বিশেষ্য

বিশেষ্যঃ [নোট 1] (ইংরেজি Noun যা ল্যাটিন nōmen শব্দ থেকে এসেছে অর্থ নাম) বাংলা ব্যাকরণের একটি পদ [নোট 2]। সাধারণ বিচারে বাক্যমধ্যে ব্যবহৃত যে সমস্ত পদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, জাতি, সমষ্টি, বস্তু, স্থান, কাল, ভাব, কর্ম বা গুণের নাম বোঝানো হয় তাদের বিশেষ্য বলে।[1] কোনো কিছুর নামকে বিশেষ্য পদ বলে। যেমন: নুর হোসাইন, বাংলাদেশ, ঢাকা ইত্যাদি।[2]

সংজ্ঞা

সাধারণভাবে এর সংজ্ঞা হিসাবে বলা হয়, কোন কিছুর নামকেই বিশেষ্য বলে। বাংলা ব্যাকরণ মতেঃ– বাক্যে ব্যবহৃত যে প্রকার পদ (শব্দ-ধ্বনি) দ্বারা কোন কিছুর নাম বোঝানো হয় তাকেই বিশেষ্য পদ বলে। [নোট 3]
বিশদ ভাবে বিশেষ্যর সংজ্ঞা প্রকাশ করলে বলতে হয়ঃ বাক্যে ব্যবহৃত পদগুলোর ভিতর থেকে অন্যান্য পদ (বিশেষণ, সর্বনাম, ক্রিয়া, অব্যয়) বাদ দিয়ে যা থাকে, তাই বিশেষ্য। অর্থাৎ যা গুণ প্রকাশ করে না, যা অন্য পদের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয় না, যা কোনো কাজ করাকে প্রকাশ করে না এবং নিজে অপরির্তিত থেকে অন্য পদকে সমন্বিত করে না−তাই বিশেষ্য পদ। [2]

প্রকারভেদ

বিশেষ্য মোট ছয় প্রকার।[1][3]

সংঙ্গা বা নামবাচক বিশেষ্য

যেসব বিশেষ্য পদ দ্বারা কোনো নির্দিষ্ট স্থান, নদী, পর্বত, সমুদ্র, প্রসিদ্ধ গ্রন্থ বা ব্যক্তির নাম বোঝায়, তাকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য বলা হয়। যেমন: নাহিদ, আফতাব, ঢাকা, পদ্মা ইত্যাদি।

জাতিবাচক বিশেষ্য

যে বিশেষ্য পদের সাহায্যে কোনো প্রাণী বা বস্তুর জাতি বোঝায়, তাকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: মানুষ, মুসলিম, হিন্দু ইত্যাদি। বই, খাতা, কলম,

বস্তুবাচক বিশেষ্য

যে বিশেষ্য পদের সাহায্যে কোনো বস্তু বোঝায় এবং যার সংখ্যা নির্দেশ করা যায় না, শুধু পরিমাণ নির্দেশ করা যায়, তাকে বস্তুবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: পানি, লবণ ইত্যাদি।

সমষ্টিবাচক বিশেষ্য

যে বিশেষ্য পদে সমষ্টি বোঝায়, তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: জনতা, সমিতি, সভা, দল ইত্যাদি।

ভাববাচক (ক্রিয়াবাচক) বিশেষ্য

যে বিশেষ্য পদে কোনো ক্রিয়ার ভাব বা কাজের ভাব প্রকাশিত হয়, তাকে ভাববাচক বিশেষ্য বলে। যেমনঃ গমন (যাওয়ার ভাব বা কাজ)। দর্শন (দেখার কাজ) ভোজন (খাওয়ার কাজ) ইত্যাদি। ভাববাচক শব্দের শেষে (আ বা অন) হয়।

গুনবাচক বিশেষ্য

যে বিশেষ্য পদে কোনো গুণ, অবস্থা ও ভাবের নাম বোঝায়, তাকে গুণবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: সুখ, দুঃখ, দয়া, বীরত্ব ইত্যাদি।[4][5]

আরোও দেখুন

নোট

  1. বানান বিশ্লেষণঃ ব্+ই+শ্+এ+ষ্+য্+অ। রূপতাত্ত্বিক বিশ্লেষণঃ বি (অতিশায়িত)- শিষ্ (শেষ থাকা, শেষ রাখা) + য (ণ্যৎ), কর্মবাচ্য।
  2. উচ্চারণঃ bi.ʃeʃ.ʃo (বি.শেশ্.শো) বি.শেশ্.শো [বি একাক্ষর হিসেবে উচ্চারিত হবে। ষ্য -এর জন্য দ্বিত্ব শ্.শ ধ্বনি তৈরি করে। শে ধ্বনির সাথে ষ্য-এর বিভাজিত ধ্বনির শ্ যুক্ত হয়ে শেশ্ ধ্বনি তৈরি করে। অবশিষ্ট শো ধ্বনি একাক্ষর হিসেবে উচ্চারিত হয়।]
  3. ব্যাকরণগত বিশ্লেষণ: একটি শব্দ কোন্ পদের পর্যায়ে পড়বে, তা নির্ভর করবে বাক্যে শব্দটি কিভাবে ব্যবহৃত হয়েছে তার বৈশিষ্ট্যের উপর। এই বিচারে প্রাথমিক ভাবে কোন্ শব্দটি বিশেষ্য হবে তা নিশ্চিত করা যায় না। উধাহরন হিসাবে একটি শব্দ লাল। যদি বলি এই রঙটি লাল। তার অর্থ হলো− কোনো সুনির্দিষ্ট রঙের নাম বলা হচ্ছে। তাই এখানে লাল শব্দটি বিশেষ্য। কিন্তু যদি বলা যায় "লাল গোলাপ"। এই বাক্যে লাল শব্দটি গোলাপকে বিশেষিত করছে। এই অর্থে লাল এখানে বিশেষণ

তথ্যসূত্র

  1. http://www.edpdbd.org/uap/bangla/পদ-প্রকরণ
  2. "বিশেষ্য পদ"অনুশীলন ডট অর্গানাইজেশন। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  3. "বাংলা ভাষার ব্যাকরণ"। মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা।
  4. মোস্তাফিজুর রহমান। "বাংলা ২য় পত্র"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  5. জব্বার আল নাঈম। "দশম শ্রেণির বাংলা- ২য় পত্র"যায় যায় দিন। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.