ফরাসি ভাষা

ফরাসি ভাষা (Français ফ্রঁসে আ-ধ্ব-ব: [fʁɑ̃ˈsɛ]) একটি রোমান্স ভাষা যার মূল প্রচলন ইউরোপ মহাদেশে, বিশেষত ফ্রান্স, ইতালি, সুইজারল্যান্ড ও পার্শ্ববর্তী কিছু দেশে। চীনা, ইংরেজি, হিন্দি, স্পেনীয় এবং আরবি ভাষার পর ফরাসি ভাষা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় ৩০ কোটি লোক মাতৃভাষা কিংবা দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ফরাসিতে কথা বলেন। [5] বিশ্বের প্রায় ৫৪টি দেশে এটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত।

ফরাসি
français
উচ্চারণফ্রঁসে
দেশোদ্ভবফ্রান্স
মাতৃভাষী
৭ কোটি ৬৮ লক্ষ (২০১২)[1] থেকে ১১কোটি ৫০ লক্ষ (২০১০)[2]
স্থানীয় এবং এল২: ২৬ কোটি ৫০ লক্ষ –২৭ কোটি ৫০ লক্ষ[3][4]
ইন্দো-ইউরোপীয়
  • ইতালিক
    • রোমান্স
      • পশ্চিম রোমান্স
        • গালো-আইবেরীয়
          • গালো-রোমান্স
            • গালো-রেটীয়
              • অই ভাষা
                • ফরাসি
রোমান লিপি
সরকারি অবস্থা
সরকারি ভাষা



অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা
নিয়ন্ত্রক সংস্থাআকাদেমি ফ্রঁসেজ (ফরাসি একাডেমী)
ভাষা কোডসমূহ
আইএসও ৬৩৯-১fr
আইএসও ৬৩৯-২fre (বি)
fra (টি)
আইএসও ৬৩৯-৩fra
লিঙ্গুয়াস্ফেরা51-AAA-i
  যে অঞ্চলে এটি মাতৃভাষা
  যে অঞ্চলে এটি রাষ্ট্র ভাষা
  যে অঞ্চলে এটি দ্বিতীয় ভাষা
  যে অঞ্চলে এটি একটি সংখ্যালঘু ভাষা

অন্যান্য রোমান্স ভাষার মত ফরাসি ভাষারও উৎপত্তি রোমান সাম্রাজ্যের লাতিন ভাষা থেকে। লাতিন ছাড়াও রোমান গল সাম্রাজ্যের সময়কার স্থানীয় কেল্টীয় ভাষাসমূহ এবং রোমান-পরবর্তী ফ্রাংকীয় হানাদারদের জার্মানীয় ভাষাগুলিও ফরাসি ভাষাকে প্রভাবিত করেছে।

ফরাসি ২৯টি দেশের সরকারি ভাষা; এগুলিকে একত্রে লা ফ্রঙ্কোফোনি (La Francophonie) বা "ফরাসিভাষী" বলে অভিহিত করা হয়। এছাড়াও ফরাসি ভাষা জাতিসংঘের এবং আরও বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থার দাপ্তরিক ভাষা।

ইতিহাস

রোমানদের গল বিজয় ও সেখানে উপনিবেশ স্থাপনের মধ্য দিয়ে ফরাসি ভাষার ইতিহাসের শুরু। সে সময় কেল্টীয় গল জাতি ছিল গল রাজ্যের অধিবাসী। কেল্টীয়রা ছিল ইন্দো-ইউরোপীয় জাতি। গ্রিক, রোমানজার্মানীয় জাতিদের সাথে তাদের মিল ছিল। কেল্টীয়রা শুরুতে মধ্য বা পূর্ব ইউরোপে বাস করত, কিন্তু খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতকের দিকে তারা পশ্চিমদিকে যাত্রা শুরু করে এবং প্রায় দুশ বছর পর স্থানীয় লোকদের (বিশেষত আইবেরীয়দের) হটিয়ে দিয়ে গল রাজ্যে বাস করা শুরু করে। এই সময় ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী এলাকাগুলি ছিল গ্রিক সাম্রাজ্যের অধীন, যেমন - মার্সেই, নিসঅঁতিব। গলদের আক্রমণে অতিষ্ঠ হয়ে এই সব শহরের গ্রিকরা গলে রোমান হস্তক্ষেপ কামনা করে। রোমানরা ১৫৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ১২৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত গল আক্রমণ করে এবং ফ্রান্সের দক্ষিণ-পূর্বে প্রোভিঙ্কিয়া (Provincia) নামের অঞ্চলটি দখল করে (রোমানদের দেয়া এই নাম আজও রয়ে গেছে; ফ্রান্সের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় রেজিওঁ বা প্রশাসনিক অঞ্চলটির বর্তমান নাম প্রোভঁস (Provence))। শুরুতে রোমানদের উপনিবেশ আল্পস পর্বতমালা থেকে পূর্ব পিরেনিজ পর্বতমালা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। ৫৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ইউলিয়ুস কায়েসার বা জুলিয়াস সিজার গলের বাকী অংশ বিজয়ে মনোযোগ দেন। ৫২ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যেই সমস্ত গল রোমানদের অধীনের আসে। গলেরা ছিল বিচ্ছিন্ন কতগুলি গোত্রের অসংগঠিত সমবায়, তাই রোমানদের গল বিজয় সহজতর হয়।

