ব্রহ্মন্
হিন্দুধর্মে ব্রহ্ম বা ব্রহ্মন (দেবনাগরী ब्रह्मन्) বলতে মহাবিশ্বে বিদ্যমান চূড়ান্ত ও অখণ্ড সত্যের ধারণাকে বোঝায়।[1][2][3] হিন্দু দর্শনের মূল শাখাসমূহে, এর অর্থ হল সৃষ্টির বস্তুগত, গুণগত, প্রামাণ্য ও অন্তিম কারণ।[2][4][5] ব্রহ্ম সর্বব্যাপী, অনাদি ও অনন্ত, চিরসত্য ও পরমানন্দ যা নিজে অপরিবর্তনীয় হয়েও সকল পরিবর্তনের কারণ।[6][7][8] পরাবিদ্যায় ব্রহ্মের সংজ্ঞা হল চরাচরে অবস্থিত যাবতীয় বিচিত্র উপাদানের ধাত্রস্বরূপ একক মহাচৈতন্য।[9][10]
হিন্দুধর্ম |
---|
ধারাবাহিকের অংশ |
![]() |
বিদ্যালয়
|
শাস্ত্র
|
উপাসনা
|
গুরু, সন্ত, দার্শনিক
|
অন্যান্য বিষয়
|
|
ব্রহ্ম শব্দটি বৈদিক সংস্কৃত। পল ডয়সেনের মতে হিন্দুধর্মে এই শব্দের মাধ্যমে "সমগ্র চরাচরে বাস্তবায়িত সৃষ্টিশীল নীতিকে" বোঝায়।[11] বেদে প্রাপ্ত বিভিন্ন দার্শনিক ধারণার অন্যতম হল ব্রহ্ম, এবং বিভিন্ন প্রারম্ভিক উপনিষদে এর বিস্তারিত আলোচনা আছে।[12] বেদে ব্রহ্মকে বলা হয়েছে মহাজাগতিক নিয়ম।[13] উপনিষদের বিভিন্ন জায়গায় একে বলা হয়েছে সচ্চিদানন্দ,[14][15] এবং ব্যাখ্যা করা হয়েছে অব্যয়, শাশ্বত ও পরম সত্য হিসেবে।[7][16][note 1][note 2]
হিন্দুশাস্ত্রে ব্রহ্মের ধারণাটির সাথে ভগবান শিবও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে এবং এর সাথে জড়িয়ে আছে আত্মন্ (আত্মা),[19][20] ব্যক্তিক[note 3], নৈর্ব্যক্তিক[note 4] ও পরম ব্রহ্মের ধারণা।[note 5] বিভিন্ন গ্রন্থে এই সমস্ত বৈশিষ্ট্যগুলিকে ভিন্ন ভিন্ন রূপে ও ভিন্ন ভিন্ন দলে ভাগ করে আলোচনা করা হয়েছে।[21] দ্বৈত বেদান্ত প্রভৃতি দ্বৈতবাদী শাখায় ব্রহ্ম মূলতঃ প্রতিটি জীবের চেতনাস্বরূপ খণ্ডসত্তা আত্মনের থেকে আলাদা; ফলে এই ধারণার সঙ্গে অন্যান্য ধর্মে বর্ণিত ঈশ্বরের ধারণার সাদৃশ্য পাওয়া যায়।[22][23][24] একেশ্বরবাদী অদ্বৈত বেদান্ত প্রভৃতি শাখায় ব্রহ্ম ও আত্মন্ অভিন্ন; ব্রহ্মই সর্বত্র সর্বজীবে বিরাজমান, অতঃপর সমগ্র চরাচরে আধ্যাত্মিক একতা বিদ্যমান।[25][26][27]
ব্যুৎপত্তি ও সম্পর্কিত শব্দ
সংস্কৃত ব্রহ্মন্ (এটি শব্দের মূল। এর নামপদ ব্রহ্ম) শব্দের মূলে আছে "বৃঃ", যার অর্থ স্ফীত হওয়া বা বিস্তারলাভ করা। এটি লিঙ্গ নিরপেক্ষ শব্দ, তাই পুংলিঙ্গবাচক "ব্রাহ্মণ" ও হিন্দু ত্রিমূর্তির অন্তর্গত দেবতা ব্রহ্মার থেকে একে আলাদা করে বোঝা কাম্য। ফলে ভগবানের পুরুষ অথবা স্ত্রীমূর্তি কল্পনার চেয়ে ব্রহ্মের ধারণা অধিকতর ব্যক্তি-নিরপেক্ষ। ব্রহ্মকে চূড়ান্ত সত্তা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। জনৈক দার্শনিকের মতে ব্রহ্মের অর্থ "জগতের মাঝে ও জগৎ ছাড়িয়ে বিস্তৃত সত্যের অব্যয় রূপ[28] এবং দার্শনিক সাইনারের মতে ব্রহ্মের "যথাযথ সংজ্ঞা দেওয়া যায় না।"[29]
বৈদিক সংস্কৃতে:
- ব্রহ্ম (ब्रह्म) (নামপদ একবচন), ব্রহ্মন্ (ब्रह्मन्) (মূল) (ক্লীবলিঙ্গ[30])-এর মূল ধাতু বৃঃ, যার অর্থ হতে পারে দৃঢ় করা বা হওয়া, কঠিন, পরিবর্ধন।[31]
- ব্রহ্মন (ब्रह्मन) (নামপদ একবচন, বহুবচন নেই)-এর মূল ধাতু "বৃহ" (দৃঢ়, পরিবর্ধন) + "মন্" (প্রকাশ) অর্থাৎ কোনও নির্দিষ্ট শক্তি, অন্তর্নিহিত দৃঢ়তা অথবা মৌলিক নীতির প্রকাশকে বোঝায়।[32]
পরবর্তী সংস্কৃতে ব্যবহার:
- ব্রহ্ম (ब्रह्म) (নামপদ একবচন), ব্রহ্মন্ (ब्रह्मन्) (মূল) (ক্লীবলিঙ্গ[30]) বলতে হিন্দুধর্মে বোঝায় অতিলৌকিক ও সর্বব্যাপী চূড়ান্ত সত্য তথা চেতনা। বিভিন্ন হিন্দু দর্শন বিশেষত বেদান্তে এই ধারণাটি কেন্দ্রীয়, যা নিয়ে পরে আলোচনা করা হয়েছে।
- ব্রহ্মা (ब्रह्मा) (নামপদ একবচন), ব্রহ্মন্ (ब्रह्मन्) (মূল) (পুংলিঙ্গ) অর্থাৎ দেবতা প্রজাপতি ব্রহ্মা। ইনি হিন্দু ত্রিমূর্তির প্রথম জন এবং জগতের সৃষ্টিকর্তা, কিন্তু বর্তমান ভারতে এঁর অর্চনা সীমিত। এর সম্ভাব্য কারণ ব্রহ্মা দীর্ঘায়ু হলেও অনন্ত নন; কল্পান্তে তিনি পুরুষে লীন হয়ে যান এবং পরবর্তী কল্পে পুনরায় জন্মগ্রহণ করেন/ প্রকট হন।
এই ধারণাগুলোর সাথে উচ্চারণগতভাবে কাছাকাছি কিন্তু সম্পর্কবিহীন শব্দ:
- ব্রাহ্মণ (ब्राह्मण) (পুংলিঙ্গ) শব্দের আক্ষরিক অর্থ "প্রার্থনা সংক্রান্ত", এবং তা বিভিন্ন বৈদিক মন্ত্রের গদ্যে লেখা টীকাগুলিকে নির্দেশ করে।
- ব্রাহ্মণ (ब्राह्मण) (পুংলিঙ্গ) শব্দের আরেকটি অর্থ পুরোহিত, যা বর্তমানে পুরোহিতগোষ্ঠী থেকে আগত হিন্দু সমাজের উচ্চবর্ণ ব্রাহ্মণ-কে নির্দেশ করে। চলিত বাংলায় তদ্ভব শব্দ "বামুন"-এর মূল। এই শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ রূপ ব্রাহ্মণী, চলিতে "বাম্নি"।
ইতিহাস ও সাহিত্য
বেদে
খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দে রচিত বেদের সংহিতা অংশে ব্রহ্মের ধারণার উল্লেখ আছে, যথা:
ঋক্ পরিমিত,
সমন্ পরিমিত,
এবং যজুর্গণও পরিমিত,
কিন্তু "ব্রহ্মন্ শব্দের শেষ নেই।— তৈত্তিরীয় সংহিতা VII.৩.১.৪, অনুবাদ: বার্বারা হোল্ড্রেজ[33]
বেদের শত শত স্তোত্রে ব্রহ্মনের ধারণার উল্লেখ আছে।[34] যেমন, ঋগ্বেদের ২.২.১০ নং স্তোত্র[35], ৬.২১.৮ নং স্তোত্র[36] ও ১০.৭২.২ নং স্তোত্রে[37] এবং অথর্ববেদের ৬.১২২.৫, ১০.১.১২ ও ১৪.১.১৩১ নং স্তোত্রে[38] এর উল্লেখ পাওয়া যায়। বৈদিক সাহিত্যের নানা পর্যায়ে ব্রহ্মের সম্পর্কে বলা আছে, যেমন ঐতরেয় ব্রাহ্মণ ১.১৮.৩, কৌশিতকী ব্রাহ্মণ ৬.১২, শতপথ ব্রাহ্মণ ১৩.৫.২.৫, তৈত্তিরীয় ব্রাহ্মণ ২.৮.৮.১০, জৈমিনীয় ব্রাহ্মণ ১.১২৯, তৈত্তিরীয় আরণ্যক ৪.৪.১ থেকে ৫.৪.১, বাজসনেয়ী সংহিতা ২২.৪ থেকে ২৩.২৫ এবং মৈত্রয়নী সংহিতা ৩.১২.১: ১৬.২ থেকে ৪.৯.২: ১২২.১৫। এছাড়া বেদাঙ্গের শ্রৌত সূত্র ১.১২.১২ এবং পরস্কার গৃহসূত্রের ৩.২.১০ থেকে ৩.৪.৫ অবধি ব্রহ্মের বর্ণনার চেষ্টা আছে।[39]
