগুলি আকারে ট্রাইসাইকেলের তুলনায় বড়ো। পিছনে উত্তোলিত সিটে দুজন আরোহীর বসার জায়গা থাকে এবং সামনের প্যাডেলে একজন বসে রিকশা টানে। ২০০০-এর দশকে কোনো কোনো শহরে যানজট সৃষ্টির জন্য সাইকেল রিকশা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়।.[30][31][32] যদিও দূষণহীন যান হিসেবে সাইকেল রিকশা রেখে দেওয়ার পক্ষেই মত প্রকাশ করেছেন পরিবেশবিদরা।[29][33]
স্থানীয় পরিবহণ ব্যবস্থা
ভারতের শহরগুলির স্থানীয় পরিবহনের মুখ্য উপায়টি হল গণ পরিবহন ব্যবস্থা।[16] গণ পরিবহন মূলত সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার অঙ্গ। কারণ যাত্রীবাহী রেল পরিষেবা কেবলমাত্র ভারতের চার মহানগর মুম্বই, কলকাতা, দিল্লি ও চেন্নাই শহরেই পাওয়া যায়। এছাড়া দশ লক্ষ জনসংখ্যাবিশিষ্ট অন্তত সতেরোটি শহরের নিজস্ব নগরাঞ্চলীয় বাস পরিষেবা রয়েছে।[34] মাঝারি আকারের শহরগুলিতে টেম্পো বা সাইকেল রিকশার মতো অন্তর্বর্তী যানবাহন পরিবহন ব্যবস্থার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ।[16] যদিও ব্যক্তিগত যানবাহন, দু-চাকার যান এবং গাড়ির তুলনায় বাসের সংখ্যা অধিকাংশ ভারতীয় শহরেই অতি নগন্য। বড়ো শহরগুলির ৮০ শতাংশ যানবাহনই ব্যক্তিগত যান।[34]
ভারতের শহরে ট্র্যাফিকের গতি অত্যন্ত শ্লথ। যানজট ও দুর্ঘটনা এখানে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা।[35] ভারতের পথ নিরাপত্তার রেকর্ডটিও খুব খারাপ – দেশে প্রতিবছর ৯০,০০০ মানুষ পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান।[36] রিডার্স ডাইজেস্ট পত্রিকার এশীয় শহরের যানজট সমীক্ষা থেকে জানা যায়, একাধিক ভারতীয় শহর খারাপ ট্র্যাফিক ব্যবস্থার জন্য বিশ্বের প্রথম দশের তালিকাভুক্ত।[35]
গণ পরিবহন ব্যবস্থা
বাস

ভারতীয় শহরগুলিতে গণ পরিবহন ব্যবস্থার প্রায় ৯০ শতাংশই বাস পরিষেবার অন্তর্গত।[11] এই পরিষেবা সমাজের সকল স্তরের মানুষের কাছেই একটি সুলভ এবং উপযোগী পরিষেবা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাস পরিষেবার দায়িত্বে থাকেন সরকারি মালিকানাধীন রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থাগুলি। অধিকাংশ যাত্রীবাহী বাসেই স্ট্যান্ডার্ড ট্রাক ইঞ্জিন এবং কাঠামো ব্যবহার করা হয়। এগুলি শহরে ব্যবহারের ক্ষেত্রে লাভজনক নয়। বাস্তবে ভারতে বাসগুলিকে নির্দিষ্টভাবে শহরের ব্যবহারোপযোগী করে উৎপাদন করা হয় না। ফলে শহরের গণ পরিবহন পরিষেবায় ব্যবহৃত বাসগুলিতে ভিড়ের চাপ থাকে অত্যধিক, পরিষেবাও নানাভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয়।[34] যদিও অর্থনৈতিক উদারীকরণের পর অনেক রাজ্যেই পরিবহন সংস্থাগুলি প্রতিবন্ধীদের জন্য নিচু-মেঝেবিশিষ্ট বাস চালু করে। রাস্তার যানজট কাটানোর লক্ষ্যে ব্যক্তিগত গাড়ির মালিকদের আকর্ষিত করার জন্য চালু হয় বাতানুকূল বাসও।[37][38] ২০০৬ সালের জানুয়ারি মাসে ভারতে প্রথম বেঙ্গালুরু শহরে ভলভো বি৭আরএলই আন্তঃনগর বাস পরিষেবা চালু হয়।[39][40][41]
শহরের বাস গণ পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতিকল্পে বিভিন্ন রাজ্য সরকার বাস র্যাপিড ট্রানসিট (বিআরটি) ব্যবস্থা ও বাতানুকূল বাস চালানোর মতো নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করছেন। পুনে, দিল্লি, আহমদাবাদ ও ইন্দোরে ইতোমধ্যেই বাস র্যাপিড ট্রানসিট ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এই পরিষেবা চালু হওয়ার কথা আছে বিশাখাপত্তনম ও হায়দরাবাদেও। এছাড়া হাই ক্যাপাসিটি বাস দেখা যায় মুম্বই, বেঙ্গালুরু, নাগপুর ও চেন্নাই শহরেও। বেঙ্গালুরুর কাবোন পার্কের কাছে গড়ে উঠেছে দেশের প্রথম বাতানুকূল বাসস্টপ। এটি নির্মাণ করেছে এয়ারটেল।[42] চেন্নাইয়ের চেন্নাই মোফুসিল বাস টার্মিনাসটি এশিয়ার বৃহত্তম বাস টার্মিনাস।[43] ২০০৯ সালের পয়লা জুন কর্ণাটক সরকারের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে নিম্নবিত্তদের সুবিধার জন্য অতল সারিগে নামক একটি বাস পরিষেবা চালু করা হয়। এই পরিষেবার মূল লক্ষ্য সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির কাছেও বাস পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া।[44][45]
অটোরিকশা

অটোরিকশা একটি তিন চাকার যান। এটি একপ্রকার ভাড়ার গাড়ি। এর কোনো দরজা নেই। এই জানের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল সামনে চালকের একটি ছোটো কেবিন এবং পিছনে যাত্রীদের বসার আসন।[46] সাধারণত অটোরিকশার রং হয় হলুদ, সবুজ ও কালো এবং এর মাথার ছাউনিটি হয় কালো, হলুদ বা সবুজ রঙের। তবে এই নকশা স্থানবিশেষে পরিবর্তিত হতেও দেখা যায়।
এই যান সাধারণত 'অটো' বা 'রিক' নামে পরিচিত। মুম্বই ও অন্যান্য কয়েকটি শহরে এই যান মিটার ভাড়ায় চলে। একটি সাম্প্রতিক আইন অনুসারে, অটোচালকদের পক্ষে নির্দিষ্ট ভাড়ার থেকে বেশি ভাড়া নেওয়া, মধ্যরাতের আগে রাত্রি-ভাড়া নেওয়া বা কোনো নির্দিষ্ট জায়গায় যেতে যাত্রী প্রত্যাখ্যান করা নিষিদ্ধ। মুম্বইই একমাত্র শহর যেখানে শহরের কোনো নির্দিষ্ট অংশে অটোর প্রবেশ নিষিদ্ধ। এই অংশটি হল দক্ষিণ মুম্বই।[47] চেন্নাইতে অটোরিকশায় নির্দিষ্ট ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া দাবি করা এবং মিটারে চলতে অস্বীকার করার ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা।[48]
বেঙ্গালুরু, এবং হুব্বালি-ধরওয়াড়ের মতো কিছু শহরের বিমানবন্দর ও রেল স্টেশনে প্রিপেইড অটো বুথের সুবিধা পাওয়া যায়। এখান থেকে কর্তৃপক্ষ-নির্দিষ্ট ভাড়ায় নির্দিষ্ট স্থানে যাওয়ার জন্য যাত্রীরা অটো পরিষেবা পেয়ে থাকেন।[49]
ট্যাক্সি

ভারতের পুরনো ট্যাক্সিগুলির অধিকাংশই প্রিমিয়ার পদ্মিনী বা হিন্দুস্তান অ্যাম্বাস্যাডার গাড়ি।[50] সাম্প্রতিককালে, মারুতি এস্টিম, মারুতি ওমনি, মহিন্দ্রা লোগান, টাটা ইন্ডিকা ও টাটা ইন্ডিগোর মতো গাড়িও ট্যাক্সি অপারেটরদের কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ট্যাক্সির রং রাজ্যভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়। দিল্লি ও মহারাষ্ট্রের অধিকাংশ ট্যাক্সিই হলুদ-কালো রঙের। আবার পশ্চিমবঙ্গের ট্যাক্সি শুধুমাত্র হলুদ রঙের হয়ে থাকে। ব্যক্তিগত ট্যাক্সি অপারেটরদের কোনো নির্দিষ্ট রঙের গাড়ি ব্যবহার করতে হয় না। তবে তাদের গাড়িকে বাণিজ্যিক যান হিসেবে সরকারিভাবে নথিবদ্ধ করতে হয়।
রাজ্য বা শহর ভেদে ট্যাক্সিকে ডাকতে বা ভাড়া করতে হয়। বেঙ্গালুরুর মতো শহরে ফোন করে ট্যাক্সি ভাড়া করতে হয়।[51] আবার কলকাতা বা মুম্বইতে রাস্তায় দাঁড়িয়েও ট্যাক্সি ডাকা যায়। ভারত সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী, ট্যাক্সিতে ভাড়া-মিটার লাগানো বাধ্যতামূলক।[52] এছাড়াও যাত্রীদের মালপথের জন্য বিশেষ সারচার্জ, বেশি রাতে যাতায়াতের জন্য বিশেষ ভাড়া বা টোল ট্যাক্স দিতে হয়। ২০০৬ সাল থেকে নিরাপত্তা ও ব্যবহারোপযোগিতার প্রশ্নে রেডিও ট্যাক্সিও জনসাধারণের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করতে শুরু করেছে।[53]
কোনো কোনো শহরে বা অঞ্চলে যেখানে ট্যাক্সি পরিষেবা দুর্মূল্য বা যেখানে ট্যাক্সি সরকারি বা পৌর নির্দেশিকা অনুযায়ী চলে না সেখানে মানুষ শেয়ার ট্যাক্সি ব্যবহার করে থাকেন। এগুলি সাধারণ ট্যাক্সির মতোই। তবে সাধারণ ট্যাক্সির থেকে এর পার্থক্য হল যে এগুলি একই দুরত্বে বা গন্তব্যে একাধিক যাত্রীকে নিয়ে যায় এবং দুরত্ব বা গন্তব্যের ভিত্তিতে যাত্রীদের ভাড়া দিতে হয়। অটোরিকশাতেই একই রকমের নিয়ম প্রচলিত আছে। সেই অটোগুলিকে বলে “শেয়ার অটো”।
