তুরস্ক

তুরস্ক (/ˈtɜːrki/ (শুনুন); তুর্কী: Türkiye), সরকারী নাম প্রজাতন্ত্রী তুরস্ক (Turkish: Türkiye Cumhuriyeti বা ত্যুর্কিয়ে জুম্‌হুরিয়েতি ), পূর্ব ইউরোপের একটি রাষ্ট্র। তুরস্কের প্রায় পুরোটাই এশীয় অংশে, পর্বতময় আনাতোলিয়া (তুর্কি: Antalya আন্তালিয়া) বা এশিয়া মাইনর উপদ্বীপে পড়েছে। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা আনাতোলিয়াতেই অবস্থিত। তুরস্কের বাকী অংশের নাম পূর্ব বা তুর্কীয় থ্রাস এবং এটি ইউরোপের দক্ষিণ-পূর্ব কোনায় অবস্থিত। এই অঞ্চলটি উর্বর উঁচু নিচু টিলাপাহাড় নিয়ে গঠিত। এখানে তুরস্কের বৃহত্তম শহর ইস্তানবুল অবস্থিত। সামরিক কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তিনটি জলপথ এশীয় ও ইউরোপীয় তুরস্ককে পৃথক করেছে --- মার্মারা সাগর, এবং বসফরাস প্রণালীদার্দানেল প্রণালী। এই তিনটি জলপথ একত্রে কৃষ্ণ সাগর থেকে এজীয় সাগরে যাবার একমাত্র পথ তৈরি করেছে।[6][7]

তুরস্ক প্রজাতন্ত্র
ত্যুর্কিয়ে জুম্‌হুরিয়েতি  (তুর্কি)
পতাকা
নীতিবাক্য: "গৃহে শান্তি, বিশ্বে শান্তি"
জাতীয় সঙ্গীত: 
  • "İstiklâl Marşı"
  • "স্বাধীনতার মার্চ"
তুরস্কের অবস্থান
রাজধানীআঙ্কারা
৩৯°৫৫′ উত্তর ৩২°৫০′ পূর্ব
বৃহত্তম শহর ইস্তাম্বুল
৪১°১′ উত্তর ২৮°৫৭′ পূর্ব
সরকারি ভাষা তুর্কি
কথ্য ভাষাসমূহ ধারা দেখুন[1]
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ
সরকার ঐক্যমূলক সংসদীয় সাংবিধানিক গণতন্ত্র
   রাষ্ট্রপতি রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান
   প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম
আইন-সভা গ্র্যান্ড জাতীয় সমাবেশ
ধারাবাহিকতা অটোমান সাম্রাজ্যে[note 1]
   গ্র্যান্ড জাতীয় সমাবেশের সরকার ২৩শে এপ্রিল ১৯২০ 
   লুসেনির চুক্তি ২৪শে জুলাই ১৯২৩ 
   প্রজাতন্ত্রের ঘোষণা ২৯শে অক্টোবর ১৯২৩ 
   বর্তমান সংবিধান ৭শে নভেম্বর ১৯৮২ 
আয়তন
   মোট ৭,৮৩,৩৫৬ কিমি (৩৭তম)
৩,০২,৫৩৫ বর্গ মাইল
   জল/পানি (%) ১.৩
জনসংখ্যা
   ২০১৬ আদমশুমারি ৭৯,৪৬৩,৬৬৩[2] (১৮তম)
   ঘনত্ব ১০২ [2]/কিমি (১০৭তম)
২৬২/বর্গ মাইল
মোট দেশজ উৎপাদন
(ক্রয়ক্ষমতা সমতা)
২০১৬ আনুমানিক
   মোট $১.৬৬৫ ট্রিলিয়ন[3] (১৭তম)
   মাথা পিছু $২১,১৯৮[3] (৬০তম)
মোট দেশজ উৎপাদন (নামমাত্র) ২০১৬ আনুমানিক
   মোট $৭৫১ বিলিয়ন[3] (১৮তম)
   মাথা পিছু $৯,৫৬২ [3] (৬২তম)
জিনি সহগ (২০১৩) 40.0[4]
মাধ্যম · ৫৬তম
মানব উন্নয়ন সূচক (২০১৪) 0.৭৬১[5]
উচ্চ · ৭২তম
মুদ্রা তুর্কি লিরা (TRY)
সময় অঞ্চল (ইউটিসি+৩)
তারিখ বিন্যাস dd/mm/yyyy (AD)
গাড়ী চালনার দিক ডানদিক
কলিং কোড +৯০
ইন্টারনেট টিএলডি .tr

তুরস্ক মোটামুটি চতুর্ভুজাকৃতির। এর পশ্চিমে এজীয় সাগর ও গ্রিস; উত্তর-পূর্বে জর্জিয়া, আর্মেনিয়া ও স্বায়ত্বশাসিত আজারবাইজানি প্রজাতন্ত্র নাখচিভান; পূর্বে ইরান; দক্ষিণে ইরাক, সিরিয়াভূমধ্যসাগর। তুরস্কের রয়েছে বিস্তৃত উপকূল, যা দেশটির সীমান্তের তিন-চতুর্থাংশ গঠন করেছে।

তুরস্কের ভূমিরূপ বিচিত্র। দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পশ্চিমে আছে উর্বর সমভূমি। পশ্চিমে আছে উঁচু, অনুর্বর মালভূমি। পূর্বে আছে সুউচ্চ পর্বতমালা। দেশের অভ্যন্তরের জলবায়ু চরমভাবাপন্ন হলেও ভূমধ্যসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলের জলবায়ু মৃদু।

ইউরোপ সঙ্গমস্থলে অবস্থিত বলে তুরস্কের ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিবর্তনে বিভিন্ন ধরনের প্রভাব পড়েছে। গোটা মানবসভ্যতার ইতিহাস জুড়েই তুরস্ক এশিয়া ও ইউরোপের মানুষদের চলাচলের সেতু হিসেবে কাজ করেছে। নানা বিচিত্র প্রভাবের থেকে তুরস্কের একটি নিজস্ব পরিচয়ের সৃষ্টি হয়েছে এবং এই সমৃদ্ধ সংস্কৃতির প্রভাব পড়েছে এখানকার স্থাপত্য, চারুকলা, সঙ্গীত ও সাহিত্যে। গ্রামীণ অঞ্চলে এখনও অনেক অতীত ঐতিহ্য ও রীতিনীতি ধরে রাখা হয়েছে। তবে তুরস্ক বর্তমানে একটি আধুনিক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এখানকার অধিকাংশ লোকের ধর্ম ইসলাম এবং মুখের ভাষা তুর্কি ভাষা।

