মিচেল স্টার্ক

মিচেল আরন স্টার্ক (ইংরেজি: Mitchell Aaron Starc; জন্ম: ৩০ জানুয়ারি, ১৯৯০) নিউ সাউথ ওয়েলসে জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। বামহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে অস্ট্রেলিয়া দলে খেলছেন দীর্ঘদেহী ছয় ফুট সাড়ে পাঁচ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী মিচেল স্টার্ক[1] এছাড়াও, ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলস ব্লুজসিডনি সিক্সার্স এবং আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের প্রতিনিধিত্ব করছেন।

মিচেল স্টার্ক
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামমিচেল আরন স্টার্ক
জন্ম (1990-01-30) ৩০ জানুয়ারি ১৯৯০
বাকহাম হিলস, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া
উচ্চতা১৯৭ সেন্টিমিটার (৬ ফুট   ইঞ্চি)[1]
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনবামহাতি ফাস্ট
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় পার্শ্ব
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪২৫)
১ ডিসেম্বর ২০১১ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টেস্ট১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বনাম শ্রীলঙ্কা
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৮৫)
২০ অক্টোবর ২০১১ বনাম ভারত
শেষ ওডিআই১২ জুন ২০১৯ বনাম পাকিস্তান
ওডিআই শার্ট নং৫৬
টি২০আই অভিষেক
(ক্যাপ ৫৯)
৭ সেপ্টেম্বর ২০১২ বনাম পাকিস্তান
শেষ টি২০আই২৫ নভেম্বর ২০১৮ বনাম ভারত
টি২০আই শার্ট নং৫৬
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০৯-নিউ সাউথ ওয়েলস ব্লুজ (দল নং ৫৬)
২০১১–সিডনি সিক্সার্স
২০১২ইয়র্কশায়ার (দল নং ৫৬)
২০১৪–২০১৬রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই টি২০আই এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৫১ ৭৯ ২৩ ৯০
রানের সংখ্যা ১,৩৭৭ ২৯৪ ১২ ১,৯৫০
ব্যাটিং গড় ২১.৮৫ ১১.৭৬ ৩.০০ ২২.৪১
১০০/৫০ ০/৯ ০/১ ০/০ ০/১০
সর্বোচ্চ রান ৯৯ ৫২* ৯৯
বল করেছে ১০,৫৩২ ৩,৯৭৭ ৫২৫ ১৬,৫৮৬
উইকেট ২১১ ১৫৪ ৩১ ৩৪৫
বোলিং গড় ২৮.২০ ২১.৪৪ ১৯.০৯ ২৬.৮৩
ইনিংসে ৫ উইকেট ১১ ১৬
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৬/৫০ ৬/২৮ ৩/১১ ৮/৭৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২৫/– ২০/– ৬/– ৪৩/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১২ জুন ২০১৯

ঘরোয়া ক্রিকেট

সিডনির বেরালা স্পোর্টস ক্রিকেট ক্লাবের সাবেক কনিষ্ঠ ক্রিকেটার ছিলেন। হোমবুশ বয়েজ হাই স্কুলে অধ্যয়নকালীন সময় বিদ্যালয়ের প্রথম সারির দলে প্রতিনিধিত্ব করেন। ক্লাবে থাকাকালীন একই ইনিংসে উইকেটরক্ষণসহ বোলিং করতেন। নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (এনডিসিএ) ক্রিকেটার হিসেবেও খেলেছেন তিনি। ২০১১-১২ মৌসুমে বিগ ব্যাশ লীগের উদ্বোধনী আসরে সিডনি সিক্সার্স দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। প্রতিযোগিতায় তার দল শিরোপা জয় করে ও তিনি ছয় খেলায় ১৩ উইকেট নিয়ে যৌথভাবে তৃতীয় স্থানে ছিলেন।[2] ২০১২ সালে সিডনি সিক্সার্সের সাথে চুক্তিবদ্ধ হবার পর চ্যাম্পিয়ন্স লীগ টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। ২০১৪ সালের আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর দলের সাথে খেলার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

একমাত্র বোলার হিসেবে মিচেল স্টার্ক শেফিল্ড শিল্ডের ইতিহাসে খেলায় দুইবার হ্যাট্রিক করেছেন। ২০১৭-১৮ মৌসুমের শেফিল্ড শিল্ড প্রতিযোগিতায় প্রথম বোলার হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় উভয় ইনিংসে হ্যাট্রিক করেন তিনি।[3] এরফলে খেলায় নিউ সাউথ ওয়েলস দল জয় পায়। দ্বিতীয় অস্ট্রেলীয় হিসেবে ও সামগ্রীকভাবে অষ্টম বোলার হিসেবে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় দুইবার হ্যাট্রিক লাভের অধিকারী হন।[4] ৪ থেকে ৭ নভেম্বর, ২০১৭ তারিখে হার্স্টভিল ওভালে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় প্রতিপক্ষীয় দল ছিল ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে তিনি জেসন বেহরেনডর্ফ, ডেভিড মুডি ও সাইমন ম্যাকিনকে ধারাবাহিকভাবে আউট করেন।[5] দ্বিতীয় ইনিংসে জেসন বেহরেনডর্ফ, মুডি ও জোনাথন ওয়েলস তার ধারাবাহিক শিকারে পরিণত হয়েছিলেন।

