জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ
জাতিসংঘের ছয়টি প্রধান অঙ্গের অন্যতম জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইংরেজি: United Nations Security Council (UNSC))বা নিরাপত্তা পরিষদ, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এর কাজ।
![]() مجلس الأمن التابع للأمم المتحدة (আরবি) 联合国安全理事会 (চীনা) Conseil de sécurité des Nations unies (ফরাসি) Совет Безопасности Организации Объединённых Наций (রুশ) Consejo de Seguridad de las Naciones Unidas (স্পেনীয়) | |
---|---|
![]() নিউইয়র্কে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান কার্যালয় | |
সংস্থার ধরণ | প্রিন্সিপাল অঙ্গ |
সংক্ষিপ্ত নাম | UNSC |
প্রধান | পরিষদের সভাপতি রোমান ওইয়ারসুন মারচেসি ![]() |
মর্যাদা | সক্রিয় |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৪৫ |
ওয়েবসাইট | un |
নিরাপত্তা পরিষদের শান্তিরক্ষা অপারেশন, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এবং নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন মাধ্যমে সামরিক অভিযানের ক্ষমতা আছে, এটি জাতিসংঘের এমন একটি অঙ্গ, যেটি থেকে জারি করা রেজুলেশন সদস্য দেশগুলোর জন্য মানা বাধ্যতামূলক। নিরাপত্তা পরিষদের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় ১৭ জানুয়ারি ১৯৪৬।
নিরাপত্তা পরিষদের পনের সদস্য নিয়ে গঠিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয়ী পাঁচ পরাশক্তি - চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র স্থায়ী সদস্য। এই স্থায়ী সদস্যদের নিরাপত্তা পরিষদের রেজল্যুশন, নতুন সদস্য দেশ অন্তর্ভুক্তি বা মহাসচিব প্রার্থীর নিয়োগে ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা আছে। এছাড়াও ১০ জন অস্থায়ী সদস্য আছে, যারা নিদিষ্ট অঞ্চল থেকে ২ বছরের জন্য নির্বাচিত হন।
ইতিহাস
১৯৪৪ সালের মাঝামাঝি, মিত্র শক্তি জাতিসংঘের কাঠামো ঠিক করার জন্য ওয়াশিংটন ডিসিতে ডাম্বাটন ওকস সম্মেলনে বসেন এবং দ্রুত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গঠন নিয়ে আলোচনা করেন। চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র স্থায়ী সদস্য নির্বাচিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিলকে ষষ্ঠ স্থায়ী সদস্য করার চেষ্টা করে কিন্তু রাশিয়া ও যুক্তরাজ্যের বিরোধিতায় ভেস্তে যায়। ডাম্বাটন ও পরবর্তী সম্মেলনগুলোতে স্থায়ী সদস্যদের ভেটো ক্ষমতা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হয়। ১৯৪৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইয়াল্টা সম্মেলনে রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ভেটো ক্ষমতা নিয়ে একমত হয়। ১৯৪৫ সালের ২৫ এপ্রিল জাতিসংঘ একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করে সান ফ্রান্সিস্কোতে, যেখানে ৫০ টি দেশ ও অনেক এনজিও অংশগ্রহণ করে, তারা সবাই সেখানে একটি সনদের খসড়া তৈরি করে। ১৯৪৫ সালের ২৪ অক্টোবর নিরাপত্তা পরিষদ গঠিত হয়। ১৯৪৬ সালের ১৭ জানুয়ারি নিরাপত্তা পরিষদ চার্চ হাউস, ওয়েস্টমিনিস্টার, লন্ডন, ইংল্যান্ডে প্রথম অধিবেশনে বসে।
ভূমিকা
নিরাপত্তা পরিষদের কাজ জাতিসংঘ সনদ দ্বারা সংজ্ঞায়িত, যা কোনো আন্তর্জাতিক শান্তির হুমকি পরিস্থিতির তদন্ত, বিবাদের শান্তিপূর্ণ সমাধানের পদ্ধতি সুপারিশ, সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে অর্থনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি সমুদ্র, বাতাস, ডাক ও রেডিও যোগাযোগ ছিন্ন করা, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা। এমনকি সামরিক আক্রমণের ক্ষমতাও রাখে। নিরাপত্তা পরিষদ সাধারণ পরিষদের নতুন মহাসচিব এবং নতুন সদস্যদেশ অন্তরভুক্তির সুপারিশ করা থাকে।[1][2] নিরাপত্তা পরিষদ ঐতিহ্যগতভাবে কেবল সামরিক নিরাপত্তার বিষয়টি দেখে।
সদস্য
নিরাপত্তা পরিষদের মোট সদস্য সংখ্যা ১৫টি। এর মধ্যে স্থায়ী সদস্য ৫টি এবং অস্থায়ী সদস্য ১০টি দেশ।
স্থায়ী সদস্য
নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য, যেকোন সিদ্ধান্তে ভেটো ক্ষমতা আছে, কিন্তু বিতর্ক প্রতিরোধ বা শেষ করতে পারেন না।
দেশ | আঞ্চলিক দল | বর্তমান রাষ্ট্র প্রতিনিধিত্ব | থেকে | সাবেক রাষ্ট্র প্রতিনিধিত্ব |
---|---|---|---|---|
![]() |
এশিয়া-প্যাসিফিক | ![]() |
১৯৭১ | টেমপ্লেট:দেশের উপাত্ত Republic of China (1912–49) তাইওয়ান (১৯৪৫–৪৯) (based on the Mainland)![]() |
![]() |
পশ্চিম ইউরোপ এবং অন্যরা | ![]() |
১৯৫৮ | ![]() টেমপ্লেট:দেশের উপাত্ত French Fourth Republic (১৯৪৬–৫৮) |
![]() |
পশ্চিম ইউরোপ | ![]() |
১৯৯২ | টেমপ্লেট:দেশের উপাত্ত Union of Soviet Socialist Republics (১৯৪৫–৯১) |
![]() |
পশ্চিম ইউরোপ এবং অন্যরা | ![]() |
১৯৪৫ | — |
![]() |
পশ্চিম ইউরোপ এবং অন্যরা | ![]() |
১৯৪৫ | — |
ভেটো ক্ষমতা
অস্থায়ী সদস্য
পাঁচটি স্থায়ী সদস্য দেশের সাথে ভৌগলিক অঞ্চল থেকে আবর্তিত ভিত্তিতে ১০ টি অস্থায়ী সদস্য নির্বাচন করা হয়। প্রথম দুই দশকে, নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য ছিল ৬ টি - অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, মিশর, মেক্সিকো, নেদারল্যান্ড এবং পোল্যান্ড। ১৯৬৫ সালে, অস্থায়ী সদস্য সংখ্যা দশে উন্নীত করা হয়। [3]
প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে, এই দশ অস্থায়ী সদস্য দুই বছরের জন্য সাধারণ পরিষদ কর্তৃক নির্বাচিত করা হয়। প্রতি বছর পাঁচটি সদস্য দেশ নির্বাচিত করা হয়। [4] সদস্য দেশ নির্বাচিত হওয়ার জন্য সাধারণ পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের সমর্থন দরকার হয়।
আফ্রিকা থেকে তিনটি, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চল, এশিয়া, পশ্চিম ইউরোপ ও অন্যান্য থেকে দুইটি করে এবং পূর্ব ইউরোপ থেকে একটি দেশ। পর্যায়ক্রমে আফ্রিকা ও এশিয়া কোটা থেকে একটি সদস্যপদ আরবদেশগুলোর জন্য বরাদ্দ থাকে । বর্তমানে প্রত্যেক জোড় বছরে আফ্রিকা থেকে দুইটি, এশিয়া, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চল ও পশ্চিম ইউরোপ ও অন্যান্য থেকে একটি দেশ সদস্য নির্বাচিত হয়। প্রত্যেক বিজোড় বছরে পশ্চিম ইউরোপ ও অন্যান্য থেকে দুইটি, আফ্রিকা, এশিয়া, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চল থেকে একটি দেশ সদস্য নির্বাচিত হয়।
অঞ্চলসহ বর্তমান সদস্য দেশের তালিকা নিচে দেয়া হল।[4]
|
|
শান্তিরক্ষা কর্মসূচী
সদস্য নিয়োগ সংক্রান্ত ক্ষমতা :-
জাতিসংঘের নতুন রাষ্ট্র অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশ বা প্রস্তাব কে 5 জন স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র কর্তৃক সমর্থন করতে হবে। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সামরিক শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে ওই রাষ্ট্রের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা বা অর্থনীতিক সুবিধা বন্ধ করার ক্ষমতা রাখে । অবশ্য এই ক্ষমতা পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়ার অধিকারও তাঁর আছে। }}
মূল্যায়ন
সদস্য পুনর্গঠন
এই পরিষদে স্থায়ী সদস্যের সংখ্যা আরো বাড়াতে প্রধানত ৪টি দেশের নাম উঠে আসে।
তথ্যসুত্র
- "Charter of the United Nations: Chapter II: Membership"। United Nations। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৩।
- "Charter of the United Nations: Chapter V: The Security Council"। United Nations। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০১২।
- "The UN Security Council"। United Nations Foundation। ২০ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০১২।
- "Current Members"। United Nations। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৩।