ভারতের দ্রুতগতির রেল
ভারতের রেল ব্যাবস্থা বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম রেল ব্যাবস্থা হলেও ২০১৫ সাল পর্যন্ত ভারতবর্ষে কোনো উচ্চগতির রেল পথ গড়ে ওঠেনি। বর্তমানে গতিমান এক্সপ্রেস হল ভারতের সবচেয়ে দ্রুত রেল যার সর্বোচ্চ গতি ১৬০ কিমি/ঘন্টা। বর্তমান সরকার হীরক চতুর্ভুজ নামে উচ্চগতির রেল প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই রেল এর সর্বোচ্চ গতি হবে ৩৫০ কিমি/ঘন্টা। এক কিমি উচ্চগতির রেল পথ তৈরিতে খরচ হয় ১০০-১৪০ কোটি টাকা(₹) যা সাধারণ রেল পথ নির্মাণের ১০ থেকে ১৪ গুন বেশি। ফলে এটি একটি খরচ সাপেক্ষ প্রকল্প। প্রকল্পটি রূপায়নে জাপান অর্থ সাহায্য দেবে সল্প সুদে।
ভারতের উচ্চগতির রেল | |
---|---|
ভারতের উচ্চগতির রেল পথের প্রস্তাবিত মানচিত্র | |
সংক্ষিপ্ত বিবরণ | |
ধরন | উচ্চগতির রেল |
অবস্থা | প্রস্তাবিত |
ক্রিয়াকলাপ | |
মালিক | ভারতীয় রেল |
প্রযুক্তিগত | |
রেললাইনের মোট দৈর্ঘ্য | ৭,০০০ কিলোমিটার (৪,৩০০ মাইল) |
বৈদ্যুতিকরণ | ২৫ কেভি এসি ওভারহেড |
চালন গতি | ২০০-৩৫০ কিমি/ঘন্টা |
গতি বৃদ্ধি করার জন্য বর্তমান প্রচেষ্টা ১৬০-২০০ কিমি/ঘন্টা
পটভূমি
ভারতীয় রেলের লক্ষ্য হচ্ছে যাত্রী ট্রেনের গতিটি ১৬০-২০০ কিলোমিটার/ঘণ্টা (৯৯-১২৪ মেগাবাইট) উন্নীত করা। তারা উন্নত প্রযুক্তির সাথে নতুন ট্র্যাকের ২০০ কিলোমিটার/ঘণ্টা (১২০ মাইল) গতির সাথে ১৬০ কিলোমিটার/ঘণ্টা (99 মাইল) গতির সামঞ্জস্যের জন্য বিদ্যমান প্রচলিত লাইনগুলিকে উন্নত করার চেষ্টা করছে। [15]
প্রাথমিকভাবে ট্রেনগুলি ১৬০ কিলোমিটার / ঘণ্টা (৯৯ মাইল) গতির সর্বোচ্চ গতিবেগে থাকবে। রেলওয়ে কোচ ফ্যাক্টরি থেকে তৈরি কোচগুলি ২০০ কিলোমিটার / ঘণ্টা (১২০ মাইল) গতিতে চালানো যাবে ২০১৫ সালে। [16] ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কোচ কারখানাগুলি আধা-উচ্চ গতির কোচ তৈরি করছে, কিন্তু ট্র্যাকগুলি এই কোচের গতি সমর্থন করতে সক্ষম নয়।
ভারত ডেডিকেটেড মালবাহী করিডোরের মাধ্যমে বেশিরভাগ যাত্রী রেলওয়ে ট্র্যাক থেকে পণ্যবাহী ট্রেন সরান হবে এবং যাত্রী ট্রেনের গতি ২০০ কিলোমিটার / ঘণ্টা বাড়ানোর জন্য ভারতের রেলওয়ে প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবে।
মধ্যমগতির ভারতীয় রেল
বর্তমানে ভারতে মধ্যম গতির রেল বা সেমি হাই-স্পিড রেল চালু হয়েছে। এই রেলের সর্বোচ্চ গতি ১৬০ কিমি/ঘন্টা এবং গড়গতি ১১৩ কিমি/ঘন্টা। দিল্লী থেকে আগরা পর্যন্ত রেল ব্যবস্থটি চালু হয়েছে। এছাড়া আরও কিছু মধ্যগতির রেল চলু করা হবে। সেগুলির বিবরন নীচে দেওয়া হল-
রুট | ট্রেনের নাম | রেলের ধরন | গতি(ঘন্টায় | গেজ | বর্তমান অবস্থা |