বহু শতাব্দী ধরে তুরস্ক ছিল মূলত কৃষিপ্রধান একটি দেশ। বর্তমানে কৃষিখামার তুরস্কের অর্থনীতির একটি বড় অংশ এবং দেশের শ্রমশক্তির ৩৪% এই কাজে নিয়োজিত। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে তুরস্কে শিল্পসেবাখাতের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে, বিশেষত অর্থসংস্থান, পরিবহন, এবং পেশাদারী ও সরকারি সেবায়। অন্যদিকে কৃষির ভূমিকা হ্রাস পেয়েছে। টেক্সটাইল ও বস্ত্র শিল্প দেশের রপ্তানির প্রধান উৎস।

অর্থনৈতিক রূপান্তরের সাথে সাথে নগরায়নের হারও অনেক বেড়েছে। বর্তমানে তুরস্কের ৭৫% জনগণ শহরে বাস করে। ১৯৫০ সালেও মাত্র ২১% শহরে বাস করত। জনসংখ্যার ৯০% তুরস্কের এশীয় অংশে বাস করে। বাকী ১০% ইউরোপীয় অংশে বাস করে।

তুরস্কের ইতিহাস দীর্ঘ ও ঘটনাবহুল। প্রাচীনকাল থেকে বহু বিচিত্র জাতি ও সংস্কৃতির লোক এলাকাটি দখল করেছে।[8] ১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে এখানে হিটাইটদের বাস ছিল। তাদের সময়েই এখানে প্রথম বড় শহর গড়ে ওঠে। এরপর এখানে ফ্রিজীয়, গ্রিক, পারসিক, রোমান এবং আরবদের আগমন ঘটে।[9][10][11] মধ্য এশিয়ার যাযাবর তুর্কি জাতির লোকেরা ১১শ শতকে দেশটি দখল করে এবং এখানে সেলজুক রাজবংশের পত্তন করে।[12] তাদের শাসনের মাধ্যমেই এই অঞ্চলের জনগণ তুর্কি ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে মিশে যায়। ১৩শ শতকে মোঙ্গলদের আক্রমণে সেলজুক রাজবংশের পতন ঘটে। ১৩ শতকের শেষ দিকে এখানে উসমানীয় সাম্রাজ্যের পত্তন হয়।[13] এরা পরবর্তী ৬০০ বছর তুরস্ক শাসন করে এবং আনাতোলিয়া ছাড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্য, পূর্ব ইউরোপ এবং উত্তর আফ্রিকার এক বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃতি লাভ করে।[14] প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর সাম্রাজ্যটির পতন ঘটে।[15]

১৯২৩ সালে উসমানীয় সাম্রাজ্যের তুর্কিভাষী এলাকা আনাতোলিয়া ও পূর্ব থ্রাস নিয়ে মুস্তাফা কেমাল (পরবর্তীতে কেমাল আতাতুর্ক)-এর নেতৃত্বে আধুনিক তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা হয়। ১৯৩৮ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আতাতুর্ক তুরস্কের রাষ্ট্রপতি ছিলেন।[16] তিনি একটি শক্তিশালী, আধুনিক ইউরোপীয় রাষ্ট্র হিসেবে তুরস্কের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। তার সরকারের মূলনীতিগুলি কেমালবাদ নামে পরিচিত এবং এগুলি পরবর্তী সমস্ত তুরস্ক সরকারের জন্য নির্দেশিকা হিসেবে কাজ করেছে। আতাতুর্কের একটি বিতর্কিত মূলনীতি ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা। কেমালের কট্টর অনুসারীরা মনে করেন ব্যক্তিগত জীবনের বাইরে ধর্মের স্থান নেই এবং রাজনৈতিক দলগুলির ধর্মীয় ইস্যু এড়িয়ে চলা উচিত।

১৯৫০-এর দশক থেকে রাজনীতিতে ধর্মের ভূমিকা তুরস্কের একটি বিতর্কিত ইস্যু।[17] তুরস্কের সামরিক বাহিনী নিজেদেরকে কেমালবাদের রক্ষী বলে মনে করে এবং তারা ১৯৬০, ১৯৭১, ১৯৮০ এবং ১৯৯৭ সালে মোট চারবার তুরস্কের রাজনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতার স্বার্থে হস্তক্ষেপ করেছে।[18][19][20][21]

ইতিহাসে তুর্কিদের অভ্যুদয়

১৩৫ খ্রিস্টাব্দে ইফালাসে রোমান সাম্রাজ্য কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সেলসিয়াসের গ্রন্থাগার।
৬ষ্ঠ শতকে প্রথম জাস্টিনিয়ান কর্তৃক নির্মিত হাজিয়া সোফিয়া গির্জা, যা পরবর্তীতে ১৯৫৩ সালে মসজিদে রূপান্তর করা হয়।

তুর্কিদের প্রাচীন ইতিহাস পুরোপুরিভাবে ইতিহাসের আলোয় উজ্জ্বল নয়। এর কিছুটা লোকশ্রুতি ও কিংবদন্তির নিচে চাপা পড়েছে। কিছু দিন আগেও কোনো কোনো ঐতিহাসিক মনে করতেন তুর্কিরা উরালীয়-আলতীয় ভাষাভাষী গোষ্ঠীগুলোর অন্যতম। আধুনিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, ফিনিস, এস্তোনীয়, হাঙ্গেরীয় প্রভৃতি উরাক্ষীয় ভাষার সাথে তুর্কি, মঙ্গোলিয়ান, মাঞ্জু-তুগু ও কোরীয় ভাষার মতো আলতাই ভাষা গোষ্ঠীর খুব বেশি যোগাযোগ নেই। তবে এ কথা প্রায় সব ঐতিহাসিক স্বীকার করেন যে, মোঙ্গল, মাঞ্জু বালগার এবং সম্ভবত হানদের মতো তুর্কিরাও বৃহৎ আলতীয় মানব গোষ্ঠীর অন্তর্গত।[22][23]

বাইফলে হ্রদের দক্ষিণে এবং গোটা মরুভূমির উত্তরে তাদের প্রথম পদচারণা। চৈনিক সূত্র থেকে জানা যায়, চীন সাম্রাজ্যের প্রান্তদেশে এক বৃহৎ যাযাবর গোষ্ঠী বসবাস করত। এদের মধ্যে মোঙ্গল ও তুর্কি জাতির লোক ছিল বলে অনুমান করা হয়। এসব দলের মাঝে নিরন্তর অন্তর্দ্বন্দ্ব লেগে ছিল। এবং ষষ্ঠ শতকে এ ধরনের যুদ্ধবিগ্রহের মধ্যে আমরা তুর্কি নামক দলের সন্ধান পাই। চৈনিক ঐতিহাসিকরা এদের ‘তু-কিউ’ নামে অভিহিত করেছেন।[22]

তোপকাপি ও দল্মাবাহাসে প্রাসাদ, অটোম্যান সুলতানদের প্রধান ও কেন্দ্রীয় আবাসস্থল।[24][25]