২০০৯ সালের ১৩ জুলাই, মুম্বই শহরে ভারতে প্রথম "ইন-ট্যাক্সি" ম্যাগাজিন চালু হয়েছে। এই ম্যাগাজিনটির নাম "মুমবায়ি"। মুম্বই ট্যাক্সিমেন’স ইউনিয়নের ট্যাক্সিগুলিতেই এই ম্যাগাজিন পাওয়া যায়।[54]
রেল

বর্তমানে শহরতলি রেল পরিষেবা কেবলমাত্র মুম্বই, কলকাতা, দিল্লি ও চেন্নাই শহরেই কার্যকর রয়েছে। দেশের প্রথম দ্রুত পরিবহন ব্যবস্থা কলকাতা শহরতলি রেল চালু হয়েছিল ১৮৫৪ সালে।[55] প্রথম ট্রেনটি চলেছিল হাওড়া থেকে হুগলির মধ্যে ৩৮.৬ কিলোমিটার (২৬ মাইল) পথে। এরপর ১৮৬৭ সালে মুম্বই শহরে চালু হয় মুম্বই শহরতলি রেল। এই রেলপথে প্রতিদিন ৬৩ লক্ষ যাত্রী চলাচল করে। মুম্বই শহরতলি রেলের যাত্রীঘনত্ব সারা বিশ্বে সর্বোচ্চ।[56] এছাড়া কলকাতাতে একটি চক্র রেলপথ এবং চেন্নাইয়ে চেন্নাই গণ দ্রুত পরিবহন ব্যবস্থা নামে একটি উড়াল রেল পরিষেবা চালু আছে। ১৯৮৪ সালের দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ দ্রুত পরিবহন পরিষেবা কলকাতা মেট্রো চালু হয় কলকাতা শহরে।[57] বর্তমানে দিল্লিতে তিনটি মেট্রো রেলপথ চালু হয়েছে এবং একাধিক মেট্রোপথের কাজ চলছে। হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, আহমদাবাদ ও মুম্বই শহরেও মেট্রো প্রকল্পের কাজ চলছে।
থানে[58], পুনে[59], কানপুর[60], লখনউ,[60] অমৃতসর[61], ও কোচি[62] শহরেও দ্রুত পরিবহন পরিষেবা চালুর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। ভারতের যে দুটি শহরে মনোরেল নেটওয়ার্ক চালুর প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল মুম্বই। মুম্বই মনোরেল প্রকল্পটি বর্তমানে নির্মীয়মান।[63] অন্যদিকে কলকাতা শহরেও মনোরেল পরিষেবা চালুর করার পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে।[64] কোঙ্কণ রেল নিগম মারগাঁওতে স্কাইবাস মেট্রো নামে একটি ঝুলন্ত মেট্রো পরিষেবার পরিকল্পনা নিয়েছে।[65] তবে ২০০৪ সালের একটি দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে এই প্রকল্পের কাজ থমকে আছে।[66] পশ্চিম রেলের চার্চগেট ও বিরার স্টেশনের মধ্যে একটি দুই ট্র্যাকবিশিষ্ট উড়াল করিডোর নির্মাণের প্রস্তাবও রাখা হয়েছে। মুম্বইয়ের এই পথে বাতানুকূল ইএমইউ ট্রেন চলবে।[67]
দ্বিচক্রযান


স্কুটার, কম ক্ষমতাসম্পন্ন মোটরসাইকেল ও মোপেড ইত্যাদি মোটর দ্বিচক্রযানগুলি ভারতে খুবই জনপ্রিয়। কারণ এগুলিতে একদিকে যেমন জ্বালানি সাশ্রয় হয়, তেমনই যানবহুল রাস্তায় সহজেই চালানো যায়। ভারতে বিক্রিত দ্বিচক্রযানের হার বিক্রিত গাড়ির হারের কয়েক গুণ। ২০০৩ সালের একটি হিসেব অনুযায়ী, ভারতে চালু দ্বিচক্রযানের সংখ্যা ৪.৭৫ কোটি, যেখানে দেশে গাড়ির সংখ্যা মাত্র ৮৬ লক্ষ।[69] বাজার-শেয়ারের হার অনুসারে দেশের বৃহত্তম দ্বিচক্রযান কোম্পানিগুলি হল হিরো হন্ডা, হন্ডা, টিভিএস মোটরস ও বাজাজ অটো।[70] দেশের একটি প্রবাদপ্রতিম দ্বিচক্রযান ব্র্যান্ডের নাম হল রয়্যাল এনফিল্ড। এরা বিভিন্ন ধরনের বুলেট মোটরসাইকেল উৎপাদন করে যা আজও উৎপাদনশীল ধ্রুপদী মোটরসাইকেল হিসেবে পরিগণিত হয়।[71]
স্বাধীনতালাভের পর ১৯৪৯ সালে মুম্বইতে অটোমোবাইল প্রোডাক্টস অফ ইন্ডিয়া (এপিআই) প্রতিষ্ঠিত হলে দেশে প্রথম অ্যাসেম্বলিং ইনোসেন্টি-নির্মিত ল্যামব্রেটা স্কুটার উৎপাদন শুরু হয়। পরে তারা লি১৫০ সিরিজ মডেলের লাইসেন্স প্রাপ্ত হয়। ষাটের দশক থেকে এরা পুরোদমে উৎপাদন শুরু করে। ১৯৭২ সালে উত্তরপ্রদেশের লখনউ থেকে সরকারি সংস্থা স্কুটারস ইন্ডিয়া লিমিটেড (এসআইএল) সর্বশেষ ইনোসেন্টি ল্যামব্রেটা মডেলের সমস্ত উৎপাদন সত্ত্ব কিনে নেয়। মুম্বই, ঔরঙ্গাবাদ ও চেন্নাইতে পরিকাঠামোগত সুবিধাগুলি থাকা সত্ত্বেও এপিআই-এর উৎপাদন ২০০২ সাল থেকে বন্ধ। এসআইএল-ও ১৯৯৮ সালে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে।
ভারতের অনেক শহরেই স্কুটার ও মোটরসাইকেল ভাড়া পাওয়া যায়। অধিকাংশ শহরেই চালক ও সহযাত্রী উভয়ের ক্ষেত্রেই হেলমেট পরা বাধ্যতামূলক।
অটোমোবাইল
ভারতের নগরাঞ্চলে যাতায়াতকারী যানবাহনের মধ্যে ৩০ শতাংশই ব্যক্তিগত যান। শুধুমাত্র দিল্লিতেই প্রতিদিন গড়ে ৯৬৩টি যান নথিভুক্ত হয়।[72] ২০০২-০৩ সালে ভারতে উৎপাদিত যানবাহনের মোট সংখ্যা ছিল ৬৩ লক্ষ; ২০০৮-০৯ সালে এই সংখ্যা বেড়ে হয় ১.১ কোটি।[73] যদিও এখনও ভারতে গাড়ির মালিকানার হার অত্যন্ত কম। বিআরআইসি উন্নয়নশীল দেশগুলির গাড়ির মালিকানার হারের সঙ্গে বিচার করলে, ভারতে এই হার চীনের সমান[69]; ব্রাজিল ও রাশিয়াতেও এই হার ভারতের চেয়ে বেশি।[74] অধিকাংশ শহরেই সুলভ দাম, জ্বালানি সাশ্রয়ের ক্ষমতা, যানজট সমস্যা ও পার্কিং স্পেসের অভাবজনিত কারণে কমপ্যাক্ট কার (বিশেষত হ্যাচব্যাক) জাতীয় গাড়ির সংখ্যাই বেশি। বাজার-শেয়ারের বিচারে মারুতি, হুন্ডাই ও টাটা মোটরস দেশের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ব্র্যান্ড। অ্যাম্বাস্যাডার একসময় দেশে একচেটিয়া ব্যবসা করেছে। বর্তমানে এই ব্র্যান্ড ভারতের প্রাক-উদারীকরণ যুগের একটি প্রতীকস্বরূপ। ট্যাক্সি কোম্পানিগুলি আজও এই ব্র্যান্ড ব্যবহার করে। ১৯৮৪ সালে বাজারে মারুতি ৮০০ গাড়িটির আবির্ভাব হলে এই গাড়ির কম দাম ভারতের অটোমোবাইল ক্ষেত্রে বিপ্লব সূচিত করে। ২০০৪ সাল অবধি এই ব্র্যান্ডটিই ছিল বাজার-শেয়ারের বিচারে বৃহত্তম ব্র্যান্ড। পরে মারুতির অন্যান্য কম দামের মডেল অল্টো ও ওয়াগন আর, টাটা মোটরসের ইন্ডিকা ও হুন্ডাইয়ের স্যান্ট্রো এর বাজার দখল করে নেয়। বাজারে আবির্ভাবের পর কুড়ি বছর সময়কালে মারুতি ৮০০ গাড়িটির মোট বিক্রির সংখ্যা ছিল প্রায় ২৪ লক্ষ।[75] যদি বিশ্বে সর্বাপেক্ষা কম খরচে উৎপাদিত গাড়ি টাটা ন্যানোর[76] আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে এই সব গাড়ির ভবিষ্যৎ বিপন্ন হয়ে পড়েছে।[77]
ভারতের গ্রামাঞ্চলে সাধারণ মোটর ও যান যন্ত্রাংশ দিয়ে নানাপ্রকার দেশীয় যানবাহন নির্মিত হয়ে থাকে। এই রকম কয়েকটি আবিষ্কারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জুগাদ, মারুতা, ছাকড়া ও ফেম।[78]
বেঙ্গালুরু শহরে রেডিও ওয়ান ও বেঙ্গালুরু ট্র্যাফিক পুলিশ একটি কারপুলিং ব্যবস্থা চালু করেছে। রবিন উথাপ্পা ও রাহুল দ্রাবিড়ের মতো বিশিষ্টরা জনসাধারণকে কারপুলিং ব্যবস্থায় আগ্রহী করে তোলার প্রচেষ্টায় সামিল হয়েছেন।[79][80][81] এই উদ্যোগে সাড়াও পাওয়া গেছে ভাল। ২০০৯ সালের মে মাসের শেষ অবধি ১০,০০০ জন শহরে কারপুলিং করছেন বলে জানা গেছে।[82]
উপযোগমূলক যানবাহন
_(front)%2C_Kuala_Lumpur.jpg)
ভারতের প্রথম উপযোগমূলক যান বা ইউটিলিটি ভেহিকল উৎপাদন করে মহিন্দ্রা অ্যান্ড মহিন্দ্রা। এটি ছিল মূল জিপের একটি কপি এবং এটি উৎপাদিত হয়েছিল লাইসেন্সের অধীনেই।[83] যানটি অল্পসময়ের মধ্যেই বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ফলে মহিন্দ্রাও ভারতের একটি প্রথম সারির কোম্পানিতে পরিণত হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীতে কর্মচারী ও রসদ প্রেরণের কাজে মহিন্দ্রা ও মারুতি জিপসির ব্যবহার ব্যাপক।