---|---|---|---|---|---|
দিল্লী-আগরা | গতিমান এক্সপ্রেস | সেমি হাই-স্পিড রেল | ১৬০ কিমি | ১৭৫৬ এমএম | সক্রিয় |
দিল্লী-চন্ডিগর | গতিমান এক্সপ্রেস | সেমি হাই-স্পিড রেল | ১৬০ কিমি | ১৭৫৬ এমএম | প্রস্তাবিত |
মুম্বাই-গোয়া | সেমি হাই-স্পিড রেল | ১৬০ কিমি | ১৭৫৬ এমএম | প্রস্তাবিত | |
মুম্বাই-আহমেদাবাদ | সেমি হাই-স্পিড | ১৬০ কিমি | ১৭৫৬ এমএম | প্রস্তাবিত | |
চেন্নাই-ব্যাঙ্গালোর | সেমি হাই-স্পিড রেল | ১৬০ কিমি | ১৭৫৬ এমএম | প্রস্তাবিত |
ভারতের উচ্চগতির রেল
ভারতের মুম্বাই থেকে আহমেদাবাদ পর্যন্ত হাই-স্পিড বা উচ্চগতির রেল নির্মাণ শুরু হবে ২০১৭ সালে ও শেষ হবে ২০২২ সালে । পড়ে রেলপথটি ব্যাঙ্গালোর ও দিল্লি পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে । এছাড়া উচ্চগতির রেল দ্বারা ভারতের চার মেট্রো শহর কলকাতা,দিল্লী,মুম্বাই ও চেন্নাইকে যুক্ত করার জন্য সরকার হীরক চতুর্ভূজ প্রকল্প ঘোষণা করেছে।
প্রস্তাবিত রেলপথ
ভারতে, ২৫০-৩০০ কিমি/ঘন্টা গতির ট্রেনগুলি উচ্চ-গতির উত্তোলিত রেলপথে পরিচালনা করার পরিকল্পনা করা হয়েছে এবং এর মাধ্যমে প্রাণী বা মানুষ অনধিকার প্রবেশকারী প্রতিরোধ করা যাবে। অমৃতসর-নতুন দিল্লি, এবং আহমেদাবাদ-মুম্বাইয়ের মধ্যে বর্তমান প্রচলিত লাইনগুলি শহরতলির এবং গ্রামীণ অঞ্চলগুলির মধ্য দিয়ে চলে, যা ভূমিপৃষ্ঠে বিস্তৃত এবং কোনও সুড়ঙ্গ পথ নেই। আহমেদাবাদ-মুম্বাই লাইনটি উপকূলের কাছাকাছি এলাকা দিয়ে বিস্তৃত এবং এর ফলে আরও সেতু রয়েছে এবং এর বেশিরভাগ অংশে ব্যাকওয়াটার বা বনাঞ্চলে রয়েছে। ১৯৮৭ আরডিএসও/জাইকা সম্ভাব্যতা সমীক্ষায় মুম্বাই-আহমেদাবাদ লাইনটি সবচেয়ে উপযোগী ও লাভজনক বলে মনে হয়। [৩৮]
উচ্চ-গতির রেলপথ | গতি | ট্র্যাক গেজ | দৈর্ঘ্য | সম্প্রসারণ | অবস্থা |
---|---|---|---|---|---|
দেশব্যাপী | |||||
হীরক চতুর্ভুজ | ৩৫০ কিমি/ঘ (২২০ মা/ঘ) | ১,৪৩৫ মিমি (৪ ফুট 8 ১/২ ইঞ্চি) | ৭,০০০ কিমি (৪,৩০০ মা) | ২০১৪ সালে রেল বাজেটে অনুমোদিত হয়েছে | |
উত্তর ভারত | |||||
দিল্লি-কলকাতা উচ্চ-গতির রেলপথ | ৩৫০ কিমি/ঘ (২২০ মা/ঘ) | ১,৪৩৫ মিমি (৪ ফুট 8 ১/২ ইঞ্চি) | ১,৫০০ কিমি (৯৩০ মা) | হাওড়া | পরিকল্পনা কমিশন ও পিএমও দ্বারা অনুমোদিত |
দিল্লি–অমৃতসর উচ্চ-গতির রেলপথ | ১,৪৩৫ মিমি (৪ ফুট 8 ১/২ ইঞ্চি) | ৪৫০ কিমি (২৮০ মা) | পরিকল্পনা কমিশন ও পিএমও দ্বারা অনুমোদিত | ||
দিল্লি–দেরাদুন উচ্চ-গতির রেলপথ | ১,৪৩৫ মিমি (৪ ফুট 8 ১/২ ইঞ্চি) | ২০০ কিমি (১২০ মা) | পরিকল্পনা কমিশন ও পিএমও দ্বারা অনুমোদিত | ||
দিল্লি–যোধপুর উচ্চ-গতির রেলপথ[3] | ১,৪৩৫ মিমি (৪ ফুট 8 ১/২ ইঞ্চি) | ৫৯১ কিমি (৩৬৭ মা) | প্রস্তাবিত | ||
পূর্ব ভারত | |||||
হাওড়া–হলদিয়া উচ্চ-গতির রেলপথ | ৩০০ কিমি/ঘ (১৯০ মা/ঘ) | ১,৪৩৫ মিমি (৪ ফুট 8 ১/২ ইঞ্চি) | পরিকল্পনা কমিশন ও পিএমও দ্বারা অনুমোদিত | ||
পশ্চিম ভারত | |||||
মুম্বই-আহমেদাবাদ উচ্চ-গতির রেলপথ | ৩২০ কিমি/ঘ (২০০ মা/ঘ) | ১,৪৩৫ মিমি (৪ ফুট 8 ১/২ ইঞ্চি) | ৫৩৪ কিমি (৩৩২ মা) | বর্তমানে নির্মাণাধীন রয়েছে | |
মুম্বই–নাগপুর উচ্চ-গতির রেলপথ | ১,৪৩৫ মিমি (৪ ফুট 8 ১/২ ইঞ্চি) | প্রস্তাবিত | |||
আহমেদাবাদ–দ্বারকা উচ্চ-গতির রেলপথ | ১,৪৩৫ মিমি (৪ ফুট 8 ১/২ ইঞ্চি) | ||||
রাজকোট–বেরাবাল উচ্চ-গতির রেলপথ | ৩৫০ কিমি/ঘ (২২০ মা/ঘ) | ১,৪৩৫ মিমি (৪ ফুট 8 ১/২ ইঞ্চি) | |||
দক্ষিণ ভারত | |||||
চেন্নাই–হায়দ্রাবাদ উচ্চ-গতির রেলপথ | ১,৪৩৫ মিমি (৪ ফুট 8 ১/২ ইঞ্চি) | ৬৬৪ কিমি (৪১৩ মা) | হাওড়া (ভায়া বিশাখাপত্তনম) | পরিকল্পনা কমিশন ও পিএমও দ্বারা অনুমোদিত | |
চেন্নাই–তিরুবনন্তপুরম উচ্চ-গতির রেলপথ | ৩৫০ কিমি/ঘ (২২০ মা/ঘ) | ১,৪৩৫ মিমি (৪ ফুট 8 ১/২ ইঞ্চি) | ৮৫০ কিমি (৫৩০ মা) | পরিকল্পনা কমিশন ও পিএমও দ্বারা অনুমোদিত | |
চেন্নাই–কন্যাকুমারী উচ্চ-গতির রেলপথ | ৩৫০ কিমি/ঘ (২২০ মা/ঘ) | ১,৪৩৫ মিমি (৪ ফুট 8 ১/২ ইঞ্চি) | ৮৫০ কিমি (৫৩০ মা) | পরিকল্পনা কমিশন ও পিএমও দ্বারা অনুমোদনের অপেক্ষায় | |
বেঙ্গালুরু–মহীশূর উচ্চ-গতির রেলপথ[4] | ৩৫০ কিমি/ঘ (২২০ মা/ঘ) | ১,৪৩৫ মিমি (৪ ফুট 8 ১/২ ইঞ্চি) | ১১০ কিমি (৬৮ মা) | ২০১৪ সালের রেল বাজেটে অনুমোদিত | |
তিরুবনন্তপুরম–কান্নুর উচ্চ-গতির রেলপথ | ৩০০ কিমি/ঘ (১৯০ মা/ঘ) | ১,৪৩৫ মিমি (৪ ফুট 8 ১/২ ইঞ্চি) | ৫৮৫ কিমি (৩৬৪ মা) | উদুপি | ডিএমআরসি দ্বারা সমীক্ষা চলছে (হাই স্পিড রেল কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড দ্বারা তালিকাভুক্ত নয়)[5] |
তথ্যসূত্র
- "Indian Railways: Vision 2020" (PDF)। Indian Railways। ডিসেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০১৪।
- "Dedicated Freight Corridors & High Speed Rails, India's Ultra Low Carbon Mega Rail Projects - Anjali Goyal, Executive Director (Budget), India" (PDF)। ১১ জুন ২০১৪ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০১৯।
- "Rail Budget 2012: High speed trains may be introduced"। www.daily.bhaskar.com। ২০১২-০৩-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৭-২৪।
- Bengaluru, 16 February 2012, DHNS (২০১২-০২-১৬)। "HSRL to Mysuru under consideration"। Deccanherald.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৭-২৪।
- Survey of High-speed Rail Corridor 60 pc Over- The New Indian Express