সপ্তম শতকে আরবদের ইরান বিজয়ের পর কিছু কিছু তুর্কি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে এবং ইসলামি রাজ্যের মধ্যে বসবাস শুরু করে। নবম ও দশম শতকে এই যুদ্ধপ্রিয় তুর্কিদের অনেকে সৈন্য বিভাগে ও শাসনযন্ত্রের অন্যান্য বিভাগে প্রবেশ করতে শুরু করে। দশম শতকে তুর্কিদের বেশির ভাগই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে।[22][26] এদের মধ্যে সেলজুক তুর্কিরা উল্লেখযোগ্য। অর্ধ-পৃথিবীর মহান সুলতান তুঘরিল বেগ ও তুর্কি জাতির অন্তর্ভুক্ত, তুর্কিতেই উনার জন্ম। [27] ১২৪৩ সালে সেলজুকরা মঙ্গোলদের কাছে পরাজিত হয়। এতে তুর্কি সুলতানদের ক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়ে। পরে প্রথম ওসমান ওসমানীয় সাম্রাজ্যের সূচনা করেন। তার বংশধররা পরবর্তী ৬০০ বছর শাসন করে। এ সময় তারা তুরস্কে পূর্ব ও পশ্চিমা সংস্কৃতির সমন্বয় ঘটলে ১৬ ও ১৭ শতকে তুরস্ক বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশগুলোর একটি ছিল।

১৯১৪ সালে তুরস্ক অক্ষশক্তির পক্ষে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয় এবং পরাজিত হয়। মূলত নিজের ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্যই তুরস্ক এ যুদ্ধে অংশ নেয়। এ সময় চারটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্রন্টে তুর্কি বাহিনী নিয়োজিত ছিল। ফ্রন্ট চারটি হলো দার্দানেলিস, সিনাই-প্যালেস্টাইন, মেসোপটেমিয়া ও পূর্ব আনাতোলিয়া। যুদ্ধের শেষের দিকে প্রতিটি ফ্রন্টেই তুর্কি বাহিনী পরাজিত হয়। তুর্কি বাহিনীর মধ্যে এ সময় হতাশা দেখা দেয়। প্রতিটি ফ্রন্টে পর্যুদস্ত তুরস্কের পক্ষে যুদ্ধবিরতি গ্রহণ করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় ছিল না। ১৯১৮ সালের অক্টোবর মাসের ৩১ তারিখে তুর্কি ও ব্রিটিশ প্রতিনিধিরা লেমনস দ্বীপের সমুদ্র বন্দরে অবস্থিত ব্রিটিশ নৌবাহিনীর ‘আগামেমনন’ জাহাজে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।[22]

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের পর অটোমান সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। খণ্ডবিখণ্ড হয়ে পড়ে তুরস্ক। খণ্ডিত তুরুস্কের মূল ভূখণ্ডেই পরে গড়ে ওঠে আধুনিক তুরস্ক। এর পত্তন করেন মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক[28] তাকে আধুনিক তুরস্কের জন্মদাতা বলা হয়।[29] এর ফলে পতন ঘটে ৬০০ বছরের ওসমানীয় সাম্রাজ্যের। একই সাথে মুসলিম বিশ্ব থেকে বিলুপ্তি ঘটে খিলাফত ব্যবস্থার। [30][31] কামাল আতাতুর্ক ক্ষমতা গ্রহণের পর তুরস্ককে একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে ব্যাপক সংস্কার কর্মসূচি হাতে নেন। তার অনেক পদক্ষেপই ছিল তুরস্কের ইসলামপন্থী জনগণের চেতনাবিরোধী। তার পরও সংস্কার ছিল অপরিহার্য। ১৯২৩ সালে তিনি তুরস্ককে একটি প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করেন। আর তিনি হন সে প্রজাতন্ত্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট। এভাবেই যাত্রা শুরু হয় একটি আধুনিক তুরস্কের।[22]

১৯৪৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি দেশটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগ দেয়। মূলত উদ্ভূত কিছু পরিস্থিতি মোকাবেলায় এর কোনো বিকল্প ছিল না দেশটির সামনে। যুদ্ধের পর দেশটি জাতিসঙ্ঘে ও ন্যাটোতে যোগ দেয়।[32] এ সময় থেকে তুরস্কে বহুদলীয় রাজনীতির প্রবর্তন হয়। ১৯৬০ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করে। ফলে ১৯৬০, ১৯৭১ ও ১৯৮০ সালে তুরস্কে সামরিক অভ্যুত্থান হতে দেখা যায়। দেশটিতে সর্বশেষ সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে ১৯৯৭ সালে।[18][19][22][33][34][35] কিন্তু পরে আবার দেশটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে আসে।[36][37] কিন্তু ২০১৩তে গাজি পার্কের বিক্ষোভ[38] ও ২০১৫তে সুরুক বোমা হামলা[39] পুনরায় অস্থিরতার জন্ম দেয়।সর্বশেষ ২০১৬ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করা হয় তবে শেষ পর্যন্ত তুর্কি জনগনের ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে তা ব্যার্থ হয়।বর্তমানে দেশটিতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকার রয়েছে।

সেলযুক তুর্কি

রাজনীতি

বিনালি ইলদিরিম
প্রধানমন্ত্রী

তুরস্কের রাজনীতি একটি বহুদলীয় সংসদীয় প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কাঠামোয় সংঘটিত হয়। সরকারপ্রধান হলেন প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা সরকারের উপর ন্যস্ত। আইন প্রণয়নের ক্ষমতা সরকার এবং আইনসভা উভয়ের উপর ন্যস্ত।[40] তুরস্কে ৫৫০ আসনের একটি সংসদ আছে, যার সদস্যরা ৫ বছরের জন্য জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। সংখ্যাগরিষ্ঠ দল সরকার গঠন করে এবং সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতিকে ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত করেন। রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান দেশটির বর্তমান রাষ্ট্রপতি এবং বিনালি ইলদিরিম দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তুরস্কের সংবিধানের সর্বশেষ সংশোধনে ধর্মনিরপেক্ষতাকে জোর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।[41]

প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ

প্রশাসনিক সুবিধার্থে তুরস্ককে ৮১টি প্রদেশে বিভক্ত করা হয়েছে।[22] সব বিভাগ আবার সাতটি অঞ্চলে বিভক্ত। তবে এই সাতটি অঞ্চল কোনো প্রশাসনিক বিভাজন নয়।[42] প্রতিটি প্রদেশ কয়েকটি করে জেলায় বিভক্ত। তুরস্কে মোট জেলা আছে ৯২৩টি।[43] প্রতিটি প্রদেশের নামই সেই প্রদেশের রাজধানীর নাম। আর প্রতিটি প্রাদেশিক রাজধানী সংশ্লিষ্ট প্রদেশের কেন্দ্রীয় জেলা। সবচেয়ে বড় শহর ইস্তাম্বুল। এটি হচ্ছে তুরস্কের বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রবিন্দু। তুর্কি জনগণের প্রায় ৭০ দশমিক ৫ শতাংশ লোক শহরে বসবাস করে।[22]

