লাকসাম

লাকসাম বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি শহর। এটি কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত লাকসাম উপজেলার প্রশাসনিক সদরদপ্তর ও প্রধান শহর। এটি একটি বৃহৎ বাণিজ্য কেন্দ্র ও রেলওয়ে শহর।

লাকসাম
পূর্বনাম: লক্ষস্যাম
শহর
লাকসাম
বাংলাদেশে লাকসাম শহরের অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৩.২৩৯২৭১° উত্তর ৯১.১২৩৯৯৭° পূর্ব / 23.239271; 91.123997
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগচট্টগ্রাম বিভাগ
জেলাকুমিল্লা জেলা
উপজেলালাকসাম উপজেলা
উপজেলা শহর১৯৮২
পৌরশহর১৯৮৪
সরকার
  ধরনপৌরসভা
  শাসকলাকসাম পৌরসভা
  পৌরমেয়রমোঃ আবুল খায়ের[1]
আয়তন
  মোট১৯.৮৬ কিমি (৭.৬৭ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা
  মোট১,০৫,৯৩৫
  জনঘনত্ব৫৩০০/কিমি (১৪০০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলবাংলাদেশ সময় (ইউটিসি+৬)

ইতিহাস

লাকসাম থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮২সালে। তখন লাকসাম শহরকে উপজেলা সদর করা হয়। ১৯৮৪ সালে লাকসাম পৌরসভা গঠন করা হলে লাকসাম পৌরশহরের মর্যাদা লাভ করে।

ভৌগোলিক উপাত্ত

শাহরাস্তি শহরের অবস্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হল ২৩.২৩৯২৭১° উত্তর ৯১.১২৩৯৯৭° পূর্ব / 23.239271; 91.123997। সমুদ্র সমতল থেকে শহরটির গড় উচ্চতা ৭ মিটার। লাকসামের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ডাকাতিয়া নদী যা ভারতের রঘুনন্দন পাহাড় থেকে উৎপত্তি হয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার উত্তর দিয়ে লাকসামে প্রবেশ করেছে। ডাকাতিয়া নদীর দৈর্ঘ্য ৭৫ কিমি, প্রস্থ ২৫০ ফুট। বর্তমান গড় গভীরতা ৪০ ফুট।

প্রশাসন

লাকসাম শহর লাকসাম পৌরসভা দ্বারা পরিচালিত হয়। শহরটি ৯টি ওয়ার্ড এবং ৩১টি মহল্লায় বিভক্ত। ১৯.৮৬ বর্গ কি.মি. আয়তনের লাকসাম শহরের ১৯.৪২ বর্গ কি.মি. এলাকা লাকসাম পৌরসভা দ্বারা শাসিত হয়। এ পৌরসভার প্রশাসনিক কার্যক্রম লাকসাম থানার আওতাধীন।

জনসংখ্যা

শাহরাস্তি শহরের বর্তমান মোট জনসংখ্যা ১০৫,৯৩৫ জন যার মধ্যে ৫১,৬৭১ জন পুরুষ এবং ৫৪,২৬৪ জন নারী। [2]

যোগাযোগ

সড়ক পথে- ঢাকা থেকে ঢাকা-চট্রগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক পথ ধরে কুমিল্লা বিশ্ব রোড হতে ২৫ কিঃমিঃ দূরে নোয়াখালী মহাসড়কে লাকসাম অবস্তিত। কুমিল্লা সদর থেকে, নোয়াখালী, মাইজদী, লক্ষ্মীপুর জেলা সদর থেকে বাস লাকসামে চলাচল করে। এই শহরে লাকসাম জংশন স্টেশন অবস্থিত। এতে ঢাকার কমলাপুর চট্টগ্রাম, সিলেট, চাঁদপুর, নোয়াখালী, থেকে ট্রেন আসা যাওয়া করে।

