রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি

রবীন্দ্র কাচারী বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলায় অবস্থিত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈত্রিক জমিদার বাড়ি ছিল। ১৮৪২ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ইংরেজদের কাছ থেকে প্রথম বাড়ীটি কিনেছিলেন ।[1] এটি একটি দোতলা ভবন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৯০ সালের দিকে প্রথম শাহজাদপুর এই কুঠিবাড়িতে আসেন এবং এখানেই রচনা করেছেন তার অনেক বিখ্যাত সাহিত্যকর্ম।

রবীন্দ্র কাচারী বাড়ি
রবীন্দ্র কাচারী বাড়ি
সাধারণ তথ্য
অবস্থানশাহজাদপুর উপজেলা
ঠিকানাসিরাজগঞ্জ জেলা
শহরসিরাজগঞ্জ
দেশবাংলাদেশ
স্বত্বাধিকারীবাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর
যে কারণে পরিচিতরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাচারী বাড়ি
অন্যান্য তথ্য
কহ্ম সংখ্যা

অবস্থান

রবীন্দ্রনাথের কাচারি বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলায় অবস্থিত। সিরাজগঞ্জ থেকে ৪০.২ কিলোমিটার দূরে শাহজাদপুর অবস্থিত।

ইতিহাস

১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সরকার এই কুঠিবাড়িটির গুরুত্ব অনুধাবন করে। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিভিন্ন শিল্পকর্ম সংগ্রহপূর্বক একে একটি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর আগে রবীন্দ্রনাথের ঠাকুরদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮০৭ সালে এ অঞ্চলের জমিদারি পান।[2] তিনি নিজে এখানে জমিদারি করতেন কিন্তু পরবর্তীতে ১৮৮৯ সালের দিকে কবি এখানে জমিদার হয়ে আসেন। এবং এখানে তিনি ১৯০১ সাল পর্যন্ত জমিদারী পরিচালনা করেছেন। ১৮৪০ সালে শাহজাদপুরের জমিদারি নিলামে উঠলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৩ টাকা ১০ আনায় এই জমিদারি কিনে নিয়েছিলেন। এর আগে কাছারি বাড়ির মালিক ছিল নীলকররা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানে বসেই রচনা করেন তার বিখ্যাত গ্রন্থ সোনার তরী, বৈষ্ণব কবিতা, দুইপাখি, আকাশের চাঁদ, পুরস্কার, হৃদয়, যমুনা, চিত্রা, চৈতালী, ইত্যাদি, গীতাঞ্জলী কাব্যের কাজও শুরু করেন। যাতে পরবর্তীতে তিনি নোবেল পুরস্কার পান। পোস্ট মাস্টার গল্পের 'রতন' চরিত্রও শাহজাদপুরে বসেই লেখা। চিত্রা, শীতে ও বসন্তে, নগর সঙ্গীতে এবং চৈত্রালীর ২৮টি কবিতা, ছিন্ন পত্রাবলীর ৩৮টি, পঞ্চভূতের অংশবিশেষ এবং বিসর্জনের নাটক তিনি শাহজাদপুরে বসেই রচনা করেছেন। রবীন্দ্রনাথ ১৮৯০ থেকে ১৮৯৬ সাল পর্যন্ত মোট ৭ বছর এখানে জমিদারির কাজে শাহজাদপুরে অবস্থান করেছেন।[3] ১৯৫৮ সাল থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় শিলাইদহ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িটি গৌরবময় স্মৃতিরূপে সংরক্ষিত করা হয়। এখন সকল দর্শনার্থীদের জন্য এটি উন্মুক্ত।

বিবরণ

বর্তমানে এই পুরো ভবনটি জাদুঘর হিসেবে সাধারণ দর্শকদের জন্যে উন্মুক্ত করা হয়েছে। জাদুঘরের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় ১৬টি কক্ষ রয়েছে । এই ১৬টি কক্ষেই রয়েছে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শিল্পী রবীন্দ্রনাথ, জমিদার রবীন্দ্রনাথ, কৃষক বন্ধু রবীন্দ্রনাথ অর্থাৎ নানা বয়সের এবং নানা সময়ের বিচিত্র ভঙ্গির সব ছবি । তার একদম ছোটবেলা থেকে মৃত্যুশয্যায় ছবি পর্যন্ত এখানে সংরক্ষিত আছে। তাছাড়াও এখানে কবির নানান রয়েছে সকল শিল্পকর্ম এবং তার ব্যবহার্য আসবাবপত্র। যা দিয়ে পরিপাটি করে সাজানো এটি। কবির ব্যবহার্য জিনিসপত্রগুলোর মধ্যে আরো আছে চঞ্চলা ও চপলা নামের তার ব্যবহার করা দুটো স্পিডবোট, পল্টন, ৮ জন বেহারার পালকি, কিছু কাঠের চেয়ার, টি টেবিল, সোফাসেট, আরাম চেয়ার, পালংক ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিস।

চিত্রশালা

তথ্যসূত্র

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.