ভূগোল

তুরস্কের ভৌগোলিক মানচিত্র

তুরস্ক দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার আনাতোলিয়া উপদ্বীপের সম্পূর্ণ অংশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের বলকান উপদ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তের অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত। ফলে ভৌগলিকভাবে দেশটি একই সাথে ইউরোপ ও এশিয়ার অন্তর্ভুক্ত।[44] আলাতোলীয় অংশটি তুরস্কের প্রায় ৯৭% আয়তন গঠন করেছে। এটি মূলত একটি পর্বতবেষ্টিত উচ্চ মালভূমি। আনাতোলিয়ার উপকূলীয় এলাকায় সমভূমি দেখতে পাওয়া যায়। তুরস্কের দক্ষিণ-ইউরোপীয় অংশটি ত্রাকিয়া নামে পরিচিত; এটি আয়তনে তুরস্কের মাত্র ৩% হলেও এখানে তুরস্কের ১০% জনগণ বাস করে।[45] এখানেই তুরস্ক ও গোটা ইউরোপের সবচেয়ে জনবহুল শহর ইস্তানবুল অবস্থিত (জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ১৩ লক্ষ)। ভূমধ্যসাগর ও কৃষ্ণ সাগরকে সংযুক্তকারী বসফরাস প্রণালী, মর্মর সাগর ও দার্দানেল প্রণালী ত্রাকিয়া ও আনাতোলিয়াকে পৃথক করেছে।

অর্থনীতি

১৯৩৭ সালের ৯ই অক্টোবরে নাযিল্লির একটি টেক্সটাইল ফ্যাক্টরি পরিদর্শনরত অবস্থায় কামাল আতাতুর্ক ও সেলাল বায়ার।
তুরস্কের বেঁকো ও ভেস্টেল হল ইউরোপের অন্যতম ইলেক্ট্রনিকস ও প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।

১৯২৩ সালে তুরস্ক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর দেশটিতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। পরবর্তী ছয় দশকব্যাপী অর্থাৎ ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত সে উন্নয়ন প্রচেষ্টা একই ধারাবাহিকতায় চলতে থাকে। এরপর অধিকতর উন্নয়নের জন্য ১৯৮৩ সালে সংস্কার কর্মসূচি হাতে নেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তুরগুত ওজাল। তিনি বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করেন এবং বাজার অর্থনীতির প্রসার ঘটান।[22] এই সংস্কারের ফলে প্রবৃদ্ধি বাড়তে থাকে। কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ১৯৯৪ সালে এই প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়। ১৯৯৯ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ফলে অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা লাগে। এসব সমস্যার কারণে ১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত গড় প্রবৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ৪ শতাংশ। ২০০১ সালের সৃষ্ট অর্থনৈতিক সমস্যার পর নতুন করে সংস্কার কর্মসূচি শুরু করেন অর্থমন্ত্রী কামাল দারবিশ। তার সংস্কারের ফলে মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্ব অনেক কমে যায়। তুরস্ক তার বাজার ধীরে ধীরে মুক্ত করতে শুরু করে। ২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত প্রবৃদ্ধির হার ছিল গড়ে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০০৮ সালে দেশটির প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ।[22]

২০০৯ সালে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কা তুরস্কেও লাগে। দেশটির অর্থমন্ত্রী জানান, এ বছর ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ হচ্ছে ২৩ দশমিক ২ বিলিয়ন তুর্কি লিরা। ২০০৭ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী তুরস্কে মোট জাতীয় আয়ের ৮ দশমিক ৯ শতাংশ আসে কৃষি থেকে, ৩০ দশমিক ৮ শতাংশ আসে শিল্পখাত থেকে এবং ৫৯ দশমিক ৩ শতাংশ আসে সেবাখাত থেকে।[22][46] তুরস্কের পর্যটন শিল্প দেশটির অর্থনীতিতে বড় ধরনের অবদান রেখে চলছে। ২০০৮ সালে দেশটিতে পর্যটকের সংখ্যা ছিল তিন কোটি ৯ লাখ ২৯ হাজার ১৯২ জন। যাদের কাছ থেকে কর আদায় হয় দুই হাজার ১৯০ কোটি ডলার।[22] এ ছাড়া তুর্কি অর্থনীতির অন্যান্য খাতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ব্যাংকিং খাত, নির্মাণ খাত, গার্মেন্টস, বিদ্যুৎ, তেল, পরিশোধন, খাদ্য, লোহা, স্টিল, অটোমোটিভ ইত্যাদি। ২০১২ সালের হিসাব অনুযায়ী অটোমোটিভ তৈরির দিক থেকে তুরস্কের অবস্থান বিশ্বে ১৭তম।[46] সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি ব্যাপকভাবে কমে এসেছে। ১৯৯৫ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে এক চুক্তি করে তুরস্ক।[47] ২০০৭ সালে বিদেশী বিনিয়োগ থেকে তুরস্কের আয় হয়েছে দুই হাজার ১৯০ কোটি ডলার।

পররাষ্ট্রনীতি

তুরস্ক ও ইউরোপের সম্পর্কের মানচিত্র।[48]

জাতিসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তুরস্ক।[49] এ ছাড়া ওইসিডি[50], ওআইসি[51], ওএসসিই[52], ইসিও,[53] বিএসইসি[54], ডি-৮[55] এবং জি২০[56] ইত্যাদি সংগঠনের সদস্য তুরস্ক। ২০০৮ সালের ১৭ অক্টোবর তুরস্ক ১৫১টি দেশের সমর্থন পেয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য নির্বাচিত হয়। তার এ সদস্যপদ ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়। এর আগেও তুরস্ক জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য ছিল ১৯৫১-১৯৫২, ১৯৫৪-১৯৫৫ এবং ১৯৬১ সালে।[57] পশ্চিমাদের সাথে সম্পর্ক, বিশেষ করে ইউরোপের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখাই তুরস্কের পররাষ্ট্রনীতির মূল কাজ। কাউন্সিল অব ইউরোপের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তুরস্ক। দেশটি ১৯৫৯ সালে ইইসি’র সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করে এবং ১৯৬৩ সালে দেশটি সংস্থাটির সহযোগী সদস্যের মর্যাদা পায়।[22] ১৯৮৭ সালে তুরস্ক ইইসি’র পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার জন্য আবেদন করে। ১৯৯২ সালে ওয়েস্টার্ন ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর সহযোগী সদস্যপদ লাভ করে। দেশটি ইইউ’র পূর্ণ সদস্যপদ লাভের জন্য ১৯৯৫ সালে একটি চুক্তি করে। এ চুক্তি অনুসারে ২০০৫ সালের ৩ অক্টোবর সমঝোতা শুরু হয়। তবে সে সমঝোতা এখনো শেষ হয়নি।[48][58] ধারণা করা হচ্ছে গ্রিক সাইপ্রাসকে কেন্দ্র করে ইউরোপের অন্যান্য দেশের সাথে তুরস্কের যে বিরোধ তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সমঝোতা চলতেই থাকবে।[22][59]