১৯৯৪ সালে টাটা গোষ্ঠী অটোমোবাইল উৎপাদন শাখা টাটা মোটরস টাটা সুমো নামে তাদের প্রথম উপযোগমূলক যানটি বাজারে ছাড়ে।[84][85] সুমো গাড়ির সেই সময়কার অত্যাধুনিক নকশার জন্য গাড়িটির বিক্রি দুই বছরের মধ্যে বাজারের ৩১ শতাংশ স্থান দখল করে নেয়।[86] ফোর্স মোটরসের টেম্পো ট্র্যাক্স কিছুদিন আগে পর্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় রাজত্ব করেছে। বর্তমানে ক্রীড়া উপযোগমূলক যানগুলি (স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকল) যাত্রীবাহী যানের বাজারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করে রয়েছে।[87] এছাড়া টাটা, হন্ডা, হুন্ডাই, ফোর্ড, শার্ভোলেট ও অন্যান্য ব্র্যান্ডের উপযোগমূলক যানও পাওয়া যায়।[88]
দূরপাল্লার পরিবহন ব্যবস্থা
রেল
ভারতে রেল পরিষেবার সূত্রপাত হয় ১৮৫৩ সালে। বর্তমানে রেল মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে সরকারি সংস্থা ভারতীয় রেল এই পরিষেবা প্রদান করে থাকে। ভারতীয় রেল দেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন ব্যবস্থা। দৈনিক এক কোটি আশি লক্ষ যাত্রী ও কুড়ি লক্ষ টন পণ্য পরিবহনকারী এই পরিষেবা বিশ্বের বৃহত্তম ও ব্যস্ততম রেল পরিষেবাগুলির অন্যতম।[89][90] ১৯৪৭ সালে ভারতে ৪২টি রেল ব্যবস্থার অস্তিত্ব ছিল। ১৯৫১ সালে এই সকল রেল ব্যবস্থাকে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব করে একক সংস্থায় পরিণত করা হয়। ফলে ভারতীয় রেল বিশ্বের পরিণত হয় বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ রেল পরিবহন ব্যবস্থায়। বর্তমানে ভারতীয় রেল ষোলোটি অঞ্চল বা জোনে বিভক্ত। এই অঞ্চলগুলি আবার ৬৭টি বিভাগে বিভক্ত। প্রত্যেক বিভাগের একটি বিভাগীয় সদরও রয়েছে।[91][92] রেল নেটওয়ার্ক দেশের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বরাবর প্রসারিত। ভারতে রেলপথে মোট দৈর্ঘ্য ৬৩,৪৬৫ কিলোমিটার। এই পথে স্টেশনের মোট সংখ্যা ৬,৯০৯।[93] ভারতীয় রেলের কর্মীসংখ্যা এক লক্ষ চল্লিশ হাজার। এই সংস্থা বিশ্বের বৃহত্তম বাণিজ্যিক বা উপযোগমূলক কর্মীনিয়োগকারী সংস্থা।[89][94] রোলিং স্টক হিসেবে ভারতীয় রেল ২ লক্ষ পণ্যবাহী ওয়াগন, ৫০,০০০ কোচ ও ৮,০০০ রেল ইঞ্জিনের মালিক।[89] এছাড়াও এই সংস্থার নিজস্ব রেল ইঞ্জিন ও কোচ উৎপাদন ব্যবস্থাও রয়েছে। দূরপাল্লা ও শহরতলি – উভয়প্রকার রেল পরিবহন ব্যবস্থাতেই ব্রড, মিটার ও ন্যারো গেজের মাল্টি-গেজ রেল পরিবহন ব্যবস্থা লক্ষিত হয়। বর্তমানে প্রজেক্ট ইউনিগেজ নামে এক প্রকল্পের অধীনে দেশের ১৪,৪০৬ কিলোমিটার ন্যারোগেজ রেলপথকে ব্রডগেজে পরিবর্তিত করার কাজ চলছে।
বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম রেলপথ কাশ্মীর রেলের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে ২০০৯ সালে।[95] দেশে দ্রুতগতিসম্পন্ন রেল ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রস্তাবনাও রাখা হয়েছে। মুম্বই শহরের সঙ্গে জাতীয় রাজধানী নতুন দিল্লিকে যুক্ত করার জন্য মুম্বইতে ম্যাগলেভ ট্র্যাক বসানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। মুম্বই ম্যাগলেভ নামে পরিচিত এই ট্র্যাকটি মহারাষ্ট্রের অন্যান্য অংশকেও সংযুক্ত করবে।[96] অপর একটি প্রস্তাবনা হল জাপানের সিঙ্কানসেনের অনুরূপে ভারতেও দ্রুতগতির রেল পরিষেবা প্রবর্তন।[97]
১৯৯৯ সালে কোঙ্কণ রেল নিগম মহারাষ্ট্রের কোলাড ও গোয়ার ভেরনার মধ্যবর্তী অংশে রোল অন রোল অফ (আরওআরও) নামে একটি অভূতপূর্ব রোড-রেল যৌথব্যবস্থা চালু করে।[98] ২০০৪ সালে এই পরিষেবা কর্ণাটকের সুরাথকল পর্যন্ত পরিবর্ধিত করা হয়।[99][100] এই ধরনের পরিষেবা ভারতে প্রথম। এই পরিষেবায় ফ্ল্যাটবেড ট্রেলারে ট্রাক পরিবাহিত হয়। পরিষেবাটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।[101] ২০০২ সাল পর্যন্ত ১,১০,০০০ ট্রাক পরিবহন করে নিগম মোট ৭৪ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করেছে।[102]
আন্তর্জাতিক রেল পরিবহণ
প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে ভারতের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত নয়। পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের রেল যোগাযোগ বজায় রেখেছে দুটি ট্রেন – দিল্লি-লাহোর সমঝোতা এক্সপ্রেস ও যোধপুর-করাচি থর এক্সপ্রেস। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ সংযুক্ত মৈত্রী এক্সপ্রেস নামক দ্বি-সাপ্তাহিক ট্রেনটির মাধ্যমে। নেপালের সঙ্গেও দুটি নগন্য রেল যোগাযোগ বজায় আছে – জয়নগর-বিজলপুরা যাত্রী পরিষেবা ও রক্সৌল-বীরগঞ্জ পণ্য পরিষেবা।[103] মায়ানমারের সঙ্গে ভারতের কোনো রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। তবে মণিপুরের জিরিবাম থেকে ইম্ফল ও মোরেহ হয়ে মায়ানমারের তামু পর্যন্ত একটি রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা আছে।[104] ভারতের বিদেশ মন্ত্রক আরআইটিইএস লিমিটেডের সাহায্যে একটি সম্ভাবনা সমীক্ষা করে দেখেছে এই হারানো সংযোগটি নির্মাণ করতে খরচ হবে ২,৯৪১ কোটি টাকা।[105] ভুটানের সঙ্গে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনেরও প্রস্তাব রাখা হয়েছে। তবে চীন ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভারতের কোনো রেল যোগাযোগ নেই।[106]
সড়কপথ

ভারতে জাতীয় সড়কের নেটওয়ার্ক দেশের সকল রাজ্য-রাজধানী ও প্রধান শহরগুলিকে সংযুক্ত করেছে। এই নেটওয়ার্ক দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ডস্বরূপ। ২০০৫ সালের হিসেব অনুসারে, ভারতে জাতীয় সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৬৬,৫৯০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ২০০ কিলোমিটার পথ শ্রেণিবিভক্ত হয়েছে এক্সপ্রেসওয়ে নামে।[107] জাতীয় সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে দেশের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়ককে চার লেনের সড়ক এবং এর কোনো কোনো অংশকে ছয় লেনের সড়কে রূপান্তরিত করার কাজ চলছে।[108] যদিও যানজট ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে গুরগাঁও থেকে মুম্বই বন্দরে ট্রাকে করে পণ্য নিয়ে যেতে দশ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যায়।[7]
ভারতীয় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের মতে, ৬৫ শতাংশ পণ্য পরিবহন ও ৮০ শতাংশ যাত্রী পরিবহন সড়কপথেই সম্পন্ন হয়। ভারতের সড়ক নেটওয়ার্কের মাত্র দুই শতাংশ জাতীয় সড়ক হলেও এই সড়কপথে দেশের ৪০ শতাংশ সড়ক ট্র্যাফিক পরিবাহিত হয়। [107] অন্যদিকে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বার্ষিক যান বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১০.১৬ শতাংশ।[107] হাইওয়েগুলির প্রসারপথে উন্নয়ন কর্মসূচি দ্রুত রূপায়িত হচ্ছে এবং প্রধান প্রধান হাইওয়েগুলির ধারে ধারে গড়ে উঠছে অনেক নতুন নতুন শহরও।
দেশের জাতীয় সড়কগুলির সবকটিই পাকা রাস্তা। তবে অল্প সড়ক কংক্রিট-নির্মিত। এগুলির মধ্যে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য হল মুম্বই-পুনে এক্সপ্রেসওয়ে। সাম্প্রতিককালে, একটি দেশব্যাপী বহু-লেনযুক্ত সড়ক ব্যবস্থা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে ভারতে। এই ব্যবস্থায় স্বর্ণ চতুর্ভূজ এবং উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিম করিডোর দুটি ভারতের প্রধান প্রধান শহরগুলিকে সংযুক্ত করছে। ২০০০ সালের হিসেব অনুযায়ী, ভারতের ৪০ শতাংশ গ্রামে সকল ঋতুতে চলাচলের উপযোগী সড়ক নেই। বর্ষাকালে তাই এই গ্রামগুলি সড়কপথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।[6][109] গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিকল্পে, ভারত সরকার বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা নামে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ২০০০ সালে চালু হওয়া এই প্রকল্পের লক্ষ্য ৫০০ জন বা ততোধিক জনসংখ্যাবিশিষ্ট (পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষেত্রে ২৫০ জন বা ততোধিক) গ্রামাঞ্চলে সকল ঋতুতে ব্যবহারোপযোগী সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলা।[109][110]