খেলোয়াড়ী জীবন

২০১০ সালের শেষদিকে অস্ট্রেলিয়া দলের ভারত সফরের সময় বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ খেলোয়াড়ের আঘাতজনিত কারণে স্টার্ককে জোশ হজলউডের পরিবর্তে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ডগ বলিঙ্গার প্রথম টেস্টে আহত হলে স্টার্ক, পিটার জর্জ এবং জেমস প্যাটিনসনের মধ্যে স্থান দখলের প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এতে জর্জকে সুযোগ দেয়া হয় এবং প্যাটিনসন আঘাত পেলে অক্টোবর, ২০১০ সালে বিশাখাপত্তনমে অনুষ্ঠিত একদিনের আন্তর্জাতিকে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক ঘটে মিচেল স্টার্কের। তবে তাকে ব্যাট করতে হয়নি; কিন্তু উইকেটবিহীন অবস্থায় খেলা শেষ করতে হয় তাকে।

১ ডিসেম্বর, ২০১১ তারিখে ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত দুই টেস্টের সিরিজের প্রথম টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক ঘটে তার।[6] খেলায় তিনি দুই উইকেট লাভ করেন।[7] হোবার্টে অনুষ্ঠিত পরবর্তী টেস্টেও দুই উইকেট দখল করেন।[8] ২০১১-১২ মৌসুমে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে তাকে দলে রাখা হয়নি।[9] কিন্তু পেস-বান্ধব ওয়াকা গ্রাউন্ডে স্পিনার নাথান লায়নের পরিবর্তে তাকে পুণরায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[10] ২০১২ সালে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। ঐ টেস্টে অস্ট্রেলিয়া পরাজিত হলেও স্টার্ক ৬/১৫৪ লাভসহ দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ ডিসেম্বর তারিখে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম করেন মাত্র ৩২ বলে।[11] ভাল ফলাফল অর্জন করা স্বত্ত্বেও তাকে বিশ্রামে রাখা হয়। বক্সিং ডে টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তার স্থলে জ্যাকসন বার্ডের অভিষেক ঘটে। পরের সপ্তাহেই অবশ্য সিডনি টেস্টে উভয়েই খেলার সুযোগ লাভ করেন। ২০১৩ সালে ভারত সফরে টেস্ট সিরিজে মাত্র ১ রানের জন্য প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত হন।

ক্রিকেট বিশ্বকাপ

২০১৫ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ১১ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ স্টার্ক-সহ অস্ট্রেলিয়া দলের ১৫-সদস্যের চূড়ান্ত তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশ করে।[12] গ্রুপ পর্বের তৃতীয় খেলায় সহঃ স্বাগতিক দল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রশংসারযোগ্য ও নিজস্ব সেরা বোলিং পরিসংখ্যান (৬/২৮) স্বত্ত্বেও তার দল মাত্র ১ উইকেটের ব্যবধানে হেরে যায়। তিনি ২২টি উইকেট নিয়ে একাদশ বিশ্বকাপে ট্রেন্ট বোল্টের সাথে যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর মর্যাদা পান। কিন্তু বিচারকদের কাছ থেকে সেরার মর্যাদা পান তিনি ও শচীন তেন্ডুলকরের কাছ থেকে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট পুরস্কার গ্রহণ করেন। খেলায় অস্ট্রেলিয়া দল নিউজিল্যান্ডকে পরাজিত করে শিরোপা জয় করে।

রেকর্ডসমূহ

  • ২০১৩ সালের বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি’র তৃতীয় টেস্টে চলকালে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে উভয় ইনিংসে ৯, ১০ ও ১১ নম্বরে ১০০ বল মোকাবেলা করেন।[13]
  • ১৮ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে এমসিজিতে ভারতের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ওডিআইয়ে প্রথম অস্ট্রেলীয় হিসেবে ছয় উইকেট নেন। খেলায় তিনি নিজস্ব সেরা ৬/৪৩ লাভ করেন।

তথ্যসূত্র

  1. "Mitchell Starc"cricket.com.auক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। ১৬ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৪
  2. "Big Bash League, 2011/12 / Records / Most wickets"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০১২
  3. "Starc's second hat-trick delivers victory for NSW"ESPN Cricinfo। ৭ নভেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৭
  4. "Two hat-tricks in the same match"ESPN Cricinfo। ৭ নভেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৭
  5. "Smith passes 50 after Starc hat-trick"Cricket Australia। ৬ নভেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০১৭
  6. Brettig, Daniel (১ ডিসেম্বর ২০১১)। "Starc searches for consistency"ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০১২
  7. "New Zealand tour of Australia, 2011/12 / Scorecard: First Test"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০১২
  8. "New Zealand tour of Australia, 2011/12 / Scorecard: Second Test"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০১২
  9. Brettig, Daniel (২৯ ডিসেম্বর ২০১১)। "Harris recalled, Watson's prospects cloudy"ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০১২
  10. "India tour of Australia, 2011/12 / Scorecard: Third Test"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০১২
  11. "Proteas register emphatic victory"। Supersport। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১২
  12. "Clarke named in World Cup squad"। ১৪ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০১৫
  13. "Blogs: Andy Zaltzman: Just how bad are Australia? | Cricket Blogs"। ESPN Cricinfo। ২০১৩-০৩-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-১৫

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

পূর্বসূরী
যুবরাজ সিং
বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়
২০১৫
উত্তরসূরী
কেন উইলিয়ামসন
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.