সুবাহ বাংলা
বাংলার সুবাহ বা মুঘল বাংলা ছিল মুঘল সাম্রাজ্যের একটি মহকুমা, যা ১৬শ থেকে ১৭শ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে বর্তমানের বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। বাংলার সুবাহ ছিল মুঘল সাম্রাজ্যের মহকুমা ছিল, যা ১৬শ থেকে ১৭শ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে বর্তমানের বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। বাংলা সালতানাত ভেঙ্গে গেলে এই সাম্রাজ্যের উদ্ভব হয়, এবং সেই সময়ের বিশ্বের অন্যতম বড় সাম্রাজ্য বিলীন হয়ে যায়। মুঘলেরা বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির উন্নয়নে গুরুত্তপুর্ন ভুমিকা পালন করে। ১৮ শতকের দিকে এসে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে তাদের উত্থান ঘটে।
বাংলা সুবাহ بلالفشيش (ফার্সি) বাংলার সুবাহ (বাংলা) | |||||
মুঘল সাম্রাজ্য মহকুমা | |||||
| |||||
পতাকা | |||||
রাজধানী | ঢাকা মুর্শিদাবাদ রাজমহল তান্ডা | ||||
সরকার | রাজতান্ত্রিক | ||||
ঐতিহাসিক যুগ | আধুনিক যুগের শুরুতে | ||||
• | রাজমহলের যুদ্ধ | ১৬৭৬ | |||
• | পলাশীর যুদ্ধ | ১৭৫৭ | |||
বর্তমানে | বাংলাদেশ ভারত (পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, এবং ওড়িশা) অংশ |
ইওরোপবাসীরা বাংলাকে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী বাণিজ্য দেশ হিসেবে ধরতো [1] মুঘল সাম্রাজ্য আমলে বিশ্বের মোট উৎপাদনের (জিডিপির) ১২ শতাংশ উৎপন্ন হত সুবাহ বাংলায়,[2][3][4] যা সে সময় সমগ্র ইউরোপের চেয়ে জিডিপির চেয়ে বেশি ছিল।[5]
ইতিহাস


১৫৭৬ সালে রাজমহলে সম্প্রসারণবাদী বাংলার সুলতান দাউদ খান কররানী পরাজয়ের পর, মুগল সম্রাট মহাবীর আকবর মূল বারো সুবাহর একটি হিসেবে বাংলার নাম ঘোষণা করেন। যার সীমানা ছিল বিহার, ওড়িশা এবং মায়ানমার পর্যন্ত।
১৭শ শতাব্দীতে, মোগলগণ বারো-ভুইয়া ভুস্বামীদের বিরোধিতার সম্মুখীন হোন, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন ঈসা খান। বাংলা একটি শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ সাম্রাজ্যে পরিণত হয় এবং বহুত্ববাদী সরকারের নীতির কারণে তা শক্ত অবস্থান লাভ করে। মোঘলেরা ১৬১০ সাল থেকে ঢাকায় নতুন সাম্রাজ্যবাদী মহানগরী গড়ে তোলে, যেখানে ছিল সুবিন্যস্ত বাগান, দুর্গ, সমাধি, প্রাসাদ এবং মসজিদ।[6] সম্রাট জাহাঙ্গীরের প্রতি সম্মান জানিয়ে শহরটি তার নামে নামকরণ করা হয়। ঢাকা মুঘল সাম্রাজ্যের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে আবির্ভূত হয়, জানা যায় সাম্রাজ্যের সর্ববৃহৎ রপ্তানি কেন্দ্র ছিল মসলিন বস্ত্রকে ঘিরে।[7]