১৯৯৯ সালের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ভারতের সড়কপথের মোট দৈর্ঘ্য ৩,৩১৯,৬৪৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে পাকা রাস্তা ১,৫১৭,০৭৭ কিলোমিটার এবং কাচা রাস্তা ১,৮০২,৫৬৭ কিলোমিটার।[111] মোট ৩,৩০০,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ভারতের সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম। এই ব্যবস্থার বিভিন্ন বিভাগগুলি হল:[107]
![]() |
![]() দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে(কলকাতা থেকে দুর্গাপুর)
|
|||||||||||||||
বাস ভারতের পরিবহন ক্ষেত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। বিশেষত গ্রামাঞ্চলে বা যে সব প্রত্যন্ত অঞ্চলে রেল বা বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি, সেই সব অঞ্চলে বাসই প্রধান পরিবহন মাধ্যম। এই সামাজিক গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে মূলত সরকারি সংস্থাগুলিই গণ বাস পরিবহন ব্যবস্থার মালিকানা ও পরিচালনভার নিয়ন্ত্রণ করে। অধিকাংশ রাজ্য সরকারই কোনো না কোনো রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থার ছত্রতলে বাস চালায়।.[115] এই সংস্থাগুলি প্রধানত ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে স্থাপিত হয়েছিল। দেশব্যাপী গ্রাম ও শহরগুলির মধ্যে সংযোগস্থাপনের ক্ষেত্রে এই সংস্থাগুলির গুরুত্ব অপরিসীম।[34]ে]]
জলপথ ও সমুদ্র পরিবহন ব্যবস্থা
শিপিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া নামক সরকারি-মালিকানাধীন সংস্থাটির হাতে ভারতের যাবতীয় সামুদ্রিক পরিবহন এবং উপকূলীয় ও অন্যান্য সামুদ্রিক পরিবহন পরিকাঠামোর পরিচালনভার ন্যস্ত। এই সংস্থা দেশের ৩৫ শতাংশ পোতশুল্কের মালিক ও পরিচালক। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের সমুদ্র বাণিজ্যের প্রায় সম্পূর্ণ অংশের পরিচালনভার কার্যত এই সংস্থার হাতেই ন্যস্ত।[116] এই সংস্থার ২৭ লক্ষ জিটি-র (৮৮ লক্ষ ডিডব্লিউটি) ৭৯টি জাহাজসম্বলিত একটি নৌবহর রয়েছে। এছাড়াও সরকারি বিভাগ ও বিভিন্ন সংগঠনের তরফ থেকে গবেষণা, সমীক্ষা ও সাহায্যার্থে ১.২ লক্ষ জিটি-র (০.৬ লক্ষ ডিডব্লিউটি) ৫৩টি জাহাজসম্বলিত নৌবহর পরিচালনা করে শিপিং কর্পোরেশন।[117] সংস্থার কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় মুম্বই শহরে অবস্থিত মেরিটাইম ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে। ১৯৮৭ সালে স্থাপিত এই সংস্থাটি বিশ্ব সমুদ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি শাখা।[118] শিপিং কর্পোরেশন মালটা ও ইরানেও যৌথ উদ্যোগে কাজ করে থাকে।[117]
বন্দর

বন্দরগুলি ভারতীয় বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র। ভারতের পরিমাণের হিসেবে ৯০ শতাংশ ও মূল্যের হিসেবে ৭০ শতাংশ বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পাদিত হয় বন্দরের মাধ্যমে।[120] দেশে মোট বারোটি প্রধান বন্দর রয়েছে: কলকাতা (হলদিয়া সহ), পারাদ্বীপ, বিশাখাপত্তনম, এন্নোর, চেন্নাই, তুতিকোরিন, কোচি, নিউ ম্যাঙ্গালোর, নবী মুম্বই, মুম্বই ও কান্ডলা।[93] এছাড়াও দেশে ১৮৭টি ছোটো ও মাঝারি বন্দর রয়েছে। এর মধ্যে ৪৭টি বন্দরে পণ্য চলাচল করে।[93]
প্রধান ও অপ্রধান বন্দরের বর্গীকরণ পণ্যবাহী জাহাজের সংখ্যার ভিত্তিতে করা হয় না। প্রধান বন্দরগুলি পরিচালিত হয় কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত পোর্ট ট্রাস্টগুলির মাধ্যমে। এগুলি ১৯৬৩ সালের প্রধান পোর্ট ট্রাস্ট আইন অনুসারে পরিচালিত হয়। অপ্রধান বন্দরগুলি সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার পরিচালিত। অনেক অপ্রধান বন্দর আবার ব্যক্তিগত বন্দর। ২০০৫-০৬ সালের হিসেব অনুযায়ী, দেশের প্রধান বন্দরগুলিতে পণ্য পরিবহনের পরিমাণ ৩৮২.৩৩ মেগাটন।[93]
জলপথ


ভারতের অন্তর্দেশীয় জলপথ পরিবহনের ব্যবস্থাটি যথেষ্ট প্রসারিত। নদনদী, খাল, কয়াল, ও ছোটো নদীপথে এই পরিবহন ব্যবস্থাটি দেখা যায়। ভারতের নৌচলাচলযোগ্য জলপথের মোট দৈর্ঘ্য ১৪,৫০০ কিলোমিটার; এর মধ্যে ৫,২০০ কিলোমিটার নদীপথ এবং ৪৫৮ কিলোমিটার খালপথ। যন্ত্রচালিত জলযানের সাহায্যে এই পথে যাতায়াত করা যায়।[121] তবে অন্যান্য বৃহৎ রাষ্ট্রের তুলনায় ভারতে অন্তর্দেশীয় জলপথে পণ্য পরিবহন সুপ্রচলিত নয়। জার্মানি ও বাংলাদেশে যেখানে যথাক্রমে ২০ শতাংশ ও ৩২ শতাংশ পণ্য পরিবহন অন্তর্দেশীয় জলপথে হয়ে থাকে, সেখানে ভারতে মাত্র ০.১৫ শতাংশ পণ্য অন্তর্দেশীয় জলপথের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়।[122] গোয়া, পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও কেরল রাজ্যের কয়েকটি মাত্র জলপথে সংগঠিতভাবে পণ্য পরিবহন চলে। ভারতের অন্তর্দেশীয় জলপথ কর্তৃপক্ষ ভারতের জলপথের দায়িত্বে নিযুক্ত একটি বিধিবদ্ধ সংস্থা। এই সংস্থার কাজ এই সকল জলপথের জন্য উপযোগী পরিকাঠামো নির্মাণ, নতুন প্রকল্পের অর্থনৈতিক গুরুত্ব সমীক্ষা, প্রশাসন পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ।
ভারতে নিম্নলিখিত জলপথগুলি জাতীয় জলপথ ঘোষিত হয়েছে:
- জাতীয় জলপথ ১ – গঙ্গা-ভাগীরথী-হুগলি নদীপথে ইলাহাবাদ থেকে হলদিয়া পর্যন্ত প্রসারিত। ১,৬২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই জলপথটি ১৯৮৬ সালের অক্টোবরে জাতীয় জলপথ ঘোষিত হয়।[123]
- জাতীয় জলপথ ২ - সাইদিয়া – ব্রহ্মপুত্রের ৮৯১ কিলোমিটার প্রসারিত ধুবরি অংশটি ১৯৮৮ সালে জাতীয় জলপথ ঘোষিত হয়।[123]
- জাতীয় জলপথ ৩ – কোল্লাম – চম্পাকারা ও উদ্যোগমন্ডল খাল সহ পশ্চিম উপকূলীয় খালের কোট্টাপুরম অংশ। ২০৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই অংশটি ১৯৯৩ সালে জাতীয় জলপথ ঘোষিত হয়।[123]
- জাতীয় জলপথ ৪ – ভদ্রাচলম – কাকিনাডা-পুদুচ্চেরি খাল পরিবহন ব্যবস্থা সহ কৃষ্ণা-গোদাবরী নদী অববাহিকার রাজামুন্দ্রি ও ওয়াজিরাবাদ-বিজয়ওয়াড়া অংশ। ১,০৯৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই জলপথ ২০০৭ সালে জাতীয় জলপথ ঘোষিত হয়।[124][125]
- জাতীয় জলপথ ৫ - মঙ্গলগড়ি – পূর্ব উপকূলীয় খাল সহ মহানদী-ব্রাহ্মণী নদী অববাহিকার পারাদ্বীপ ও তালচের- ধামারা অংশ। ৬২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই জলপথটিও ২০০৭ সালে জাতীয় জলপথ ঘোষিত হয়।
বিমান পরিবহন ব্যবস্থা

ভারতে বর্তমানে দ্রুত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বিমান ভ্রমণকে সাধারণ মানুষের পক্ষে সুলভতর করে তুলেছে। প্রধান ধ্বজাবাহক বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার ১৪৭টি এয়ারক্র্যাফটের বিমানবহরটি ভারতকে বিশ্বের অন্যান্য অংশের সঙ্গে সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে।[126] এছাড়াও আরও কয়েকটি বিদেশি বিমান সংস্থা ভারতকে বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত করছে।