এ ছাড়া তুর্কি পররাষ্ট্রনীতির আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক।[60][61] এখানে উভয় দেশেরই অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। আর তা হলো সোভিয়েত আগ্রাসন মোকাবেলা। আর সে লক্ষ্যে তুরস্ক ১৯৫২ সালে ন্যাটোতে যোগ দেয়।[62] এর মাধ্যমে দেশটি ওয়াশিংটনের সাথে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গড়ে তুলে। স্নায়ুযুদ্ধের পর তুরস্ক মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে নিজেকে জড়িয়ে ফেলে। ইরাক ও সিরিয়া সীমান্তের কাছে তুরস্কে ন্যাটোর বিমান ঘাঁটি রয়েছে। ইসরাইলের সাথেও তুরস্কের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৮০ সালের পর তুরস্ক পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে।[22][63] বিশেষ করে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে বড় ধরনের লেনদেনে জড়ায় দেশটি। আর এসব ক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল সমর্থন পেয়েছে তুরস্ক।[22][64]

সামরিক শক্তি

ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে তুরস্কের প্রতিরক্ষা বাহিনী হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহত্তম। একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেরই রয়েছে তুরস্কের চেয়ে বড় প্রতিরক্ষা শক্তি। তুরস্ক ১৯৫২ সালে ন্যাটোতে যোগ দেয়।[65]

সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী নিয়ে তুরস্কের প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠিত। জেন্ডারমেরি ও কোস্টগার্ডরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করলেও যুদ্ধের সময় এরা যথাক্রমে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর কমান্ড অনুসরণ করে। এ সময় বাহিনী দু’টিতে নিজস্ব আইন কার্যকর থাকলেও এরা সামরিক কিছু নিয়মকানুন মেনে চলে।[66]

ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে তুরস্কের প্রতিরক্ষা বাহিনী হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহত্তম।[65]]] একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেরই রয়েছে তুরস্কের চেয়ে বড় প্রতিরক্ষা শক্তি।[67] তুরস্কে প্রতিরক্ষা বিভাগে মোট ১০ লাখ ৪৩ হাজার ৫৫০ জন সামরিক সদস্য রয়েছে। ন্যাটোভুক্ত যে পাঁচটি দেশ যৌথ পরমাণু কর্মসূচি গ্রহণ করেছে তুরস্ক তার অন্যতম সদস্য। বাকি দেশগুলো হলো বেলজিয়াম, জার্মানি, ইতালি ও নেদারল্যান্ড।[68] প্রতিরক্ষা বিভাগকে আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালে তুরস্ক ১৬ হাজার কোটি ডলারের কর্মসূচি গ্রহণ করে।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিশনে তুর্কি বাহিনী কাজ করছে। জাতিসঙ্ঘ ও ন্যাটোর অধীনেই তারা বিভিন্ন মিশনে অংশ নিচ্ছে। জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর অধীনে তুর্কি বাহিনীর সদস্যরা বর্তমানে সোমালিয়ায় কাজ করছে। এ ছাড়া সাবেক যুগোস্লাভিয়ায় শান্তি মিশনে ও প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধে যৌথ বাহিনীর সাথে সহায়তা করেছে। বর্তমানে তুর্কি স্বীকৃত সাইপ্রাসে ৩৬ হাজার তুর্কি সেনা দায়িত্ব পালন করছে এবং ন্যাটো নেতৃত্বাধীন বাহিনীর সাথে ২০০১ সাল থেকে আফগানিস্তানেও দায়িত্ব পালন করছে তুর্কি সেনারা। ইসরাইল-লেবানন সঙ্ঘাত এড়াতে জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতায় ২০০৬ সালে সংশ্লিষ্ট এলাকায় তুরস্ক কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ ও ৭০০ সৈন্য মোতায়েন করে।[22]

দেশটির সেনাপ্রধানকে নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট কিন্তু তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দায়বদ্ধ। জাতীয় নিরাত্তার ব্যাপারে দেশটির মন্ত্রিপরিষদ পার্লামেন্টের কাছে দায়বদ্ধ। কোনো যুদ্ধ ঘোষণা, বিদেশে সৈন্য প্রেরণ কিংবা দেশের ভেতরে বিদেশী সৈন্যদের ঘাঁটি স্থাপন প্রত্যেকটি বিষয়েই পার্লামেন্টের অনুমোদন লাগে।[66]

ভাষা

তুর্কি ভাষা তুরস্কের সরকারি ভাষা। এখানকার প্রায় ৯০% লোক তুর্কি ভাষাতে কথা বলেন।[69] এছাড়াও এখানে আরও প্রায় ৩০টি ভাষা প্রচলিত। এদের মধ্যে আদিগে,আরবি[69], আর্মেনীয়, আজারবাইজানি, জর্জীয়, কুর্দি (প্রায় ৪০ লক্ষ বক্তা), এবং রোমানি উল্লেখযোগ্য। আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ডে ইংরেজি ব্যবহার করা হয়।[70]

জনসংখ্যা ও শিক্ষা

তুরস্কে শতকরা কুর্দি জনসংখ্যা (২০১০)[71]
ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয় তুরস্কের প্রথম প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়।[72]

তুরস্কের জনসংখ্যা প্রায় সাত কোটি ১৫ লাখ।[73] দেশটির জন্মহার গড়ে ১ দশমিক ৩১।[74] প্রতি বর্গকিলোমিটারে এর জনসংখ্যা ৯২ জন। এর মধ্যে শহরে বসবাস করে ৭০ দশমিক ৫ জন। ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী লোক রয়েছে ৬৬ দশমিক ৫ শতাংশ। শূন্য থেকে ১৪ বছরে বয়সী লোকের সংখ্যা ২৬ দশমিক ৪ শতাংশ। ৬৫ বছরের বেশি বয়সী লোকের সংখ্যা ৭ দশমিক ১ শতাংশ।[75] সিআইএ ফ্যাক্টবুক অনুসারে তুর্কি পুরুষের গড় আয়ু ৭০ দশমিক ৬৭ বছর ও মহিলাদের গড় আয়ু ৭৫ দশমিক ৭৩ বছর। মোট জনসংখ্যার গড় আয়ু ৭৩ দশমিক ১৪ বছর। ৬ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য শিক্ষা বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক। শিক্ষার হার পুরুষের ৯৫ দশমিক ৩ শতাংশ ও নারীদের ৭৯ দশমিক ৬ শতাংশ। গড় শিক্ষার হার ৮৭ দশমিক ৪ শতাংশ।[76] তুর্কি সংবিধানের ৬৬ নম্বর আর্টিক্যাল অনুসারে, ‘তুরস্কের নাগরিকত্ব যাদের আছে তারাই তুর্কি বলে পরিচিত।[77]

শিল্প ও সাহিত্য

উসমান হামদি বে'র আঁকা দ্য টরটইজ ট্রেইনার।

তুর্কি সাহিত্য ও অন্যান্য রচনায় ইসলামি বিশ্বের ছাপ স্পষ্ট।[78] তুর্কি সাহিত্যে পারসিক ও আরব সাহিত্যের প্রভাব লক্ষ করা যায়। এক সময় তুর্কি লোকসাহিত্যে ইউরোপীয় সাহিত্যের প্রভাব বেড়ে গেলেও এখন তা আবার ধীরে ধীরে কমছে।

ধর্ম ও সংস্কৃতি

সেমা চলাকালীন সময়ের দারভিশ (দরবেশ) নৃত্য।[79]
তুর্কি রিভেরিয়াতেই এর অধিকাংশ বিচ রিসোর্ট অবস্থিত।

বর্তমানকালে তুরস্ক একটি সাংবিধানিক ধর্মনিরপেক্ষ দেশ যার কোন রাষ্ট্রধর্ম নেই এবং সংবিধানে এর প্রতিটি নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তায় গুরুত্তারোপ করা হয়েছে।[80][81] তবে পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তুরস্কের ৯৬.৫ শতাংশ লোক ইসলাম ধর্মাবলম্বী[20][82][83] ০.৩ শতাংশ খ্রিস্টান ও ৩.২ শতাংশ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।[84] তুরস্কের সংস্কৃতি বৈচিত্র্যময়। গ্রিক, রোমান, ইসলামিক ও পশ্চিমা সংস্কৃতির মিশ্রণে তাদের একটি সংকর সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে।[85][86] অটোমান সম্রাটদের সময় তুরস্কে পশ্চিমা সংস্কৃতি ভিড়তে থাকে এবং আজও তা দেশটিতে অব্যাহত আছে। ১৯২৩ সালে তুরস্ক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সময় সাংস্কৃতিক জগতের আধুনিকায়নে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করা হয়। ললিতকলার বিভিন্ন শাখায় বিশেষ করে জাদুঘর, থিয়েটার, অপেরা হাউজ এবং অন্যান্য স্থাপত্যসহ বিভিন্ন শাখায় এসব বিনিয়োগ করা হয়। প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর আধুনিক জাতীয় রাষ্ট্রে রূপ দেয়ার লক্ষ্যে তুরস্কে ধর্মকে রাষ্ট্রীয় জীবন থেকে পৃথক করা হয়। তবে দীর্ঘদিন পর সে ব্যবস্থায় আবার পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে।[85]

খেলাধুলা

তুরস্কের জাতীয় বাস্কেটবল দল ২০১০ FIBA বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্য পদক অর্জন করে।

তুরস্কে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা হচ্ছে ফুটবল।[87] ফুটবলে তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য হচ্ছে ২০০২ সালে জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বকাপে তৃতীয় স্থান অর্জন।[88] সর্বশেষ সাফল্য হিসেবে তুরস্ক ফুটবল দলটি ২০০৮ সালের ইউরো কাপের সেমিফাইনালে উঠতে সক্ষম হয়। অন্যান্য খেলার মধ্যে বাস্কেটবল ও ভলিবল খেলা খুব জনপ্রিয়। ২০০১ সালে ইউরো বাস্কেটবলের আয়োজক দেশ ছিল তুরস্ক। ওই টুর্নামেন্টে তুরস্ক দল দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে।[22][89][90] এ ছাড়া ভলিবলেও তাদের অর্জন খুব ভালো। তবে তুরস্কের জাতীয় খেলা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী ইয়াগলি গুরেস বা অয়েলড রেসলিং।[91] অটোমানদের সময় থেকেই এ খেলাকে জাতীয় খেলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। তুরস্কের জাতীয় রেসলাররা বিশ্ব ও অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। এ ছাড়া অন্যান্য খেলার মধ্যে ভারোত্তোলন এবং মোটর রেসিং তুর্কিদের খুবই প্রিয়। ভারোত্তোলনে তুর্কিরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। এ ক্ষেত্রে তারা অলিম্পিক পদক ও ইউরোপিয়ান পদকও জিতেছে কয়েকবার।[92]