১৬৬৬ সালে চট্টগ্রামে মুগলেরা যুদ্ধে জয় লাভ করে আরাকান রাজ্য দখল করে এবং বন্দর নগরীর নিয়ন্ত্রণ পুনরায় নিয়ে নেয়, যার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছিল ইসলামাবাদ।[8] পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্ত অঞ্চলে মুগল বাংলার একটি উপরাষ্ট্র তৈরি করা হয় এবং ১৭১৩ সালে চাকমা সম্প্রদায়ের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।[9]
১৫৭৬ থেকে ১৭১৭ সাল এই সময়টাতে বাংলা মোগল সুবেদার দ্বারা শাসিত হয়। রাজপরিবারের সদস্যগণ প্রায়ই এই পদে নিযুক্ত হয়েছেন। যুবরাজ শাহ সুজা ছিলেন সম্রাট শাহজাহান এর পুত্র। তিনি তার ভাই আওরঙ্গজেব, দারা শিকোহ ও মুরাদ বক্স এর সাথে উত্তরাধিকার দন্ধের সময়কালে বাংলার মুগল সম্রাট হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করেন। তিনি শেষ পর্যন্ত আওরঙ্গজেবের সৈন্যবাহিনী দ্বারা পরাজিত হয়েছিলন। সুজা আরাকানে পালিয়ে যান, যেখানে তার পরিবারের সদস্যদের রাজা মারুক ইউ এর নির্দেশে হত্যা করা হয়। আওরঙ্গজেবের সময়কালে শায়েস্তা খান অতন্ত্য প্রভাবশালী একজন সুবেদার ছিলেন। একসময়য় বাংলার সুবেদার যুবরাজ মুহাম্মদ আজম শাহ, ১৭০৭ সালে চার মাসের জন্য মুঘল সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হোন। সুবেদার ২য় ইব্রাহীম খান ইংলিশ এবং ফরাসীদের বণিকদের বাংলায় বাণিজ্য করার সুযোগ দেন। শেষ সুবেদার যুবরাজ আজিম-উস-শান ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম, ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে চন্দননগরে ফোর্ট অর্লেন্স এবং ওলন্দাজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে চুঁচুড়ায় দুর্গ নির্মানের অনুমতি দেন।
আজম-উস-শাহ এর আমলে তার প্রধানমন্ত্রী মুর্শিদকুলি খাঁ বাংলার খুব ক্ষমতাবান একজন হিসেবে উদিত হোন। তিনি সাম্রাজ্যের রাজকোষের নিয়ন্ত্রণ লাভ করেন। আজম-উস-শাহ বিহারে চলে গেলে, ১৭১৭ সালে মুঘল আদালাত প্রধানমন্ত্রীর পদ বংশানুক্রমিক নবাবে উন্নীত করেন। খান মুর্শিদাবাদে নতুন রাজধানী গড়েন। তার বংশধরেরা নাসিরি রাজবংশ গঠন করেন। আলীবর্দী খান ১৭৪০ সালে নতুন রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন। নবাব মূল বাংলা, বিহার এবং উড়িষ্যার এক বিশাল অংশ শাসন করেন।
১৮ শতকে মুঘল আদালতের প্রভাব খুব দ্রুতই শেষ হয়ে যায়, বিশেষ করে নাদির শাহ্ এর ফার্সি আক্রমণের পড়ে। বাংলায় সে ব্যবস্থায় কায়িক শ্রমের জন্য কম মজুরি প্রদান করে, অভিজাতদের সম্পদ মজুদ করতে দেখা যায়।
বাংলার নওয়াবগণ অনেক ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তিগুলোর সঙ্গে চুক্তিতে প্রবেশ করেন, এছাড়া যৌথসঙ্গ কোম্পানি যারা ব্রিটেন, হাবসবার্গ অষ্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডকে প্রতিনিধিত্ব করে তারাও এতে যুক্ত হয়।