রোমানদের নতুন অধিকৃত এই উপনিবেশে লাতিন ছিল সরকারি ভাষা। যেসমস্ত গল লাতিন জানত, তাদের সুবিধা ছিল বেশি। রোমানদের আসার আগে গলদের লিখন পদ্ধতি বা শিক্ষা ব্যবস্থা বলতে কিছুই ছিল না। কিন্তু গলদের শিক্ষার রোমানীকরণের গতি ছিল ধীর। খ্রিস্টীয় ২য় বা ৩য় শতকেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষেরা লাতিন নয়, স্থানীয় গলীয় ভাষাতেই কথা বলত। তবে গ্রামীন অঞ্চলের ভাষা ছিল বলেই গলীয় ভাষার গর্ব হ্রাস পায়; অন্যদিকে রোন ব-দ্বীপ অববাহিকার ধর্মালয়গুলিতে ৬ষ্ঠ শতক পর্যন্তও লাতিন বা গ্রিকের প্রচলন ছিল।

এরপর ফ্রান্সের উত্তরাংশে জার্মানীয় ভাষাভাষী ফ্রাঙ্ক গোত্র (যাদের নাম থেকে ফ্রান্স নামটি এসেছে) অনুপ্রবেশ করে, ফলে উত্তর ফ্রান্স ও দক্ষিণ ফ্রান্সের ভাষায় পার্থক্য দেখা দেয়। সারা মধ্যযুগ ধরে উত্তর ও দক্ষিণের ভাষাগুলি আরও বিভিন্ন উপভাষায় ভাগ হতে থাকে। ফলে উত্তরে ফ্রঁসিয়াঁ, পিকার, নর্মান, লোরেন, ওয়ালন, ইত্যাদি উত্তর ফরাসি উপভাষা এবং দক্ষিণের প্রোভঁসাল ভাষা ভাগ হয়ে লঁগদোসিয়াঁ, ওভের্নিয়া, ও আরও বহু উপভাষার উৎপত্তি ঘটে। এদের মধ্যে প্যারিসের উপভাষাটি রাজধানীর রাজনৈতিক মর্যাদার কারণে ধীরে ধীরে জাতীয় ভাষায় পরিণত হয়। প্যারিসের উপভাষার আদর্শ রূপ সারা ফ্রান্সে ও পরবর্তীকালে সারা পৃথিবীতে মূল ফরাসি ভাষা হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে।

ফরাসি ভাষার ইতিহাসকে মূলত নিচের ছয়টি পর্বে ভাগ করা যায়।

১. গালো-রোমান্স পর্ব (৫ম-৮ম শতক): গলে প্রচলিত প্রাকৃত লাতিন ভাষা এসময় এমন সব বৈশিষ্ট্য অর্জন করে, যা রোমান সাম্রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলে প্রচলিত লাতিন ভাষা থেকে এটিকে আলাদা করে দেয়। রেশ্‌নো গ্লসগুলি এই পর্বের ধ্বনিব্যবস্থা ও শব্দভাণ্ডারের সাক্ষ্য বহন করছে।

২. প্রাচীন ফরাসি ভাষা (৯ম-১৩শ শতক): উত্তর গলের উপভাষাগুলি নিজস্ব ব্যাকরণবিশিষ্ট একটি আলাদা ভাষায় পরিণত হয়, যার নাম দেয়া হয়েছে লং দই (Langue d'oil)। ৮৪২ সালে রচিত স্ত্রাসবুর শপথগুলি (Strasbourg Oaths) এই ভাষার প্রাচীনতম লিখিত নিদর্শন। ১০ম শতকে প্রাচীন ফরাসি সাহিত্যের বিকাশ ঘটে। এসময় পার্শ্ববর্তী দেশগুলিতে, বিশেষত জার্মানিতে ফরাসি ভাষা পড়ানো হত। ১১শ-১৩শ শতক পর্যন্ত ইংরেজ প্রশাসনের মূল ভাষা ছিল এই প্রাচীন ফরাসি।