আরও দেখুন

তুরস্ক প্রবেশদ্বার

নোটসমূহ

  1. লুসেনির চুক্তি বর্ণিত নিয়ম

তথ্যসূত্র

  1. Lewis, M. Paul (ed.) (2016)। "Turkey"Ethnologue: Languages of the World। SIL International। সংগ্রহের তারিখ ৩১-১০-২০১৬ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  2. "The Results of Address Based Population Registration System, 2015"Turkish Statistical Institute। ২৮ জানুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০১৬
  3. "Report for Selected Countries and Subjects"। IMF World Economic Outlook Database, April 2016। ২৪ এপ্রিল ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৬
  4. "Gini Coefficient by Equivalised Household Disposable Income"। Turkstat। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১৫
  5. "2015 Human Development Report" (PDF)। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫
  6. National Geographic Atlas of the World (7th সংস্করণ)। Washington, D.C.: National Geographic। ১৯৯৯। আইএসবিএন 0-7922-7528-4। "Europe" (pp. 68–69); "Asia" (pp. 90–91): "A commonly accepted division between Asia and Europe ... is formed by the Ural Mountains, Ural River, Caspian Sea, Caucasus Mountains, and the Black Sea with its outlets, the Bosporus and Dardanelles."
  7. "The Economist: "Turkey in the Balkans: The good old days?""। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০১১
  8. Stiner, Mary C.; Kuhn, Steven L.; Güleç, Erksin। "Early Upper Paleolithic shell beads at Üçağızlı Cave I (Turkey): Technology and the socioeconomic context of ornament life-histories"। Journal of Human Evolution64 (5): 380–398। doi:10.1016/j.jhevol.2013.01.008। PMID 23481346আইএসএসএন 0047-2484
  9. Douglas Arthur Howard। The History of Turkey। Greenwood Publishing Group। পৃষ্ঠা xiv–xx। আইএসবিএন 978-0-313-30708-9। সংগ্রহের তারিখ ২ এপ্রিল ২০১৩
  10. Sharon R. Steadman; Gregory McMahon (১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১)। The Oxford Handbook of Ancient Anatolia: (10,000–323 BC)। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 3–11, 37। আইএসবিএন 978-0-19-537614-2। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০১৩
  11. Casson, Lionel (১৯৭৭)। "The Thracians" (PDF)The Metropolitan Museum of Art Bulletin35 (1): 2–6। doi:10.2307/3258667
  12. Metz, Helen Chapin, সম্পাদক (১৯৯৬)। "Turkish Origins"Turkey: A Country Study। Area handbook series (fifth সংস্করণ)। Washington D.C.: United States Government Publishing Office for the Federal Research Division of the Library of Congressআইএসবিএন 0-8444-0864-6। এলসিসিএন 95049612
  13. Mehmet Fuat Köprülü&Gary Leiser। The origins of the Ottoman Empire। পৃষ্ঠা 33।
  14. "Ottoman/Turkish Visions of the Nation, 1860–1950"। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
  15. Roderic H. Davison; Review "From Paris to Sèvres: The Partition of the Ottoman Empire at the Peace Conference of 1919–1920" by Paul C. Helmreich in Slavic Review, Vol. 34, No. 1 (Mar. 1975), pp. 186–187
  16. "Turkey, Mustafa Kemal and the Turkish War of Independence, 1919–23"। Encyclopædia Britannica। ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১০-২৯
  17. Steunebrink, Gerrit; van der Zweerde, Evert (২০০৪)। Civil Society, Religion, and the Nation: Modernization in Intercultural Context : Russia, Japan, Turkey। Rodopi। পৃষ্ঠা 175–184। আইএসবিএন 978-90-420-1665-1। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুন ২০১৩
  18. Hale, William Mathew (১৯৯৪)। Turkish Politics and the Military। Routledge, UK। পৃষ্ঠা 161, 215, 246। আইএসবিএন 0-415-02455-2।
  19. Arsu, Sebsem (এপ্রিল ১২, ২০১২)। "Turkish Military Leaders Held for Role in '97 Coup"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১১, ২০১৪
  20. "Turkey"। The World Factbook। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩
  21. "What really matters about Multiculturalism in Turkey by Rabee Al-Hafidh"todayszaman.com। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
  22. Qposter। "তুরস্ক – Country Information"www.qposter.com। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৫
  23. D. M. Lewis; John Boardman (১৯৯৪)। The Cambridge Ancient History। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 444। আইএসবিএন 978-0-521-23348-4। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০১৩
  24. Simons, Marlise (১৯৯৩-০৮-২২)। "Center of Ottoman Power"New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৪
  25. "Dolmabahce Palace"dolmabahcepalace.com। সংগ্রহের তারিখ ৪ আগস্ট ২০১৪
  26. Rafis Abazov (২০০৯)। Culture and Customs of Turkey। Greenwood Publishing Group। পৃষ্ঠা 1071। আইএসবিএন 978-0-313-34215-8। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মার্চ ২০১৩
  27. Craig S. Davis. "The Middle East For Dummies" আইএসবিএন ০৭৬৪৫৫৪৮৩২ p 66
  28. Gerhard Bowering; Patricia Crone; Wadad Kadi; Devin J. Stewart; Muhammad Qasim Zaman; Mahan Mirza (২৮ নভেম্বর ২০১২)। The Princeton Encyclopedia of Islamic Political Thought। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 49। আইএসবিএন 978-1-4008-3855-4। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৩Following the revolution, Mustafa Kemal became an important figure in the military ranks of the Ottoman Committee of Union and Progress (CUP) as a protégé ... Although the sultanate had already been abolished in November 1922, the republic was founded in October 1923. ... ambitious reform programme aimed at the creation of a modern, secular state and the construction of a new identity for its citizens.
  29. Mango, Andrew (২০০০)। Atatürk: The Biography of the Founder of Modern Turkey। Overlook। পৃষ্ঠা lxxviii। আইএসবিএন 1-58567-011-1।
  30. Axiarlis, Evangelia (২০১৪)। Political Islam and the Secular State in Turkey: Democracy, Reform and the Justice and Development Party। I.B. Tauris। পৃষ্ঠা 11।
  31. Clogg, Richard (২০ জুন ২০০২)। A Concise History of Greece। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 101। আইএসবিএন 978-0-521-00479-4। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩
  32. Uslu, Nasuh (২০০৩)। The Cyprus question as an issue of Turkish foreign policy and Turkish-American relations, 1959–2003। Nova Publishers। পৃষ্ঠা 119। আইএসবিএন 978-1-59033-847-6। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১১
  33. "Turkey's PKK peace plan delayed"। BBC। ১০ নভেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১০
  34. "Still critical"17 (2)। Human Rights Watch। মার্চ ২০০৫: 3। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-১২
  35. Baser, Bahar (২০১৫)। Diasporas and Homeland Conflicts: A Comparative Perspective। Ashgate Publishing। পৃষ্ঠা 63। আইএসবিএন 1472425626।
  36. Sebnem Arsu (২৫ এপ্রিল ২০১৩)। "Kurdish Rebel Group to Withdraw From Turkey"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৩
  37. "Murat Karayilan announces PKK withdrawal from Turkey"। BBC। ২৫ এপ্রিল ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৩
  38. Mullen, Jethro; Cullinane, Susannah (৪ জুন ২০১৩)। "What's driving unrest and protests in Turkey?"CNN। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০১৩
  39. "Turkish jets target Kurds in Iraq, Islamic State militants in Syria"Fox News। ২৯ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ আগস্ট ২০১৫
  40. Turkish Directorate General of Press and Information (১৭ অক্টোবর ২০০১)। "Turkish Constitution"। Turkish Prime Minister's Office। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০০৬
  41. Çarkoğlu, Ali (২০০৪)। Religion and Politics in Turkey। Routledge, UK। আইএসবিএন 0-415-34831-5।
  42. "Why was Turkey divided into seven geographical regions?"todayszaman.com। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
  43. "Turkey Districts"। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৪
  44. Immerfall, Stefan (১ আগস্ট ২০০৯)। Handbook of European Societies: Social Transformations in the 21st Century। Springer। পৃষ্ঠা 417। আইএসবিএন 978-0-387-88198-0। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১১
  45. Metz, Helen Chapin, সম্পাদক (১৯৯৬)। "Geography"Turkey: A Country Study। Area handbook series (fifth সংস্করণ)। Washington D.C.: United States Government Publishing Office for the Federal Research Division of the Library of Congressআইএসবিএন 0-8444-0864-6। এলসিসিএন 95049612
  46. "2012 Production Statistics"। Organisation Internationale des Constructeurs d'Automobiles। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০১৩
  47. Bartolomiej Kaminski; Francis Ng (১ মে ২০০৬)। "Turkey's evolving trade integration into Pan-European markets" (PDF)। World Bank। পৃষ্ঠা 3। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০০৬
  48. "Chronology of Turkey-EU relations"। Turkish Secretariat of European Union Affairs। ১৫ মে ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০০৬
  49. "The United Nations Organization and Turkey"mfa.gov.tr। ১৫ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  50. "Turkey's Relations with the Organization for Economic Co-operation and Development (OECD)"mfa.gov.tr। ১৫ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  51. "The Republic of Turkey and The Organization of The Islamic Conference"mfa.gov.tr। ১৪ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  52. "The Organization for Security and Co-operation in Europe (OSCE)"mfa.gov.tr। ১৫ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  53. "Turkey's relations with the Economic Cooperation Organization (ECO)"mfa.gov.tr। ১৬ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  54. "The Black Sea Economic Cooperation Organization (BSEC)"mfa.gov.tr। ১৫ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  55. "D8"mfa.gov.tr। ১৫ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  56. "G-20"mfa.gov.tr। ১৫ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  57. "Türkiye'nin üyeliği kabul edildi"Hürriyet Daily News। ১৭ অক্টোবর ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১০
  58. "Erdoğan: AB'ye tam üyelik, Türkiye'nin stratejik hedefidir (Turkish)/Erdogan:EU membership, Turkey's strategic target"Zaman। ২০১০-০৮-১২। ২০১৪-০১-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১২-১৯
  59. Mardell, Mark (১১ ডিসেম্বর ২০০৬)। "Turkey's EU membership bid stalls"। BBC। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ২০০৬
  60. "False Friends. Why the United States Is Getting Tough With Turkey"foreignaffairs.com। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৫
  61. "Turkey: Background and U.S. Relations" (PDF)fas.org। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৫
  62. Richmond, Oliver P. (১৯৯৮)। Mediating in Cyprus: The Cypriot Communities and the United Nations। Psychology Press। পৃষ্ঠা 260। আইএসবিএন 978-0-7146-4877-4। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩
  63. İdris Bal (২০০৪)। Turkish Foreign Policy in Post Cold War Era। Universal-Publishers। পৃষ্ঠা 269। আইএসবিএন 978-1-58112-423-1। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুন ২০১৩
  64. Ziya Öniş, ŞuhnazYılmaz। "Turkey-EU-US Triangle in Perspective: Transformation or Continuity?" (PDF)istanbul2004.ku.edu.tr/। ১৬ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ আগস্ট ২০১৪
  65. "Turkey's Relations with NATO"mfa.gov.tr। ২২ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  66. Turkish General Staff (২০০৬)। "Turkish Armed Forces Defense Organization"। Turkish Armed Forces। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০০৬
  67. "Financial and Economic Data Relating to NATO Defence" (PDF)। NATO। ১৩ এপ্রিল ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০১৩
  68. "Der Spiegel: Foreign Minister Wants US Nukes out of Germany (10 April 2009)"Der Spiegel। ৩০ মার্চ ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১০
  69. "Türkiye'nin yüzde 85'i 'anadilim Türkçe' diyor"। Milliyet.com.tr। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১২
  70. "Interactive Atlas of the World's Languages in Danger"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৪
  71. "Kürt meselesini yeniden düşünmek" (PDF)KONDA Research and Consultancy। ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১৫
  72. "History"istanbul.edu.tr। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪
  73. "The Results of Address Based Population Registration System, 2011"। Turkish Statistical Institute। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২
  74. "Mid-year population estimations, 1927–1985; Mid-year population estimations and projections, 1986–2011"। Turkish Statistical Institute। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৩
  75. Turkish Statistical Institute (২০১০)। "Population statistics in 2009"। Turkish Statistical Institute। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০১০
  76. "National adult literacy rates (15+), youth literacy rates (15-24) and elderly literacy rates (65+)"। UNESCO Institute for Statistics।
  77. Albayrak, Özlem। "Herkes Türk müdür, Türk mü olmalıdır? - Is everyone Turk or should be Turk?"yenisafak.com। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১৪
  78. "OTTOMAN MUSIC"turkishculture.org। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
  79. "UNESCO Intangible Cultural Heritage Lists"unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০১৪
  80. Axel Tschentscher। "International Constitutional Law: Turkey Constitution"। Servat.unibe.ch। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১০
  81. "Turkey: Islam and Laicism Between the Interests of State, Politics, and Society" (PDF)Peace Research Institute Frankfurt। ২৩ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ অক্টোবর ২০০৮
  82. "TURKEY" (PDF)। Library of Congress: Federal Research Division। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১০
  83. "Country - Turkey"Joshua Project। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১৪
  84. "Turkey"। Joshua Project। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৪-০৪
  85. Ibrahim Kaya (২০০৪)। Social Theory and Later Modernities: The Turkish Experience। Liverpool University Press। পৃষ্ঠা 57–58। আইএসবিএন 978-0-85323-898-0। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৩
  86. Royal Academy of Arts (২০০৫)। "Turks – A Journey of a Thousand Years: 600–1600"। Royal Academy of Arts। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০০৬
  87. Burak Sansal (২০০৬)। "Sports in Turkey"। allaboutturkey.com। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০০৬
  88. "Historical Achievements."http://www.tff.org। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১৪ |ওয়েবসাইট= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
  89. "Historic achievements of the Efes Pilsen Basketball Team"। Anadolu Efes Spor Kulübü। ৩ মে ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩
  90. "Anadolu Efes S.K.: Our successes"। ২৪ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৪
  91. Burak Sansal (২০০৬)। "Oiled Wrestling"। allaboutturkey.com। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০০৬
  92. Gegner, Christiane। "FILA Wrestling Database"। Iat.uni-leipzig.de। ১৩ মার্চ ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১০

আরও পড়ুন

  • Mango, Andrew (২০০৪)। The Turks Today। Overlook। আইএসবিএন 1-58567-615-2।
  • Pope, Hugh; Pope, Nicole (২০০৪)। Turkey Unveiled। Overlook। আইএসবিএন 1-58567-581-4।
  • Reed, Fred A. (1999). Anatolia Junction: a Journey into Hidden Turkey. Burnaby, B.C.: Talonbooks [sic]. 320 p., ill. with b&w photos. আইএসবিএন ০-৮৮৯২২-৪২৬-৯
  • Revolinski, Kevin (২০০৬)। The Yogurt Man Cometh: Tales of an American Teacher in Turkey। Çitlembik। আইএসবিএন 9944-424-01-3।
  • Roxburgh, David J. (ed.) (2005). Turks: A Journey of a Thousand Years, 600–1600. Royal Academy of Arts. আইএসবিএন ১-৯০৩৯৭৩-৫৬-২.
  • Turkey: A Country Study (1996). Federal Research Division, Library of Congress. আইএসবিএন ০-৮৪৪৪-০৮৬৪-৬.
  • Cîrlig, Carmen-Cristina (২০১৩)। Turkey's regional power aspirations (PDF)। Library of the European Parliament।

বহিঃসংযোগ

সাধারণ
সরকারী
ভ্রমণ
অর্থনীতি
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.