আত্মা (দর্শন)
আত্মা হল কোন জীবের অংশ যা কোন শরীর নয়। দেহ যখন জীবিত থাকে, তখন এর ভেতরে একটি আত্মা থাকে। আর মৃত্যুর সময় আত্মা দেহ থেকে বেরিয়ে যায়।
খ্রিস্টানরা বিশ্বাস করে যে, স্বর্গে এবং নরকে আত্মা বাস করে।(দেখুন ১ তিমোথি ৩:১৬, ৪:১)
আধ্যাত্মিক বিশেষজ্ঞগণ বিশ্বাস করেন যে, আত্মা মানুষের সাথে কথা বলতে পারে এবং পৃথিবীর যে কোন জিনিসকে বদলে দিতে পারে। অনেক ধর্ম এ ধরনের আত্মার সাথে সকল অবস্থায় যোগাযোগ করতে নিষেধ করে (দেখুন লেভিটিকাস ১৯:৩১) কিন্তু কিছু ধর্ম আবার একে তাদের রীতিনীতির অংশ হিসেবে চর্চা করে।
বিভিন্ন ধর্মে আত্মা
হিন্দু ধর্ম
হিন্দু বিশ্বাসমতে "আত্মা" হল চিৎকণা, যাহা মানুষ, পশুু, উদ্ভিদ, জল, স্থল, অন্তরীক্ষ সর্বত্র পরিব্যাপ্ত । এই আত্মার অপর নাম পরমাত্মা বা পরমেশ্বর নয় । পরমাত্মা হল পরমেশ্বর ভগবানের এক বিশেষ রূপ । প্রতিটি জীবের হৃদয়ে জীবাত্মা(আত্মা) ও পরমাত্মা উভয়ই বতর্মান । পরমাত্মার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ এসে জীবাত্মায় যখন প্রোথিত হয় তখন জীব তার জীবন লাভ করে । আবার জীবের মৃত্যুর পর সে আত্মা আবার পরমাত্মার কাছে চলে যায় এবং পরমাত্মার সাথে বিলীন হয় । এটি হল সাযুজ্য মুক্তি । এতে কোনো আনন্দ নেই । কিন্তু, আত্মা যদি তার জীবিত অবস্হায় ধর্ম বা পাপ অর্জন করে, তখন সে তার কর্মফল ভোগ করার জন্য স্বর্গ অথবা নরক ভোগ করে, অথবা, যোনী ভ্রমন করে পশু যোণী বা উদ্ভিদ যোণী প্রাপ্ত হয়, কিছু সময়ের জন্য। ঐ সময়ে সে তার পূর্ব জন্ম-অর্জিত পূণ্য বা পাপ বিনষ্ট করে আবার পবিত্র হয়ে ষায়, এবং পরমাত্মার কাছে গিয়ে তার সহিত বিলীন হয়ে যায়। পরমাত্মা, দেবাত্মা, মানবআত্মা অর্থাৎ জীবাত্মা, প্রেতাত্মা (ভূত) - এই চারি প্রকার আত্মার মধ্যে দেবাত্মা হল পরমাত্মা দ্বারা নিযোজিত শক্তি। যাহারা এক একটি সময়ে অাসেন এবং আবার ফিরে পরমাত্মার কাছে চলে যান। অন্যদিকে, প্রেতাত্মা হল এমন একটি আত্মা যাহা পরমাত্মা এর কাছে ফিরে যাবার পথ খুজে পাচ্ছে না বা কর্মফল জনিত কারনে দীর্ঘ সময়ের সাজা ভুগছে। কখনও কখনও সে নিজে ঈশ্বর হবার প্রয়াস করে মনুষ্যগনকে অলৈকিক কিছু দেখিয়ে তার ভজন, নাম কীত্তন করাতে তার ধর্ম গ্রহণে মানুষকে প্ররোচিত করে। এবং পরমাত্মার কাছে মানুষ যাতে যেতে না পারে, এবং তার নিজের তৈরী স্বর্গেতে নিয়ে যাবার প্রযত্ন করে। এভাবে সে কম শক্তিশালী মানবদেরকে ঈশ্বরের রাস্তা থেকে বিচ্যুত করতে প্রযত্ন করে।
জীবাত্মা ও পরমাত্মার সম্বন্ধে সঠিক জানতে ধর্মীয় বই পড়ুন। হিদু ধর্ম হিসেবে, জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হল প্রভুপ্রেম লাভ করা ।