আভ্যন্তরীন বিমান পরিবহনের বাজার শেয়ারের ভিত্তিতে দেশের জনপ্রিয়তম ব্যান্ডগুলি হল কিংফিশার এয়ারলাইনস ও এয়ার ইন্ডিয়া। ভারতের বিমান পরিবহন ব্যবস্থার উদারীকরণের পর থেকে এই বিমান সংস্থাগুলি দেশের প্রায় ৮০টি শহরকে সংযুক্ত করেছে ও বিভিন্ন বৈদেশিক বিমানপথ পরিচালনা করছে। মুম্বই-দিল্লি বিমান করিডোরটি ২০০৭ সালে অফিসিয়াল এয়ারলাইনস গাইড অনুসারে বিশ্বের ষষ্ঠ ব্যস্ততম বিমানপথ।[128] তবুও দেশের বিমান পরিবহন ব্যবস্থার একটি বৃহৎ অংশই আনট্যাপড রয়ে গেছে।
বিগত কয়েক বছরে ভারতের অব্যবহৃত বিমান পরিবহন নেটওয়ার্কে প্রচুর বিনিয়োগ হয়েছে। ২০০৪-০৫ সালে প্রায় আধ-ডজন সুলভ ক্যারিয়র ভারতের বাজারে প্রবেশ করে। বর্তমানে উল্লেখযোগ্য নতুন ব্র্যান্ডগুলি হল: এয়ার ডেকান, কিংফিশার এয়ারলাইনস, স্পাইসজেট, গোএয়ার, প্যারামাউন্ট এয়ারলাইনস এবং ইন্ডিগো এয়ারলাইনস। ভারতের বিমান পরিষেবার দ্রুতবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিতে এয়ার ইন্ডিয়া সম্প্রতি বোয়িংকে ৭.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের ৬৮টি জেটের অর্ডার দিয়েছে। অন্যদিকে ইন্ডিয়ান এয়ারবাসকে ২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের ৪৩টি জেটের অর্ডার দিয়েছে।[129][130] পুরনো বিমান সংস্থাগুলিও এই ট্রেন্ডকে দূরে সরিয়ে রাখেনি। প্যারিস এয়ার শোতে র ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের ১০০টি এয়ারবাস এ৩২০ বিমান অর্ডার করে পাদপ্রদীপের আলোয় আসে ইন্ডিগো এয়ারলাইনস। এই অর্ডার যেকোনো এশীয় অভ্যন্তরীণ বিমান সংস্থার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মূল্যের।[131] ২০০৫ সালের ১৫ জুন ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলির মধ্যে প্রথম কিংফিশার এয়ারলাইনস এয়ারবাস এ৩৮০ অর্ডার করে।[132] এয়ারবাসের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যের আর্থিক মূল্য ছিল ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।[133]
বিমানবন্দর
২০০৮ সালের হিসেব অনুসারে ভারতে ৩৩৫টি অসামরিক বিমানবন্দর রয়েছে – এর মধ্যে ২৫০টির রানওয়ে পাকা ও ৯৬টির রানওয়ে কাচা। ভারতীয় প্রজাতন্ত্রে ২০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে। ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও ছত্রপতি শিবাজী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর মারফত দক্ষিণ এশিয়ার বিমান পরিবহনের প্রায় অর্ধেক সম্পন্ন হয়।[134][135][136]
![]() দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দৈনিক উড়ানের সংখ্যার ভিত্তিতে ভারতের ব্যস্ততম বিমানবন্দর[134]
|
হেলিপোর্ট
২০০৭ সালের হিসেব অনুযায়ী ভারতে ৩০টি হেলিপোর্ট বা হেলিকপ্টার বন্দর আছে।[137] বিশ্বের উচ্চতম হেলিপ্যাড ভারতের সিয়াচেন হিমবাহে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এই হেলিপ্যাডের উচ্চতা ৬,৪০০ মিটার (২১,০০০ ফুট)।[138]
পবন হংস হেলিকপ্টারস লিমিটেড ভারতের একটি সরকারি কোম্পানি যা ওএনজিসি থেকে এর সমুদ্রমধ্যবর্তী অবস্থান পর্যন্ত হেলিকপ্টার পরিষেবা প্রদান করে। এছাড়াও বিভিন্ন রাজ্য সরকারের (বিশেষত উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে) নিজস্ব হেলিকপ্টার পরিষেবা রয়েছে।[139]
পাইপলাইন
- আকরিক তেলের পাইপলাইনের দৈর্ঘ্য ২০,০০০ কিলোমিটার।
- পেট্রোলিয়াম জাত পণ্যের পাইপলাইনের দৈর্ঘ্য ২৬৮ কিলোমিটার।
- প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনের দৈর্ঘ্য ১,৭০০ কিলোমিটার।
উপরের তথ্যগুলি ২০০৮ সালের সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত (সিআইএ, ২০০৮)।[137]
আরও দেখুন
- হিমাচল প্রদেশের পরিবহন ব্যবস্থা
- দিল্লির পরিবহন ব্যবস্থা
- মুম্বই-এর গণপরিবহণ ব্যবস্থা
- কর্ণাটকের পরিবহন ব্যবস্থা
- চেন্নাইয়ের পরিবহন ব্যবস্থা
- কলকাতার পরিবহণ ব্যবস্থা
- কলকাতা মনোরেল
- মুম্বাই মনোরেল
- কলকাতা মেট্রো লাইন ৩
পাদটীকা
- "Mountain Railways of India"। UNESCO World Heritage Centre। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১৫।
- "India at a Glance : Area"। Census of India, 2001। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১৭।
- "India at a Glance : Population"। Census of India, 2001। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১৭।
- Bicycle Ownership in India
- Jorn Madslien (২০০৭-০৪-০৩)। "India prepares for automotive boom"। BBC News। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৬।
- "India Transport Sector"। World Bank।
- Nandini Lakshman। "The Trouble With India: Crumbling roads, jammed airports, and power blackouts could hobble growth"। Online edition of BusinessWeek, dated 2007-03-19। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৬।
- Steve Hamm। "India: Where Shipping Is Shaky"। Online edition of BusinessWeek, dated 2007-03-19। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৬।
- Rina Chandran (২০০৮-০৮-২৬)। "High road accident toll a drain on Indian economy"। Reuters। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৬।
- Catherine Riley। "Corners cut on cost – and safety with the Tata Nano"। Online edition of The Times, dated 2008-01-11। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৬।
- John Pucher, Nisha Korattyswaropam, Neha Mittal, Neenu Ittyerah। "Urban transport crisis in India" (PDF)। ১৪ মার্চ ২০০৭ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০০৯।
- "A special report on India: Creaking, groaning"। Online edition of The Economist, dated 2008-12-11। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৭।
- "Investment to rescue air sector"। Online edition of The Financial Express, dated 2005-11-18। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২২।
- Shobana Chandra। "U.S. Pension Funds May Invest in India Road Projects, Nath Says"। Bloomberg।
- Tapasyananda, Swami (২০০২)। Sankara-Dig-Vijaya: The Traditional Life of Sri Sankaracharya by Madhava-Vidyaranya। India: Sri Ramakrishna Math। আইএসবিএন 81-7120-434-1।
- Geetam Tiwari। "URBAN TRANSPORT IN INDIAN CITIES" (PDF)। London School of Economics। ২০১০-০৭-১৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২৩।
- "MMRDA — Projects — Skywalk"। MMRDA। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৩-২৪।
- "Mumbai pedestrians can walk safe in the sky"। The Hindu Business Line। ২০০৮-১১-২৩। পৃষ্ঠা 1। ২০০৯-০২-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৩-২৪। অজানা প্যারামিটার
|coauthors=
উপেক্ষা করা হয়েছে (|author=
ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য) - "Palanquin"। Encyclopaedia Britannica, 11th Ed., 1911। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১৮। অজানা প্যারামিটার
