কুসুম্বা মসজিদ
কুসুম্বা মসজিদ বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার মান্দা থানার কুসুম্বা গ্রামের একটি প্রাচীন মসজিদ। কুসুম্বা দিঘির পশ্চিম পাড়ে, পাথরের তৈরি ধুসর বর্ণের মসজিদটি অবস্থিত। মসজিদের প্রবেশদ্বারে বসানো ফলকে মসজিদের নির্মাণকাল লেখা রয়েছে হিজরি ৯৬৬ সাল (১৫৫৪-১৫৬০ খ্রিষ্টাব্দ)।[1] আফগানী শাসনামলের শুর বংশের শেষদিকের শাসক গিয়াসউদ্দিন বাহাদুর শাহের আমলে[1] সুলায়মান নামে একজন এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে মসজিদের চতুর্দিকে এবং পূর্বপার্শ্বে অবস্থিত দিঘির পাড়ে ফুলের বাগান নির্মান, আলোকসজ্জার কাজ করা হয়।[2]
কুসুম্বা মসজিদ | |
---|---|
![]() কুসুম্বা মসজিদ | |
স্থানাঙ্ক: ২৪.৭৫৩৫° উত্তর ৮৮.৬৮১৫° পূর্ব | |
অবস্থান | ![]() |
প্রতিষ্ঠিত | ১৫৫৪-১৫৬০ খ্রিষ্টাব্দ |
প্রশাসন | বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, বাংলাদেশ |
মালিকানা | সরকারি |
স্থাপত্য তথ্য | |
ধরণ | ইসলামিক স্থাপত্য |
দৈর্ঘ্য | ৫৮ |
প্রস্থ | ৪২ |
অবস্থান
আত্রাই নদীর পশ্চিম তীর, বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার থেকে ৪ মাইল উত্তর- পশ্চিমে মান্দা নওগাঁ সড়কের পশ্চিম পার্শ্বে এ মসজিদটি অবস্থিত।[3]
বিবরণ
মসজিদটি দৈর্ঘ্যে ৫৮ফুট, প্রস্থে ৪২ফুট। দুই সারিতে ৬টি গোলাকার গম্বুজ রয়েছে। মসজিদের গায়ে রয়েছে লতাপাতার নকশা। প্রাচীর ঘেরা মসজিদটির প্রধান ফটকে প্রহরী চৌকি ছিল। মসজিদটিতে ইটের গাঁথুনি, সামান্য বাঁকানো কার্ণিশ এবং সংলগ্ন আটকোণা বুরুজ। এগুলো থেকে মসজিদের স্থাপত্যে বাংলা স্থাপত্যরীতির প্রভাব পাওয়া যায়।[1] মসজিদের মূল গাঁথুনি ইটের হলেও এর সম্পূর্ণ দেয়াল এবং ভেতরের খিলানগুলো পাথরের আস্তরণে ঢাকা। মসজিদের স্তম্ভ, ভিত্তি মঞ্চ, মেঝে ও দেয়ালের জালি নকশা পর্যন্ত পাথরের। মসজিদটি আয়তাকার এবং এতে রয়েছে তিনটি বে এবং দুটি আইল। এর পূর্বপ্রান্তে তিনটি এবং উত্তর-দক্ষিণে একটি করে প্রবেশপথ। মসজিদের কেন্দ্রীয় মিহরাবটি পশ্চিম দিকের দেয়ালের থেকে আলাদা। পশ্চিম দেয়ালের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে এবং মাঝামাঝি প্রবেশপথ বরাবর দুটো মিহরাব রয়েছে যা মেঝের সমান্তরাল।[4][5] উত্তর-পশ্চিম কোণের বে-তে মিহরাবটি একটি উঁচু বেদীর উপর বসানো। মোট মিহরাব আছে ৩টি, যার সবগুলো কালো পাথরের তৈরি। মসজিদটির সম্মুখে ২৫.৮৩ একের আয়তনের একটি বিশাল জলাশয় রয়েছে। মিহরাবে আঙ্গুরগুচ্ছ ও লতাপাতার নকশা খোদিত রয়েছে।[1][6]
কিভাবে যাওয়া যায়
নওগাঁ হতে রাজশাহী মহাসড়কের মান্দা ব্রিজ থেকে পশ্চিম দিকে কুশুম্বা নামক স্থানের ৪০০ মিটার উত্তরে ঐতিহাসিক কুশুম্বা শাহী মসজিদ ও কুশুম্বা দিঘি অবস্থিত।
চিত্রশালা
- মসজিদের এক প্রান্ত
- ভেতরে পাথরের উঁচু পাটাতন ও সিঁড়ি
- সিড়ির উপরের একটি মাত্র নকশাটি
- ছাদে পাশাপাশি তিনটি গম্বুজ
- মসজিদের পাশেই পড়ে থাকা আস্ত পাথরের চাঁই
- মসজিদের পশ্চিম দিক
- ঈমাম এর নামাজের জায়গা
- দেয়ালের নকশা ও কারুকাজ
- মসজিদের পিলার
- দীঘির ঘাট যা ওযুর জন্য মানুষেরা ব্যবহার করে।
তথ্যসূত্র
- ফুরিদুল করিম (৬ সেপ্টেম্বর ২০১০)। "কুসুম্বা মসজিদ"। অন্য কোনোখানে, A টু Z, দৈনিক কালের কণ্ঠ (প্রিন্ট) । ঢাকা। পৃষ্ঠা ১৪।
- "বদলে যাচ্ছে কুসুম্বা মসজিদের চত্বর | উত্তরাঞ্চল সংবাদ | The Daily Ittefaq"। archive1.ittefaq.com.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-২৪।
- "কুসুম্বা মসজিদ"। প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-০৬।
- Hasan, Perween. (২০০৭)। Sultans and mosques : the early Muslim architecture of Bangladesh। London: I.B. Tauris। আইএসবিএন 9781845113810। ওসিএলসি 72868799।
- Ghosh, Nihar (২০০৩)। Islamic Art of Mediaeval Bengal Architectural Embellishments। Suchetana। ওসিএলসি 56368557।
- "নওগাঁ জেলা"। www.naogaon.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-০৬।
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে কুসুম্বা মসজিদ সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |