শাজাহানপুর উপজেলা
শাজাহানপুর উপজেলা বাংলাদেশের বগুড়া জেলার একটি উপজেলা।
শাজাহানপুর উপজেলা | |
---|---|
উপজেলা | |
ডাকনাম: মাঝিড়া | |
![]() ![]() শাজাহানপুর উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৫° উত্তর ৮৯° পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | রাজশাহী বিভাগ |
জেলা | বগুড়া জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ২২১.৮ কিমি২ (৮৫.৬ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা [1] | |
• মোট | ২,৪৭,৮১৪ |
• জনঘনত্ব | ১১০০/কিমি২ (২৯০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৬৫% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৫০ ১০ ৮৫ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
অবস্থান
বগুড়া শহর থেকে দূরত্ব ১০ কিমি। বগুড়া সদরের দক্ষিণ দিকে এর অবস্থান। শাহজাহানপুর উপজেলার উত্তরে বগুড়া সদর উপজেলা, দক্ষিণে শেরপুর উপজেলা পূর্বে গাবতলী উপজেলা ও ধুনট উপজেলা, পশ্চিমে নন্দীগ্রাম উপজেলা ও কাহালু উপজেলা অবস্থিত।
প্রশাসনিক এলাকা
এই উপজেলার ইউনিয়নসমূহ হল -
- আশেকপুর ইউনিয়ন
- মাদলা ইউনিয়ন
- মাঝিড়া ইউনিয়ন
- আড়িয়া ইউনিয়ন
- খরনা ইউনিয়ন
- গোহাইল ইউনিয়ন
- খোট্রাপাড়া ইউনিয়ন
- চোপীনগর ইউনিয়ন
- আমরুল ইউনিয়ন
শাজাহানপুর উপজেলার পটভূমি
জনশ্রততি রয়েছে যে,ষোড়শ শতাব্দীতে করতোয়া নদী পথে মাঝে মাঝে মধ্য রাতে মাছ ধরা মাঝির বেশে জলদস্যুরা আসতো। এ অঞ্চলে লুটতরাজ করতো। ফলে সমস্ত এই জনপদের নাম হয়ে পড়ে মাঝিড়া। সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে সুবে-বাংলা এ সমস্যার কথা পত্রযোগে আগ্রাতে সম্রাট শাজাহানকে অবহিত করলেন। সম্রাট তাৎক্ষণিকভাবে সেনা ছাউনি সহাপনের জন্য এখানে একটি সেনাদল প্রেরণ করেন। মোঘল সেনাদল এই উপজেলা সদরের ৭০০ গজ উত্তরে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের পূর্ব পাশে ২৫/৩০ ফুট মাটি ভরাট করে সহানটিতে উঁচু ঢিবি তৈরি করে সেনা ছাউনি সহাপন করা হয়। যাতে সেই উঁচু ঢিবি হতে দিগমত বিসতৃত অঞ্চলে জলদস্যুদের যে কোন আনাগোনা বা গতিবিধি লক্ষ্য করা যায়। ধার্মিক সম্রাটের বদান্যতায় এই জনপদের মানুষ সন্ত্রাস আর দস্যুতা হতে পরিত্রাণ পায়। মোঘল সম্রাটের নাম অনুসারেই পুরো এলাকার নাম হয় শাজাহানপুর বা সাজাপুর। বৃটিশ আমল থেকে সকল রেকর্ড পত্রে মৌজাটির শাজাপুর নাম বহাল রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এ উপজেলার নাম হয় শাজাহানপুর উপজেলা।
ইতিহাস
২০০২ সালের ৩ জুন ‘মাঝিড়া উপজেলা’ নামে নতুন একটি উপজেলা প্রতিষ্ঠা করতে গেজেট প্রকাশ হয়। এরপর ২৩ অক্টোবর থেকে একটি ভাড়া বাড়িতে উপজেলা প্রশাসনের কার্যক্রম চালু করা হয়। সে সময় প্রথম উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. আব্দুস সালাম মিয়া। তৎকালীন জেলা প্রশাসক রফিকুল মোহামেতের সহযোগীতায় ‘মাঝিড়া উপজেলা’র নাম পরিবর্তন করে ‘শাজাহানপুর উপজেলা’ নামে নামকরন করা হয়। এরপর ২০০৪ সালের ১৪ অক্টোবরে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের পাশে সাজাপুর মৌজায় নির্মিত ‘শাজাহানপুর উপজেলা’ কমপ্লেক্স’র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
জনসংখ্যার উপাত্ত
জনসংখ্যা ২৩৪৩৬৫; পুরুষ ১২০৫১০, মহিলা ১১৩৮৫৫। মুসলিম ২২৪৩৭৩, হিন্দু ৯৯১৫, বৌদ্ধ ৩৪, খ্রিস্টান ১৯ এবং অন্যান্য ২৪।
শিক্ষা