জাঁ হোন্দার মতে, ঋগ্বেদ সংহিতা থেকে শুরু করে বৈদিক সাহিত্যের নানা শাখায় ব্রহ্মের ধারণার বিভিন্ন ব্যাখ্যা থেকে শব্দটির বহুমাত্রিক তাৎপর্যের আন্দাজ পাওয়া যায়।[40] তিনি আরও বলেন, আধুনিক পাশ্চাত্যের কোনও ভাষাতেই একটি শব্দের দ্বারা ব্রহ্ম শব্দের অর্থের ব্যাপকতা ধরা যায় না।[41] বেদের প্রাচীনতম শ্লোকগুলিতে ব্রহ্মের ব্যাখ্যা দেওয়া আছে "বেদের ধ্বনি, শব্দ, শ্লোক ও সূত্রসমূহের অন্তর্নিহিত শক্তি" হিসেবে। অবশ্য জাঁ হোন্দা এও বলেন যে এই অর্থটি কখনওই একমাত্র অর্থ ছিল না, এবং প্রাচীন ভারতে কালে কালে এই অর্থের প্রসার ও সমৃদ্ধকরণ ঘটেছে।[42]
বার্বারা হোল্ড্রেজ বলেন, বেদে মূলত চারটি অভিমুখে ব্রহ্মের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে: শব্দ তথা শ্লোক হিসেবে (শব্দব্রহ্ম)[43], সৃষ্টিতত্ত্বে বিধৃত জ্ঞান হিসেবে, সৃষ্টির নিজেরই প্রকাশ বা সৃষ্টির অভেদ হিসেবে এবং বহু ঐতিহ্যের সমন্বয় হিসেবে[44]। হ্যানা গুডম্যান বলেন, বেদে বর্ণিত ব্রহ্ম চরাচরে নিহিত পরম নীতিবিশেষ[45]। গেভিন ফ্লাড বলেন, বৈদিক যুগে ক্রমশ ব্রহ্ম শব্দের বিমূর্ত থেকে বিমূর্ততর ব্যাখ্যা হতে থাকে এবং এভাবেই প্রাথমিক শব্দ ও শ্লোকগত অর্থ বিস্তৃত হয়ে পরবর্তী "সর্বব্যাপী", "অখণ্ড", "অব্যয়" ও "সত্তার আধার (আত্মন্)" অর্থগুলির প্রচলন হয়েছে।[46]
উপনিষদে
উপনিষদের মূল আলোচ্য হল ব্রহ্মবিদ্যা ও আত্মবিদ্যা (আত্মন্ বা স্ব-সত্তাকে জানার বিদ্যা); এই দুই ধারণার সংজ্ঞা ও তৎসম্পর্কিত চর্চার প্রকৃতি।[49] উপনিষদগুলি এই বিষয়ে কোনও একক ও সুসংহত তত্ত্বের অবতারণা করে না, বরং বহুভাবে অনুধাবন করার যোগ্য অনেকগুলি সম্ভাব্য দিকনির্দেশ দেয়, যেগুলি থেকে পরবর্তী বৈদিক যুগে হিন্দুধর্মের বিভিন্ন শাস্ত্রীয় শাখার উদ্ভব হয়েছে।[50]
পল ডয়সনের মতে পরাবিদ্যা, তত্ত্ববিদ্যা ও মুক্তিতত্ত্বের বিভিন্ন আঙ্গিক থেকে উপনিষদে প্রাপ্ত ব্রহ্মের ধারণার ব্যাখ্যা করা যায়। এর সমর্থনে তিনি একাধিক উদ্ধৃতি তুলে ধরেছেন, যেমন "সৃষ্টিকে জন্মদান, রক্ষা ও লয়কারী আদিম সত্য"[51], "সৃষ্টির নীতিস্বরূপ"[52], "পরম সত্য"[53], "সীমিত অথচ অসীম"[54], "মহাজাগতিক নীতিস্বরূপ"[55], "সমস্ত দেবতাসহ সমগ্র বিশ্বের পরম কারণ"[56], "দৈব সত্তা, ঈশ্বর, পরমেশ্বর, বা আত্মস্থিত ঈশ্বর"[57], "পরম জ্ঞানস্বরূপ"[58], "সর্বমানবের অভ্যন্তরস্থ নির্ভীক, জ্যোতিস্বরূপ, শুদ্ধ ও মুক্ত আত্মজ্ঞান"[59], "আধ্যাত্মিক মুক্তি ও স্বনির্ভরতার সার"[60], "সর্বজীবের অন্তর্বিশ্ব ও বহির্বিশ্ব"[61] "চরাচরের অন্তরে, বাইরে ও সর্বত্র বিরাজমান সবকিছুর সারবত্তা"[62]।
গেভিন ফ্লাড উপনিষদে বিবৃত ব্রহ্মের ধারণার সারসংক্ষেপ করে বলেছেন - "অনন্ত বিশ্ব ও মহাজগতের ক্ষুদ্রতম কণা তথা অন্তঃসার", "বোধগম্য কিন্তু অদৃশ্য সব কিছুর সার", "সর্বমানব ও সর্বজীবের আত্মা", "সত্য", "বাস্তব", "পরম" ও "আনন্দ"।[63]
সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের মতে, উপনিষদের ঋষিরা ব্রহ্মকে ব্যাখ্যা করেছেন চক্ষুকর্ণের অগোচর সেই সমস্ত ঘটনাবলীর পরম সার হিসেবে যাদের শুধুমাত্র আত্মজ্ঞান লাভের মাধ্যমেই অনুধাবন করা সম্ভব।[64]
ব্রহ্মের ধারণার ব্যাখ্যার্থে বিভিন্ন উপনিষদে একাধিক "মহাবাক্য" রয়েছে[65], যথা:
বাক্য | উৎস উপনিষদ | অনুবাদ | সূত্রনির্দেশ |
---|---|---|---|
अहं ब्रह्म अस्मिঅহং ব্রহ্ম অস্মি | বৃহদারণ্যক উপনিষদ ১.৪.১০ | "আমি ব্রহ্ম" | [66] |
अयम् आत्मा ब्रह्मঅয়ম্ আত্মা ব্রহ্ম | বৃহদারণ্যক উপনিষদ ৪.৪.৫ | "এই আত্মা ব্রহ্ম" | [67] |
सर्वं खल्विदं ब्रह्मসর্বং খল্বিদং ব্রহ্ম | ছান্দোগ্য উপনিষদ ৩.১৪.১ | "এই সবকিছুই তো ব্রহ্ম" | [68] |
एकमेवाद्वितीयम्একমেবাদ্বিতীয়ম্ | ছান্দোগ্য উপনিষদ ৬.২.১ | "এক[ব্রহ্ম]-ই অদ্বিতীয়" | [69] |
तत्त्वमसिতত্ত্বমসি | ছান্দোগ্য উপনিষদ ৬.৪.৭ | "তুমিই সেই" ("তুমিই ব্রহ্ম") | [70][71] |
प्रज्ञानं ब्रह्मপ্রজ্ঞানং ব্রহ্ম | ঐতরেয় উপনিষদ ৩.৩.৭ | "জ্ঞান ব্রহ্ম" | [72] |
উপনিষদে ব্রহ্মের পরাবিদ্যাভিত্তিক বিস্তৃত আলোচনা আছে। অন্যতম প্রাচীনতম উপনিষদ ছান্দোগ্য উপনিষদের তৃতীয় অধ্যায়ের শাণ্ডিল্য সূত্র এই ক্ষেত্রে উল্লেখ্য।[73] শতপথ ব্রাহ্মণে বলা আছে আত্মনের অস্তিত্ব আছে, ব্রহ্ম ও আত্মন্ পরস্পর অভিন্ন, সুতরাং মানবের অন্তরেও ব্রহ্মের অধিষ্ঠান। এই উদ্ধৃতিগুলি হিন্দুধর্মের বহু অর্বাচীন শাস্ত্র ও আধুনিক দর্শনের আলোচনায় বহুল ব্যবহৃত।[74][75][76]
এই চরাচর ব্রহ্ম। একে নিভৃতে তজ্জলন হসেবে অর্চনা করতে হয়। (যা থেকে উৎপত্তি, যা তার প্রাণ এবং যাতে তার লয়)- ছান্দোগ্য উপনিষদ ৩.১৪.১[77][78]
মানব তার ক্রতুময়ের (क्रतुमयः ইচ্ছাশক্তি) জীব। অতঃপর এই ইচ্ছাশক্তিকে তার গোচরে আসতে দাও। যিনি জ্ঞানী, যাঁর শরীর জীবন-সূত্রের দ্বারা সম্পৃক্ত, যাঁর অবয়ব জ্যোতির্ময়, যাঁর চিন্তা সত্যচালিত, যাঁর আত্মা ব্যোম-সদৃশ (অদৃশ্য অথচ বর্তমান), যাঁর থেকে সর্বকর্ম, সর্ববাসনা, সর্ব ইন্দ্রিয় উৎপন্ন হয়ে চরাচরকে বেষ্টন করে রাখে, যিনি মৌন ও নির্বিকার, তিনিই আমি, আমার আত্মা, আমার অন্তরের সত্তা।- ছান্দোগ্য উপনিষদ ৩.১৪.১ থেকে ৩.১৪.৩[79][80]
এই আমার অন্তরতম আত্মা, এই পৃথিবীর চেয়ে বড়, এই আকাশের চেয়ে বড়, এই ব্রহ্মাণ্ডের চেয়ে বড়। এই আত্মা, এই আত্মসত্তাই হল সেই ব্রহ্ম।- ছান্দোগ্য উপনিষদ ৩.১৪.৩ থেকে ৩.১৪.৪[81][82]
পল ডয়সন দেখিয়েছেন যে উপরে উদ্ধৃত আত্মা সম্পর্কিত মতবাদ বহু শতাব্দী পরে খ্রিষ্টীয় তৃতীয় শতকে নব্য প্লেটোবাদী দার্শনিক প্লটিনাসের এনিয়াডেস গ্রন্থে পুনরাবৃত্ত হয়েছিল (এনিয়াডেস ৫.১.২)।[83]
আলোচনা
পরাবিদ্যার ধারণা হিসেবে ব্রহ্ম
হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন বিভাগে ব্রহ্মের ধারণাটি পরাবিদ্যার কেন্দ্রে অবস্থান করে। পরাবিদ্যার দুই মূল প্রশ্ন, যথা চরম সত্য কী, এবং সেই সত্যের স্বরূপ কী - এর আলোচনায় বার বার ব্রহ্মের ধারণার অবতারণা করা হয়।[84] বিভিন্ন প্রাচীন হিন্দু দর্শনে ব্রহ্ম হল সত্যের "চূড়ান্ত ও অব্যয়" রূপ, যেখানে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য মহাজগৎ কেবল মায়া। ব্রহ্ম ও মায়ার অস্তিত্ব পরস্পরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, এরা একত্রে মহাজাগতিক চেতনার প্রকাশ।[85]
ব্রহ্মের ধারণার পাশাপাশি হিন্দু দর্শনে পরম সত্যের আরেক প্রকাশ হিসেবে আত্মনের কথা বলা আছে।[86] হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন শাখা, বিশেষতঃ দ্বৈতবাদ ও অদ্বৈতবাদ আত্মনের প্রকৃতি ও তা ব্রহ্মের সাথে অভিন্ন কি না এই প্রশ্নে দ্বিমত পোষণ করে। যাঁরা ব্রহ্ম ও আত্মনকে পৃথক জ্ঞান করেন তারা দ্বৈতবাদী, এবং দ্বৈত বেদান্ত ও ন্যায়শাস্ত্রে তাদের দর্শনের ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।[87] অন্যদিকে যাঁরা ব্রহ্ম ও আত্মনকে অভিন্ন জ্ঞান করেন তারা একেশ্বরবাদী বা সর্বেশ্বরবাদী। অদ্বৈত বেদান্ত ও পরবর্তীতে রচিত যোগ ও সাংখ্য দর্শনে[88] পরাবিদ্যার এই শাখার ব্যাখ্যা উপলভ্য।[89][90][91] উপনিষদের মূল শিক্ষা হল প্রতিটি মানুষের আত্মার সাথে অন্য সমস্ত মানুষ, অন্য সমস্ত জীব এবং পরম সত্য ব্রহ্মের একাত্মতার চেতনা জাগ্রত করার শিক্ষা।[92][93]
অদ্বৈত বেদান্ত ইত্যাদি দর্শনে আত্মন ও ব্রহ্মের অভেদ নির্ণয় করা হলেও সেখানে ব্রহ্মের দুই প্রকাশ হিসেবে সগুণ ব্রহ্ম ও নির্গুণ ব্রহ্মের কথাও বলা আছে।[94] নির্গুণ ব্রহ্ম বলতে ব্রহ্মের প্রকৃত স্বরূপকে বোঝায়, যা ধারণার অতীত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করতে সাহায্য করার জন্য সগুণ ব্রহ্মের কল্পনা করা হয়। অবশ্য হিন্দু দর্শনশাস্ত্রগুলো এ'কথাও বলে দেয় যে, সগুণ ব্রহ্ম প্রকৃতপক্ষে ভ্রমাত্মক।[95] সগুণ ব্রহ্মের বিভিন্ন রূপের মধ্যে আছে বিভিন্ন অবতারের ধারণা। এই ধরনের প্রতীক কল্পনার মাধ্যমে সাধনার আরম্ভে সাধকের উপকার হয়, কিন্তু সাধনার উচ্চতর পর্যায়ে আর এর প্রয়োজন থাকে না।[96]
তথ্যসূত্র
- লখ্টফেল্ড, জেম্স জি (২০০২)। হিন্দুধর্মের সচিত্র বিশ্বকোষ (ইংরেজি ভাষায়)। 1। The Rosen Publishing Group। পৃষ্ঠা 122। আইএসবিএন 978-0823931798।
- পি টি রাজু (২০০৬), ভারতের আদর্শবাদী চিন্তা, রুৎলেজ, আইএসবিএন ৯৭৮-১৪০৬৭৩২৬২৭, পৃষ্ঠা ৪২৬ এবং ১২শ খণ্ডের উপসংহার
- Fowler 2002, পৃ. 49-55 (উপনিষদে), 318-319 (বিশিষ্টাদ্বৈতে), 246-248 এবং 252-255 (অদ্বৈতে), 342-343 (দ্বৈতে), 175-176 (সাংখ্য-যোগে)।
- মারিয়াসুসাই ধাবামণি (২০০২), হিন্দু-খৃষ্টান কথোপকথন: ধর্মতাত্ত্বিক বক্তব্য ও আঙ্গিক, রোডোপি প্রকাশন, আইএসবিএন ৯৭৮-৯০৪২০১৫১০৪, পৃ ৪৩-৪৪