অর্থনীতি

লাকসামের প্রধান ফসল হলো ধান, আলু, বেগুন, টমেটো, শাকসবজি। এখানে অনেক ময়দার মিল, তৈলের মিল, সিগারেট ফ্যাক্টরীসহবিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান। শহরে লাকসাম বাজারসহ কয়েকটি ব্যবসাকেন্দ্রে প্রচুর জনসংযোগ হয়ে থাকে এবং প্রচুর বেচাকেনাও হয়। নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল ঢাকা, চট্টগ্রাম, চৌমুহনী, চাঁদপুর হতে সংগ্রহ করে লাকসামের বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রয় করছে। লাকসামে বর্তমানে প্রায় ২০ টি চালের কল ও ময়দার মিল, প্রায় ১০ টি সরিষার তেলের মিল, একাধিক সিগারেট ফ্যাক্টরিসহ শতাধিক ভোগ্যপণ্যের কারখানা রয়েছে।

পত্রিকা

পত্র পত্রিকা
  • সাপ্তাহিক
  • সাপ্তাহিক লাকসাম
  • সাপ্তাহিক লাকসাম বার্তা
  • সাপ্তাহিক আলোর দিশারী
  • সাপ্তাহিক সময়ের দর্পণ
  • সাপ্তাহিক নকসী বার্তা
  • সাপ্তাহিক জয় কন্ঠ
দৈনিক
  • দৈনিক তরুন কন্ঠ

নদী

লাকসামের উল্লেখযোগ্য ও একমাত্র নদী ডাকাতিয়া, এটি লাকসাম শহর, বাকই, মুদাফ্ফরগঞ্জ, কান্দিরপাড় এবং গোবিন্দপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এই নদী চৌদ্দগ্রাম খাল এবং নোয়াখালী খালের সাথেও যুক্ত।

খেলাধুলা

১ম বিভাগ ফুটবল লীগ ২। প্রতি বৎসর ভলিবল লীগ অনুষ্ঠিত হয় ৩। আন্তঃ ইউনিয়ন ফুটবল প্রতিযোগিতা এবং ৪। আন্তঃ স্কুল বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা

দর্শনীয় স্থান

নওয়াব ফয়েজুন্নেছা জমিদার বাড়ি, খান বাহাদুর বাড়ি, বাগিছা বাড়ি, ১০ গম্বুজ মসজিদ, নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজ, নওয়াব ফয়জুন্নেছা ও বদরুন্নেছা যুক্ত উচ্চ বিদ্যালয়; এছাড়া হজরত গাজীউল হক সাহেবের মাজার শরীফ। পশ্চিম চিতোষীতে নাটেশ্বরে বিরাট আকারের দীঘি ও প্রাচীন মসজিদ, লাকসামের বরইগাঁও আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহার কমপ্লেক্সসহ লাকসাম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, উহার পাশেই কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংক লিমিটেড ভবন, প্রথম শ্রেণীর লাকসাম পৌরসভা ভবন, গণপাঠাগার, গণমিলনায়তন, স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয়, পূর্ব লাকসামে স্থাপিত আলতাফ অটোমেটিক রাইস মিল, নশরতপুরে ভাইয়া গ্রুপের অটোমেটিক রাইস মিল, থ্রি এ ও গোল্ড কিং সিগারেট ফ্যাক্টরি, মামুন বিড়ি, দিদার বিড়ি, রূপালী বিড়ি ফ্যাক্টরি, আজম খানের দেয়া লাকসাম স্টেডিয়াম, হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজামণ্ডপের স্থান মুক্তকেশী কালীবাড়ী, ফতেপুরে আবুল খায়ের গ্রুপ নির্মিত আবুল বিড়ি ফ্যাক্টরি, রেলি ও সুপার কিং ফ্যাক্টরি,সোহাগ মত্স্য বীজ উত্পাদন ও প্রজনন খামার, গাজীমুড়া আলিয়া মাদ্রাসা প্রমুখ।

তথ্যসূত্র

  1. "লাকসাম পৌরসভার মেয়র"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-০৪
  2. "লাকসাম শহরের জনসংখ্যা"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১৮
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.