শাহজাহানপুর উপজেলায় পাঁচটি কলেজ রয়েছে। এদের মধ্যে দুবলাগাড়ি কলেজ১৯৮৬ সালে স্থাপিত হয়। বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ১৯৭৯ সালে স্থাপিত, বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হাই স্কুল ১৯৭৭ সালে স্থাপিত, এই দুইটি স্কুল মাঝিড়া সেনানিবাসে অবস্থিত। এছাড়া করমউদ্দিন কলেজ, ডেমাজানী ।ডেমাজানী শহীদ মোখলেছুর রহমান বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, আড়িয়া রহিমাবাদ সরকাারি উচ্চ বিদ্যালয়, আড়িয়া রহিমাবাদ প্রাথমিক বালক বিদ্যালয়, আড়িয়া রহিমাবাদ বালিকা বিদ্যালয়, রহিমাবাদ শালুকগাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কামারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাঝিড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, পারফেক্ট হাই স্কুল, সানবিমস হাই স্কুল সেনাপল্লী স্কুল উল্লেখ্য,মিলেনিয়াম স্কলাস্টিক স্কুল ও কলেজ ১৯৯৮ সালে স্থাপিত হয় এবং প্রয়াস স্কুল (প্রতিবন্ধী স্কুল) ২০১২ সালে স্থাপিত, এই দুই জাহাঙ্গিরাবাদ সেনানিবাসে অবস্থিত। শাহজাহানপুর উপজেলায় ছয়টি ফাযিল এবং দুইটি কামিল মাদ্রাসাও আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে নগর আজিরন রাবেয়া মহিলা আলিম মাদ্রাসা । স্হাপিত ১৯৭৪। এছাড়াও গ্রীণ ফিউচার পাবলিক স্কুল, নগরহাট। স্কুলটি ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও এর আধুনিকায়ন শুরু হয়েছে ২০১৭ সালের ০১অক্টোবর থেকে।শাজাহনপুর উপজেলায় একমাত্র নারী উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শাজাহানপুর মহিলা টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজ 2003 সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে 2011 সাল থেকে অত্যান্ত সুনামের সহিত পাঠ দান করিয়া আসিতেছে।ইহা ছাড়া আরো রয়েছে নগর জে এম সিনিয়র মাদ্রাসা, নগর শাহ্ মোজাম্মেল হক উচ্চ বিদ্যালয়,নগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
খেলাধুলা ও বিনোদন
শাজাহানপুর উপজেলায় প্রতি বৎসর নিম্নলিখিত ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ঃ (ক) প্রিমিয়ার ফুটবল লীগ (খ) ১ম বিভাগ ফুটবল লীগ
প্রতি বৎসর ভলিবল লীগ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি বৎসর যুব এবং সিনিয়র ক্রিকেট লীগ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
বিনোদনঃপ্রতি বৎসর যাত্রা পালা, নাটক মঞ্চায়ন হয়ে থাকে। এছাড়াও ঋতুভিত্তিক বিভিন্ন মেলা-যেমনঃ একদিনের মেলা, পৌষমেলা, কৃষি মেলা, মাছের মেলা, মহিষের মাংশের মেলা এবং বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
অর্থনীতি
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৫.৪৮%, অকৃষি শ্রমিক ২.৫২%, শিল্প ১.৩৭%, ব্যবসা ১৩.০১%, পরিবহন ও যোগাযোগ ৬.৪৯%, চাকরি ১০.৯৮%, নির্মাণ ২.৫০%, ধর্মীয় সেবা ০.১৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩৯% এবং অন্যান্য ৭.০৯%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৭.৩৫%, ভূমিহীন ৪২.৬৫%।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, ডাল, আলু, ভুট্টা, শাকসবজি।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার গবাদিপশু ৬২, হাঁস-মুরগি ৬৫, কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র ৩।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১১৬.৩০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৫.৪৩ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৪০.৪৯।
শিল্প ও কলকারখানা ধাতব-শিল্প, আসবাব তৈরির কারখানা।
কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, দারুশিল্প, সূচিশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ।
কৃতী ব্যক্তিত্ব
১। সংসদ সদস্য সাংবাদিক রেজাউল করিম বাবলু
২। মোঃ লুৎফর রহমান সরকার, সাবেক বাংলাদেশ ব্যাংক এর গভর্নর।
দর্শনীয় স্থান
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ খাদাশ রাজবাড়ি (গোহাইল ইউনিয়ন), পন্ডিত শাহ নির্মিত তিন গম্বুজ বিশিষ্ট গোহাইল জামে মসজিদ, বৌদ্ধ মঠ (বেতগাড়ি গ্রাম), উল্লাহ আকন্দ পাড়া জামে মসজিদ।
তথ্যসূত্র
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে শাহজাহানপুর"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২১ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪।