খেলোয়াড়

খেলোয়াড় (ইংরেজি: Player, Sportsperson) একজন ব্যক্তিবিশেষ, যিনি এক বা একাধিক খেলায় অংশগ্রহণ করে থাকেন। খেলোয়াড় শব্দটি মূলতঃ কৌশলগত প্রতিযোগিতামূলক এবং সাধারণ বিনোদনমূলক খেলায় ব্যবহার করা হয়। তবে বাজী ধরে খেলার উদ্দেশ্যে যে খেলোয়াড় বা সংশ্লিষ্ট সমর্থক অংশগ্রহণ করে থাকেন তিনি জুয়ারি নামে জনসমক্ষে পরিচিত হয়ে থাকেন।[1] যে-কোন ধরনের খেলায় কমপক্ষে দুইজন বা নির্দিষ্টসংখ্যক খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণ ঘটে থাকে। ক্ষেত্রবিশেষে একজন খেলোয়াড়ও খেলায় অংশ নিয়ে থাকেন। তন্মধ্যে একাকী খেলার উপযোগী তাসজাতীয় খেলা কিংবা কম্পিউটার গেমস বা ভিডিও গেমস অন্যতম। এছাড়াও, কম্পিউটার ব্যবহারকারী খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হয়ে কম্পিউটার কিংবা অনির্ধারিতসংখ্যক খেলোয়াড়ের বিপক্ষে অনলাইন গেমসেও অংশ নিয়ে থাকেন।

বৈশিষ্ট্যাবলী

একজন খেলায়াড় পেশাদার কিংবা অপেশাদার হতে পারেন। বেশীরভাগ পেশাদার খেলোয়াড়ের শক্তিশালী শারীরিক কাঠামো থাকে। সুশৃঙ্খল নিয়মানুবর্তীতায় তারা নিয়মিত শরীরচর্চা অনুশীলন করেন এবং তাদের খাদ্যতালিকাও ছকমাফিক থাকে। তবে দাবা খেলার মতো শুধুমাত্র বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কীয় খেলার জন্য এ ধরনের নিয়মের তেমন প্রযোজ্য নয়।

ব্যক্তিগত বা দলীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণের মাধ্যমে কোন একজন খেলোয়াড় বা দল জয়ী হয়। দলগতভাবে যে খেলোয়াড় সর্বাধিক ক্রীড়ানৈপুণ্যতা প্রদর্শন করেন তিনি প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুসারে সেরা খেলোয়াড়ের মর্যাদা লাভ করে থাকেন এবং পদক কিংবা পুরস্কারে ভূষিত হন। সাধারণতঃ চ্যাম্পিয়নরানার-আপ মর্যাদায় অভিষিক্ত খেলোয়াড়কে পুরস্কৃত করা হয়। তবে কিছু কিছু খেলায় (যেমনঃ মুষ্টিযুদ্ধ) ৪র্থ স্থান অর্জনকারী খেলোয়াড়ও পুরস্কার পেয়ে থাকেন।

পশ্চিমা জগতে যক্তিগত বা দলগত বিভাগে শীর্ষস্থানীয়কে ১ম স্থান বা সেরা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। টাই-ব্রেকিং বা ড্র-কে যে-কোনভাবেই হোক না কেন সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হয়। কিন্তু জাপানে টাই-ব্রেকিং বা ড্রয়ের ফলে উভয়কেই সেরা বলে ধরে নেয়া হয়।

প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ

দলগত পর্যায়ের খেলা হিসেবে ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, ওয়াটার পোলো ইত্যাদি খেলায় খেলোয়াড়গণ নির্ধারিত নিয়ম-কানুন প্রতিপালন করে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রতিপক্ষীয় দলের অন্যান্য খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। দলীয় অধিনায়কের কৌশল প্রয়োগ ও পরামর্শক্রমে জয়ের লক্ষ্যে সর্বশক্তি প্রয়োগ করেন তিনি। পাশাপাশি খেলা পরিচালনকারীর ভূমিকায় রেফারী কিংবা আম্পায়ারকে সহায়তা করতে হয়।

তবে, খেলায় অংশগ্রহণের জন্য প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী একজন খেলোয়াড়কে অনুসরণ করতে হয়। ডেভিস কাপ টেনিস প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য একজন টেনিস খেলোয়াড়কে বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী কমপক্ষে ১৪ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী হতে হয়।[2]

মনোবিজ্ঞানে প্রতিক্রিয়া

১৯৫৫ সালে প্রখ্যাত মনোবিজ্ঞানীত্রয় - ভিক্টোরিয়া মেডভেক, স্কট ম্যাদে এবং থমাস গিলোভিচ আধুনিক অলিম্পিক ক্রীড়ায় বিপরীতধর্মী চিন্তা-ভাবনা সম্বলিত প্রতিক্রিয়া গবেষণা আকারে তুলে ধরেন। তাঁরা দেখিয়েছেন, যে সকল প্রতিযোগী ব্রোঞ্জপদক জয় করে তারা রৌপ্যপদক জয়ী ক্রীড়াবিদের তুলনায় অধিকতর সুখী। রৌপ্যপদক জয়ী ক্রীড়াবিদ মানসিক অবসাদগ্রস্ততায় ভোগেন, কেননা তারা অল্পের জন্য স্বর্ণপদক প্রাপ্তি থেকে নিজেকে বিচ্যুত করেছেন। সে তুলনায় ব্রোঞ্জপদক জয়ী খেলোয়াড় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকে কমপক্ষে একটি পদক জয়ে সক্ষমতা ও পারঙ্গমতা দেখিয়েছেন। চতুর্থ স্থান অধিকারী প্রতিযোগীকে সাধারণতঃ কোন পদক দেয়া হয় না।[3] নক-আউটভিত্তিক প্রতিযোগিতা হিসেবে ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলে পুণরায় ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণ করে ব্রোঞ্জপদক অর্জন করতে হয়। চূড়ান্ত খেলায় পরাজিত হবার প্রেক্ষাপটে পরাজিত দলকে রৌপ্যপদক প্রদান করা হয়।

তথ্যসূত্র

  1. ব্যবহারিক বাংলা অভিধান, সম্পাদকঃ ড. মুহম্মদ এনামুল হক, ২য় সংস্করণ, ২০১০, পৃষ্ঠাঃ ৪৭৬ বাংলা একাডেমী, ঢাকা
  2. http://www.daviscup.com/en/history/records.aspx
  3. social_studies:psychology
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.