১৮ শতকের শেষের দিকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এ অঞ্চলের শীর্ষস্থানীয় সামরিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। ১৭৫৭ সালে তারা পলাশীর যুদ্ধে ফরাসি এবং সিরাজ-উদ-দৌলার মিত্র বাহিনীকে পরাজিত করে, এটি মূলত নবাবের একবার বিশ্বস্ত সেনাপতি মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতার কারনে ঘটে। নবাবের শাসনাধীন বাংলা, বিহার এবং উড়িষ্যার দখল তারা নিয়ে নেয়। ১৭৬৫ সালে বক্সারের যুদ্ধের পর মুগল আদালাত থেকে শুল্ক আদায়ের অধিকার পায় এবং ১৭৯৩ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৭৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের পরে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটিশ রাজ কোম্পানি আইন প্রবর্তন করলে, মুঘল আদালতের কর্তৃত্ব শেষ হয়ে যায়।
অন্য ইউরোপীয় শক্তিগুলোও বাংলায় মুঘলদের সীমানার মাঝে ছোট ছোট বসতি গড়ে তোলে, যেমনঃ ফরাসি ঔপনিবেশিকরা চণ্ডীগড়ে, ডেনমার্কের ঔপনিবেশিকরা শ্রীরামপুরে বসতি গড়ে তোলে।
সামরিক অভিযানসমূহ
-_Da'ud_Receives_a_Robe_of_Honor_from_Mun'im_Khan_-_Google_Art_Project.jpg)
মুঘলদের উল্লেখযোগ্য সামরিক লড়াইয়ের তালিকে নিচে দেয়া হলঃ
যুদ্ধ | সাল | সেনাপতি | শত্রু | প্রতিদ্বন্দ্বী সেনাপতি | ফলাফল |
---|---|---|---|---|---|
তুকারয়ের যুদ্ধ | ১৫৭৫ | আকবর | বাংলা সালতানাত | দাউদ খান কররানী | মুঘল জয়ী |
রাজমহলের যুদ্ধ | ১৫৭৬ | খান জাহান ১ | বাংলা সালতানাত | দাউদ খান কররানী | মুঘল জয়ী |
ভাতির যুদ্ধ | ১৫৭৬-১৬১১ | খান জাহান ১ শাহবাজ খান কামবোহ রাজা মানসিংহ | বারো ভুঁইয়া | ঈসা খাঁ মুসা খান | মুঘল জয়ী |
আহোম-মুঘল সংঘর্ষ | ১৬১৫-১৬৮২ | কাসেম খান চিশতী মীর জুমলা রাম সিং ১ | আহোম সাম্রাজ্য | আহোম রাজবংশ | আহোম জয়ী |
মুঘল আরাকান যুদ্ধ | ১৬৬৫-১৬৬৬ | শায়েস্তা খান | মারুক-ইউ সাম্রাজ্য | থিরি থুধাম্মা | মুঘল জয়ী |
বর্ধমানের যুদ্ধ | ১৭৪৭ | আলীবর্দী খান | মারাঠা সাম্রাজ্য | জানোজী ভোঁসলে | মুঘল জয়ী |
অন্ধকূপ হত্যা | ১৭৫৬ | সিরাজ-উদ-দৌলা | ব্রিটিশ সাম্রাজ্য | রজার ডার্কি | মুঘল জয়ী |
পলাশীর যুদ্ধ | ১৭৫৭ | সিরাজ-উদ-দৌলা | ব্রিটিশ সাম্রাজ্য | রবার্ট ক্লাইভ | ব্রিটিশ জয়ী |
কৃষি সংস্কার
মুঘলরা গাঙ্গেয় ব-দ্বীপে বড় ধরনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন করে, যা জনতাত্ত্বিক বিন্যাসে রুপ নেয়।[10] সরকার কৃষিজমি সম্প্রসারণ করতে উর্বর ভাটি অঞ্চলের বন বিস্তীর্ণ অঞ্চল সাফ করে ফেলে। এটি বাহিরের মানুষদের, বিশেষ করে কৃষক ও জাইগীরদের ব-দ্বীপে চাষ করতে উৎসাহিত করে। এতে গ্রামবাসীদের সর্দার হিসেবে সূফীদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়। সম্রাট আকবর ফলন বৃদ্ধি ও কর আদায়ের সুবিধার জন্য আধুনিক বাংলা বর্ষপঞ্জী প্রবর্তন করেন। এই অঞ্চল উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে উৎপাদনশীল অঞ্চলে পরিণত হয়। স্থানীয় সূফী-সাধকগণ ইসলামিক এবং বাঙালি সংস্কৃতির এক সমন্বয় ঘটান, যা বাঙালি মুলসিম সমাজকে আরও উন্নত করে।[10]