৩. মধ্য ফরাসি (১৪শ-১৫শ শতক): এই পর্বে ফরাসি উচ্চারণ ও ব্যাকরণে পরিবর্তন ঘটে। লেখক-সাহিত্যিকেরা প্যারিস ও তার আশেপাশের এলাকা তথা ইল-দ্য-ফ্রঁস (Île de France) অঞ্চলের উপভাষাকে একটি আদর্শ সাহিত্যিক ভাষা হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করেন। এসময় ফ্রান্সের সরকারি প্রশাসনের বিভিন্ন লেখায় ফরাসি ভাষা লাতিনের স্থান দখল করতে থাকে।

৪. প্রাথমিক আধুনিক ফরাসি (১৬শ শতক): এই পর্বে ফরাসি লেখকদের উদ্দেশ্য ছিল ফরাসি ভাষাকে সাহিত্যের মাধ্যম হিসেবে লাতিন ভাষার সমমর্যাদায় উন্নীত করা। ১৫৩৯ সালে রাজকীয় আদেশ জারির মাধ্যমে ফরাসিকে ফ্রান্সের সরকারি ভাষার মর্যাদা দেয়া হয়। তখন থেকেই ফরাসি সরকার ফরাসি ভাষার উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ ও আদর্শায়নের ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে।

৫. ধ্রুপদী আধুনিক ফরাসি (১৭শ-১৮শ শতক): আধুনিক ফরাসি ভাষার ব্যাকরণের মূল অংশগুলি এই পর্বেই স্থিতিশীল রূপ লাভ করে। এই সময় ফরাসি গোটা ইউরোপের আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। এমনকি জার্মানির প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডেও ফরাসি ভাষাই ব্যবহৃত হত। এ সময় ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক সম্প্রসারণের ফলে ফরাসি ভাষা ইউরোপের সীমানা ছাড়িয়ে আমেরিকা মহাদেশে (কানাডা, লুইজিয়ানা, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ, ইত্যাদিতে) ছড়িয়ে পড়ে ।

৬. সমসাময়িক আধুনিক ফরাসি (১৯শ শতক-বর্তমান): আধুনিক আদর্শ ফরাসি ভাষার বর্তমান উচ্চারণের ধরন এই পর্বে এসে স্থির হয়, মূলত ১৭৮৯ ও ১৯১৮ সালের মধ্যবর্তী সময়ে। ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের আফ্রিকান উপনিবেশগুলিতে ফরাসি ভাষাকে মূল সরকারি ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়।

ব্যাকরণ

ফরাসি ব্যাকরণ লাতিন ব্যাকরণের ওপর ভিত্তি করে রচিত। ফরাসি ব্যাকরণের সাথে অন্যান্য রোমান্স ভাষার ব্যাকরণের অনেক ক্ষেত্রে মিল আছে।

ফরাসি বিশেষ্যগুলির দুইটি ব্যাকরণিক লিঙ্গ (পুং ও স্ত্রী) আছে এবং এগুলি বিশেষ্যের রূপ দেখে সহজে নির্ণয় করা যায় না। এছাড়াও বিশেষ্যের একবচন ও বহুবচন হয়। বিশেষ্যগুলিতে কারকচিহ্ন বা বিভক্তি বসে না।

ফরাসি বিশেষণগুলি সাধারণত বিশেষ্যের পরে বসে এবং বিশেষ্যের লিঙ্গ ও বচনের সাথে সাযুজ্য রেখে পরিবর্তিত হয়। ফরাসিতে নির্দিষ্ট ও অনির্দিষ্ট নির্দেশক (article) ব্যবহৃত হয়, যেগুলি বিশেষ্যের লিঙ্গ ও বচনের সাথে সাযুজ্য রক্ষা করে। যেমন - une voiture blanche উ্যন্‌ ভোয়াত্যুর্‌ ব্লঁশ্‌ "একটি সাদা গাড়ি" --- এই উদাহরণটিতে voIture বিশেষ্যটি একবচন ও স্ত্রীলিঙ্গ বলে নির্দেশক une এবং বিশেষণ blanche-ও একবচন ও স্ত্রীলিঙ্গের রূপ ধারণ করেছে।

ফরাসি সর্বনামগুলি পুরুষ, লিঙ্গ ও বচনের জন্য চিহ্নিত। এছাড়া বাক্যে ভূমিকা (কর্তা, মুখ্য কর্ম, গৌণ কর্ম) অনুযায়ী এগুলিতে বিভক্তি যুক্ত হয়। ফরাসিতে দ্বিতীয় পুরুষের সর্বনামে নৈকট্যসূচক tu এবং সম্ভ্রমসূচক vous-এর মধ্যে পার্থক্য করা হয়।

ক্রিয়া

বেশির ভাগ ফরাসি ক্রিয়াকে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করে নেয়া যায়, যার দুইটি নিয়মিত (regular) শ্রেণী (-er এবং -ir-এ শেষ হওয়া ধাতুমূল) এবং একটি অনিয়মিত (irregular) শ্রেণী। প্রতিটি নিয়মিত শ্রেণীতে কাল (tense), প্রকার (aspect), পুরুষ ও বচনভেদে ক্রিয়ামূল বা ধাতুর (root) সাথে একই রকম বিভক্তি যুক্ত হয়। ফরাসি ক্রিয়াগুলি পুরুষ ও বচনের জন্য চিহ্নিত। ক্রিয়ার চারটি সরল কাল ও পাঁচটি যৌগিক কাল আছে। Être এত্র্‌ "হওয়া" কিংবা avoir আভোয়ার্‌ "থাকা" ক্রিয়ার সাহায্য নিয়ে যৌগিক কালগুলি গঠন করা হয়। ক্রিয়াগুলির চারটি ভাব (mood) আছে: নির্দেশক (indicative) ভাব, অনুজ্ঞাবাচক (imperative) ভাব, অভিপ্রায়ার্থক (subjunctive) ভাব ও সাপেক্ষ (conditional) ভাব। আরও আছে দুইটি বাচ্য: কর্তৃবাচ্য ও কর্মবাচ্য। কর্মবাচ্য "être"-কে সহায়িকা ক্রিয়া হিসেবে ব্যবহার করে গঠন করা হয়। ফরাসি নঞকরণ (negation) দুইটি অংশ নিয়ে সম্পন্ন হয়, যেমন - Je ne sais pas জ্য ন্য সে পা "আমি জানি না।" এখানে ne ন্য সামগ্রিকভাবে নঞর্থকতা নির্দেশ করছে এবং pas পা নির্দেশ করছে নঞর্থকতার ধরন। তুলনার জন্য দেখুন: Je ne sais rien জ্য ন্য সে রিয়াঁ "আমি কিছুই জানি না", Je ne le dis plus জ্য ন্য ল্য দি প্লু "আমি তা আর বলি না", এবং Je ne le dis jamais জ্য ন্য ল্য দি জামে "আমি কখনো তা বলি না"

পদক্রম

যৌগিক ক্রিয়া, কর্ম, ক্রিয়াবিশেষণীয় সর্বনাম, উৎক্রম (inversion), অনুজ্ঞা, ক্রিয়াবিশেষণ, ও নঞর্থক গঠনগুলির মধ্যকার আন্তঃসম্পর্কের কারণে ফরাসি ভাষার পদক্রম বেশ জটিল। তবে কর্তা ক্রিয়া কর্ম পদক্রমই প্রধান। যেমন - Je prends un café জ্য প্রঁ আঁ কাফে "আমি কফি খাই" বাক্যটিতে প্রথমে বসেছে কর্তা Je, তারপরে ক্রিয়া prends, এবং তারপর কর্ম café।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. ফরাসি ভাষা at Ethnologue
  2. Francophonie
  3. The World's 10 Most Influential Languages Top Languages. Retrieved 2011-04-11.
  4. La langue française dans le monde 2010. La Francophonie. Retrieved 2010-04-14.
  5. (ফরাসি) "Les francophones dans le monde" (Francophones worldwide") — Provides details from a report, (Rapport 1997–1998 du Haut Conseil de la Francophonie, "État de la francophonie dans le monde", La Documentation française, 1999, pp.612) which provides the following numbers: 112,666,000 with French as a first, second, or "adopted" language; 60,612,000 "occasional Francophones" for whom usage and mastery of French are limited only by circumstances or by expressive capability; 100–110 million "francizers", who have learned French for several years and have maintained limited mastery, or who have simply been required to learn enough to perform their job.

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.