শেখ বাহার উল্লাহ জামে মসজিদ

শেখ বাহার উল্লাহ শাহী জামে মসজিদ বাংলাদেশের বন্দরনগরী চট্টগ্রাম শহরের শুলকবহরে অবস্থিত একটি অতি প্রাচীন মসজিদ।

শেখ বাহার উল্লাহ শাহী জামে মসজিদ

শেখ বাহার উল্লাহ জামে মসজিদ

শেখ বাহার উল্লাহ শাহী জামে মসজিদ
বাংলাদেশে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২২.৩৬২৬৯৫° উত্তর ৯১.৮৩৮৭৭৮° পূর্ব / 22.362695; 91.838778
অবস্থান শুলকবহর, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
প্রতিষ্ঠিত ১৭৩৭
শাখা/ঐতিহ্য ইসলাম সুন্নি
প্রশাসন সামাজিক ভাবে পরিচালিত
মালিকানা বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর
পরিচালনা
স্থাপত্য তথ্য
ধরণ মুঘল স্থাপত্য
ধারণক্ষমতা প্রায় ৬.০০০
দৈর্ঘ্য ১০২ ফুট
প্রস্থ ৭৮ ফুট
আবৃত স্থান ০,২১ একর
গম্বুজ ৩টি (একটি বড় দুইটি ছোট)
গম্বুজের উচ্চতা (বাহ্যিক) ১৮ ফুট
গম্বুজের উচ্চতা (অভ্যন্তরীণ) ১০ ফুট
মিনার ৮টি (চারটি বড় চারটি ছোট)
মিনারের উচ্চতা ৩০ ফুট
ভবনের উপকরণ চুন সুরকি (পুরাতন) কংক্রিট (বর্তমান)

ইতিহাস

মোঘল আমলে এই অঞ্চল অর্থাৎ চট্টগ্রাম যখন ইসলামাবাদ নাম নিয়ে সুবা বাংলার রাজধানী ছিল[1] তখনই এই মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়। ধারনা করা হয় মোঘল সুবাদার শায়েস্তা খাঁর পৌত্র শেখ বাহার উল্লাহ ১৭৩৭ খ্রিষ্টাব্দে এই মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন।[2] তার মৃত্যুর পর এই মসজিদ শেখ বাহার উল্লাহ শাহী জামে মসজিদ নামে পরিচিতি লাভ করে। মসজিদে প্রাপ্ত শিলালিপি থেকে এই ধারণা করা হয়। এই মসজিদটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর অধিভুক্ত একটি গুরত্বপূর্ণ মহামূল্যবান ও অতি সংবেদনশীল স্থাপনা। ভারতের দিল্লীর কেন্দ্রীয় মহাফেজখানা ও বৃটেনের লন্ডনস্থ ব্রিটিশ মিউজিয়াম[3][4] শেখ বাহার উল্লাহ জামে মসজিদ সম্পর্কিত গুরত্বপূর্ণ দস্তাবেজ প্রায় ১৭০ বছর ধরে সযত্নে রক্ষিত রয়েছে।[4][5]

অবস্থান

চট্টগ্রাম মহনগরীর পাঁচলাইশ থানাস্থ শুলক বহরের আবদুল্লাহ খাঁন সড়কে এই ঐতিহাসিক মসজিদের অবস্থান।[6] এই মসজিদ হতে মাত্র ৫০ গজ দূরেই শায়েস্তা খাঁর রাজমহল যা বর্তমান কোর্ট হিলে আদালত ভবন প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত এখানেই সকল ধরনের বিচার কার্য্য সমাধা হতো। এখানেও শেখ বাহার উল্লাহ শাহী জামে মসজিদের একই অবয়বে আরো একটি মসজিদ বিদ্যমান রয়েছে।

স্থাপত্য

মসজিদটির আদি গড়নে প্রাধান্য পেয়েছে তিনটি গম্বুজ ও আটটি মিনার। অবশ্য বিভিন্ন সময়ে সংস্কারকার্য ও নির্মাণ সম্পাদনের ফলে আজও এই গম্বুজ ও মিনারগুলি বিদ্যমান। বর্তমানে এর আদি রূপটি শুধু মাত্র মসজিদের পশ্চিম দিক হতে দৃষ্টিগোচর হয়।[7] একটি বে'র উপরেই তিনটি গম্বুজ দিয়ে মসজিদটি আচ্ছাদিত, মাঝখানের গম্বুজটি তুলনামূলক বড় আকৃতির এবং দুপাশের গম্বুজগুলি অপেক্ষাকৃত ছোট। কেন্দ্রীয় মেহরাবটি অর্ধগোলাকৃতির, যা সংস্কারের পরে (২০০৩) আজও সেরকমটাই রয়েছে। বড় দরজার মধ্যবর্তী স্থানে কেন্দ্রীয় মেহরাবের দুই পাশে অর্থাৎ ছোট দুই দরজার সামনে দুটি মেহরাব সাদৃশ্য ছোট অর্ধচন্দ্রাকারের মেহরাব মসজিদের সৌন্দর্য্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে । তিনটি দরজার চৌকাঠে উপরে ইটের খিলানে আবৃত । এ ছাড়াও উত্তর ও দক্ষিণ পাশের জানালায় খিলান নজরে আসে । সম্প্রতি এপ্রিল (২০১৯) সালে এই মসজিদ প্রাঙ্গনে বুখারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় তোরনের আদলে একটি বৃহৎ ও দৃষ্টিনন্দন তোরন নির্মাণ করা হয়েছে যা দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে উৎসুক লোকজন এখানে নিয়মিত ভিড় জমায়।

বর্তমান অবস্থা

মোগল স্থাপত্যে গড়া মূল আদি মসজিদটি কয়েকশত বছরের স্মৃতি বহন করে। তবে কালের বিবর্তনে মূল মসজিদ অক্ষত রেখে এই মসজিদ তিনতলা বিশিষ্ট মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়েছে। মসজিদের বর্তমান খতিব মাহবুবুল আলম।

গ্যালারি

তথ্যসূত্র

  1. "চট্টগ্রাম বিভাগের মসজিদের তালিকা"
  2. "শেখ বাহার উল্লাহ জামে মসজিদ ও বাংলাদেশের বিখ্যাত মসজিদ সমূহ"
  3. "The Life and Curiosity of Hans Sloane"The British Library (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০১৭
  4. "Admission and opening times"British Museum। ১৪ জুন ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১০
  5. Tharoor, Kanishk (২৯ জুন ২০১৫)। "Museums and looted art: the ethical dilemma of preserving world cultures"The Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৮
  6. "মসজিদের অবস্থান"
  7. "শেখ বাহার উল্লাহ জামে মসজিদ ও বাংলাদেশের বিখ্যাত মসজিদের অবস্থান"
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.