|আর্কাইভের- ইউআরএল=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - R.V. Russell। The Tribes and Castes of the Central Provinces of India, Volume II। BiblioBazaar, LLC। পৃষ্ঠা 652। আইএসবিএন 9780559127625। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০১।
- Rumu Banerjee। "Fading tongas on their last ride"। Online edition of the Times of India, dated 2009-01-18। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১৩।
- Marianne De Nazareth। "Imperial jhutka on an exit march"। Online edition of The Hindu, dated 2002-04-08। ২০০৭-০২-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১৮।
- Firoz Bakht Ahmed। "Road to nowhere"। Online edition of The Hindu, dated 2002-12-19। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১৮।
- "Starting today, tourist buses, trucks can't drive into city"। Online edition of The Indian Express, dated 2004-07-01। ২০০৪-০৭-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১৩।
- "The changing cycle"। The Tribune, India। ২০০৬-০৭-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১৮।
- "Hand-pulled rickshaws to go off Kolkata roads"। Online edition of The Indian Express, dated 2005-08-15। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৩।
- "Rule review for rickshaw ban"। Online edition of The Telegraph, dated 2008-10-31। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৩।
- "Kolkata's trams to sport a new look soon"। Online edition of the Times of India, dated 2009-03-11। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১৭।
- Anil K. Rajvanshi। "Electric and improved cycle rickshaw as a sustainable transport system for India" (PDF)। Current Science, Vol. 83, No. 6, 25 September 2002। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১৮।
- "Rickshaw ban from today"। Online edition of The Times of India, dated 2007-06-09। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১৮।
- "Ban on slow vehicles in select areas likely"। Online edition of The Telegraph, dated 2006-09-29। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১৮।
- "Ban on fish-carts extended"। Online edition of The Hindu, dated 2002-10-15। ২০০৫-০৩-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১৮।
- "Cycle rickshaws: Victims of car mania" (PDF)। Centre for Science and Environment। ২০০৭-০৭-১৭ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১৮।
- Sanjay K. Singh। "Review of Urban Transportation in India" (PDF)। Journal of Public Transportation, Vol. 8, No. 1, 2005। ২০১০-০৬-১৫ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২৩।
- Ted Moore (২০০৭-০৫-১৪)। "Traffic Accidents Kill At Least 51 In India On Monday"। ENews 2.0। ২০১২-০৭-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১২।
- "Report of Committee for study of the applicability of Variable Message Sign (VMS) on NHs inter-alia for finalization of Interim Guidelines." (PDF)। Ministry of Road Transport and Highways। ২০০৭-১০-২৪। পৃষ্ঠা 2। ২০১১-০৭-২১ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৬।
- "Landmarks in Transport"। Brihanmumbai Electric Supply and Transport। ২০০৯-০৩-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১৮।
- "BMTC The Present"। Bangalore Metropolitan Transport Corporation। ২০০৮-০৫-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১৮।
- "Volvo's first city buses in India operating"। Volvo Buses। ২০০৬-০১-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২৩।
- "Volvo to foray into city bus segment in India"। The Hindu Businessline। Monday, January 9, 2006। মে ২৫, ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 2009-06-23। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - "Volvo intra-city buses to hit B'lore roads on Jan 17"। The Financial Express। Posted: 2006-01-11 00:57:28+05:30 IST Updated: Jan 11, 2006 at 0057 hrs IST। সংগ্রহের তারিখ 2009-06-23। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - "India Gets First AC Bus Stop!"। EfyTimes। ২০০৮-১২-১৫। ২০০৯-০৫-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-০৫।
- S. Dorairaj। "Koyambedu bus terminus gets ISO certification"। Online edition of The Hindu, dated 2005-12-28। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৫।
- "CM flags off Atal Sarige for the poor"। Express Buzz। ৩১ মে ২০০৯। ২০০৯-০৮-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৮।
- "'Atal Sarige' launched in Bangalore"। The Hindu। Sunday, May 31, 2009। পৃষ্ঠা 1। সংগ্রহের তারিখ 2009-06-08। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - "Autorickshaw"। MSN Encarta। ২০১৩-১০-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১৮।
- "Getting around Mumbai"। iGuide। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৩-১২।
- "Auto fares must be based on meter readings"। The Hindu। ২০০৭-০৩-৩০। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-০৬।
- "Vroom... enjoy a pre-paid auto ride"। The Times of India। ২০০৭-০৩-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১০।
- Chris Duggan (২০০৬-০৮-১৫)। "India's 'Amby' notches up half century"। The Independent, UK। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২৩।
- Anand Sankar (২০০৬-০৪-১২)। "When did you last call a taxi?"। The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২৩।
- Motor Vehicles Act, 1988 : s. 74(2)(viii)
- "Radio Taxis in India to go up to 174,000"। Online edition of The Financial Express, dated 2007-10-28। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২৪।
- "Taxis to introduce 'in-Taxi' magazines from July"। ChennaiVision। পৃষ্ঠা 1। ২০০৯-০৯-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-২১।
- http://www.thehindubusinessline.com/2006/10/27/stories/2006102700310900.htm
- "Overview Of the existing Mumbai Suburban Railway"। Mumbai Railway Vikas Corporation। ২০০৮-০৬-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৩-৩১।
- "History"। Official webpage of Metro Railway, Kolkata। ২০০৭-০৭-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৪।
- Surendra Gangan। "Centre returns three proposals for mega-projects"। Online edition of DNA, dated 2006-09-01। অজানা প্যারামিটার
|1=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - "Maha govt plans SPV for Pune metro"। Online edition of Business Standard, dated 2009-04-09। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৩।
