ভূজপুর থানা
ভূজপুর থানা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত ফটিকছড়ি উপজেলার একটি থানা।
ভূজপুর | |
---|---|
থানা | |
![]() ভূজপুর থানা কার্য্যালয় | |
![]() ![]() ভূজপুর | |
স্থানাঙ্ক: ২২°৪১′০″ উত্তর ৯১°৪৮′১৮″ পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | চট্টগ্রাম জেলা |
উপজেলা | ফটিকছড়ি উপজেলা |
প্রতিষ্ঠাকাল | ২১ জুলাই, ২০০৭ |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
ইতিহাস
১৬৬৬ খ্রিষ্টাব্দে দিল্লীর বাদশা আওরঙ্গজেবের শাসনকালে বাংলার শাসনকর্তা সুবেদার শায়েস্তা খানের পুত্র বুজুর্গ উমেদ আলী খাঁ আরাকান রাজকে পরাজিত করে চট্টগ্রাম দখল করে এর নামকরণ করেন ইসলামাবাদ। শাসনকার্যের সুবিধার জন্য ও শান্তি শৃংখলা রক্ষাকল্পে সমগ্র এলাকাকে ৭টি চাকলায় ভাগ করে এক একটি পরগনার এক একটি নামকরণ করেন। বাংলার বার ভুইঁয়াদের অন্যতম স্বাধীনতাকামী ঈসা খাঁ এ অঞ্চলে অবস্থানকালে বাইশপুর সমন্বয়ে ঐতিহাসিক ‘ইছাপুর পরগনা’ গঠন করেন। বঙ্গশার্দুল ঈসা খাঁর নামানুসারেই সাবেক ‘ইছাপুর পরগনা’ই বর্তমানের ভূজপুর থানা এবং ফটিকছড়ি উপজেলা।[1] ২০০৭ সালের ২১ শে জুলাই বাংলাদেশ পুলিশ এর আই জি নূর মোহাম্মদ ভূজপুর থানার উদ্বোধন করেন।
নামকরণ
এই থানার একটি ইউনিয়ন ভূজপুরের নামানূসারে থানার নামকরণ ভূজপুর হয়। বলা হয়ে থাকে, কোন এক ভোজ রাজা এই এলাকাটি শাসন করত যার নামে ঐ ইউনিয়নটার নাম ভূজপুর হয়েছে কিন্তু তার কোন উপযুক্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ

ফটিকছড়ি উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের প্রশাসনিক কার্যক্রম ভূজপুর থানার আওতাধীন।
ভূ-প্রকৃতি

দুই পাহাড়ের মাঝে অবস্থিত ভূজপুর ভূ-প্রাকৃতিক দিক দিয়ে নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যে পরিপূর্ণ। পশ্চিম প্রান্তে সীতাকুণ্ড পাহাড়ী রেঞ্জ, যার বিস্তৃতি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য হতে শুরু হয়ে চট্টগ্রাম শহর পর্য্যন্ত। এই পাহাড়ের অপর পাড়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা এবং মীরসরাই উপজেলা। পূর্ব প্রান্তে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়। ভূজপুরেরর প্রধান নদী হালদা। হালদা নদী থানার পুর্ব প্রান্ত দিয়ে উত্তর দিক হতে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়েছে। অন্যান্য নদী এবং খালের মধ্যে রয়েছে সীতাকুণ্ড পাহাড়ী রেঞ্জ হতে উৎপন্ন হওয়া গজারিয়া, ফটিকছড়ি, হারুয়ালছড়ি খাল। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড় থেকে উৎপন্ন মানিকছড়ি খাল।
শিক্ষা

ভূজপুর থানায় সর্বমোট ২টি কলেজ এবং ১টি স্কুল এন্ড কলেজ আছে।[2]
অর্থনীতি
- চা শিল্প
বাংলাদেশের ১৬৩টি চা বাগানের মধ্যে ১৫টি চা বাগানের অবস্থান ভূজপুর থানায়।[3]
- আচিয়া চা বাগান
- আঁধারমানিক চা বাগান
- বারমাসিয়া চা বাগান
- দাঁতমারা চা বাগান
- এলাহী নূর চা বাগান
- হালদা ভ্যালি চা বাগান
- কৈয়াছড়া চা বাগান
- মোহাম্মদ নগর চা বাগান
- নাছেহা চা বাগান
- নারায়ণহাট চা বাগান
- নিউ দাঁতমারা চা বাগান
- উদালিয়া চা বাগান
- চা বাগান
- রামগড় চা বাগান
- রাঙ্গাপানি চা বাগান
- রাবার শিল্প
ভূজপুরে দুইটি রাবার বাগান আছে।[4] এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বিশাল আয়তনের বাগানটি (দাঁতমারা রাবার বাগান) রয়েছে এ ভূজপুরে। যার আয়তন সাড়ে চার হাজার একর।[5]
- দাঁতমারা রাবার বাগান (৪৫০০ একর)
- তারাকোঁ রাবার বাগান (৩০০০ একর) [5]
যোগাযোগ ব্যবস্থা