- হিন্দুধর্মের দ্বৈতবাদী শাখার জন্য, দেখুন: ফ্রান্সিস এক্স. ক্লুনি (২০১০), হিন্দু ভগবান, খৃষ্টান ভগবান: কেমন করে যুক্তি ধর্মে ধর্মে বিভেদ ভাঙতে সাহায্য করে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশন, আইএসবিএন ৯৭৮-০১৯৯৭৩৮৭২৪, পৃ ৫১-৫৮, ১১১-১১৫;
হিন্দুধর্মের একেশ্বরবাদী শাখার জন্য, দেখুন: বি মার্টিনেজ-বেদার্দ (২০০৬), অ্যারিস্টটল ও শঙ্করাচার্যের তত্ত্বে কারণের প্রকারভেদ, সন্দর্ভ - ধর্মতত্ত্ব চর্চা বিভাগ (উপদেষ্টৃবৃন্দ: ক্যাথরিন ম্যাক্ক্লিমণ্ড ও সান্ড্রা ডোয়াইয়ার), জর্জিয়া রাজ্য বিশ্ববদ্যালয়, পৃ ১৮-৩৫ - Fowler 2002, পৃ. 53-55।
- Brodd, Jeffrey (২০০৯)। World Religions: A Voyage of Discovery (3rd সংস্করণ)। Saint Mary's Press। পৃষ্ঠা 43–47। আইএসবিএন 978-0884899976।
- Fowler 2002, পৃ. 50-53।
- Paul Deussen, Sixty Upanishads of the Veda, Volume 1, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১৪৬৮৪, page 91
- Stephen Philips (1998), Routledge Encyclopedia of Philosophy: Brahman to Derrida (Editor; Edward Craig), Routledge, আইএসবিএন ৯৭৮-০৪১৫১৮৭০৭৭, pages 1-4
- Goodman, Hananya (১৯৯৪)। Between Jerusalem and Benares: Comparative Studies in Judaism and Hinduism। State University of New York Press। পৃষ্ঠা 121। আইএসবিএন 978-0791417164।
- Raju 1992, পৃ. 228।
- Eliot Deutsch (1980), Advaita Vedanta : A Philosophical Reconstruction, University of Hawaii Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৮২৪৮০২৭১৪, Chapter 1
- Potter 2008, পৃ. 6-7।
- Brodd, Jefferey (২০০৩)। World Religions। Winona, MN: Saint Mary's Press। আইএসবিএন 978-0-88489-725-5।
- John Bowker (ed.)(2012), The Oxford Dictionary of World Religions, Oxford University Press.
- Fowler 2002, পৃ. 49-53।
- Klaus K. Klostermaier (2007), A Survey of Hinduism, Third Edition, State University of New York Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৭৯১৪৭০৮২৪, Chapter 12: Atman and Brahman - Self and All
- Michael Myers (2000), Brahman: A Comparative Theology, Routledge, আইএসবিএন ৯৭৮-০৭০০৭১২৫৭১, pages 124-127
- Thomas Padiyath (2014), The Metaphysics of Becoming, De Gruyter, আইএসবিএন ৯৭৮-৩১১০৩৪২৫৫০, pages 155-157
- Arvind Sharma (2007), Advaita Vedānta: An Introduction, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮২০২৭২, pages 19-40, 53-58, 79-86
- John E. Welshons (2009), One Soul, One Love, One Heart, New World Library, আইএসবিএন ৯৭৮-১৫৭৭৩১৫৮৮৯, pages 17-18
- Puligandla 1997, পৃ. 222।
- Sinari 2000, পৃ. 384।
- Not Masculine or Feminine (see Grammatical gender).