- "Metro in pipeline for Lucknow, Kanpur"। Online edition of the Indian Express, dated 2008-09-13। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৩।
- "Metro rail at Amritsar and Mohali too: Badal"। Online edition of The Financial Express, dated 2007-10-10। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৬। line feed character in
|কর্ম=
at position 18 (সাহায্য) - "Kochi Metro Rail Project on BOT" (PDF)। Government of Kerala। ২০০৯-০৭-১১ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৩।
- "Monorail: Traffic plan in place to avoid inconvenience to motorists"। Online edition of the Indian Express, dated 2009-04-25। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৭।
- "India's first monorail to come up in Kolkata"। Online edition of the Financial Express, dated 2008-11-22। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৭।
- "Patent of Skybus from konkanrailway.com"। ১২ মার্চ ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০০৯।
- Vineeta Pandey। "Skybus project: Fantasy or reality?"। Online edition of the Times of India, dated 2005-13-03। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৪।
- Sanjeev Devasia। "First step toward the Mumbai-Virar elevated 2-track corridor project"। Online edition of Mid-Day, dated 2009-02-16। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৪।
- "Two Wheeler Sales in India"। AutomobileIndia.com। ২০১০-০১-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১৯।
- "Transport in India"। International Transport Statistics Database। iRAP। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-১৭।
- "Honda tightens two-wheeler grip in India"। Online edition of The Hindu Business Line, dated 2009-02-03। ২০০৯-০২-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১৯।
- Phil Woods। "The star of India"। Online edition of the Telegraph, dated 2001-07-28। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১৯।
- New Delhi Air Quality Is Worsening, Group Says
- "Production Trend"। Official webpage of the Society of Indian Automobile Manufacturers। ২০০৯-০৪-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১৩।
- "Transport in Brazil"। International Transport Statistics Database। iRAP। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-১৭।
- S. Muralidhar। "New face to good old Maruti 800"। Online edition of The Hindu Business Line, dated 2005-02-13। ২০০৮-১২-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১৩।
- "Tata Nano — world's cheapest new car is unveiled in India"। driving.timesonline.co.uk। ২০০৮-০১-১১। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০১-২১।
- "No plans to enter Nano segment, says Maruti"। Online edition of The Hindu Business Line, dated 2009-02-27। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১৩।
- Kurup, Saira। "Homemade Nano"। Online edition of The Times of India, dated 2009-03-29। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১০।
- "Bangalore's car pooling venture ropes in celebrities"। IANS। ২০১০-০৬-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-২৮।
- "Radio One, CommuteEasy partner to promote car pooling in Bangalore"। ২০১১-০৭-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-২৮।
- "Car pooling kicks off in City" (PDF)। Bangalore Traffic Police। ২০১১-০৭-২১ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-২৮।
- Shwetha S.। "10,000 plunge into car pool"। Online edition of DNA, dated 2009-05-22। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-২৮।
- "Mahindra Jeeps on The CJ3B Page"। ২১ এপ্রিল ১৯৯৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০০৯।
- "Company Profile: Tata Motors"। Official webpage of the Tata Group। ২০০৯-০১-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২৩।
- "The historic Tata Motors journey"। Rediff News। ২০০৯-০৩-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২৩।
- "Telco net spurts 44%, to pay Rs 8 a share"। Online edition of The Financial Express, dated 1997-05-28। ২০১৩-০৫-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২৩।
- John Sarkar। "SUVs still ruling the roads in India"। Online edition of the Economic Times, dated 2008-10-05। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৭।
- N. Ramakrishnan। "SUVs set to blaze new trail"। Online edition of The Hindu Business Line, dated 2003-03-13। ২০০৪-০৭-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৭।
- Indian Railways Year Book (2006-2007)। Ministry of Railways, Government of India। ২০০৭। পৃষ্ঠা 2–3। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-২৩।
- Indian Railways Year Book (2006-2007)। Ministry of Railways, Government of India। ২০০৭। পৃষ্ঠা 53। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-২৩।
- R.R. Bhandari (২০০৫)। Indian Railways: Glorious 150 years। Ministry of Information and Broadcasting, Government of India। পৃষ্ঠা 44–52। আইএসবিএন 81-230-1254-3।
- "Geography: Railway zones"। Indian Railways Fan Club। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-২৩।
- Mathew, K. M. (সম্পাদক)। "India: Transportation"। Manorama Yearbook 2009। Malayala Manorama। পৃষ্ঠা 606। আইএসবিএন 8189004123।
- Guinness Book of World Records। Guinness World Records, Ltd। ২০০৫। পৃষ্ঠা 93। আইএসবিএন 1892051222।
- Mufti Islah (২০০৯-০২-১৪)। "Kashmir gets rail link, international flights"। CNN-IBN। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২৩।
- "Maglev plan starts chugging, at last"। Daily News and Analysis। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৩-২৯।
- "India seeks nuclear help in Japan"। BBC। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৩-২৯।
- "Road-Rail Synergy System"। Press release, Press Information Bureau, dated 2004-20-05। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-২২।
- "New Konkan Rly service begins"। Online edition of the Business Standard, dated 2004-06-16। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-২২।
- "RORO service again on Konkan Railway"। Online edition of The Hindu Business Line, dated 2004-06-11। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-২২।
- S. Vydhianathan। "Convergence on the Konkan Railway"। Online edition of The Hindu, dated 2003-14-11। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-২২।
