আদমদীঘি উপজেলা

আদমদিঘী বাংলাদেশের বগুড়া জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা এবং বগুড়া জেলার পশ্চিমাংশে অবস্থিত । মাদুর শিল্পের জন্য এ উপজেলা প্রসিদ্ধ। এ উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের শাঁওইল বাজার তাঁত শিল্পের জন্য বিখ্যাত।[1]

আদমদীঘি
উপজেলা
আদমদীঘি
বাংলাদেশে আদমদীঘি উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৪°৪৯′ উত্তর ৮৯°০′ পূর্ব
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগরাজশাহী বিভাগ
জেলাবগুড়া জেলা
আয়তন
  মোট১৬৮.৮৪ কিমি (৬৫.১৯ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
  মোট১,৮৭,০১২
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৫০ ১০ ০৬
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

অবস্থান

বগুড়া সদর থেকে আদমদিঘী উপজেলা সদরের দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। এ থানা উত্তরে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলা ও স্বজেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলা, পূর্বে স্বজেলার কাহালু উপজেলানন্দীগ্রাম উপজেলা, দক্ষিণে নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলা এবং পশ্চিমে নওগাঁ জেলার সদর থানা দ্বারা বেষ্টিত।

প্রশাসনিক এলাকা

আদমদিঘী উপজেলার ইউনিয়নসমূহ হচ্ছে -

  • ছাতিয়ানগ্রাম
  • নশরতপুর
  • আদমদীঘি
  • কুন্দগ্রাম
  • চাঁপাপুর
  • সান্তাহার[2]

ইতিহাস

আদম-এর দিঘি হতে আদমদিঘী নামের সূচনা হয়েছে । আদমদিঘী থানার পাশে আদম বাবা নামে এক সূফী সাধকের মাজার আছে এবং সে মাজারের উত্তরপার্শ্বে আছে একটি বড় পুকুর, যাকে আদম বাবার দিঘি বলা হয় । কথিত আছে যে, নাটোর এর রাণী ভবানী বাবা আদমের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এ পুকুরটি খনন করেন ।

জনসংখ্যার উপাত্ত

আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ অফিস

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী আদমদিঘী উপজেলার মোট জনসংখ্যা ১,৯৫,১৮৬ জন (প্রায়) জন;[3] যার ৯৪,৯৯৭জন (প্রায়) জন পুরুষ ও ৯২,০১৫জন (প্রায়) জন নারী। প্রতি কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ১,১০৮ জন। আদমদিঘী উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ১,৩১,৯১৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৪,৬০৭ জন ও মহিলা ভোটার ৬৭,৩০৯ জন।[4]

শিক্ষা

আদমদিঘী উপজেলার কিছু উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো হল আদমদীঘি আইপিজে (পাইলট) উচ্চ বিদ্যালয়,নসরতপুর বহু মূখী উচ্চ বিদ্যালয়, কুন্দগ্রাম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়,কুন্দ্গ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কাঞ্চনপুর উচ্চ বিদ্যালয়, বিপি উচ্চ বিদ্যালয়, ছতনী ঢেকড়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং বিহিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়। এছাড়া সরকারি কলেজ রয়েছে ১টি সান্তাহার সরকারি কলেজ।

অর্থনীতি

আদমদীঘির অর্থনীতির প্রধান বিষয় মৎস্য ব্যবসা। এখানে রেনু পোনা বিক্রয়ের জন্য নামকরা। এখানে সব মিলে ৭-৮ টি মৎস্য খামার আছে, যেখানে তাদের নিজস্ব পুকুর গুলো থেকে ডিম ওয়লা মাছ ধরে কৃত্রিম উপায়ে বিভিন্ন মাছের রেণু পোনা উৎপাদন করা হয়।

এখানকার প্রায় ৭৫% ভাগ মানুষ মাছের ব্যবসায়ের সাথে সংযুক্ত। বাকি ২৫% ভাগ মানুষ কৃষি কাজ, চাকুরী, আর বিভিন্ন পেশায় জড়িত। অর্থনীতির দিক দিয়ে মুরইল ৮০% ভাগ এগিয়ে তাঁত শিল্পে।

কৃতী ব্যক্তিত্ব

  • কছিম উদ্দীন আহমেদ (মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং ১৯৭০ এবং ১৯৭৩ এর নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ এবং গণ পরিষদের সদস্য।
  • প্রফেসর ড. মছির উদ্দিন, সরকারি আযিযুল হক কলেজ-এর অধ্যক্ষ এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড-এর চেয়ারম্যান ছিলেন।
  • মোঃ সাখাওয়াত হোসেন - কবি

ঐতিহ্যবাহী উৎসব

শালগ্রামের নবান্ন উৎসব

নবান্ন বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী শস্যোৎসব। বাংলার কৃষিজীবী সমাজে শস্য উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে যে সকল আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব পালিত হয়, নবান্ন তার মধ্যে অন্যতম। নবান্ন" শব্দের অর্থ "নতুন অন্ন"। নবান্ন উৎসব হল নতুন আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে প্রস্তুত চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব।সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান পাকার পর এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই নবান্ন উৎসব বিলুপ্তপ্রায়। তবে এখনও বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের কিছু কিছু এলাকায় নবান্ন উৎসব অত্যান্ত উৎসব মুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশের বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলার শালগ্রাম সহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামে আবহমানকাল ধরে নবান্ন উৎসব অত্যান্ত উৎসব মুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়ে থাকে।

মৃৎশিল্প

আদমদীঘি থানাধীন তালশন পালপাড়া সহ কয়েকটি গ্রামে মৃৎশিল্প বা মাটির তৈরি বাসন পাতিল তৈরি করে দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হয়।

তথ্যসূত্র

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "আদমদীঘি ইতিহাস"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪
  2. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "ইউনিয়নসমূহ"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪
  3. "আদমশুমারী প্রতিবেদন-২০১১" (PDF)। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৩ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  4. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে আদমদীঘি"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৯ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.