শরিয়তপুর

শরিয়তপুর বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের একটি শহর। প্রশাসনিকভাবে এটি শরিয়তপুর জেলার সদরদপ্তর ও প্রধান শহর। এর আয়তন ২৪.৯২ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ৪৯,৫৩৫ জন। এটি ক শ্রেণীর পৌরসভা দ্বারা শাসিত হয় (ক,খ,গ তিন শ্রেণীর পৌরসভা বিদ্যমান)।[1]

শরিয়তপুর
শহর
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগচট্টগ্রাম বিভাগ
জেলাশরিয়তপুর জেলা
উপজেলাশরিয়তপুর সদর উপজেলা
সরকার
  ধরনপৌরসভা
  শাসকশরিয়তপুর পৌরসভা
আয়তন
  মোট২৪.৯২ কিমি (৯.৬২ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা
  মোট৪৯,৫৩৫
  জনঘনত্ব২০০০/কিমি (৫১০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলবাংলাদেশ সময় (ইউটিসি+৬)

নামকরণ

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭৬ সালে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, মাদারীপুরের পূর্বাঞ্চল নিয়ে একটি নতুন মহকুমা গঠিত হবে। বিষয় নির্বাচনী কমিটির সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক, বৃটিশ বিরোধী তথা ফরায়েজী আন্দোলনের নেতা হাজী শরীয়ত উল্লাহর নামানুসারে এর নাম করণ হয় শরীয়তপুর এবং এর সদর দপ্তরের জন্য পালং থানা অঞ্চলকে বেছে নেয়া হয়।

ইতিহাস

পলাশীর যুদ্ধে নবারের পরাজয়ের পর ১৭৬৫ সালে শরিয়তপুর ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সৃষ্ট প্রশাসনের আওতাধীন হয়। শরীয়তপুর সহ ফরিদপুরের দক্ষিণাঞ্চল নিয়ে ঢাকা নিয়াবত গঠন করা হয়েছিল। ঢাকা নিয়াবত একজন নায়েব সুবাদার বা নাইব নাজিম ঢাকাকে কেন্দ্রস্থল হিসেবে গঠন করে শাসন পরিচালনা করেন। শরীয়তপুর পূর্বে বৃহত্তর বিক্রমপুর এর অংশ ছিল। ১৮৬৯ সালে প্রশাসনের সুবিধার্থে ইহাকে বাকেরগঞ্জ জেলার অংশ করা হয়। কিন্তু এ অঞ্চলের জনগণের আন্দোলনের মুখে ১৮৭৩ সালেই এ অঞ্চলকে মাদারীপুর মহকুমার অন্তর্গত করে ফরিদপুর জেলার অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হয়। ভাইসরয় লর্ড কার্জনের সময় ১৯০৫ সালে বাংলাকে বিভক্ত করা হলে এ অঞ্চলের বিকাশ ত্বরানিত হয়। ১৯১০ হতে ১৯৩৫ সালের দিকে এ অঞ্চলের বহু বিপ্লবী সক্রিয়ভাবে আন্দোলন করেছিল। তার মধ্যে হাজী শরিয়াত উল্লাহ অন্যাতম।

ভূগোল

শরিয়তপুর ঢাকা থেকে দক্ষিণে এবং বরিশাল থেকে উত্তরে, ২৪‌‌‌‌‌‌‍‍৹১২'২৭" উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০৹২০'৫০" পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত।[2] সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ১১ মিটার[3] এবং এর মোট আয়তন ২৪.৯২ বর্গকিলোমিটার। ভূসংস্থান অনুসারে এটি সমতলভূমিতে অবস্থিত হলেও উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে কিছুটা ঢালু। বছরের অধিকাংশ সময়ই এখানে ক্রান্তীয় ভেজা এবং শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করে। গড়ে তাপমাত্রা থাকে সর্বোচ্চ ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোনিম্ন ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মত এখানেও এপ্রিল থেকে জুন হল সবচেয়ে উষ্ণতম মাস এবং ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারী হল সবচেয়ে শীতলতম মাস। শরিয়াতপুরের গড় বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ২১০৫ মিলিমিটার।

জনসংখ্যা

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী শরিয়তপুরের জনসংখ্যা ৪৯,৫৩৫ জন।[1] যার মধ্যে পুরুষ ২৫,১১৩ জন এবং নারী ২৪,৪২২ জন। যারা ১০৯০৮টি পরিবারে বা খানায় বাস করে। নারী ও পুরুষের লিঙ্গ অনুপাত হল ১০০ঃ১০৩, যেখানে জাতীয় লিঙ্গ অনুপাত হল ১০০.৩ এবং জাতীয় শহুরে লিঙ্গ অনুপাত হল ১০৯.৩। শরিয়তপুর শহরের স্বাক্ষরতার হার ৬২.৫%, যেখানে জাতীয় শহুরে স্বাক্ষরতার হার ৫৯.৪%।

প্রশাসন ও রাজনীতি

শরিয়তপুর ১৯৮৪ সালে জেলা শহরের মর্যাদা পেলেও পৌরসভা ১৯৯০ সালে গঠিত হয়। তখন এর আয়তন ছিল ২৫.৫০ বর্গকিলোমিটার।

শরিয়তপুর পৌরসভা ৯টি ওয়ার্ড ও ২৭টি মহল্লা নিয়ে গঠিত। প্রতি ওয়ার্ডের জন্য সরাসরি ভোটে নির্বাচিত একজন কাউন্সিলর থাকেন। পৌরসভার প্রধান হলেন মেয়র। এছাড়াও তিন জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রয়েছেন।

তথ্যসূত্র

  1. "Shariatpur Town"। Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (PDF) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ৩: Urban Area Rport, 2011। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। পৃষ্ঠা ২২৭। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
  2. "23.207501, 90.347026 Latitude longitude Map"www.latlong.net। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-০৫
  3. "Geographic coordinates of Shariatpur District, Bangladesh. Latitude, longitude, and elevation above sea level of Shariatpur District"dateandtime.info। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-০৫
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.