স্থাপত্য
- মুল নিবন্ধঃ মুঘল স্থাপত্য
মুঘল স্থাপত্য বাংলায় বিস্তার লাভ করতে থাকে ১৬শ, ১৭শ এবং ১৭ শতকে। ১৫৮২ সালের বগুড়ার খেরুয়া মসজিদ প্রথম দিকের অন্যতম একটি নিদর্শন।[11] তারা আগের সুলতানি আমলের স্থাপত্যশৈলী প্রতিস্থাপন করে। যেটা সব চেয়ে বেশি প্রয়োগ করা হয়েছিল ঢাকায়। বুড়িগঙ্গার তীরে অবস্থিত মুঘল নগরী পূর্বের ভেনিস নামে পরিচিতি লাভ করেছিল।[12] লালবাগ কেল্লা ব্যাপকভাবে বাগান, ফোয়ারা, একটি মসজিদ, একটি কবর, একটি বৈঠক খানা (দিওয়ান-ই খাস) এবং দরজাযুক্ত একটি দেয়াল দ্বারা সজ্জিত করা হয়েছিল। ঢাকার বড় কাটরা এবং ছোট কাটারা ছিল সকল ব্যাবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু। এই শহরের আরও অন্যান্য স্থাপ্যতের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ধানমন্ডি শাহী ঈদগাহ (১৬৪০), সাত গম্বুজ মসজিদ (১৬৮০), হাজী শাহাবাজের মাজার ও মসজিদ (১৬৭৯) এবং খান মোহাম্মদ মৃধা মসজিদ (১৭০৪)।[11] বাংলার নবাবগণের আমলে মুর্শিদাবাদ শহরও মুঘল স্থাপ্যতের স্বর্গে পরিণত হয়। কাটরা মসজিদ (১৭২৩) এখানকার সবচেয়ে লক্ষণীয় স্থাপত্য।
গ্রামীণ পশ্চাৎপদ অঞ্চলে দেশীয় বাঙালি ইসলামিক শৈলীর সাথে মুঘল উপাদান যুক্ত করে জাঁকজমকপুর্ন স্থাপত্য তৈরি হতে থাকে। যার মধ্যে অন্যতম চমৎকার শৈলী হচ্ছে টাঙ্গাইলের আতিয়া মসজিদ (১৬০৯)।[11] বেশ কিছু অনন্য পোড়ামাটির হিন্দু মন্দির স্থাপত্য এই সময়কালে তৈরি করা হয়েছিল। এসবের মধ্যে কান্তজীর মন্দির (১৭০৪) এবং বিষ্ণুপুরের মন্দিরসমুহ (১৬০০-১৭২৯) উল্লেখযোগ্য।
- মসজিদের কারূশিল্প
- মন্দিরের কারূশিল্প
- রাজকীয় ভবন
- বিবি পরীর মাজার
- লালবাগ দুর্গের দরবার হল ও হাম্মাম খানা
- বড় কাটরার গেট
শিল্প
প্রকৃত বাঙালি-মুঘল শিল্প জামদানির মসলিন কাপড়ে প্রতীয়মান হয়। জামদানি ফরাসি তাঁতিরা প্রথম তৈরি করেছিলেন। এই শিল্প বাঙালি-মুসলিম তাঁতিদের হাতে আসে জুহুলাস নামে একজনের হাত ধরে। এই শিল্প ঐতিহাসিকভাবেই ঢাকা শহরের চারপাশ দিয়ে গড়ে উঠেছিল। শহরটিতে প্রায় ৮০,০০০ তাঁতি ছিল। জামদানীতে ঐতিহ্যগতভাবেই জ্যামিতিক পুষ্পশোভিত নকশা থাকতো। এই নকশায় কখনো কখনো ইরানি কিছু কাপড়ের নকশার সাদৃশ্য পাওয়া যায়। জামদানী সকলের মন জয় করে এবং বাংলার নবাব ও দিল্লির আদালতের রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে।[13][14] এক ধরনের আঞ্চলিক বাঙালি মুঘল শৈলী ১৮ শতকে মুর্শিদাবাদে উন্নতি লাভ করেছিল।
- জামদানি মসলিন
- সেতার বাজানোরত মহিলার মুর্সিদাবাদের-শৈলী চিত্র
- গাজী বাংলার বাঘের উপরে সওয়ার হয়েছেন এমন একটি স্ক্রোল পেইন্টিং
অভিবাসন