- "ROLL ON- ROLL OFF (RORO) SERVICE ON KONKAN RAILWAY" (PDF)। Official webpage of the Konkan Railway Corporation। ২০০৯-০৩-০৪ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-২২।
- "Brief on the matter relating to Nepal" (PDF)। Official webpage of Indian Railways। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০১।
- "India's rail-building challenge"। By Sudha Ramachandran। Asia Times। জানুয়ারি ৩, ২০০৭। পৃষ্ঠা 2। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১৬।
- "India signs trans-Asian railways pact"। Indo-Asian News Service। Monday,02 July 2007, 12:30 hrs। পৃষ্ঠা 1। সংগ্রহের তারিখ 2009-04-16। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - "IRFCA:Indian Railways FAQ:Geography:International"। IRFCA, website of the Indian Railway Fan Club। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২৪।
- । National Highways Authority of India Road Network http://www.nhai.org/roadnetwork.htmtitle=Indian Road Network
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৩-৩১।|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - "National Highways"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২৩। অজানা প্যারামিটার
|published=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - "Rural Roads: A Lifeline for Villages in India" (PDF)। World Bank। পৃষ্ঠা 3। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৩।
- "Pradhan Mantri Gram Sadak Yojana (PGMSY)"। Ministry of Rural Development, Government of India। ২০০৪-১১-০২। ২০০৯-০৬-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৩।
- "The World Factbook: Field Listings: Highways"। CIA। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০২।
- Ravi Sharma। "A smooth ride to success"। Online edittion of Frontline, Volume 22 - Issue 15, July 16 - 29, 2005। ২০০৮-০৯-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১৬।
- "KSRTC Traffic Operation"। Karnataka State Road Transport Corporation। ২০০৯-০২-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১৯।
- "KSRTC Airavat"। Karnataka State Road Transport Corporation। ২০০৯-০২-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১৯।
- C. Gopalakrishnan। "Pricing of urban public bus transport in India : a study based on select undertakings"। Official webpage of the Indian Institute of Technology, Bombay। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০১।
- "About Us"। Official webpage of the Shipping Corporation of India। ২০০৭-১১-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৩।
- "Shipping Corporation of India"। National Portal of India। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৩।
- "The Maritime Training Institute (MTI)"। Official webpage of the Shipping Corporation of India। ২০০৮-০৬-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৩।
- "World Port Rankings 2007"। American Association of Port Authorities (AAPA)। ২০০৯-০৪-২২। ২০১০-০৪-০৭ তারিখে মূল (XLS) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৩।
- "Discover Opportunity: Infrastructure in India" (PDF)। India Brand Equity Foundation (IBEF), An initiative of the Ministry of Commerce & Industry, Government of India। পৃষ্ঠা 6। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০১।
- "Inland Water Transport Policy : Introduction"। Inland Waterways Authority of India। ২০১২-১২-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২০।
- Narayan Rangaraj, G. Raghuram। "Viability of Inland Water Transport in India" (PDF)। INRM Policy Brief No. 13। Asian Development Bank। ২০১২-০১-১১ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২০।
- "National Waterways"। Inland Waterways Authority of India (IWAI)। ২০১২-০৮-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-১০।
- "House committee nod for two more national waterways"। Indian Express। ২০০৭-০৮-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-১০।
- "Two New National Waterways" (PDF)। Inland Waterways Authority of India (IWAI)। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৩।
- "Fleet Details"। Official webpage of Air India। ২০১০-০৪-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১১।
- "OAG reveals the world's busiest routes"। ১৮ জানুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০০৯।
- "Boeing Gets 68 Plane Order from Air-India"। Fox News। ২০০৬-০১-১১। ২০০৮-০৭-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১১।
- "Airbus wins $2.2bn Indian order"। BBC। ২০০৫-০৯-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১১।
- "New Indian Airline Orders 100 Airbus Jets for $6B"। Fox News। ২০০৫-০৬-১৫। ২০১২-১১-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১১।
- "Kingfisher Air nets monster jumbo"। Online edition of the Financial Express, dated 2005-06-14। ২০১৩-০৫-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১১।
- "High fives with $3bn Kingfisher order"। Flightglobal.com। ২০০৫-০৬-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-১১।
- Saurabh Sinha। "Delhi beats Mumbai to become busiest airport"। Online edition of the Times of India, dated 2008-07-10। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৫।
- Delhi's IGIA edges ahead of Mumbai's CSIA as country's busiest airport
- Travel Biz Monitor:: Mumbai airport gets ready for new innings
- "CIA — The World Factbook -- India"। Central Intelligence Agency। ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১০।
- "Siachen: The world's highest cold war"। CNN। Wednesday, September 17, 2003 Posted: 0550 GMT ( 1:50 PM HKT)। সংগ্রহের তারিখ 2009-03-30। অজানা প্যারামিটার
|coauthors=
উপেক্ষা করা হয়েছে (|author=
ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:|তারিখ=
(সাহায্য) - "Civil Aviation"। Government of India Portal। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৩।
বহিঃসংযোগ
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে Transport in India সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
![]() |
উইকিসংবাদে সম্পর্কিত সংবাদ রয়েছে। |
- Transport Search in India
- India Transport
- Ministry of Road Transport & Highways
- Mile by Mile, India Paves a Smoother Road to Its Future, New York Times, December 4, 2005.
- Motor Vehicles Act, 1988
- Railways Information India