জামালপুর
জামালপুর বাংলাদেশের মধ্যাংশে অবস্থিত একটি শহর। এটি জামালপুর সদর উপজেলায় অবস্থিত এবং জামালপুর জেলার প্রধান শহর।
জামালপুর | |
---|---|
শহর | |
জামালপুর | |
স্থানাঙ্ক: ২৪.৯১৯৬১৭° উত্তর ৮৯.৯৫০৬০২° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | ময়মনসিংহ বিভাগ |
জেলা | জামালপুর জেলা |
উপজেলা | জামালপুর সদর উপজেলা |
স্থাপিত | ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দ |
সরকার | |
• ধরন | পৌরসভা |
• শিক্ষকতার হার | ৬০% |
আয়তন | |
• মোট | ৫৩.২৮ কিমি২ (২০.৫৭ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ১২ মিটার (৩৯ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১,৪২,৭৬৪ |
• জনঘনত্ব | ২৭০০/কিমি২ (৬৯০০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | বাংলাদেশ মান সময় (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ২০০০ |
টেলিফোন কোড | ০৯৮১ |
ওয়েবসাইট | জামালপুর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট |
জামালপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৬৯ সালে। শহরটিতে ১২টি ওয়ার্ড এবং ৭৬ টি মহল্লা রয়েছে। শহরের মোট এলাকা ৫৩.২৮ বর্গ কিলোমিটার। জামালপুর শহরে একটি রেলওয়ে জাংশনও রয়েছে।
নামকরণ
শাহ জামাল নামক এক আধ্যাত্মিকব্যক্তি এই অঞ্চলে ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে আসেন। এর থেকেই এই শহরের নাম করা হয়েছে জামালপুর। যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ঝিনাই, জিঞ্জিরাম, সুবর্ণখালী ও বংশী নদীর তীরবর্তী উঁচুভূমি ও জঙ্গলাকীর্ণ জামালপুরে কবে থেকে লোকালয় গড়ে উঠে এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য আজও পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হয় যে, ৮'শ বছর পূর্ব থেকে জঙ্গলাকীর্ণ এই ভূ-খন্ডে জনবসতি শুরু হয়। উত্তাল যমুনা, ব্রহ্মপুত্রসহ জঙ্গলাকীর্ণ এই ভূ-খন্ডের বুক চিরে বয়ে যাওয়া অধূনালুপ্ত বংশী নদী হয়ে ব্যবসায়ীদের বিশাল সব বজরা নৌকা যাতায়াত করতো উত্তর-পশ্চিম থেকে পূর্ব-দক্ষিণ বঙ্গে। যাতায়াতের পথে ব্যবসায়ী সওদাগররা জঙ্গলাকীর্ণ এই এলাকার নদীর তীরে বজরা থামিয়ে বিশ্রাম নিতো। ব্যবসায়ী সওদাগরদের বংশী নদীর তীরবর্তী বিশ্রামস্থলটিতে একসময় ছোট্ট একটি "গঞ্জ" গড়ে উঠে। এভাবে ক্রমশ: এই অঞ্চলটি "গঞ্জের হাট" নামে পরিচিত হয়ে উঠে। ব্যবসায়ী সওদাগরদের বিশ্রামস্থলটি এখনো শহরের মাঝখানে "রাণীগঞ্জ" বাজার নামে অতীত স্মৃতির জানান দেয়।