মুঘল আমলে সাফাভি সাম্রাজ্য থেকে ব্যাপকভাবে অভিবাসী বাংলায় আসতে থাকে। ফার্সি প্রশাসক ও সামরিক কমান্ডারদের বাংলায় মুঘল সরকার কর্তৃক তালিকাভুক্ত হয়।[15] একটি আর্মেনী সম্প্রদায় ঢাকায় বসবাস শুরু করে এবং কাপড়ের ব্যবসায় আধিপত্য বিস্তার করে, এতে তাদের ৩.৫% শুল্ক প্রদান করতে হতো।[16]
অর্থনিতি এবং ব্যবসা

মুঘল সাম্রাজ্যের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক অঞ্চল ছিল বাংলার সুবাহ। এটাকে জাতিদের নন্দকানন হিসেবে বর্ননা করা হতো। অভ্যন্তরীণ সম্পদের অর্ধেকই উৎপাদন হতো এই অঞ্চল থেকে। এই অঞ্চল থেকে শস্য, সুতি মুসলিন ও সিল্ক, মদ ও ওয়াইন, লবণ, অলংকার, ফল, ধাতু এবং মুক্তা রফতানি করা হতো। ১৭ এবং ১৮ শতকে ইউরোপিয়ান কোম্পানিগুলো মুঘল বাংলায় অনেক ব্যবসায়িক খাত তৈরি করে। ঢাকা মুঘল বাংলার সবচেয়ে বড় শহর এবং বাণিজ্যিক রাজধানী ছিল। চট্টগ্রাম ছিল সবচেয়ে বড় বন্দর নগরী। উপকূলবর্তী বাণিজ্যিক অঞ্চল আরাকান, অযোধ্যা, বালেশ্বর, আচেহ, জহর, বান্তাম, মাকাসসার, শ্রীলঙ্কা, বন্দর আব্বাস, মক্কা, জেদ্দা, বসরা, আদিন, মাস্কাট, মখা এবং মালদ্বীপ এর সাথে যোগাযোগ ছিল।[17][18][19]
প্রশাসনিক বিভাগ
১৫৮২ সালে রাজস্ব বন্দোবস্তের জন্য টোডর মল বাংলার সুবাহকে ২৪টি সরকারে (জেলা) বিভক্ত করেন, যার ১৯টি ছিল মুল বাংলায় এবং বাকি ৫টি উড়িষ্যাতে। ১৬০৭ সালে জাহাঙ্গীরের সময়কালে উড়িষ্যাকে আলাদা একটি সুবাহ করা হয়। ১৬৫৮ সালে এই ১৯ সরকার পরবর্তিতে ৬৮২টি পরগনায় বিভক্ত করা হয়, শাহ্ সুজা পরবর্তি রাজস্ব বন্দোবস্তের জন্য এটি করেন।[20] নতুন ১৫টি সরকার এবং ৩৬১টি পরগনা এতে যুক্ত হয়। ১৬৭২ সালে মুর্শিদ কুলি খান পুরো সুবাহকে ১৩টি চাকলায় বিভক্ত করেন, যা পরবর্তিতে ১৬৬০টি পরগনায় বিভক্ত করা হয়।
প্রথমে সুবাহর রাজধানী ছিল তান্ডায়। ১৫৯৫ সালের ৯ নভেম্বর, রাজমহলে নতুন রাজধানী প্রতিষ্ঠা করেন মান সিংহ ১, যিনি এর নাম দেন আকবরনগর।[21] সুবাদার ইসলাম খান চিশতী ১৬১০ সালে রাজধানী রাজমহল থেকে ঢাকায় স্থানান্তরিত করেন[22] এবং নাম দেয়া হয় জাহাঙ্গীরনগর। ১৬৩৯ সালে শাহ্ সুজা পুনরায় রাজমহলে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন। ১৬৬০ সালে মুজ্জাম খান (মীর জুমলা) আবার রাজধানী ঢাকায় নিয়ে আসেন। ১৭০৩ সালে বাংলার দিওয়ান মুর্শিদ কুলি খান তার দপ্তর ঢাকা থেকে মকসুদাবাদে নিয়ে যান এবং পরবর্তিতে যার নাম রাখা হয় মুর্শিদাবাদ।
যেসব সরকার (জেলা) এবং পরগনা (তহশিল) বাংলার সুবাহতে ছিলঃ
সরকার | পরগনা |
---|---|
উদম্বর (তান্ডা) | ৫২ পরগনা |
জান্নাতবাদ | ৬৬ পরগনা |
ফাতাহবাদ | ৩১ পরগনা |
মাহমুদাবাদ | ৮৮ পরগনা |
খলিফাতাবাদ | ৩৫ পরগনা |
বকলা | ৪ পরগনা |
পূর্ণিয়া | ৯ পরগনা |
তাজপুর | ২৯ পরগনা |
ঘোড়াঘাট | ৮৪ পরগনা |
পিঞ্জারা | ২১ পরগনা |
বারবাকাবাদ | ৩৮ পরগনা |
বাজুহা | ৩২ পরগনা |
সোনারগাঁও | ৫২ পরগনা |
সিলেট | ৮ পরগনা |
চট্টগ্রাম | ৭ পরগনা |
সরিফাবাদ | ২৬ পরগনা |