- Jan Gonda (1962), Some Notes on the Study of Ancient-Indian Religious Terminology, History of Religions, Vol. 1, No. 2 (Winter, 1962), pages 268-269
- Barbara Holdrege (১৯৯৫), বেদ এবং তোরা: Transcending the Textuality of Scripture, State University of New York Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৭৯১৪১৬৪০২, page 29
- Maurice Bloomfield, A Vedic Concordance, Harvard University Press, pages 656-662
- Original: वयमग्ने अर्वता वा सुवीर्यं ब्रह्मणा वा चितयेमा जनाँ अति । अस्माकं द्युम्नमधि पञ्च कृष्टिषूच्चा स्वर्ण शुशुचीत दुष्टरम् ॥१०॥ Source: ऋग्वेद: सूक्तं २.२ Wikisource
- Original: स तु श्रुधीन्द्र नूतनस्य ब्रह्मण्यतो वीर कारुधायः । त्वं ह्यापिः प्रदिवि पितॄणां शश्वद्बभूथ सुहव एष्टौ ॥८॥ ऋग्वेद: सूक्तं ६.२१ Wikisource
- Original: ब्रह्मणस्पतिरेता सं कर्मार इवाधमत् । देवानां पूर्व्ये युगेऽसतः सदजायत ॥२॥ ऋग्वेद: सूक्तं १०.७२ Wikisource
- Jan Gonda (1962), Some Notes on the Study of Ancient-Indian Religious Terminology, History of Religions, Vol. 1, No. 2 (Winter, 1962), pages 269-271
- Jan Gonda (1962), Some Notes on the Study of Ancient-Indian Religious Terminology, History of Religions, Vol. 1, No. 2 (Winter, 1962), pages 271-272
- See Rigveda Chapter 1.164; Karl Potter and Harold Coward, The Philosophy of the Grammarians, Encyclopedia of Indian Philosophies: Volume 5, Motilal Banarsidass Publishers, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮০৪২৬৫, pages 34-35
- Barbara Holdrege (1995), Veda and Torah: Transcending the Textuality of Scripture, State University of New York Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৭৯১৪১৬৪০২, page 24
- Gavin Flood (1996), An Introduction to Hinduism, Cambridge University Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৫২১৪৩৮৭৮০, pages 84-85
- Lindsay Jones (2005), Encyclopedia of religion, Volume 13, Macmillan Reference, আইএসবিএন ৯৭৮-০০২৮৬৫৭৩৩২, page 8894, Quote: "In Hindu iconography the swan personifies Brahman-Atman, the transcendent yet immanent ground of being, the Self."
- Denise Cush (2007), Encyclopedia of Hinduism, Routledge, আইএসবিএন ৯৭৮-০৪১৫৫৫৬২৩১, page 697
- R Prasad and P.D. Chattopadhyaya (2008), A Conceptual-analytic Study of Classical Indian Philosophy of Morals, Concept, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১৮০৬৯৫৪৪৫, page 56
- Paul Deussen, Sixty Upanishads of the Veda, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১৪৬৭৭, page 243, 325-344, 363, 581
- Paul Deussen, Sixty Upanishads of the Veda, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১৪৬৭৭, page 358, 371
- Paul Deussen, Sixty Upanishads of the Veda, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১৪৬৭৭, page 305, 476
- Paul Deussen, Sixty Upanishads of the Veda, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১৪৬৭৭, pages 110, 315-316, 495, 838-851
- Paul Deussen, Sixty Upanishads of the Veda, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১৪৬৭৭, pages 211, 741-742
- Paul Deussen, Sixty Upanishads of the Veda, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১৪৬৭৭, pages 308-311, 497-499
- Paul Deussen, Sixty Upanishads of the Veda, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১৪৬৭৭, pages 181, 237, 444, 506-544, 570-571, 707, 847-850
- Paul Deussen, Sixty Upanishads of the Veda, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১৪৬৭৭, pages 52, 110, 425, 454, 585-586, 838-851
- Paul Deussen, Sixty Upanishads of the Veda, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১৪৬৭৭, pages 173-174, 188-198, 308-317, 322-324, 367, 447, 496, 629-637, 658, 707-708
- Paul Deussen, Sixty Upanishads of the Veda, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১৪৬৭৭, pages 600, 619-620, 647, 777
- pp.77, Radhakrishnan, S, The Principal Upanisads, HarperCollins India, 1994
- Jones, Constance (২০০৭)। Encyclopedia of Hinduism। New York: Infobase Publishing। পৃষ্ঠা 270। আইএসবিএন 0816073368।
- Sanskrit and English Translation: S Madhavananda, Brihadaranyaka Upanishad 1.4.10, Brihadaranyaka Upanishad - Shankara Bhashya, page 145
- Sanskrit and English Translation: S Madhavananda, Brihadaranyaka Upanishad 4.4.5, Brihadaranyaka Upanishad - Shankara Bhashya, pages 711-712
- Sanskrit: छान्दोग्योपनिषद् १.१ ॥तृतीयॊऽध्यायः॥ Wikisource English Translation:Max Muller, Chandogya Upanishad 3.14.1 Oxford University Press, page 48; Max Muller, গুগল বইয়ে The Upanisads, Routledge, pages xviii-xix