মূলত গঞ্জের হাটকে কেন্দ্র করে সে সময় জঙ্গলাকীর্ণ এই এলাকায় জনবসতি গড়ে উঠতে থাকে। ধারণা করা হয় যে, প্রাচীন বঙ্গের গৌড়ের সেন বংশের রাজত্বকালে (১১০০-১২০৩ খ্রী:) হিন্দুদের মধ্যে যখন কলীন প্রথার প্রচলন হয়, তখন এই এলাকায় জনবসতি গড়ে উঠে। এ সময় গঞ্জের হাটের কাছের একটি এলাকায় শিবমিন্দর স্থাপিত হয়। পরবর্তী সময়ে কাছাকাছি এলাকায় স্থাপিত হয় দয়াময়ী মন্দির। একসময় শিবমন্দিরকে ঘিরে একশ্রেণীর হিন্দু সন্ন্যাসীদের আনাগোনা শুরু হয় এই অঞ্চলে। পরে দূরদেশ থেকে আগত এই সব হিন্দু সন্ন্যাসীরা আস্তানা গড়ে এই শিবমন্দিরে। হিন্দু সন্ন্যাসীদের আগমনে এবং তাদের পদচারণায় অঞ্চলটি "গঞ্জের হাট" থেকে "সন্ন্যাসীগঞ্জ" হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ক্রমান্বয়ে হিন্দু জমিদারদের উদ্ভব হলে সন্ন্যাসীগঞ্জকে মৌজা তৈরি করে এর নাম রাখেন "সিংহজানী"। এই সিংহজানী মৌজা থেকেই আজকের জামালপুর জেলা। জেলা শহরের দুইটি বিদ্যালয়ের নামের সাথে সিংহজানী নামটি আজও সমুন্নত।
জামালপুর বর্তমানে ময়মনসিংহ বিভাগের একটি জেলা। নদীভাঙনে যার আকার ক্রমান্বয়ে ছোট হয়ে আসছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে একসময় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে জেলাটি। কিন্তু অতীত নানা ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক এ জেলার সৃষ্টি আর নামকরণের ক্ষেত্রে রয়েছে ইতিহাস ও ঐতিহ্য। দিল্লীর তৃতীয় মোঘল সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে (১৫৪২-১৬০৫ খ্রী:) ইয়েমেন থেকে ইসলামধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে শাহ্ জামাল সিংহজানী মৌজায় আগমন করেন। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়ে তিনি ক্ষরস্রোতা ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে নিজ আস্তানা স্থাপন করেন। সে সময় তার অলৌকিক ক্ষমতার কথা দিল্লী পৌঁছলে সম্রাট আকবর তাকে খানকাহ্ শরীফ বা আস্তানার ব্যয় নির্বাহের জন্য সিংহজানীর অন্তর্গত কয়েকটি পরগণা "পীরপাল" হিসেবে প্রদান করে তার কাছে সনদ পাঠালেও তিনি তা গ্রহণ করেননি। ইসলামের পতাকাবাহী এবং একত্মবাদের একনিষ্ঠ প্রচারক শাহ্ জামাল-এর পূণ্যাত্মার প্রতি স্মরণার্থে পরবর্তীতে এ অঞ্চলের নামকরণ করা হয় "জামালপুর"।[1]
দর্শনীয় স্থান
- শাহ জামাল - এর মাজার শরীফ
- দয়াময়ী মন্দির
- সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ
সংবাদপত্র
জেলার সংবাদপত্রের মধ্যে দৈনিক আজকের জামালপুর, দৈনিক জামালপুর দিনকাল, দৈনিক পল্লীকন্ঠ প্রতিদিন, দৈনিক নবতান, দি ডেইলী ডাইক, দৈনিক সচেতন কন্ঠ, দৈনিক মুক্ত আলো, দৈনিক পল্লীর আলো, সাপ্তাহিক জনদ্বীপ, সাপ্তাহিক জামালপুর সংবাদ, সাপ্তাহিক উর্মিবাংলা, সাপ্তাহিক নতুন যুগ উল্লেখযোগ্য । এছাড়াও জামালপুর বার্তা ডট কম, জামালপুর নিউজ টুয়েন্টিফোর ডট কম, জনদ্বীপ ডট কম, বাংলারচিঠি ডট কম নামে কয়েকটি জামালপুরভিত্তিক একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যম পরিচালিত হয় ।
তথ্যসূত্র
- "জেলার পটভূমি - Jamalpur District - জামালপুর জেলা"। ৯ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৪।