সুলাইমানাবাদ | ৩১ পরগনা |
সপ্তগ্রাম | ৫৩ পরগনা |
মান্দরন | ১৬ পরগনা |
সরকার
১৫৭৬ থেকে ১৭১৭ সালের মাঝের সময়টাতে রাজ্য সরকার মুঘলদের নিযুক্ত একজন ভাইসরয় (সুবেদার নাজিম) দ্বারা পরিচালিত হয়। ভাইসরয় তার নিজের মন্ত্রিসভা এবং চার প্রধানমন্ত্রীদের (দেওয়ান) সাথে নিয়ে ব্যাপক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মুল বাংলার, বিহার ও উড়িষ্যার জন্য তিন সহকারী সুবাদারের ছিলেন, যারা নায়েব নাজিম হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিস্তৃত জমিদারী আভিজাত্য মুঘলগণ বাংলায় প্রতিষ্ঠা করেন। অভিজাতগণ শুল্ক ও লভ্যাংশ সংগ্রহ করার জন্য নিযুক্ত ছিলেন। ভূস্বামীগণ জাগীর উপাধি লাভ করেছিলেন। কাজি উপাধি প্রধান বিচারপতির জন্য সংরক্ষিত ছিল। মনসবদাররা মুঘল সেনাবাহিনীর প্রধান এবং ফজুদাররা ছিলেন জেনারেল। মুঘলরা আকবরের আমলে ধর্মনিরপেক্ষ বহুত্ববাদের জন্য প্রশংসিত হয়েছিলেন এবং আকবর সেসময়য় তিনি তার প্রবর্তিত ধর্ম দীন-ই-ইলাহির প্রচার শুরু করেন। পরবর্তিতে শাসকগণ আরও রক্ষণশীল ইসলামে জোর দেন।
১৭১৭ সালে মুঘল সরকার তাদের প্রভাবশালী সহকারি ভাইসরয় ও প্রধানমন্ত্রী মুর্শিদ কুলি খানের সাথে দন্দের কারনে ভাইসরয় আজিম-উস-শাহকে সরিয়ে নেয়। ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের জন্য মুঘল আদালত বাংলায় বংশগত আধিপত্য অনুমোদন দেয়। ফলে খান দাপ্তরিক উপাধি নাজিম নামে পরিচিতি লাভ করে। তিনি নাসিরি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৭৪০ সালে জিরিয়ার যুদ্ধে আলিবর্দি খান অভ্যুত্থান ঘটান এবং স্বল্পস্থায়ী আফসার রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করে। সকল বাস্তবতার প্রেক্ষিতে নাজিমগন স্বাধীন শাসক হিসেবে কাজ করতে থাকেন। ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তিগুলো নওয়াব হিসেবে তাদের প্রতি অনুগত্য প্রকাশ করেন।
ভাইসরয়দের তালিকা




ব্যক্তির নাম[23] | শাসনকাল | ||
---|---|---|---|
মুনিম খান খান-ই-খানান منعم خان، خان خاناں |
২৫ সেপ্টেম্বর ১৫৭৪ - ২৩ অক্টোবর ১৫৭৫ | ||
হোসেন কুলি বেগ খান জাহান ১ حسین قلی بیگ، خان جہاں اول |
১৫ নভেম্বর ১৫৭৫ - ১৯ ডিসেম্বর ১৫৭৮ | ||
মুজাফফর খান তুরবারি مظفر خان تربتی |
১৫৭৯ - ১৫৮০ | ||
মির্জা আজিজ কোকা খান-ই-আজম میرزا عزیز کوکہ،خان اعظم |
১৫৮২ - ১৫৮৩ | ||
শাহবাজ খান কামবোহ شھباز خان کمبوہ |
১৫৮৩ - ১৫৮৫ | ||
সাদিক খান صادق خان |
১৫৮৫ - ১৫৮৬ | ||
ওয়াজির খান তাজিক وزیر خان |
১৫৮৬ - ১৫৮৭ | ||
সাঈদ খান سعید خان |
১৫৮৭ - ১৫৯৪ | ||
রাজা মানসিংহ ১ راجہ مان سنگھ |
৪ জুন ১৫৯৪ - ১৬০৬ | ||
কুতুবুদিন কোকা قطب الدین خان کوکہ |
২ সেপ্টেম্বর - মে ১৬০৭ | ||
জাহাঙ্গীর কুলি বেগ جہانگیر قلی بیگ |
১৬০৭ - ১৬০৮ | ||
ইসলাম খাঁ ১ ইসলাম খান চিশতী اسلام خان چشتی |