ভূজপুর থানার উপর দিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে দুটি আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং দুটি জেলা সড়ক গিয়েছে। আঞ্চলিক মহাসড়ক R151 (৪৮ কিমি দীর্ঘ) পেলাগাজীর দীঘির মোড় হতে কাজিরহাট, নারায়ণহাট এবং হেয়াকোঁ হয়ে বারৈয়ারহাটে গিয়ে ঢাকা চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের সাথে মিলিত হয়েছে।[6] দ্বিতীয় আঞ্চলিক মহাসড়ক R152 (১৮ কিমি দীর্ঘ) হেয়াকোঁ হতে রামগড় গিয়েছে।[7] জেলা সড়ক দুটি হচ্ছে, Z1021 (২০ কিমি দীর্ঘ) নারায়ণহাট থেকে মীরসরাই এবং Z1086 (২৩ কিমি দীর্ঘ) সীতাকুণ্ড হতে হাজারীখীল হয়ে পেলাগাজীর দীঘি পর্য্যন্ত। এছাড়াও ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ নাজিরহাট-কাজিরহাট সড়ক এবং ৮.৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ কাজিরহাট-গাড়িটানা সড়ক সড়ক-যোগাযোগের গুরুত্তপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
একসময় নৌকা যোগে চট্টগ্রাম শহর হতে মালামাল আনা নেয়ার জন্য হালদা নদী নৌ-পথ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। চাকতাই থেকে মাল বোঝাই করে নৌকা আসতো কাজিরহাট এবং নারায়ণহাট পর্য্যন্ত। স্থল যোগাযোগ ব্যবস্থা সুলভ হওয়ায় এবং হালদার নাব্যতা কমে যাবার দরুন নৌ-যোগাযোগ কমে এসেছে।
ভূজপুর প্রায় বাংলাদেশের সকল মোবাইল অপারেটরের নেটওয়ার্কের আওতায় রয়েছে। থানার বেশির ভাগ এলাকায় ইন্টারনেট ব্যবহার ও সুলভ।
দর্শনীয় স্থান
- ভূজপুর জমিদার বাড়ি এবং ফাঁসির ঘর, পূর্ব ভূজপুর।[8]
- মং রাজার দীঘি, পশ্চিম ভূজপুর।
- ফটিকছড়ি নদীর উৎপত্তিস্থল সীতাকুণ্ড পাহাড়।
- সুন্দর সাহেবের সুড়ঙ্গ, নারায়ণহাট। (এটি একটি পাহাড়ি সুড়ঙ্গ)
কৃতী ব্যক্তিত্ব
- আবদুল মজিদ পণ্ডিত –– পুঁথি সাহিত্যিক।
- কাজি হাসমত আলী –– সাহিত্যিক।
- চৌধুরী আহমদ ছফা –– শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও গবেষক।
- তাজুল ইসলাম –– বীর প্রতীক খেতাব প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা।
- জামাল নজরুল ইসলাম –– পদার্থবিজ্ঞানী, গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, বিশ্বতত্ত্ববিদ ও অর্থনীতিবিদ।
- ড. মোহাম্মদ ইউনুস –– গবেষক, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ঢাকা।
- ড. হামিদা বেগম –– লেখক ও সহকারী অধ্যাপক, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি, ঢাকা।
- সৈয়দ আবদুল ওয়ারেস –– নীতি দর্পণ গ্রন্থের লেখক।
গ্যালারী
- নারায়ণহাট উচ্চ বিদ্যালয়।
- হারুয়ালছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়।
- ভূজপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়।
- ভূজপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়।
- কাজিরহাট-নাজিরহাট সড়কে ফটিকছড়ি খালের উপর সেতু।
- কাজিরহাট-নাজিরহাট সড়কে হারুয়ালছড়ি খালের উপর সেতু।
- উদ্বোধনী প্রস্তর
আরো দেখুন
তথ্যসূত্র
- "চট্টগ্রাম জেলা তথ্য বাতায়ন"। ২৩ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মে ২০১৩।
- "জেলা তথ্য বাতায়ন"। ২৩ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মে ২০১৩।
- "বাংলাদেশ চা বোর্ড"। ৩ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মে ২০১৩।
- "উখিয়া টেকনাফে কমমূল্যে মিলছে গরু মহিষের মাংস - দৈনিক আজাদীদৈনিক আজাদী --"। www.dainikazadi.org। ২০১৬-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৫-২১।
- "দৈনিক জনকণ্ঠ"।
- সড়ক ও জনপথ বিভাগ
- "::RMMS::"। www.rhd.gov.bd।
- "দৈনিক প্রথম আলো"।