- Sanskrit: छान्दोग्योपनिषद् १.२ ॥षष्ठोऽध्यायः॥ Wikisource English Translation:Max Muller, Chandogya Upanishad 6.2.1 Oxford University Press, page 93; Max Muller, গুগল বইয়ে The Upanisads, Routledge, pages xviii-xix
- Sanskrit: छान्दोग्योपनिषद् १.२ ॥षष्ठोऽध्यायः॥ Wikisource English Translation:Robert Hume, Chandogya Upanishad 6.8, The Thirteen Principal Upanishads, Oxford University Press, pages 246-250
- AS Gupta, The Meanings of "That Thou Art", Philosophy East and West, Vol. 12, No. 2, pages 125-134
- Sanskrit: ऐतरेयोपनिषद् Wikisource English Translation:Max Muller, Aitareya Upanishad 3.3.7, also known as Aitareya Aranyaka 2.6.1.7 Oxford University Press, page 246
- Chandogya Upanishad with Shankara Bhashya Ganganath Jha (Translator), pages 150-157
- For modern era cites:
- Anthony Warder (2009), A Course in Indian Philosophy, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১২৪৪৪, pages 25-28;
- DD Meyer (2012), Consciousness, Theatre, Literature and the Arts, Cambridge Scholars Publishing, আইএসবিএন ৯৭৮-১৪৪৩৮৩৪৯১৯, page 250;
- Joel Brereton (1995), Eastern Canons: Approaches to the Asian Classics (Editors: William Theodore De Bary, Irene Bloom), Columbia University Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০২৩১০৭০০৫৮, page 130;
- S Radhakrishnan (1914), The Vedanta philosophy and the Doctrine of Maya, International Journal of Ethics, Vol. 24, No. 4, pages 431-451
- Robert Hume, Chandogya Upanishad 3.14.1-3.14.4, The Thirteen Principal Upanishads, Oxford University Press, pages 209-210
- Paul Deussen, Sixty Upanishads of the Veda, Volume 1, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১৪৬৮৪, pages 110-111 with preface and footnotes
- Max Muller, Chandogya Upanishad 3.13.7, The Upanishads, Part I, Oxford University Press, page 48 with footnotes
- Edward Craig (1998), Metaphysics, Routledge Encyclopedia of Philosophy, আইএসবিএন ৯৭৮-০৪১৫০৭৩১০৩, Accessed (June 13, 2015)
- Archibald Edward Gough (2001), The Philosophy of the Upanishads and Ancient Indian Metaphysics, Routledge, আইএসবিএন ৯৭৮-০৪১৫২৪৫২২৭, pages 47-48
- Roy W. Perrett (Editor, 2000), Indian Philosophy: Metaphysics, Volume 3, Taylor & Francis, আইএসবিএন ৯৭৮-০৮১৫৩৩৬০৮২, page xvii; KK Chakrabarti (1999), Classical Indian Philosophy of Mind: The Nyaya Dualist Tradition, State University of New York Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০৭৯১৪৪১৭১৮ pages 279-292
- John C. Plott et al (2000), Global History of Philosophy: The Axial Age, Volume 1, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮০১৫৮৫, pages 60-62
- Julius Lipner (2004), The Hindu World (Editors: S Mittal and G Thursby), Routledge, আইএসবিএন ০৪১৫২১৫২৭৭, pages 22-23
- Laurie Patton (2004), The Hindu World (Editors: S Mittal and G Thursby), Routledge, আইএসবিএন ০৪১৫২১৫২৭৭, pages 45-50
- JD Fowler (1996), Hinduism: Beliefs and Practices, Sussex University Press, আইএসবিএন ৯৭৮-১৮৯৮৭২৩৬০৮, pages 135-137
- William Indich (2000), Consciousness in Advaita Vedanta, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮১২৫১২, page 5
- Paul Hacker (1978), Eigentumlichkeiten dr Lehre und Terminologie Sankara: Avidya, Namarupa, Maya, Isvara, in Kleine Schriften (Editor: L. Schmithausen), Franz Steiner Verlag, Weisbaden, pages 101-109 (in German), also pages 69-99; Advaita Vedanta - A Bird's Eye View, Topic III: Philosophy of Advaita Vedanta, D. Krishna Ayyar (2011)
- Anantanand Rambachan (2001), Heirarchies in the Nature of God? Questioning The "Saguna-Nirguna" Distinction in Advaita Vedanta, Journal of Hindu-Christian Studies, Vol. 14, No. 7, pages 1-6
- William Wainwright (2012), Concepts of God, Stanford Encyclopedia of Philosophy, Stanford University, (Accessed on: June 13, 2015)
টীকা
- "not sublatable",[16] the final element in a dialectical process which cannot be eliminated or annihilated (German: "aufheben").
- It is also defined as:
- The unchanging, infinite, immanent, and transcendent reality which is the Divine Ground of all matter, energy, time, space, being, and everything beyond in this Universe; that is the one supreme, universal spirit.[17]
- The one supreme, all pervading Spirit that is the origin and support of the phenomenal universe.[18]
- Saguna Brahman, with qualities
- Nirguna Brahman, without qualities
- Supreme