জুন ১৬০৮ - ১৬১৩ | ||
কাসেম খান চিশতী قاسم خان چشتی |
১৬১৩ - ১৬১৭ | ||
ইব্রাহীম খান ফাতেহ জং ابراہیم خان فتح جنگ |
১৬১৭ - ১৬২২ | ||
মোহাবাত খান محابت خان |
১৬২২ - ১৬২৫ | ||
মির্জা আমানুল্লাহ খান জামান ২ میرزا أمان اللہ ، خان زماں ثانی |
১৬২৫ | ||
মোকাররম খান مکرم خان |
১৬২৫ - ১৬২৭ | ||
ফিদাই খান فدای خان |
১৬২৭ - ১৬২৮ | ||
কাসেম খান জুভাইনি কাসেম মনিজা قاسم خان جوینی، قاسم مانیجہ |
১৬২৮ - ১৬৩২ | ||
মীর মুহাম্মাদ বাকির আজম খান میر محمد باقر، اعظم خان |
১৬৩২ - ১৬৩৫ | ||
মীর আব্দুস সালাম ইসলাম খান মাশহাদি اسلام خان مشھدی |
১৬৩৫ - ১৬৩৯ | ||
সুলতান শাহ্ সুজা شاہ شجاع |
১৬৩৯-১৬৬০ | ||
মীর জুমলা ২ میر جملہ |
মে ১৬৬০ - ৩০ মার্চ ১৬৬৩ | ||
মির্জা আবু তালিব শায়েস্তা খান ১ میرزا ابو طالب، شایستہ خان |
মার্চ ১৬৬৪ - ১৬৭৬ | ||
আজম খান কোকা, ফিদাই খান ২ اعظم خان کوکہ، فدای خان ثانی |
১৬৭৬ - ১৬৭৭ | ||
সুলতান মুহাম্মদ আজম শাহ আলিজাহ محمد اعظم شاہ عالی جاہ |
১৬৭৮ - ১৬৭৯ | ||
মির্জা আবু তালিব শায়েস্তা খান ১ میرزا ابو طالب، شایستہ خان |
১৬৭৯ - ১৬৮৮ | ||
ইব্রাহীম খান ইবনে আলি মাদান খান ابراہیم خان ابن علی مردان خان |
১৬৮৮ - ১৬৯৭ | ||
সুলতান আজিম-উস-শাহ্ عظیم الشان |
১৬৯৭ - ১৭১২ | ||
১৭১২-১৭১৭ তে অন্যরা নিযুক্ত হয়েছিলেন কিন্তু প্রকাশ করা হয় নাই। সহকারি সুবেদার মুর্শিদ কুলি খান সেসময়য় নিয়ন্ত্রন করেছিলেন | |||
মুর্শিদ কুলি খান مرشد قلی خان |
১৭১৭ - ১৭২৭ |
নবাব নাজিমদের তালিকা
প্রতিকৃতি | উপাধিগত নাম | ব্যক্তিগত নাম | জন্ম | শাসনকাল | মৃত্যু |
---|---|---|---|---|---|
![]() |
জাফর খান বাহাদুর নাসিরি | মুর্শিদ কুলি খান | ১৬৬৫ | ১৭১৭-১৭২৭ | ৩০ জুন ১৭২৭ |
![]() |
আলা-উদ-দিন হায়দার জং | সরফরাজ খান বাহাদুর | ? | ১৭২৭-১৭২৭ | ২৯ এপ্রিল ১৭৪০ |
![]() |
সুজা-উদ-দৌলা | সুজাউদ্দিন মুহাম্মদ খাঁ | আনুমানিক ১৬৬০ | জুলাই, ১৭২৭ – ২৬ আগস্ট ১৭৩৯ | ২৬ আগস্ট ১৭৩৯ |
![]() |
আলা-উদ-দিন হায়দার জং | সরফরাজ খান বাহাদুর | ? | ১৩ মার্চ ১৭৩৯ - এপ্রিল ১৭৪০ | ২৯ এপ্রিল ১৭৪০ |
![]() |
হাসিম উদ-দৌলা | মোহাম্মদ আলীবর্দী খান বাহাদুর | ১০ মে ১৬৭১ এর আগে | ২৯ এপ্রিল ১৭৪০ – ৯ এপ্রিল ১৭৫৬ | ৯ এপ্রিল ১৭৫৬ |
![]() |
সিরাজ উদ-দৌলা | মোহম্মদ সিরাজ-দৌলা | ১৭৩৩ | এপ্রিল ১৭৫৬ - ২ জুনে ১৭৫৭ | ২ জুলাই ১৭৫৭ |
তথ্যসূত্র
- Nanda, J. N (2005). Bengal: the unique state। Concept Publishing Company. p. 10.। ২০০৫। আইএসবিএন 978-81-8069-149-2।
Bengal [...] was rich in the production and export of grain, salt, fruit, liquors and wines, precious metals and ornaments besides the output of its handlooms in silk and cotton. Europe referred to Bengal as the richest country to trade with.
