ফেনী নদী
ফেনী নদী বাংলাদেশেরএকটি আঞ্চলিক নদী।[1] নদীটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ফেনী, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৫৩ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৫৯ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক ফেনী নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী নং ১২।[2]
ফেনী নদী | |
দেশ | বাংলাদেশ |
---|---|
অঞ্চল | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলাসমূহ | ফেনী জেলা খাগড়াছড়ি জেলা, চট্টগ্রাম জেলা |
উৎস | ত্রিপুরা |
মোহনা | সন্দ্বীপ চ্যানেল |
দৈর্ঘ্য | ১৫৩ কিলোমিটার (৯৫ মাইল) |
উৎসমুখ ও পতিত মুখ
এক পাশে পার্বত্য রামগড় ও চট্টগ্রামের মিরসরাই, আরেক পাশে ফেনীর ছাগলনাইয়া। মাঝে ফেনী নদী। খাগড়াছড়ি’র পার্বত্য মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ির মধ্যবর্তী “ভগবান” টিলা থেকে ছড়া নেমে আসে ভাটির দিকে। আর আসালং-তাইন্দং দ্বীপ থেকে রূপ নেয় ফেনী নদী নামে। ভগবানটিলার পর আসালং তাইন্দং এসে প্রাকৃতিকভাবে প্রবাহিত ছড়াকে কেটে ভারতের ভেতরে প্রবেশ করানো হয়েছে। [3]
প্রবাহপথ
ফেনী নদী মাটিরাংগা ও পান ছড়ি এর মধ্যবর্তী ২৩°২০´ উত্তর অক্ষাংশ ও ৯২°২০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে উৎপন্ন হয়ে রামগড় পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে ত্রিপুরা রাজ্য ও পার্বত্য চট্টগ্রামের মধ্যে সীমান্তরেখা এঁকে দিয়েছে। পরবর্তীতে পশ্চিমে আলীগঞ্জ পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে ত্রিপুরা ও চট্টগ্রামের মধ্যকার সীমান্ত তৈরি করেছে। পাহাড়ি নিবাস ত্যাগ করে ফেনী জেলা থেকে চট্টগ্রামকে বিভক্তকারী এই নদী সমভূমি ধরে প্রবাহিত হয়ে ২২°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ ও ৯১°২৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।[3]
বর্ণনা
উৎসমূল থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত ফেনী নদীর দৈর্ঘ্য ১১৫.৮৫ কিমি এবং বঙ্গোপসাগর থেকে রামগড় পর্যন্ত ৮০.৪৫ কিমি অংশ বছরের গোটা সময় ধরে ছোট নৌকা চলাচলের উপযোগী। বর্ষা মৌসুমে ফেনী নদী কানায়-কানায় ভরে ওঠে এবং ভারি বর্ষণের পর প্রবল স্রোত আর ঘূর্ণিপাকে এই নদীর প্রতিটি বাঁক প্রমত্ত ও উত্তাল হয়ে ওঠে। নোয়াখালী জেলার মুহুরী নদী, যা ছোট ফেনী নদী নামেও পরিচিত, ফেনী নদীর মোহনায় এসে মিলিত হয়েছে। তবে চট্টগ্রাম জেলা থেকে কোন উপনদী এটির সঙ্গে এসে মিলিত হয়নি। পাহাড়ি ঢাল থেকে যথেচ্ছভাবে গাছপালা কেটে নেওয়ায় পাহাড়ি অঞ্চলে ব্যাপক ধস ও ভাঙনের কারণে নদীটি ধীরে ধীরে ভরাট হয়ে আসছে এবং পাহাড়ি ঢল জনিত বন্যার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে।[3]
বিতর্ক
চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মধ্যে সীমানা চিহ্নিতকারী ফেনী নদী মূলত বাংলাদেশের অন্তর্গত। তবে ১৯৬০ সাল থেকে ভারত সরকার এই নদীর মধ্যভাগ পর্যন্ত ভারতের অধীনে দাবি করে আসছে।[3]
তথ্যসূত্র
- । ১৬ জুন ২০য়েবসাইট=বাংলাপিডিয়া। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য);|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য); - মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী"। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি (প্রথম সংস্করণ)। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ৩০৩-৩০৪। আইএসবিএন 984-70120-0436-4।
- সিফাতুল কাদের চৌধুরী (জানুয়ারি ২০০৩)। "ফেনী নদী"। সিরাজুল ইসলাম। ফেনী নদী[[বাংলাপিডিয়া]]। ঢাকা: এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশ। আইএসবিএন 984-32-0576-6। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ১৫, ২০১৫। ইউআরএল–উইকিসংযোগ দ্বন্দ্ব (সাহায্য)