- মুহাম্মদ শাহ আলম (২০১৬)। Poverty From The Wealth of Nations: Integration and Polarization in the Global Economy since 1760। স্প্রিঙ্গার সায়েন্স+বিজনেস মিডিয়া। পৃষ্ঠা ৩২। আইএসবিএন 978-0-333-98564-9।
- খন্দকার, হিশাম (৩১ জুলাই ২০১৫)। "Which India is claiming to have been colonised?"। দ্য ডেইলি স্টার (উপ-সম্পাদকীয়)।
- ম্যাডিসন, অ্যাঙ্গাস (২০০৩)। Development Centre Studies The World Economy Historical Statistics: Historical Statistics। ওইসিডি পাবলিশিং। পৃষ্ঠা ২৫৯–২৬১। আইএসবিএন 9264104143।
- লরেন্স হ্যারিসন, পিটার এল. বার্জার (২০০৬)। Developing cultures: case studies। রৌটলেজ। পৃষ্ঠা ১৫৮। আইএসবিএন 9780415952798।
- "Dhaka"। Encyclopædia Britannica। ১৪ জুলাই ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৫-০৬।
- Schmidt, Karl J. (২০১৫)। An Atlas and Survey of South Asian History। Routledge। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৫-০৬।
- Wheeler, Sir Robert Eric Mortimer (১৯৫৩)। The Cambridge History of India: The Indus civilization। Supplementary volume। Cambridge University Publishers। পৃষ্ঠা 237–।
- Saradindu Shekhar Chakma. Ethnic Cleansing in Chittagong Hill Tracts. p. 23.
- Eaton, Richard Maxwell (১৯৯৬)। The Rise of Islam and the Bengal Frontier, 1204-1760। University of California Press। পৃষ্ঠা 312–313। আইএসবিএন 978-0-520-20507-9। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৫-০৬।
- "The Rise of Islam and the Bengal Frontier, 1204–1760"। Publishing.cdlib.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৫-০৬।
- Hough, Michael (২০০৪)। Cities and Natural Process: A Basis for Sustainability। Psychology Press। পৃষ্ঠা 57–। আইএসবিএন 978-0-415-29854-4।
- http://www.metmuseum.org/blogs/ruminations/2015/bangladeshi-islamic-art
- Khandker, Hissam (৩১ জুলাই ২০১৫)। "Which India is claiming to have been colonised?"। The Daily Star (Op-ed)।
- Karim, Abdul (২০১২)। "Iranians, The"। Islam, Sirajul; Jamal, Ahmed A.। Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh (Second সংস্করণ)। Asiatic Society of Bangladesh।
- Ali, Ansar; Chaudhury, Sushil; Islam, Sirajul (২০১২)। "Armenians, The"। Islam, Sirajul; Jamal, Ahmed A.। Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh (Second সংস্করণ)। Asiatic Society of Bangladesh।
- Pearson, M. (২০০৭)। The Indian Ocean। Routledge। আইএসবিএন 978-0-415-44538-2। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৪-২১।
- Khandker, Hissam (৩১ জুলাই ২০১৫)। "Which India is claiming to have been colonised?"। The Daily Star (Op-ed)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৫-০৬।
- Nanda, J. N. (২০০৫)। Bengal: The Unique State। Concept Publishing Company। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৫-০৬।
- Jarrett, H. S. (1949) [1891] The Ain-i-Akbari by Abul Fazl-i-Allami, Vol.II, (ed.) J. N. Sarkar, Calcutta: The Asiatic Society, pp.142-55
- Sarkar, Jadunath (১৯৮৪)। A History of Jaipur, c. 1503-1938। New Delhi: Orient Longman। পৃষ্ঠা 81। আইএসবিএন 81-250-0333-9।
- Gommans, Jos (২০০২)। Mughal Warfare: Indian Frontiers and Highroads to Empire, 1500-1700। Oxon: Routledge। পৃষ্ঠা 27। আইএসবিএন 0-415-23988-5।
- Eaton, Richard M. (১৯৯৩)। The Rise of Islam and the Bengal Frontier, 1204-1760। Berkeley: University of California Press। পৃষ্ঠা 325–6। আইএসবিএন 0-520-20507-3।
text-align:center;